প্রধান শিক্ষকের বোরকা পরিধানের নিষেধাজ্ঞা না মানায় সহকারী শিক্ষিকাকে শিশু শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাবুগঞ্জ উপজেলার শাওর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই ঘটনা ছাড়াও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ করেছেন সহকারী শিক্ষিকা তাহমিনা আক্তার।
ওই অভিযোগ লিখিত আকারে বাবুগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ জেলা এবং উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দেয়া হয়েছে বলে লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষিকা জানিয়েছেন।
সহকারী শিক্ষিকা তাহমিনা আক্তার অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক তার অপকর্ম আড়াল করতে মুক্তিযোদ্ধা বাবা আব্দুল বারেককে লাঞ্ছিত করে জামায়াত নেতা অভিহিত করে প্রচার করছে।
তবে ইসলাম নিয়ে কটুক্তিসহ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সাব্বির শাহজাহন রাঢ়ী।
শিক্ষিকা তাহমিনা আক্তার জানান, তিনি বর্তমানে বিএম কলেজের সম্মান শ্রেনীর ছাত্রী ছাড়াও উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের ৩৯নং শাওর কোলচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন।
ধর্মভীরু ওই ছাত্রী ইসলামী শরিয়ত মেনে চলাচল করেন। সে অনুযায়ী বিদ্যালয়ে বোরকা পড়ে যায় সে। কিন্তু বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নেয়নি প্রধান শিক্ষক সাব্বির শাহজাহান রাঢ়ী। বিদ্যালয়ে বোরকা খুলে আসার নির্দেশ দেয় সে। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক সাব্বির শাহজাহান রাঢ়ী বলে “এটা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ বলে তসবি টেপার জায়গা না, এটা নাচ গানের জায়গা” অভিযোগ করে জানায় তাহমিনা আক্তার।
এর পরেও ধর্মীয় রীতি মেনে পোষাক পরিধান করে চতুর্থ শ্রেনীতে পাঠদানের উদ্দেশ্যে লাইব্রেরী থেকে বের হয়। তখন পঞ্চম শ্রেনীর এক শিশু শিক্ষার্থী তার বোরকা ধরে টান দেয়। এই বিষয় নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্বাস মোল্লা সহ এলাকাবাসী শিশু শিক্ষার্থীকে জেরা করে। তখন সে তাদের কাছে স্বীকার করে“ প্রধান শিক্ষক সাব্বির শাহজাহান রাঢ়ী তাকে সমাপনী পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেয়ার প্রলোভনে ওই কাজ করিয়েছে।
তখন এই বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দেয় প্রধান শিক্ষক বলে অভিযোগ করে তাহমিনা আক্তার। এমনকি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলে বখাটে দিয়ে সম্মানহানির হুমকি দিয়েছে জানায় সে।
শিক্ষিকার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সাবেক শিক্ষক আব্দুল বারেক জানান, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা এবং মেয়েকে লাঞ্ছিত করার কারন প্রধান শিক্ষক সাব্বির শাহজাহান রাঢ়ীর কাছে জানতে যান। তখন সাব্বির শাহাজাহান রাঢ়ী ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেও লাঞ্ছিত করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়। নিজের অপকর্ম আড়াল করতে বিদ্যালয় এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারেককে জামায়াত নেতা বলে প্রচার করে।
আ. বারেক আরো জানান, এ বিষয়ে তার মেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাড়াও উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং বিভাগীয় শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালকের বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন