ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

সোমবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৭

প্রসঙ্গঃ গণতন্ত্র ও ইসলাম!!

বাংলাদেশ বার্তাঃ প্রশ্নঃ আপনারা কুফরী মতবাদ গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোন বক্তব্য দেন না কেন?
জবাবঃ (মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযম (রহ.)-
গণতন্ত্র কুফরীর মতবাদ এমন ঢালাওভাবে বলা ঠিক নয়।গণতন্ত্র মানে সহজভাবে এইটুকু যে-
১. যেই সরকার গঠিত হবে তা জনগণের নির্বাচিত সরকার হবে।কেউ গায়ের জোরে এসে গদিতে বসতে পারবে না।দেশের জনগণের রায় নিয়েই ক্ষমতায় বসতে হবে।

২. সরকার পরিবর্তনও হবে জনগণের রায় অনুযায়ী।
৩. একবার কাউকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসানোর পরে তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে আর তার প্রতিবাদ করা যাবে না, বাঁধা দেয়া যাবে না তা নয়।বাঁধা দেয়া যাবে, প্রতিবাদ করা যাবে, তাদের দোষ-ত্রুটি ধরিয়ে দেয়া যাবে।এসব হচ্ছে গণতন্ত্রের পরিচয়।এর সঙ্গে ইসলামের কোন বিরোধ নেই।ইসলামের সাথে প্রচলিত গণতন্ত্রের বিরোধ যেই পয়েন্টে তা হচ্ছে- 'সার্বভৌমত্ব কার হাতে'? আমরা বলি 'আল্লাহর হাতে', আর তারা বলে 'জনগণের হাতে'। ‘জনগণের হাতে সার্বভৌমত্ব’ এই পয়েন্টেই তাদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ, গণতন্ত্রের বাকি তিনটা পয়েন্টের সাথে আমাদের কোন বিরোধ নেই।

মুহাম্মদ (সা.) যখন দুনিয়া থেকে বিদায় হলেন, তিনি কি তখন পরবর্তী ক্ষমতায় কে আসবেন নমিনেশন দিয়ে গেছেন কাউকে? বা উত্তরাধিকার সূত্রে কেউ
কি হয়েছে? কিভাবে হয়েছে?জনগণ যাকে চেয়েছে, তিনিই খলিফা হয়েছেন।জনগণের সেই ভোট কিভাবে নেয়া হবে সেই সিষ্টেম এর পার্থক্য থাকতে পারে।এখন যেমন ব্যালট পেপার হয়, একটা বয়স ঠিক করা হয়, ভোটার লিষ্ট করা হয় ইত্যাদি।এই সিস্টেম তখনো গড়ে উঠেনি।কিন্তু হযরত আবু বকর সিদ্দিক
(রা.) কে জনগণই ক্ষমতায় বসিয়েছেন।খলিফাগণ কেউই নিজের গায়ের জোরে, নিজে চেষ্টা করে গদিতে বসে যাননি, জনগণই ক্ষমতায় বসিয়েছেন।

জনগণের রায় নেওয়ার পদ্ধতি ইনডাইরেক্ট ডেমোক্রেসিও আছে, ইনডাইরেক্ট ভোটিংও আছে।সুতরাং ‘গণতন্ত্র কুফরী' এত বড় ফতোয়া দেয়া উচিত নয়।আমি জিজ্ঞাসা করি যে, সরকার গঠন করা, সরকার পরিবর্তন করা, সরকারের সমালোচনা করা এইগুলি ইসলাম অনুযায়ী জায়েজ না নাজায়েজ? সবই জায়েজ।তাহলে কুফরী হলো কিভাবে? শুধু এইটুকু কুফরী যে, ‘সার্বভৌমত্ব আল্লাহর হাতে নয়, জনগণের হাতে’।সার্বভৌমত্ব অর্থ কি? সার্বভৌমত্ব মানে হচ্ছে আইন দেওয়ার সর্বোচ্চ ক্ষমতা যার।তাই, সকলে মিলেও পার্লামেন্টে যদি বলে যে, মদ হালাল তবুও এটা হারামই থাকবে।আল্লাহর এ আইন বদলানো যাবে না।এটাই হচ্ছে ‘আল্লাহর সার্বভৌমত্ব’।

আল্লাহর আইনের অধীনে যত খুশি আইন বানানো যাাবে, আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধে কোন আইন বানানো যাবে না।কারণ, 'আল্লাহ সার্বভৌম'।আর পাশ্চাত্য গণতন্ত্রের কথা হলো, পাবলিক প্রতিনিধিরা ধর্মের ব্যাপার সহ সব ব্যাপারেই যে রায় দিবে সবাইকে সেটাই গ্রহণ করতে হবে।যেমন- ১৯২০ সালে আমেরিকা তাদের শাসনতন্ত্র সংশোধন করে সংশোধনীর দ্বারা মদকে নাজায়েজ করেছে।মদ অবৈধ, ইলিগ্যাল; এর দ্বারা মানুষের ক্ষতি হচ্ছে, তাই তারা এ আইন করে শাসনতন্ত্র সংশোধন করলো।১৩ বছর পরে ১৯৩৭ এ আবার তারা বললো, না, ‘মদ জায়েজ, মদ বৈধ’।তারা আগের সংশোধন বাতিল করে নতুন সংশোধন করলো।অর্থাৎ তারা যেটাকে খুশি বৈধ করবে, যেটাকে খুশি অবৈধ করবে।কিন্তু, প্রকৃতপক্ষে যদি মদ অবৈধ হয়ে থাকে তাহলে যখন বৈধ বলা হয়েছে তখনও অবৈধই ছিল।আর যখন অবৈধ বলা হয়েছে তখনও অবৈধই।ইসলামে এ রকম ভাবে আল্লাহর আইন বদলাবার কোন এখতিয়ার কারও নাই।এদিক দিয়েই পার্থক্য।
গণতন্ত্র ইসলামের সঙ্গে ওই একটি পয়েন্ট ছাড়া বিরোধী নয়।কিছু লোক প্রচার করছে যে, বিপ্লব করতে হবে।কিন্তু বিপ্লব কি? কেমন করে বিপ্লব করবে? শক্তি প্রয়োগ করা, জোর করে ক্ষমতা দখল করা, এটা কোন নবী করেছেন? তাহলে? নবীগণ জনগণের কাছে দাওয়াত দিয়েছেন।জনগণের সম্মতি যেখানে না হয়েছে, জনগণ যেখানে সাড়া দেয়নি, সেখানে ইসলাম বিজয়ী হয়নি, ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হয়নি।মক্কায় ১৩ বছর পর্যন্ত দাওয়াতি কাজ করার পরও জনগণ সাড়া দেয়নি বলে প্রাথমিক পর্যায়ে ইসলামী রাষ্ট্র গঠন সম্ভব হয়নি।মদিনার জনগণ সাড়া দেওয়ায় সেখানে ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।তবে, 'গণতন্ত্র' শব্দটির চেয়ে ভাল অর্থবোধক কোন শব্দ/পরিভাষা ব্যবহার করা গেলে হয় তো ভাল হতো।যদি ‘ডেমোক্রেসি’র বদলে আর কোন পরিভাষা আমরা বানাতে পারতাম, তাহলে সুবিধা হতো।সে হিসেবে একটা পরিভাষা হতে পারে 'খেলাফত'।
এটা আমরা চিন্তা করে দেখতে পারি, পরামর্শ করে দেখতে পারি।ডেমোক্রেসির জায়গায় আমরা বলবো ‘খেলাফত’।কোন এক ব্যক্তির রাজতন্ত্র নয়, কোন অধিকারকৃত নয় এবং ‘খেলাফত’ আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব এবং জনগণের প্রতিনিধিত্ব।আল্লাহর আইন চালু করবে জনগণের প্রতিনিধিরা।তারা আল্লাহরও খলিফা, জনগণেরও খলিফা।এ খেলাফত শব্দ দিয়ে ডেমোক্রেসির বিকল্প শব্দ বানানো যায়।মুসলিম জনগণ যদি গ্রহণ করে তাহলে এটা হতে পারে।যেমন রেড ক্রস এর জায়গায় রেড ক্রিসেন্ট মুসলমানরা গ্রহণ করেছে, এটা চালু হয়ে গেছে।সকল মুসলমান যখন রেড ক্রস এর জায়গায় রেড ক্রিসেন্ট ব্যবহার করতে রাজি হলো, এটা সম্ভব হলো।আমরা যদি সর্বসম্মতভাবে ‘ডেমোক্রেসি’র জায়গায় ‘খেলাফত’ শব্দটি ব্যবহার করি, এটাও হতে পারে।এটা আমি আপনাদের চিন্তার জন্য পরামর্শ দিলাম!!
সূত্রঃ প্রশ্নোত্তর পর্ব থেকে-

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন