ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৭

আরতোগ্রুল ও রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান: আবুল কালাম আজাদ

বাংলাদেশ বার্তাঃ   বর্তমান মুসলিম বিশ্ব এক চরম যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। না আছে তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা, না আছে সঠিক নের্তৃত্ব। সাগর উত্তাল নাবিকও অথর্ব এহেন পরিস্থিতি। সবাই তাকিয়ে আছে নতুন সাহসী যোগ্য নের্তৃত্বের দিকে। রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ঠিক উপযুক্ত সময়ের সাহসী নাবিক লড়াকু যোদ্ধা। তবে অবস্থা বেগতিক, কখন কি হয় কে জানে। তবুও আশা জেগে আছে মনের গভীর কোণে সুপ্ত বেদনা হয়ে আধা জাগা আধা ঘুমে। নাবিক মাত্র একজন বাকীরা আছে রঙে। কেউ আছে নারী নিয়ে কেউ প্রাচুর্যতে ডুবে, অথচ নৌকা যাচ্ছে ডুবে, একেবারে সাগরের মাঝখানে। কারো চিৎকার, কারো আর্তনাত না আছে কিউ শোনবার। মহাদূর্যোগ, মহাঘনঘটা। তারপরও চেতনা নাই, কি অদ্ভূত ব্যাপার! তবুও সান্তনা নাবিক আমাদের মন্দ না, দৃঢ়চেতা লড়াকু সৈনিক। হাল যখন ধরেছে আল্লাহর রহমত নিয়ে যাবে পাড়ে। আমরা যারা যাত্রী আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে সাহস জোগাবে নাবিককে। এ লেখা কেবল তারই উদ্দেশ্যে।

শুরুর কথা

বর্তমান বিশ্বে নতুনভাবে আবার ধর্মভিত্তিক জাতিরাষ্ট্রের প্রয়োজন ঘনীভূত হচ্ছে। পৃথিবীর দেশে যুদ্ধের দামামা বাজছে। অঘোষিত ক্রুসেড শুরু হয়েছে। পাশাপাশি মগের মুলুকের স্বেচ্ছাচারী আচারণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। আবার জাতিভেদের মিথ্যা বুলি ধর্মের অংশ বানিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর জুলুম নিপীড়ন চালাচ্ছে। তাই আজ প্রয়োজন ইতিহাস ঐতিহ্য আমাদের প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার। আর তা হবে মুসলিম জাতি গোষ্ঠির জন্য নতুন প্রেরণা। আমরা পূর্বেরও না পশ্চিমেরও না। আমাদের পরিচয় আমরা মুসলমান। এ পরিচয় ছাড়া আমাদের কি আর কোনো পরিচয় আছে? মুসলিম পরিচয় যদি সত্যিকারভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হই, তাহলে বড় মাছ যেমন ছোট মাছকে খেয়ে ফেলে, তেমনি বড় বড় শক্তি আমাদের গিলে ফেলবে। যা আমরা কোনো কিছু দিয়েই প্রতিহত করতে পারব না। আর সে লক্ষ্যেই আরতুগ্রুলকে আমাদের সামনে হাজির করেছেন মহমতী আমীরুল মুমিনীন রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। 
এটা একদিকে যেমন বিনোদন দান করছে, অন্যদিকে, আমরা আমাদের অতীত ইতিহাস ঐতিহ্য জানতে পারছি। আর সে বলে বলীয়ান হয়ে নতুন প্রেরণায় সামনে চলার লক্ষ্য স্থির করার চিন্তা। এটা ডায়নামিক চিন্তা বলা যায়। তাই সুলতান এরদোগানকে ক্যারিশমেটিক লিডার বলা হয়। সত্যি এটা এক গভীর দূরদৃষ্টির ফসল, যার কল্যাণ গোটা মুসলিম জাতিই লাভ করবে বলে আমার বিশ্বাস।

আরতুগ্রুল সিরিয়াল নিয়ে কিছু কথা

রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান আরতুগ্রুল সিরিয়ালে কেন তিনি কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করলেন, এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যই বা কি? এ নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করবো ইনশাআল্লাহ।
এমন একজন শ্রেষ্ঠ নেতার জীবনী নিয়ে আলোচনা করতে হলে অবশ্যই তাকে ইতিহাসের গভীর জ্ঞানে পারদর্শী হতে হবে। সমসাময়িক বিশ্বের সার্বিক বা সম্যক ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী। তাই আমি মাত্র সামান্য কিছু আলোকপাত করা ছাড়া বিস্তারিত বা গবেষশণামূলক তত্ত্বগত বা তথ্যগত কোনো বিষয়েই আলোচনা করা সম্ভব নয়।
সেই ১২৮০ সালের কথা। যখন মুসলমান সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি লাভ করলেও বিভিন্ন আঞ্চলিক নেতৃত্ব একে অপরের প্রতি অবিশ্বাস অন্তর্দ্বন্দ্ব, ক্ষমতা দখল, ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয়, তদুপরি খ্রীষ্টান নাইটদের ষড়যন্ত্র মুসলিম শক্তির উত্থান রোধকল্পে হেন কাজ করতে তারা পিছ পা হয় নাই। ঠিক এমনি এক মুহূর্তে তুর্কীর ছোট একটি গোত্র কাই বংশ। এ বংশের এক লড়াকু যোদ্ধা সামান্য কিছু সহযোগিদের নিয়ে একের পর এক বিজয় লাভ করতে থাকেন।
ভাবতে বিস্ময় লাগে শুধু কি শক্তির জোরেই পরবর্তীতে তৎকালীন বিশ্বের পূর্ব ইউরোপ থেকে শুরু করে ভারতীয় উপমহাদেশসহ অন্যান্য বিশ্বশক্তিকে করতলগত করে শ্রেষ্ঠ সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন করতে সক্ষম হয়েছিলেন? আসলে সাম্রাজ্য বিস্তার এর মূল উদ্দেশ্য ছিল না। তা নাইটদের কথাবার্তা এবং কার্যাবলিতে তা প্রমাণ করে।
তিনি গোটা দুনিয়ায় ইসলামে আলো পৌঁছে দেয়াই মূল লক্ষ্য ছিল। তার কোনো বিজয়ই নিজের সাফল্য মনে করেন নি। সব সময়ই তা আল্লাহর রহমত দয়া মনে করতেন। আর সে লক্ষ্যেই জীবনকে তুচ্ছ মনে করতেন।
আরতুগ্রুল শুধু দেশ জয় বা সাম্রাজ্য বিস্তৃতি তার প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল না। বরং তিনি এটাকে মিশন হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন। এটা তার সংলাপ, কার্যাবলি তার প্রমাণ বহন করে। আর সে জন্য মৃত্যু ছিল তাদের কাছে তুচ্ছ ব্যাপার। যুদ্ধ ছিল তাদের কাছে খেলনা, বরং নাইটদের হাত থেকে মানবতাকে রক্ষা করা এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টিই ছিল এর একমাত্র লক্ষ্য। আর সে জন্য সমস্ত ভয়কে উপেক্ষা করে সামনে ছিল পথ চলা। তাদের এ বৈশিষ্ট্যের কারণে নাইটরা সহ অন্যান্য বিশ্বাসী লোকেরা এবং জাতি গোষ্ঠির মানুষ পর্যন্ত দলে দলে ইসলামের পতাকাতলে সামিল হয়েছে। 
সেই প্রেক্ষাপট আজও বিদ্যমান। পার্থক্য শুধু সময়ের। দুর্ভাগ্য এই বিষয়টা মুসিলম নের্তৃত্ব সেই আগের মতই ছোট ছোট ভূখন্ড, ভাষা, বর্ণ অথবা ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধির জন্য মহা ব্যস্ত। এটাও বিজাতীয়দের কূটকৌশল যা আমাদের জাতির তথা মুসলিম জাতির নেতারা বুঝতে অক্ষম। আর যত দিন তারা না বুঝবে ততদিন আমাদের জুলুম নিপীড়ন আরো বাড়তে থাকবে, এবং তা আমাদেরই জাতি গোষ্ঠির লোকদেরই হাতে। যেমনটা হয়েছিল খ্রীষ্টান হওয়ার পরও নাইটদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে তাদেরই জাতি গোষ্ঠির লোক। তারা ধর্ম টাকে কেবল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে মাত্র। ধর্মের লেবাস পড়ে তারা মানুষকে প্রতারণা করেছে। নারী, মদ বিলাস তো আছেই। সেজন্যই নাস্তিকরা এবং সেক্যুলারের প্রবক্তারা ধর্মকে আফিমের সাথে তুলনা করেছেন। এ ধারণা অবশ্যই আমাদের পাল্টাতে হবে। রিসেপ তাইয়েপ এরদাগোন তুর্কী প্রসিডেন্ট হলেও তিনি এখন সমস্ত মুসলিম বিশ্বের জনগণের কাছে অঘোষিত আমীরুল মুমিনীন। কারণ একটাই তিনি আসল সত্যটা সত্যিকারভাবে উপলব্ধি করেছেন। আর সে লক্ষ্যেই বিনোদনের পাশাপাশি জীবন বোধ জাগিয়ে তোলার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন নিরলসভাবে। বস্তুত: এই সত্যটা আমাদের প্রাজ্ঞজনরাই সেভাবে উপলব্ধি করছে না যেভাবে করা উচিত। বলতে গেলে এরদাগোনের নিজস্ব প্রচেষ্টায় এবং অর্থায়নে আর্তুগ্রুল, সুলতান সোলেমান এবং ক্রুসেডারের মত অসাধারণ কালজয়ী ব্যক্তিত্বদের জীবনী নিয়ে এধরনের মেগা সিরিয়াল তৈরি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নিজে এবং তার পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্গম অঞ্চলে শুটিং স্পটে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং কলাকুশলীদের সাথে হাত মিলিয়ে তার উৎসাহ যুগিয়েছেন। এটাও তার বিচক্ষণতার পরিচয় বহন করে। আল্লাহ তার সমস্ত প্রচেষ্টা কবুল ও মঞ্জুর করুন। আমিন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন