বাংলাদেশ বার্তাঃ প্রতি বছর তাবলীগের যে বিরাট বিশ্ব ইজতিমা টঙ্গীর বিস্তীর্ণ এক ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় তাতে বিভিন্ন সময়ে ১৫ থেকে ২৫ লাখ লোকের সমাগম হয়।এটা সত্যিই উৎসাহের ব্যাপার।আমিও এতে শরীক হই এবং মুসলমানদের মধ্যে ইসলামের প্রতি মহব্বতের এ দৃশ্য দেখে চোখ জুড়ায়।দ্বীনে বাতিলকে উৎখাত করে দ্বীনে হক্ব কে কায়েম করার দাওয়াত ও কর্মসূচী নিয়ে যদি এর দশ ভাগের এক ভাগ লোকও একত্র হয় তাহলে এ দেশের সরকার ও কায়েমী স্বার্থ অস্থির হয়ে যেতো।ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতন্ত্রী মহল পত্র পত্রিকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক হৈ চৈ শুরু করতো।
১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ঢাকায় একটি ইসলামী ছাত্রসংগঠনের মাত্র ১৫/২০ হাজার কর্মীর সম্মেলন ও মিছিল সমস্ত ইসলাম বিরোধী মহলে অদ্ভুত কম্পন সৃষ্টি করেছে।অথচ এ সংগঠনটি কোন রাজনৈতিক দল নয়।তারা ইকামাতে দ্বীনের কথা বলে এবং ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমে ছাত্র সমাজকে উদ্বুদ্ধ করে বলেই কায়েমী স্বার্থ এত বিচলিত।সকল বাতিল শক্তি ও ইসলাম বিরোধি মহল ভাল করেই জানে যে, তাবলিগ নিছক ও নির্ভেজাল একটি ধর্মীয় জামায়াত এবং রাজনীতি, রাষ্ট্র ও সরকার নিয়ে তারা মাথা ঘামায় না।সুতরাং তাদের সম্পর্কে চিন্তা ভাবনার কোন কারন নেই ও ঘাবড়াবার কোন হেতু নেই।ঠিক একই কারনে পীর সাহেবানদের ওরস ও মাহফিলে লক্ষ লক্ষ মুসলমানের সমাবেশকে বাতিল শক্তি ভয় পায় না।এসব মাহফিলে ওয়াজ, তালকিন ও যিকর-এর মারফতে ইসলামের খেদমত নিশ্চই হচ্ছে। কিন্তু সেখানে ইকামাতে দ্বীনের কোন কর্মসূচী না থাকায় ইসলাম বিরোধী মহল চিন্তিত নয়।
এ কথা পরিষ্কার করার জন্যই উদাহরন স্বরূপ মাদ্রাসা, তাবলীগ ও খানকার উল্লেখ করলাম।খেদমতে দ্বীনের সাথে বাতিল শক্তির সংঘর্ষ হয় না।একমাত্র ইকামাতে দ্বীনের দাওয়াত ও প্রোগ্রামের সঙ্গেই এ সংঘর্ষ বাঁধে।সব নবীর জীবনেই একথা সত্য বলে দেখিয়ে গিয়েছেন।কুরআন মাজিদে যত নবী ও রাসূলের কথা আলোচনা হয়েছে তাতে দেখা যায় যে, সমকালীন ক্ষমতাসীন শক্তি ও ধর্মীয় কায়েমী স্বার্থ কোন নবীকেই বরদাশত করতে পারেনি।শুধু হযরত আদম
(আ.) ও হযরত সুলাইমান (আ.) ছাড়া আর সব নবীর সাথেই বাতিল শক্তির সংঘর্ষ হয়েছে।ইকামাতে দ্বীনের কর্মসূচী নিয়ে কাজ করায় যদি নবীদেরকেই বাতিলের সাথে সংঘর্ষ করতে হয়ে থাকে তাহলে নবীর উম্মতের পক্ষে এ সংঘর্ষ এড়িয়ে এ ইসলামকে কায়েম করা কি করে সম্ভব হতে পারে?
যারা বাতিলের সাথে সংঘর্ষ এড়িয়ে চলাকে হিকমাত মনে করেন তাদের চিন্তা করা উচিত যে, আল্লাহ পাক নবী রাসূলকে ঐ হিকমাতটা কেন শেখালেন না? আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার উদ্দেশ্যে যারা কাজ করতে চান তারা এ সংঘর্ষ এড়িয়ে চলার কথা ভাবতেই পারেন না।তারা দ্বীনের কোন না কোন দিকের খেদমত অবশ্যই করতে পারেন এবং তাদের সেই খেদমত ইকামাতে দ্বীনের সহায়কও হতে পারে।কিন্তু তাদের ঐ কাজটুকু প্রত্যক্ষ ভাবে ইকামাতে দ্বীনের কাজ হতে পারে না।তাদের ঐটুকু খেদমত দ্বারা দ্বীন কায়েম হয়ে যাবে না।দ্বীন কায়েমের জন্য আলাদা কর্মসূচী অবশ্যই দরকার!!
তথ্যসূত্রঃ ইকামাতে দ্বীন.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন