ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বুধবার, ২ মে, ২০১৮

কুলাউড়ায় দ্বিতীয় বিয়ে করায় গৃহবধুকে একঘরে করে রাখলো সমাজপতিরা!


বাংলাদেশ বার্তাঃ প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধে (!) মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় এক গৃহবধূকে একঘরে করে রাখা হয়েছে প্রায় ৫ বছর ধরে। তবে এখানেই ক্ষান্ত হয়নি সমাজপতিরা। তারা ওই মহিলার স্বামীকে জোরপূর্বক গ্রামছাড়াও করেছে।
কুলাউড়া উপজেলার বিজলী গ্রামের মুক্তেশ্বর দেবনাথের মেয়ে টপি দেবনাথের বিয়ে হয় জেলার জুড়ী উপজেলার দীঘলবাগ গ্রামের সত্যেন্দ্র দেবনাথের সাথে। বিয়ের ৫ বছরের মাথায় এক ছেলে রেখে তার স্বামী মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর টপি’র উপর শুরু হয় মানসিক নির্যাতন। শশুর বাড়িতে সে যন্ত্রণা সহ্য করে বেশ কিছুদিন থাকার পর একপর্যায়ে অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। ছেলের ভবিষ্যৎ চিন্তায় সিদ্ধান্ত নেন দ্বিতীয় বিয়ের। বিকাশ মিত্র নামের এক ব্যক্তির সাথে বিয়ে হওয়ার পর স্বামী-সন্তান নিয়ে টপি দেবনাথ গিয়ে ওঠেন বাবার বাড়িতে। কিন্তু বিধিবাম। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ থাকা কাকাতো ভাই ও গ্রাম্য মুরব্বিদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। সমস্যায় পড়েন টপির পিত্রালয়ের প্রতিটি সদস্য।

অশ্রুসিক্ত নয়নে টপি ও তার মা প্রণতী রানী দেবনাথ জানান, বিধবা অবস্থায় বিয়ে করায় তার মেয়ে টপি ও তাদের পরিবারকে সমাজপতিরা একঘরে করে রেখেছেন প্রায় ৫ বছর ধরে। ভয়ভীতি দেখিয়ে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয় টপির স্বামীকেও। এতেই ক্ষান্ত হয়নি সমাজপতিরা। তারা শাখা-সিঁদুর ত্যাগ করারও নির্দেশ দেন টপিকে। সমাজপতিদের সে নির্দেশ না মানায় টপি ও তার ছেলেকে সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান ও পূজা-পার্বনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। এ অবস্থায় অসহায় ওই গৃহবধূ যেমন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তেমনি তাকে নিয়ে ভাই প্রাণেশ দেবনাথও বিপাকে পড়েছেন। বোনকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার জন্যও সমাজপতিরা একের পর এক চাপ দিচ্ছেন প্রাণেশকে।
টপি জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর গ্রামের বিভিন্ন লোক বিভিন্ন কথা বলতে থাকে। বখাটেরা রাস্তাঘাটে যন্ত্রণা করে। এরপরও জীবনের তাগিদে দর্জির কাজ করতে হচ্ছে। আর এজন্য বাড়ির বাইরেও যেতে হয়। কিন্তু সমাজপতিরা দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধে আমাদেরকে একঘরে ঘোষণা করে। টপি বলেন, শুধু আমাকে নয়; আমার ভাইকেও মানসিকভাবে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। বার বার চাপ দেওয়া হচ্ছে সন্তানসহ আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমার ছেলে এখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ছে। তাকে নিয়ে আমি কোথায় যাই-ভেবে পাচ্ছি না। আমার ছোট ছেলেটির সাথেও গ্রামের লোকজন খুব খারাপ আচরণ করছেন।
নিরুপায় টপি দেবনাথ এ অবস্থায় সচেতনমহলের সহযোগিতা চান। তিনি বিশ্বজিৎ দেবনাথ, রঞ্জিত শর্মা, হীরা লাল দেবনাথ ও কাকাতো ভাই অধির দেবনাথসহ গ্রাম্য সমাজপতিদেরকে মানবাধিকার কমিশনের মাধ্যমে আইনগত নোটিশ পাঠিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট কিশোরী পদ দেব শ্যামল জানান, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে গ্রামের মুরব্বিদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা টপি ও তার পরিবারকে নানাভাবে দোষারোপ করেছেন। গ্রাম্য শালিসে না যাওয়ায় তাদের সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে নিষিদ্ধ করা হয় বলেও স্বীকার করেন গ্রামের মুরব্বিরা।
বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে মুরব্বিদেরকে বলা হয়েছে উল্লেখ করেত শ্যামল বলেন, বিষয়টির সমাধান না হলে মানবাধিকার কমিশন টপির হয়ে গ্রামের ‘সমাজপতি’দের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন।
এ ব্যাপারে গ্রামের মুরব্বি বিশ্বজিৎ দেবনাথ জানান, টপিকে একঘরে করা হয়নি। গ্রামের কাউকে না জানিয়ে বিধবা অবস্থায় বিবাহ করায় তাকে পঞ্চায়েতের শরণাপন্ন হতে বলা হয়। কিন্তু তারা পঞ্চায়েতের ডাকে সাঁড়া দেয়নি। ফলে গ্রামবাসী সিদ্ধান্ত নেন টপিকে আচার-অনুষ্ঠানে না ডাকার।
সৌজন্যেঃ শাহবাজপুর সমাচার

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন