বাংলাদেশ বার্তাঃ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, ছাত্রলীগের একের পর নৃশংস ও লোমহর্ষক অপকর্মে দেশের মানুষ আজ আতঙ্কিত। ধর্ষণ যেন এক মহামারিতে পরিণত হয়েছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়-এর মতো সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জনের জায়গাও ছাত্রলীগের ধর্ষকদের হাতে নারীরা নিরাপদ নয়। বরং সরকারের প্রশ্রয়ে দেশকে খুন ধর্ষণের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে ছাত্রলীগ ।
তিনি আজ কুমিল্লার এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির কুমিল্লা মহানগরী আয়োজিত সাবেক মহানগরী সভাপতি ও সাবেক কার্যকরী পরিষদ সদস্য মরহুম ডা. মোজাম্মেল হকের স্বারক প্রকাশ উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান মজুমদার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক শাহ মাহফুজুল হক, দাওয়া সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরী নেতৃবৃন্দ।
শিবির সভাপতি বলেন, বর্তমানে ছাত্রলীগের ধর্ষণ ও খুন ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। সরকারের সরাসরি প্রশ্রয়ে খুন ধর্ষণের মত ঘৃন্য কাজ নির্বিঘেœ করে যাচ্ছে ছাত্রলীগ। সম্প্রতি শরিয়তপুরে ছাত্রলীগ নেতা আরিফ হোসেন হাওলাদার ছয় নারীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে বরিশালে ছাত্রলীগ নেতা সুমন হোসেন মোল্লা স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে ধর্ষণ করেছে এবং এই ধর্ষণের কথা সে আদালতে স্বীকারও করেছে। বরগুনায় তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা ও লাশ গুম করেছে পাথঘাটা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতিসহ চার নেতা। আর রাজশাহীতে শিশু ও চুয়াডাঙ্গায় মদ্যপ অবস্থায় তরণীকে ধর্ষণ করতে গিয়ে গণধোলাই খেয়েছে ছাত্রলীগ নেতারা। দেশের বেশির ভাগ ধর্ষণ ও খুনের সাথে ছাত্রলীগ ও সরকার দলীয় লোকজন জড়িত তা বার বার গণমাধ্যমের কল্যাণে জনগন দেখছে। এর আগেও জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরী পালন করে ছাত্রলীগ নেতা জাতির জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করেছিল। ছাত্রলীগের ধর্ষণ ও খুনের ধরণ এবং মাত্রা আইয়্যামে জাহেলিয়াতকেও হার মানাচ্ছে। অন্যদিকে নিজ ও প্রতিপক্ষ দলের নেতাকর্মীরা খুন হচ্ছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হাতে। প্রশ্নপত্র ফাঁসেও নেতৃত্বে দিচ্ছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। অথচ এখন পর্যন্ত তার কোনটিরই সুষ্ঠ বিচার হয়নি। ফলে উৎসাহ পেয়ে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের লোমহর্ষক অপকর্ম বেড়েই চলেছে। যা গোটা জাতিকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। তরুণী,শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা শঙ্কায় দিন যাপন করছে।
তিনি বলেন, ধর্ষণের মত জঘন্য অপকর্ম ধারাবাহিক ভাবে করলেও সরকার ও প্রশাসনের অবহেলার কারণে এসব ঘটনায় সম্পৃক্ত ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। পুলিশের পাশ কাটানো ভূমিকায় মনে হয় ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের কাছে তরুণীদের সম্ভ্রম বিক্রি ও নির্বিচারে খুন সন্ত্রাসের লাইসেন্স দিয়েছে সরকার। কিন্তু এদেশের ছাত্রজনতা এই তাদের জান-মাল ইজ্জত জঙ্গিবাদী ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দিতে মোটেও প্রস্তুত নয়। সরকার ও পুলিশ প্রশাসন যদি ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের অনৈতিক মদদ অব্যাহত রাখে তাহলে ছাত্রলীগ নামের অভিশপ্ত অপশক্তিকে মোকাবেলা করতে ছাত্রসমাজ দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে। আমরা সরকারে প্রতি আহবান রেখে বলতে চাই, ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা ধর্ষণ করতে গিয়ে অনেক জায়গায় গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে। জনতার গণধোলাই ভয়াবহ রুপ ধারণ করার আগেই ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রন করতে হবে। ইতিপূর্বে গ্রেফতারকৃত ও চিহ্নিতদের খুজে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
শিবির সভাপতি বলেন, বর্তমান অবক্ষয়ের যুগে ছাত্র নামধারী ক্রিড়ণকদের অপকর্মের যুগে ডা. মোজাম্মেল হক এক আলোক বর্তিকা হিসেবে আমাদের সামনে থাকবে। তিনি বাংলাদেশে ইসলামী আন্দেলনের এক উজ্জল নক্ষত্র। মেডিকেল কলেজের ছাত্র হওয়ার পরও তিনি ছিলেন আকর্ষণীয় চরিত্রের অধিকারী। তার চরিত্র আমাদের জন্য অনুকরনীয় হয়ে থাকবে। তার স্বারক মুক্তিকামী ইসলামী আন্দোলনের সকল তরুণদের অনুপ্রাণিত করবে। ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা তাকে কোন দিনই ভূলবে না। তিনি সফল মানুষের দৃষ্টান্ত হয়ে আমাদের মাঝে চিরদিন বেঁচে থাকবেন।
অনুষ্ঠান শেষে ডা. মোজাম্মেল হকের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন