বাংলাদেশ বার্তাঃ দেখা করে ফিরছি আমার আস্ত কলিজা, আমার আব্বা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হাফিজাহুল্লাহ’র সাথে। তাঁর সাথে আমার দেখা হল দীর্ঘ এক মাস পর। মাঝে একবার আমি দেখা করতে আসতে পারিনি জিয়ানগর (ইন্দুরকানী) উপজেলা পরিষদের মাসিক সভা ও আইন শৃংখলা কমিটির সভাসহ পরিষদ কেন্দ্রীক বেশ কিছু জরুরী প্রোগ্রামের কারনে।
কিন্তু মনটা পড়েছিল আমার ঢাকায়। কেবলি সময় গুনছিলাম। কবে দেখা হবে! কবে হবে?
আজ দেখা হল আলহামদুলিল্লাহ। আমার তৃষিত নয়ন তৃপ্ত হল। হৃদয়ের হাহাকার ক্ষনিকের জন্য হলেও মিটলো আমার।
সাক্ষাতের শুরুতেই আব্বা আমাদেরকে জানালেন গতকাল রাতের শেষভাগে তার দেখা এক মহিমান্বিত স্বপ্নের কথা। আব্বা বললেন, ‘তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে জায়নামাজেই শুয়ে পড়েছি। কখন ঘুমিয়ে পড়েছি টের পাইনি। স্বপ্নে দেখি, আলো ঝলমলে বিশাল এক রুমের মাঝে নিজামী ভাই বসা। নাম না জানা অসংখ্য ফল-ফলাদি দিয়ে রুমটা ভরা। তিনি সেগুলো খাচ্ছেন আর কার সঙ্গে যেন কথা বলছেন। আমি রুমে ঢুকেই তাকে সালাম দিলাম। আমরা একে অপরের কুশল বিনিময় করলাম।
আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘নিজামী ভাই! এতো ফল আপনি কোথায় পেলেন! এগুলোর নাম কি?’
তিনি আমাকে বললেন, ‘এগুলোই তো নাজ নেয়ামত।’
আব্বা বললেন, এরপর আমার ঘুম ভেঙে গেল। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ফজরের সময় হয়ে এসেছে। ফজরের নামাজ আদায় করলাম। নিজামী ভাইসহ আমাদের সকল সম্মানীত শহীদ ও ইসলামী আন্দোলনের সকল পর্যায়ের নেতা কর্মীর জন্য দোয়া করলাম।
শেষ রাতে দেখা আব্বার স্বপ্নের কথা শুনছিলাম আর শিহরিত হচ্ছিলাম। নাজ নেয়ামত! এ কি সেই নাজ নেয়ামত !?
কথা প্রসঙ্গে জানতে পারলাম, আব্বা আজও রোজা রেখেছেন। আজকেরটা নিয়ে আব্বার পাঁচটি রোজা পূর্ণ হল। শাবান মাসের ফজিলত বলতে গিয়ে আব্বা বললেন, ‘শাবান মাসে মুমিনরা ইবাদতের ফসল বোনে আর সওয়াবের বসন্তকাল রমজানে ফসল ঘরে তোলে।’
‘শাবান মাসে রয়েছে বিশেষ ফজিলত। এই মাসে ইবাদতের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। রমজানের আগাম বার্তা বহন করে শাবান মাস। শাবান ছিল রাসূল (স.)-এর প্রিয় মাস। এই মাসের বরকতের জন্য নবী (স.) বিশেষ দোয়া শিখিয়েছেন উম্মতকে। শাবানের আগেই তিনি গুরুত্বসহ দিন গুনতে থাকতেন যে কবে আকাশে শাবানের চাঁদ উদয় হবে।’
এ মাসে রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে যতো বেশি সম্ভব রোজা রাখারও পরামর্শ আব্বা আমাদেরকে দিলেন। এ মাসের বরকত হাসিলের জন্য আব্বা আমাদেরকে বেশি বেশি নফল ইবাদত করার এবং রমজানের পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহনের নসিহত করলেন।
আল্লাহ তায়ালার মেহেরবানীতে আব্বা ভাল আছেন। তবে হাঁটু ও কোমড়ের তীব্র ব্যাথাটা আব্বাকে খুব কষ্ট দেয়। পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য আপনাদের দোয়া চেয়েছেন।
আপনারা যারা আমাকে আব্বার কাছে আপনাদের সালাম পৌঁছে দিতে বলেছিলেন, আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের প্রত্যেকের সালাম আব্বার নিকট পৌঁছে দিয়েছি। আব্বাও আপনাদেরকে সালাম জানিয়েছেন আর রমজানে আপনাদের প্রতিটি দোয়ায় তাকে শামিল রাখার জন্য অনুরোধ করেছেন।
সাক্ষাতের জন্য নির্ধারিত সময় ফুরিয়ে এসেছে। ইতিমধ্যেই কারারক্ষী একবার এসে তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে গেছে। এবার উঠতেই হবে। কিন্তু উঠতে যে ইচ্ছেই করে না !!
Masood Sayedee - মাসুদ সাঈদী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন