অনলাইন ডেস্ক : মিয়ানমারে মুসলমানদের হত্যাকাণ্ড চলছেই। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে দানবীয় কায়দায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচারের স্টিম রোলার চালানো হচ্ছে। দেশটিতে চলমান এমন পৈশাচিক আচরণ অব্যাহত রয়েছে। দিন যত যাচ্ছে ততই বাড়ছে নিপীড়ন। ফলে বাধ্য হয়ে জীবন বাঁচাতে সাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসছে তারা।
চলমান নির্মম ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানরা বানের পানির মতো বাংলাদেশে ছুটে আসছে। কয়েক দশক ধরে তারা অমানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে জন্মভূমি ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হচ্ছে। যুগের পর যুগ নিজ দেশে চরম বৈরী আচরণের শিকার হয়ে তারা মাতৃভূমি ত্যাগ করছে একান্তই জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনে।
সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে মর্মান্তিক ঘটনায় মিয়ানমার ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে লাখো রোহিঙ্গা মুসলমান। একই সঙ্গে সেখানকার সহিংস পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে যারা বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য বাংলাদেশ সরকার যেন নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে, সে বিষয়ে আহ্বান জানানো হয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা- ইউএনএইচসিআরের পক্ষ থেকে।
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলানদের অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউএনএইচসিআর। এক বিবৃতিতে মিয়ানমার সরকারকে সেখান মানুষদের নিয়ম অনুযায়ী রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের রাখাইন সীমান্ত চৌকিতে এক হামলার পর নিরপরাধ মুসলমানদের ওপর সাঁড়াশি অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী।
মিয়ানমারের মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইন প্রদেশের গ্রামগুলোয় ৯ অক্টোবরের পর অন্তত ৬৯ জনকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে দেশটি সেনাবাহিনী। প্রকৃতপক্ষে সেখানে নিহতের সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বদৌলতে বিশ্ববাসী দেখেছে নারী-শিশু নির্বিশেষে কীভাবে মিয়ানমারের নিপরাধ মানুষের উপর হেলিকপ্টার থেকে নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে।
মুসলমান নিধনযজ্ঞে সরাসরি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর যুক্ত হওয়ায় এই প্রশ্ন সামনে চলে আসে যে, মুসলমানরা যেন মানুষ নয়, তাদের যেন মানবাধিকার থাকতে নেই; তাদের প্রাণের কোনো মূল্য নেই। দেশে দেশে মুসলমানরা আজ অনেকটা অকারণেই জীবন দিচ্ছে। তাদের ব্যাপারে ন্যায়সঙ্গত কাঙ্ক্ষিত মানবিক আচরণ অনেকটাই অনুপস্থিত। ফলে মুসলিম নিধনজ্ঞ থামছে না।
অনেক আগে থেকে অব্যাহত দমন-পীড়ন ও অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান ঝুঁকি নিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেয়। মানবিক কারণে যাদের বাংলাদেশ আশ্রয় দেয়। আজকের প্রেক্ষাপটে তাদের আশ্রয় দেয়া কঠিন। ফলে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা বাংলাদেশকে আহ্বান জানায় সীমান্ত খুলে দিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে।
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার ব্যাপারে তারা যতটা আন্তরিক, তাদের মুসলমান হিসেবে পরিচিতি তুলে ধরতে তারা ততটাই অপারগ যেন! এমনকি তাদের মানবাধিকার সুরক্ষার আওয়াজও একেবা্রেই ক্ষীণ। তারা যদি মুসলমান না হয়ে অন্য সম্প্রদায়ের হতো, তাহলে হুঙ্কার দিত বৈকি। আর মুসলমানদের কেউ এমনটা ঘটালে সেখানে রণসজ্জা অনেক আগেই বিরাজ করত।
মুসলমানদের সঙ্গে বৈরী আচরণ আজ একরকম ওপেন সিক্রেট। বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে সর্বাধুনিক মারণাস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে। পছন্দ না হলে, সমস্যা মনে হলে একটা জঙ্গি তকমা লাগিয়ে বালিশ ছাড়া শুইয়ে দেয়া হচ্ছে। ঘটনাগুলো মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এমন অন্যায্য আচরণ ও হত্যাকাণ্ড সচেতন জনগোষ্ঠী আর দেখতে চায় না।
মায়ানমারের বৌদ্ধদের এই ভয়াবহ চিত্রটি দেখুন এখানে ক্লিক করে
মায়ানমারের বৌদ্ধদের এই ভয়াবহ চিত্রটি দেখুন এখানে ক্লিক করে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন