ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৬

স্মৃতির পাতায় শহীদ কামারুজ্জামান


আমাদের সকলের প্রিয় নেতা, শ্রদ্ধেয় ভাই, জননেতা কামারুজ্জামান ১১ এপ্রিল ২০১৫ দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। ক্ষমতাসীন জুলুমবাজ সরকার তাঁকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। ভাবতে বড় কষ্ট লাগে, কামারুজ্জামান ভাই আমাদের মাঝে নেই। তিনি তাঁর রবের নিকট ফিরে গেছেন। পবিত্র কুরআনের সূরা বাকারাতে বলা হয়েছেÑ “যখন তাদের উপর বিপদ- মুসিবত আবর্তিত হয়, তখন তারা বলে আমরা আল্লাহরই জন্য এবং আল্লাহর নিকটই আমাদের ফিরে যেতে হবে।” কামারুজ্জামান ভাই শুধু আল্লাহর নিকট ফিরেই যাননি বরং অতি উচ্চ মর্যাদার মৃত্যুÑ শাহাদাত লাভ করেছেন। শাহাদাতের মর্যাদা সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সূরা বাকারাতে বলেছেন, “যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছেন তাদেরকে মৃত বলো না, তারা জীবিত কিন্তু তোমরা তাদের সম্পর্কে জানো না।” এত বড় মর্যাদার মৃত্যু সকলের ভাগ্যে জুটে না, যার অধিকারী কামারুজ্জামান ভাই হয়েছেন।
কামারুজ্জামান ভাইকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে বর্তমান জুলুমবাজ সরকার হত্যা করেছে। সরকার তার দলীয় লোকদের দিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়াতে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুঁলিয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু কামারুজ্জামান ভাইয়ের অপরাধ কি? তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার কোনটাই ঠিক নয়। তিনি এসব কোনো অভিযোগে সাথে জড়িত ছিলেন না। তার একটিমাত্র অপরাধ যা সূরা বুরুজে বলা হয়েছে “আর তারা তাদেরকে নির্যাতন করেছিল শুধুমাত্র এ কারণে যে, তারা মহান প্রশংসিত আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল।”
ইসলামী আন্দোলনের নেতা, সমাজসেবক, খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ, লেখক, বুদ্ধিজীবী জনাব কামারুজ্জামান ভাই দুনিয়ায় ন্যায় বিচার পাননি। কিন্তু আখিরাতের আদালতে অবশ্য অবশ্যই ন্যায় বিচার পাবেন।
কামারুজ্জামান ভাইকে ছাত্রজীবন থেকেই চিনি। আমি তখন ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র। যতদূর মনে পড়ে কামারুজ্জামান ভাই তখন ঢাকা মহানগরী ছাত্র সংগঠনের সভাপতি। রাজশাহীতে এক শিক্ষাশিবিরে তিনি বক্তা হিসেবে গিয়েছেন। দেখতে খুব সুন্দর, পোশাকাদিও বেশ টিপটপ। শিক্ষা শিবিরের পরিচালক ঘোষণা দিলেন ইনিই কামারুজ্জামান ভাই, ঢাকা মহানগরীর সভাপতি। কোন বিষয়ের উপর বক্তব্য দিয়েছিলেন এখন তা আর খেয়াল নেই। তবে তার কণ্ঠস্বর এবং আলোচনা ছিল মনোমুগ্ধকর। এরপর বিভিন্ন সময় তার সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে। দেখা হলেই খোঁজখবর নিতেন। দেখতে দেখতে সময় গড়িয়ে যায়। ছাত্রজীবন শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করি। বৃহত্তর ইসলামী আন্দোলনের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করতে থাকি। ফলে বহুবার কামারুজ্জামান ভাইয়ের সান্নিধ্য লাভ করার সুযোগ হয়েছে। বিশেষ করে সাপ্তাহিক সোনার বাংলায় আমি যখন যোগদান করি তখন পেশাগত কারণেই প্রায় প্রতিদিনই দেখা-সাক্ষাৎ হতো। ব্যক্তিগত আলাপচারিতা থেকে শুরু করে আন্দোলন, সংগ্রাম ইত্যাদি নানা বিষয়ে আলোচনা হতো। তার এসব আলোচনা থেকে আমরা অনেক কিছু জানতে পারতাম। কামারুজ্জামান ভাই একজন সুন্দর মনের মানুষ ছিলেন। সংগঠনের বাইরেও বহু লোকের সাথে ওঠাবসা ছিল, পরিচয় ছিল। জামায়াত কেন্দ্রীয় অফিসে তার বসার জায়গা থাকলেও তিনি অধিকাংশ সময় সোনার বাংলা পত্রিকার সম্পাদকের কক্ষে বসতেন। তিনি সোনার বাংলার সম্পাদক ছিলেন। 
তিনি যখন রুমে বসতেন তখন লোকজনের ভিড় লেগেই থাকত। আমাদের পত্রিকার সাপ্তাহিক বৈঠক হত বৃহস্পতিবার। কামারুজ্জামান ভাই থাকলে উনাকে নিয়েই আমরা বৈঠক করতাম। কিন্তু অনেক সময় সংগঠনের কাজের চাপ অথবা লোকজনদের ভিড় থাকায় আমাকে ডেকে অথবা ফোনে বলতেন ‘তোমরা বৈঠকটা সেরে নাও’। তিনি প্রায় সংখ্যায় সোনার বাংলায় লিখতেন। তাঁর কলাম ছিল খুবই পাঠকপ্রিয়। লোকের ভিড় থাকলে তিনি অনেক সময় দরজা লাগিয়ে লিখতেন। যে সংখ্যায় তার কলাম থাকতো না সে সংখ্যাটি যেন অপূর্ণাঙ্গ মনে হত। তিনি সাধারণত রাজনৈতিক বিষয়ের ওপর কলাম লিখতেন। তার বিশ্লেষণধর্মী লেখা পাঠক মহলে দারুণ সাড়া জাগাতো।
কামারুজ্জামান ভাই অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ কোনো রেজুলেশান লেখার প্রয়োজন হলে তাঁকেই দায়িত্ব দেয়া হত। আমি তাঁকে সহযোগিতা করতাম। অনেক সময় তিনি বৈঠকে বসেই লিখে ফেলতেন। আমার কাছে অবাকই লাগত। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতেন। কূটনৈতিক মহলে তার অবাধ বিচরণ ছিল। বিভিন্ন আন্দোলনের সময় তিনি লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি অসাধারণ বক্তা ছিলেন। ফলে রাজনৈতিক মহলে তিনি বেশ সুপরিচিত ছিলেন।
তিনি ছিলেন একজন চিন্তাশীল রাজনীতিবিদ। সংগঠনের কোনো বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করার প্রয়োজন হলে তিনি আমীরে জামায়াতের দৃষ্টিতে আনতেন।
জনাব কামারুজ্জামান ভাই শুধু বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন জাতীয় নেতা। তার নির্বাচনী এলাকার (শেরপুর সদর) জনগণ তাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করতেন। একটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের কারণে তিনি এমপি হতে পারেননি। কিন্তু শেষবারের নির্বাচনে তিনি লক্ষাধিক ভোট পেয়েছিলেন। ষড়যন্ত্র না হলে তিনি সেবার এমপি হতেন।
কামারুজ্জামান ভাই আমাদের মাঝে আর ফিরে আসবেন না। কিন্তু তাঁর স্মৃতি আমাদের মাঝে চির জাগরুক থাকবে। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতবাসী করুন এ কামনাই করি।

॥ আবু হাসান॥

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন