ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৭

"জেরুসালেম কবে হবে স্বাধীন ফিলিস্তিনের রাজধানী" --------ফখরুল ইসলাম খান॥

বাংলাদেশ বার্তঃ ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদি নেজাদ বলেছেন, লেবানন ও ফিলিস্তিনের জনগণের হাতে ইসরাইলের পতনের দিন ঘনিয়ে আসছে। তিনি বলেন ঘড়ির কাঁটা ধরে শুরু হয়েছে কাউন্টডাউন। সংবাদ সংস্থা ইসনা এ খবর দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট এর বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে স্টুডেন্ট এজেন্সি বার্তা সংস্থা জানায়, তিনি বলেছেন ইহুদিবাদী সরকারের পতনের ঘণ্টা বেজে উঠেছে। তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ আমরা অচিরেই এই ধ্বংস প্রত্য করব। আহমাদি নেজাদ ২০০৫ সালে ক্ষমতায় আসার পর দিনই ইসরাইলকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার কথা বলে পশ্চিমাদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।
ইসরাইলি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং একই সাথে ফিলিস্তিনি আন্দোলন থামিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া সময়সীমা সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। হামাসের সামরিক শাখার প্রধান খালেদ মিশাল বলেছেন-ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে এবং শিগগিরই এই হামলা শুরু করা হবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন হামাস ও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। মিশাল হামাস সদস্যদের কঠিন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানান। হামাস নেতা মিশাল বলেন, আমি মনের করি এটা একটা প্রহসন। এর অর্থ এই যে, প্রতিরোধ নয় বরং চেকপয়েন্টগুলো খালি করে তাদের আসতে দিতে হবে সহজেই।
এ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রস্তাবের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ইসমাঈল হানিয়াকে জানানোর জন্য প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস দায়িত্ব নিয়েছেন। খালেদ মিশালসহ হামাস নেতারা হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছেন-আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি ফিলিস্তিনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয় তাহলে তৃতীয় গণঅভ্যুত্থান শুরু হবে। গত বছর হামাস মতায় আসার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
জেরুসালেমের ইহুদি এলাকার উন্নয়নে ইসরাইল দেড়শ কোটি ডলার বরাদ্দ করতে যাচ্ছে। সেখানে আরব জনসংখ্যার ব্যাপক বৃদ্ধির ফলে ইহুদি সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে শহরটির মেয়রের হুঁশিয়ারীর পর এ ঘোষণা এল। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরাইল পূর্ব জেরুসালেম দখল করে নেয়। ছয় দিনের ওই যুদ্ধের তৃতীয় দিনেই তারা পূর্ব জেরুসালেম কব্জা করে। পরে তারা ওই অংশটিকে একতরফা নিজেদের অন্তর্ভূক্ত করে নেয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিষয়টিকে মেনে নেয়নি। ইহুদি মন্ত্রিসভায় বিশেষ অধিবেশনে জেরুসালেমের মেয়র ইউরি লুপোনিয়ানস্কি বলেছেন-শহরটিতে ইহুদিদের অবস্থান জোরদার করতে হবে। তিনি বলেন, এখানে জনসংখ্যা সংক্রান্ত সমস্যা আমাদের কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। মেয়র বলেন এমনকি জেরুসালেম হয়তো ইহুদি নেতৃত্ব ও সার্বভৌমত্ব থাকবে না বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন-হামাসের হাতে জেরুসালেমের পতন হতে পারে। যদিও সেটা যুদ্ধের মাধ্যমে হবে না বলে তারা জানে। কিন্তু জনসংখ্যার মাধ্যমে এটা সম্ভব। আরব জনসংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে আগামী ১২ বছরের মধ্যে জেরুসালেম হামাসের হাতে চলে যেতে পারে বলে তারা জানে। মন্ত্রিসভার ওই বৈঠকে এহুদ ওলমার্ট সভাপতিত্ব করেন।
গত ৪০ বছরে জেরুসালেমের ইহুদি বসতি এলাকায় মুসলিম জনসংখ্যা ১৫৭ শতাংশ বেড়ে ৬৮ হাজার থেকে বেড়ে দুই লাখ ৪৫ হাজারে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে ইহুদি জনসংখ্যা বেড়েছে ১৪০ শতাংশ। অর্থাৎ ৪০ বছর আগের ২ লাখ ইহুদির সংখ্যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজারে। জেরুসালেম ইনস্টিটিউট ফর ইসরাইল স্টাডিজের এক পরিসংখ্যানে এ কথা জানা যায়।
এদিকে ইসরাইলের কারাগারে হাজার হাজার ফিলিস্তিনী বন্দী। এরা সবাই ভয়াবহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ফিলিস্তিনীদের শাস্তি দিতে ইসরাইল ১৪ ধরনের পদ্ধতি প্রয়োগ করে থাকে।
গত ১১ মে ’০৭ তারিখে প্রকাশিত এক রিপোর্টে এ কথা জানা গেছে, দুটি ইসরাইলি মানবাধিকার গ্র“প এ রিপোর্র্ট প্রকাশ করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে একথা বলা যেতে পারে যে, শিন বেথের টানা জিজ্ঞাসাবাদে উঠতি বন্দীদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। তাছাড়া তাদের প্রতিটি নির্যাতন পদ্ধতিই অমানুষিক বর্বর। বন্দীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের কাছ থেকে তথ্য বের করতে এ ধরনের নির্যাতন চালায় ইসরাইলিরা। রিপোর্টটি প্রণয়ন করেছে যৌথভাবে ইসরাইলি ইনফরমেশন সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ইন দ্যা অকিপাইড টেরিটরিস ও হামকন্ড সেন্টার ফর দ্য ডিফেন্স অব দ্য ইন্ডিভিজুয়াল। রিপোর্টে বলা হয়েছে ইসরাইলি কর্তৃপ আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এ সকল নির্যাতনকে বৈধ বলার চেষ্টা করছে। দ্য টরচার এন্ড ইন ট্রিটমেন্ট অব প্যালেস্টাইন ডিটেইনিজ শীর্ষক রিপোর্ট বলা হয়েছে প্রায় সকল ফিলিস্তিনি বন্দী শারীরিক ও মানষিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এ রিপোর্ট প্রণয়নের জন্য ৭৩ জন ফিলিস্তিনির সাাৎকার নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই বলেছেন তাদের প্রচণ্ড মারধর করা হয়, কঠোর ভাবে বেঁধে রাখা হয়। তাছাড়া গ্রেফতারের পর থেকেই বন্দীদের মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে সাধারণভাবে ব্যবহৃত ৭টি নির্যাতন পদ্ধতি ব্যবহার করে ইসরাইলি গোয়েন্দাবাহিনী। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা, নির্জন কারা প্রকোষ্টে বন্দী রাখা, ঘুমুতে বিঘœ ঘটান, নগ্ন করে নির্যাতন চালান, নির্যাতন ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার ভয় হুমকি দেয়া।
তাছাড়া পিটমোড়া করে শাস্তি দেয়া হয়ে থাকে। ইসরাইলি মানবাধিকার গ্র“পসমূহ অবিলম্বে এই ধরনের লজ্জাজনক নির্যাতন পদ্ধতি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে। এটা যেমন বন্দীর মানবাধিকার খর্ব করে তেমনি তার শারীরিক কাঠামো ও ভেঙ্গে যায়। ইসরাইলি কারাগারে ও ডিটেনশন সেন্টারসমূহে ১১ হাজারের মতো বন্দী রয়েছে। এদের মধ্যে ১২৬ জন মহিলা ও ৪৫০ শিশু কিশোর।
ইসরাইলি মন্ত্রিসভা অধিকৃত গাজা উপত্যকায় সন্দেহভাজন আরো ফিলিস্তিনী যোদ্ধাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার বিষয় অনুমোদন করেছে। তেলআবিবের কর্মকর্তারা দাবি করেন-ইসরাইলের দণিাঞ্চলে রকেট হামলা বন্ধের জন্য এটা করা প্রয়োজন। মানবাধিকার গ্র“পগুলো এর সমালোচনা করে বলেছে এতে ফিলিস্তিনি বেসামরিক লোকদের জীবন হুমকির মুখে রয়েছে। ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তাদের দাবি অনুযায়ী নভেম্বরের যুদ্ধ বিরতির পর থেকে এ পর্যন্ত গাজা ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলে ৩০০ রকেট হামলা চালানো হয়েছে এবং ২০০৬ সালে ১ হাজার ২৫টি রকেট হামলার ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য অব্যাহত নজরদারি ও নিয়মিত টহল সত্ত্বেও ইসরাইলি বাহিনী রকেট হামলা বন্ধ করতে পারেনি।
ইসরাইল মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে জেরুসালেম দখল ও সংযুক্তকরণ বার্ষিকী পালন করেছে। কিংবা ইসরাইল যেটাকে বলে পবিত্র নগরী’ পুনঃএকত্রীকরণ। বিদেশী রাষ্ট্রদূতরা তা বর্জন করেছেন। তারা এই অনুষ্ঠান পালন কে উস্কানী মূলক বলে মনে করেছেন। ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রিসেন্ট অভিযোগ করেছে জেরুসালেম কে সংযুক্ত করে নেয়ার মাধ্যমে ইসরাইল যে সব কর্তব্য লঙ্ঘন করছে যা আন্তর্জাতিক ও মানবিক আইনগুলো, বিশেষ করে দখল আইনের দ্বারা নির্ধারিত।
তাছাড়া ইসরাইলের বিরুদ্ধে দখলীকৃত ভূখণ্ডে অধিবাসীদের স্বার্থ ুণœ করা এবং এমন ব্যবস্থা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে যা দীর্ঘমেয়াদি মানবিক জটিলতার কারণ হবে। ইন্টারন্যাশনাল রেডক্রস বলেছে-জেরুসালেম জোরপূর্বক দখল করা ছিল আর্ন্তজাতিক আইনের লঙ্ঘন। ইসরাইল আর কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়। শুরু থেকেই সে কখনই এমন রাষ্ট্র ছিল না। বরং এটা একটা সংগঠিত অপরাধচক্র, যে কোনো মাফিয়ার চেয়ে বেশি খারাপ। কেননা তি ও অপকর্ম করার জন্য তার রয়েছে বেশি শক্তি। সুতরাং ইসরাইলি সরকার এর নামে যে চক্রটি কাজ করছে: তা মেনাহেম, এহুদ ওলমার্ট কিংবা যারা তাদের মধ্যে শাসন করছেন যারই নেতৃত্বে হোক না কেন, তাতে কোনো পার্থক্য হবে না। এই চক্রটি গাজা ভূখণ্ড ও পশ্চিম তীরকে নাকি বন্দী শিবিরে পরিণত করেছেন। জেরুসালেম সংযুক্ত করে নেয়া উপলে আয়োজিত অনুষ্ঠান বিদেশী রাষ্ট্রদূতরা বর্জন করেছেন। এটা কোনো নতুন কিংবা বিচ্ছিন্ন অবস্থান নয়। খ্রিষ্টান চার্চগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এর ইসরাইলকে বর্জন এবং অর্থ বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করে। বিশ্বের শিাবিদরা ইসরাইলকে বর্জন করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন বৃটেন, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের ইহুদি পরিবারবর্গ। ব্রিটেনের ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টস ইসরাইলকে বয়কট করার ঘোষনা দিয়েছে। দনি আফ্রিকায় যতদিন বর্ণবাদী সরকার মতায় ছিল, ততদিন যে সব মানবাধিকার সংগঠন দণি আফ্রিকাকে বর্জন করেছিল, তারা এখন ইসরাইলকে বর্জন করছে এবং অন্যদের ও আহ্বান জানাচ্ছে ইসরাইলকে বর্জন করতে। মনে হয় যারই মধ্যে মানবতার প্রতি সামান্য ভালোবাসা আছে সে-ই ইসরাইলকে বর্জন করবে- ইসরাইল তা জানে কি না। এখানে কোনো যুক্তি পেশ করা হবে না-বরং পাঠকদের নিজের প্রশ্ন করতে বলা হবে? মানুষের চলাচলের পথে বিঘœ করতে এবং তাদের নির্যাতন ও নিপীড়ন চালানোর জন্য পশ্চিমতীরে নির্মিত ৫৪৬টি রোডব্লক সম্পর্কে ইসরাইলের ‘পিস নাউ’ সংস্থাকে প্রশ্ন করুন। বিটিসেলেম ইরসাঈলের একটি সংস্থা। তারা অধিকৃত ভূখণ্ডের আধিবাসীদের অধিকার রার কথা বলে থাকে।
তাদেরকে প্রশ্ন করুন- ইসরাইলের ১১৯টি শিশু হত্যার বিপরিতে ২০০০ সালের ২৯ ফেব্র“য়ারি থেকে ৪ হাজার ৮২৬টি শিশুসহ ৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ব্যাপারে। ১৯৪৮ ও ১৯৬৭ থেকে আজ পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইল সে সব অপরাধ করেছে বিশ্বের অন্য সব অপরাধ মিলেও তা ঢাকা পড়বে না।
আশ্চর্যের বিষয় আরবরা নিজেদেরই ভূখণ্ড দাবি করছে। আর সে জন্য ইসরাইলের কাছে শর্তসাপে পরিকল্পনাও পেশ করতে প্রস্তুতি রয়েছে। আরবদের কামনা ইসরাইল ১৯৬৭ সালের আগের অবস্থান ফিরে যাক। উদ্ধাস্ত ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেতে অনুমতি দিক এবং ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হোক যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুসালেম। এটা কোনো নতুন পরিকল্পনা নয়। মার্চ ২০০২ সালে বৈরুত থেকে তা ঘোষণা করা হয়েছিল এবং এখন আরব লীগের ১৯তম শীর্ষ সম্মেলনে তার পুনরাবৃত্তি করা হলো। ইসরাইল এই পরিকল্পনা হুবহু মেনে নিতে এুণি রাজি নয়। বরং কিছুটা কাঁটছাট করতে চায় এবং আরব দেশগুলোর পরাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনায় প্রস্তুত রয়েছেন। ইসরাইল চায় ফিলিস্তিনের ব্যাপারে মধ্যমপন্থা অবলম্বনকারী আরব দেশগুলোর ইসরাইলের সাথেও সরাসরি আলোচনা করুক। কিন্তু এখন রাজনৈতিক দৃশ্যপট আরবদের মধ্যপন্থা অবলম্বনের দিকে স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে।
৬০ বছরের বিরোধ যদি কোনো ইতিবাচক মোড় নেয়, তাহলে মধ্যপাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আসতে পারে। ইরাক স্টাডি গ্র“প ডিসেম্বর ২০০৬ সালে এই মন্তব্যই করেছিল যে, মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান সব সমস্যা প্রত্য কিংবা পরোভাবে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন বিরোধের সাথে সম্পর্কিত। ইসরাইল এ বিষয়ে কড়া প্রতিবাদ ও জানিয়েছিল। তথাপী এখন প্রায় ৩২ কোটি আরব জনগণ ইরাক স্টাডি গ্র“পের এই মন্তব্যের সাথে একমত যে, মধ্যপ্রাচ্যের বিরোধগুলো ফিলিস্তিন সমস্যার সাথে সম্পৃক্ত এবং এখন সৌদি আরব তার নিজস্ব কূটনীতিতে কিংবা ইরানের অনমনীয়তার কারণে বিষয়টির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোও সৌদি আরবকে এ ব্যাপারে প্রতিনিধি রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়। সৌদি আরবও এ ব্যাপারে গাণিতিক হিসেবের চেয়ে আমেরিকার রাজনৈতিক দাবা ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের দূরদৃষ্টি কাছে লাগিয়েছে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট বিভিন্ন আরব রাষ্ট্র, ইরান ও দূরপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো সফর করেন। তারপর পাকিস্তানে সমমনা মুসলিম দেশগুলোর সম্মেলন ও অনুষ্ঠান করেন। এতে ইরানের অংশ না নেয়ার কারণে অভিযোগ ও উঠেছিল। এতে ইরান বেশি পীড়াপীড়ি করেনি। ইরান অনুভব করেছিল, ফিলিস্তিনের ব্যাপারটিকে তার অহমিকায় পরিণত করা ঠিক হবে না। ইরান ভালোভাবে জানতে পারছিল লেবাননে হিজবুল্লাহ ও ফিলিস্তিনে হামাসের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে তার উপস্থিতি থাকবে, শুধু তা-ই নয় আরব জনগণের মধ্যেও ইরানের ইসরাইল বিরোধী মনোভাব ভালো নজরে দেখা হচ্ছে না। হঠাৎ করে ইলেকট্রেনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াগুলো বিভিন্ন মুসলিম দেশে শিয়া জনগোষ্ঠীর পরিসংখ্যান দেয়া কেন শুরু করল তা জানা যায়নি। হতে পারে আমেরিকা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভক্ত রেখা টানতে চায় এবং ইরান কে মতাদর্শের ভিত্তিতে আলোচনা করতে চায়। কিন্তু সৌদি শাসক বাদশাহ আব্দুল্লাহ যথা সময়ে ইরানি প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদ কে সাড়ম্বর অভ্যর্থনা জানিয়ে এবং গোষ্ঠীবাদকে মুসলিম উম্মাহর জন্য বিষতুল্য সাবাস্ত করে মুসলিম উম্মাহর উভয় শ্রেণীকে বুঝিয়ে দিলেন যে, খাদেমূল হারামাইন এ ধরনের প্রচারণা বাতিল করেছেন।
ফিলিস্তিনি জনগণ অর্ধশতাব্দী ধরে নিজেদের অসহায়ত্বের উপাখ্যান রচনা করছে। প্রথমে তাদের নিজেদের বাস্তভিটা থেকে উচ্ছেদ করে শরণার্থী শিবিরগুলোতে অবস্থান নিতে বাধ্য করা হলো। আরবরা যখন তাদের মিল্লাতের অংশ মনে করে নিজেদের দেশে আশ্রয় দিল, তখন এতটুকু চিন্তা করার কষ্ট স্বীকার করতে চায়নি যে, সময়ের চাকা উল্টা দিকে কেন ঘুরছে। প্রথম ওসমানীয়া খেলাফতকে টুকরো টুকরো করা হলো। এমনকি খেলাফতের কেন্দ্র তুরস্কও তা থেকে পৃথক হয়ে গেল। তারপর আরবদের পালা এল। এভাবে ফিলিস্তিনে প্রতিষ্ঠা করা হলো ইসরাইল নামক জারজ রাষ্ট্র।
হিটলার ইহুদিদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছিল। এটাকে হলোকাস্টের পবিত্র মোড়কে পেচিয়ে অত্যন্ত কল্যাণকর সাব্যস্ত করা হলো। বিষয়টি এতই গুরুত্বপূর্ণ ও নাজুক যে, এ ব্যাপারে কোনো কথাই বলা যায় না। যে গনহত্যার কথা ইহুদিরা আলোচনা করে থাকে, সে জন্য কে দায়ী ছিল? কিন্তু শাস্তি ভোগ করছে ফিলিস্তিনিরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পর বিশ্বের পরাশক্তিগুলো ইসরাইলের অস্তিত্ব, তারপর তার স্বীকৃতি দিয়ে আইনগত রাকবচ সরবরাহ করছে। দুইদশক ধরে ইসরাইলের সম্প্রসারণবাদ ও নাশকতা চলতে থাকে। শেষপর্যন্ত আরবরা ইসরাইলের উচ্চাভিলাষ থামাতে ১৯৬৭ সালে সরাসরি মোকাবেলার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ইসরাইল ও তার সহযোগীদের গোপন তথ্য এতই সময়োপযোগী ও কার্যকর ছিল যে, আরবদের বিমান গুলো তাদের নিজেদের বিমান বন্দরে ধ্বংস করে দেয়া হয়। পাশাপাশি আরো ভূখণ্ড আরবদের হাত থেকে চলে যেতে থাকে। ১৯৭৩ সালে মিসর যখন ইসরাইলকে যুদ্ধের ময়দানে সমকতার অনুভূতি দিল, তখন মার্কিন পরাশক্তি ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির অধিনে এই শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিকে চুপ করিয়ে দিল। এভাবে কোনো আরবরাষ্ট্র ইসরাইলের চোখে চোখ রেখে কিছু করার সাহস দেখালে তাকে চুপ করিয়ে দেয়া হয়। তারপর লেবানন থেকে ইয়াসির আরাফাত ও তার সমর্থকদের উৎখাতে দণি লেবাননে ইসরাইলের দখলদারিত্ব এবং এর পাশাপাশি চলল সামরিক অভিযান অর্থাৎ সাবরা ও শাতিলা শিবিরে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। লেবাননের স্বাধীনতা প্রেমিকরা ইসরাইলিদের নাকানি চুবানি খাইয়ে চলে যেতে বাধ্য করলো। শুধু তাই নয়,গত বছর ইসরাইল যখন আরো একবার লেবাননে চড়াও হওয়ার চেষ্টা চালাল তখন হিজবুল্লাহ দিল তার দাঁতভাঙ্গা জবাব। ফিলিস্তিনিরা দুদিক থেকে বেষ্টিত। একদিকে তাদেরকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ধোঁকা দিয়ে আলোচনার টেবিলে বসানো হলো এবং গণতান্ত্রিক উপায়ে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার দেয়া হলো। কিন্তু তারা হামাসের নেতৃত্বের উপর আস্থা প্রকাশ করলে ইসরাইল এই বলে আপত্তি তুলল যে, সন্ত্রাসীদের সাথে কোনো সম্পর্ক রাখা হবে না। ইসরাইলের এই অবস্থান সমর্থন করলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকা। ফলে অর্থ সাহায্য বন্ধ হয়ে গেল এবং অর্থনৈতিক দুরবস্থা সৃষ্টি হলো। এতে জনগণের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা দেখা দিল। আজ যারা ফিলিস্তিনিদের সন্ত্রাসী বলছেন তারা কেন নিজেদের অতীত সম্পর্কে অচেতন? এখন এবং আগে যারা ইসরাইলের মন্ত্রিত্বে সমাসীন হয়েছেন, তারা সন্ত্রাসের কারণেই এসব পদে বরিত হয়েছেন। তাদের হাতে আরব ও ফিলিস্তিনিদের রক্তে রঞ্জিত। তাদের মধ্যে যার অত্যাচর যত বেশি, তাকে এত বড় পদে ভূষিত করা হয়েছে। ইসরাইল যখন সাবরা ও শাতিলায় হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল, বিশ্ব তখন চোখ বন্ধ করে রেখেছিল। আজ যদি ফিলিস্তিনিরা অস্ত্রধারণ করতে বাধ্য হয়, তাহলে তাকে কিভাবে সন্ত্রাস বলা যায়? ইসরাইল যখন তখন যেখানে সেখানে বিমান হামলা চালাতে পারে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা যদি নিজেদের নিরাপত্তার জন্য কয়েকটি রকেট ছোড়ে তাহলেও তা হয়ে যায় নাশকতা । অর্থনৈতিক অবরোধ সব অস্থিরতার মূল কারণ। যদি সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভকারী হামাস বিশ্ব সম্প্রদায়কে সুযোগ দেয়ার জন্য জাতীয় সরকার গঠনে প্রস্তুত হয়, যার মন্ত্রিপরিষদের অধিকাংশই হামাস বিরোধী, তাহলেও বিশ্বসম্প্রদায় অবস্থান বদলায় না। যদি গণতান্ত্রিক রীতি চালু রাখার খাতিরে পাশ্চাত্য ও আমেরিকা আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখত, তাহলে হয়তো হামাসকে আলোচনার টেবিলে আনা যেত। তারপর ভবিষ্যতে ইসরাইলকে মেনে নেয়া ও সহবস্থানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি হতে পারতো। কিন্তু যখন এ সব পথ বন্ধ হয়ে গেল, তখন ফিলিস্তিনিরা আবার ইসরাইলে রকেট হামলা শুরু করলো। কিন্তু ঘটনার বিস্তার ঘটতে পারে এবং হামাস হিজবুল্লাহর মতোই ইসরাইলকে হটে যেতে বাধ্য করতে পারে।
সময়ের বাস্তবতাকে খোদ ইসরাইলি বুদ্ধিজীবী ও জনগণের উপলব্ধি শুরু করেছে। ইসরাইলি বুদ্ধিজীবীদের অভিমত এক সময় ভেঙ্গে পড়বে ইসরাইল রাষ্ট্র। প্রথমদিকে তাদের বিশ্বাস ছিল যে, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পরপরই আরো বেশি আরব ভূখণ্ড দখল করে গড়ে তোলা হবে তাদের স্বপ্নের রাষ্ট্র। যা হবে অত্যন্ত সুদৃঢ় ও শক্তিমান। এখন বহু ইহুদিরই স্বপ্নভঙ্গ শুরু হয়েছে এবং নেতাদের ওপর থেকেও তাদের মোহমুক্ত হয়েছে, যারা অনবরত সস্তা বুলি আওড়িয়ে তাদের বুঝানোর চেষ্টা করতো যে, মধ্যপ্রাচ্যের প্রাণকেন্দ্রে একটি বৃহত্তর ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী ইসরাইলি রাষ্ট্র গঠন করা হবে। কিন্তু ইসরাইলিরা এখন বঝুতে পারছে, গ্রেটার ইসরাইলের নামে এখন যা গড়ে তোলা হয়েছে তা পুরান কাহিনীর দানব রাষ্ট্র ছাড়া আর কিছুই হয় নয়। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে নিউইর্য়ক টাইমসের এক রিপোর্টে এসব তথ্য প্রকাশিত হয়।
নিউইয়র্ক টাইমসের সাথে দেয়া এক সাাৎকারের ইসরাইলের একজন লেখক ও গবেষক ইয়োসিস কেইন হেলেভি বলেন প্রত্যেকই এখন অনুভব করছে, তাদের রাজনীতি অথবা ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সমঝোতা, তাদেরকে গভীর হতাশার মধ্যে নিপে করা ছাড়া আর কিছুই করেনি। তিনি বলেন ‘‘ইতিহাসকে যেভাবে চলতে দেয়া উচিত ছিল, আমরা তাকে সেভাবে চলতে দিতে পারিনি।” ১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্যে কয়েক মাস যাবৎ উত্তেজনা ও যুদ্ধাবস্থার পর পরাশক্তিসমূহের চরম উস্কানির ফলে ইসরাইল ৫ জুন ত্বরিত গতিতে মিসর জর্ডান এবং সিরিয়ার উপর হামলা করে। ইসরাইল আসলে কি ধরনের রাষ্ট্র এ নিয়ে দেশটির অভ্যন্তরে এখন চলছে উত্তপ্ত বিতর্ক। ইসরাইলি সমাজের মধ্যে রয়েছে গভীর বিভক্তি। ইসরাইল কি একটি ধর্মীয়রাষ্ট্র হবে নাকি সেক্যুলার রাষ্ট্র হবে এনিয়ে রয়েছে চরম বিতর্ক। এছাড়া ইহুদি বনাম আরব, বসতি স্থাপনকারী বনাম উপকূল বাসী, জেরুসালেম বনাম তেল আবিব ইত্যাকায় ইস্যু নিয়েও ইসরাইলিদের মধ্যে বিরোধ চরমে উঠেছে। হ্যালেভি বলেন-ইসরাইলের প্রতিষ্ঠাতারা একটি স্বাভাবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বহু দম্ভোক্তি করেছিলেন। তনি আরো বলেন তারা এমন একটি রাষ্ট্রের কথা বুঝতে চাইতেন, যা বাহ্যিকভাবে হবে সাধারণ এবং অভ্যন্তরীণভাবে হবে ব্যতিক্রম। তিনি বলেন কখনো কখনো মনে হয় আমরা ঠিক উল্টোটি করেছি। আমরা এত বেশি পার্থিব রাষ্ট্র ও জাগতিক নৈতিকতা চাইনি।
১৯৪৮ সালের ১৮ এপ্রিলে ইহুদি মেনাহেম বেগিনের ইরগুন গ্র“পের হামলায় ৫ হাজার ৫শ’ ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এর পর ২২ এপ্রিলে হাইফায় জায়নবাদী ইহুদি জঙ্গিদের হামলায় প্রায় ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি তাদের পৈত্রিক ভিটামাটি ছেড়ে পালিয়ে যায়। ২৫ এপ্রিলে ইরগুন গ্র“প পুনরায় হামলা চালায় ফিলিস্তিনি শহর জাকার বেসামরিক এলাকাসমূহে। ঐ সময়ে জাকা ছিলো ফিলিস্তিনের সবচেয়ে বৃহৎ শহর। কিন্তু শহরটিতে ইহুদি হানাদাররা যে বর্বর গণহত্যা শুরু করে তা চেঙ্গিশিয় বর্বরতাকেও হার মানায়। এ হামলার ফলে ৭ লাখ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি তাদের পূর্ব পুরুষের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িঘরসহ সকল সহায়-সম্পত্তি ফেলে শুধু মাত্র প্রাণটিকে হাতে নিয়ে পালিয়ে যায়। ইসরাইল গঠনের মাত্র একদিন আগে ১৯৪৮ সালে ১৪ মে ফিলিস্তিনি সর্ববৃহৎ শহর জাফা সম্পূর্ণ ভাবে দখল নেয় আগ্রাসী ইহুদিরা।
কিন্তু এখন তাদের নিজেদেরকেই ভয় ও আতঙ্ক তাড়া করে ফিরছে। বহু ইসরাইলি এখন মনে করতে শুরু করছে যে, তাদের দেশ এক সময় অতীত বিষয়ে পরিণত হবে। ইসরাইলি লেখক হেলেভি বলেন, লোকেরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছে ইসরাইল এখানে বড় জোর ৫০ বছর টিকে থাকবে। ইসরাইলের এক নারী জেবোরাহ হ্যারিস। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময় তিনি পেনসিলভ্যানয়ার স্ক্র্যান্টনে বাস করতেন। ৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরাইলের জয়কে তিনি তার জীবনের সবচেয়ে আবেগপূর্ণ ঘটনা হিসাবে বর্ণনা করলেও এখন তিনি মনে করেন ইসরাইল এক সময় অতীত ঘটনায় পরিণত হবে।
ইসরাইলের আরেকজন বিখ্যাত কলামিস্ট অরি শ্যাভিট বলেন-৬৭ সালের বিজয়ের চারদশক পর ইসরাইল তার মূল্য বা গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। তিনি এরজন্য ইসরাইলি সমাজের ক্রমবর্ধমান ভোগবাদী প্রবণতাকেই দায়ী করেন।
সম্প্রতি সারা ইসরাইলে পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়-৫৩ শতাংশ ইসরাইলি মনে করেন-ইসরাইলের নৈতিক মর্যাদা অনেক খানি হ্রাস পেয়েছে। কলামিস্ট বলেন- বহু ইসরাইলি এখন বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে, মধ্যপ্রাচ্যে তাদের কোনো শিকড় নেই। ইসরাইলের পার্লামেন্টের সাবেক স্পিকার আব্রাহাম বার্গ গত ৮ ই জুন এক সাক্ষাৎকারে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন ইসরাইল নিজেকে একটি ইহুদি রাষ্ট্র হিসাবে চিহ্নিত করে নিজের সর্বনাশ ডেকে আসছে। তিনি আরো বলেন- ইসরাইল জায়ানবাদীদের ঘেটোতে পরিণত হয়েছে। তিনি মনে করেন ইসরাইল ইউরোপেরই একটি অংশ। ইসরাইলের একজন আইনজীবী ও সাবেকমন্ত্রী ভ্যান মেরিডর বলেন, সকল ভূখণ্ডে আমাদের বসতি স্থাপন করে এবং যেভাবেই হোক সমগ্র আরবকে ইসরাইলের অর্ন্তভূক্ত করার ধারণা আমাদের নৈতিক ও রাজনৈতিক ভাবে বিরাট তি করেছে। (ইসলাম অনলাইন অবলম্বনে)
ফিলিস্তিনি সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া তাঁর লেখা-১৯৬৭ সালের যুদ্ধ : অসমাপ্ত অধ্যায় প্রবন্ধে লিখেছেন এই দুর্যোগময় আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য প্রথম যে পদপে নেয়া দরকার তা হলো পাশ্চাত্যকে ফিলিস্তিনের জাতীয় ঐক্যের সরকারের সাথে সম্পর্ক রাখতে হবে। এই সরকার চায় ৬৭ সালে ইসরাইলের অধিকৃত সব ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড মিলিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা, পশ্চিম তীরের সব বসতি অপসারণ, ইসরাইলি কারাগারে আটক ১১ হাজার ফিলিস্তিনির মুক্তি এবং সব ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুর নিজ বাস ভূমিতে প্রত্যাবর্তনের অধিকারের স্কীকৃতি। যদি ইরসাইল শান্তি স্থাপনের ব্যাপারে আন্তরিক হয়েই থাকে, তাকে আমাদের জনগণের এসব মৌলিক অধিকার স্কীকার করে নিতে হবে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধ একটি অসমাপ্ত অধ্যায় হিসেবে রয়ে গেছে। স্বাধীনতার লক্ষ এবং আমাদের সব সন্তান সম্পূর্ণ সার্বভৌম রাষ্ট্র ফিলিস্তিনে আবার এক হওয়ার উদ্দেশ্যে আমাদের যে সংগ্রাম তাকে কোনো কিছুই থামাতে পারবে না। আর এই রাষ্ট্রের রাজধানী হবে জেরুসালেম।
লেখক : ব্যবস্থাপনা সম্পাদক, মাসিক বিশ্বনাথ ডাইজেস্ট, সভাপতি, বিশ্বনাথ কেন্দ্রীয় সাহিত্য সংসদ ও বিশ্বনাথ সংস্কৃতি কেন্দ্র, সিলেট।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন