বাংলাদেশ বার্তাঃ বর্তমান মুসলিম বিশ্বের নেতারা যখন নিজ কৃতকর্মের কারণে সর্বত্র আলোচিত-সমালোচিত, তখন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট জনাব রেজেব তায়েপ এরদুয়ান একমাত্র ভাগ্যবান নেতা যার ভাল-মন্দ অন্তত মুসলিম দেশগুলোতে নির্বিচারে প্রশংসিত। অন্যান্য মুসলিম নেতাদের তুলনায় মুসলিম জনপ্রিয়তায় শীর্ষে থাকা তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এতটাই ভাগ্যবান যে, অধিকাংশ মুসলমানরা শুধুমাত্র জনাব এরদুগানের প্রশংসাই শুনতে চান । কেউ সমালোচনা করলে সত্য-অসত্য যাচাই না করে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠা ভক্তবৃন্দ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে । যা জনাব এরদুগানের আত্মবিশ্বাসকে ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে তুলেছে নিঃস্বন্দেহে।
তার এ জনপ্রিয়তার পেছনে রয়েছে ১৫ বছরের বিশাল কর্মযজ্ঞ, যা আলোচনা- সমালোচনা দুটিরই দাবি রাখে। কারণ মানব নেতৃত্বের বিকাশ কেবল সৎ কাজের প্রশংসা এবং ভুল বা অসৎ কাজের সঠিক পর্যালোচনা এবং তার যথার্থ মুল্যায়নের মধ্যদিয়েই হয় । বুদ্ধিমান নেতৃত্ত্ব সমালোচকদের কথা বা লিখনি শুনে এবং তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়, স্বৈরাচারী নেতৃত্ব সমালোচকদের শুনার পরিবর্তে দমন করে। তুরঙ্কে বসবাসের ফলে এ সমাজের কিছু বাস্তবতা, ভাল-মন্দ দেখার, বুঝার সুযোগ হয়েছে এবং হচ্ছে। মানুষের মনের ভিন্নতার ফলে প্রকাশ ভঙ্গি ও ভিন্ন হয়। তবে সত্য, বস্ত-নিষ্ট প্রকাশ জরুরি। এতে সত্যান্বেষনীরা যাচাই করার সুযোগ পাবেন, লেখাটির সত্য-অসত্য যাচাই করে গঠনমুলক পরামর্শ আশা করি। আবার কারো কাছে বিরক্তিকর মনে হলে আগেই ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টি কামনা করছি। আমার বিগত একটি লেখায় অনেক ভাই বিস্তারিত লেখার আশা করে কমেন্ট করেছিলেন। আমি আমার সীমাবদ্ধ অবস্থান থেকে যা জানার, বুঝার সুযোগ পেয়েছি, ভাইদের সাথে শেয়ার করার আশায় লিখছি। কাউকে ছোট-বড় করার চেয়ে আমি বাস্তবতাই তুলে ধরতে চেয়েছি।
ভাল-মন্দ মিলিয়ে বিশাল ও সুদীর্ঘ ওসমানীয় খেলাফাতের পতনের পর এতিহ্যবাহী ওসমানীয় খেলাফাতের সকল ঐতিহ্যকে রাতা-রাতি মুছে ফেলে পশ্চিমা ধাঁচে গড়ে ওঠা সেকিউলার তুর্কির অনেকগুলো সমস্যার মাঝে একসময়কার বড় সমস্যা ছিল স্কুল,কলেজ, শিক্ষা প্রতিস্ঠানে মহিলারা মাথায় কাপড় দিতে পারতেন না। ২০০২ সালে একেপার্টি ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে এই নিষেধাজ্ঞ প্রত্যাহার করে যা তুর্কি জনগনের মাঝে সরকারের প্রতি গভীর আস্থা ও ভালবাসা এনে দেয়। যদিও এখানকার হিজাবীদের পোশাক স্টাইল প্রসংগে ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা নিয়ে যথেস্ট বিতর্ক হতে পারে। তবুও আশার কথা হল কেউ কর্ম ক্ষেত্র, শিক্ষা প্রতিস্ঠানে মাথায় কাপড় দিতে চাইলে আইনগত কোন বাধা নেই ।
যাতায়াত ব্যবস্থা
এ সরকারের আরেকটি বড় সফলতার জায়গা হল যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন। মিল্লিগুরুশ আন্দোলন থেকে লিবারেলিজমের প্রথম দলছুট নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী তুরগুত ওযালের হাত ধরে শুরু হওয়া সড়ক ও যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন জনাব এরদুগানের আমলেও ব্যাপক গুরুত্ব পায়। বিকল্প সড়ক তৈরীর মাধ্যমে শহরে যানযট কমানো, ট্যানেল, সেতু ইত্যাদি জন জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে । মার্মারা সাগরের ৩য় সেতু হিসাবে সাগরের নিচ দিয়ে নতুন সেতু গড়ে তুলা হচ্ছে যা জনসাধারনের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ তৈরী হচ্ছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে টেন্ডার পদ্ধতি, ব্যবস্থাপনা, টুল আদায় ইত্যাদিতে সচ্ছতার প্রশ্নে যথেষ্ট বিতর্ক আছে।
চিকিৎসা ক্ষেত্রঃ
জনাব এরদুয়ানকে আকাশে উড়ানোর মত প্রজেক্ট তুরস্কের চিকিৎসা ক্ষেত্র । তুর্কি জনগণ ইন্স্যুরেন্সের অধীনে হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসা সহায়তা পেয়ে থাকে। শহরগুলোতে অনেক ক্ষেত্রে পুরাতন হাসপাতালগুলোকে বাদ দিয়ে নতুন হাসপাতাল ভবন তৈরী করে চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টায় অনেকাংশে সফল বলা যায়। নতুন নতুন হাসপাতাল ভবন তৈরী করে চিকিৎসা সহায়তা বৃদ্ধি করায় জনগন জনাব এরদোগানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এত সব আয়োজন সত্বেও প্রতিনিয়ত রুগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তুর্কি সচেতন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও লক্ষনীয়। নতুন হাসপাতাল ভবন তৈরী, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি যদি রোগ নির্মুলে ভুমিকা রাখে তাহলে এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কিন্তু যদি রোগের উন্নয়ন হয় অর্থাৎ রোগ বৃদ্ধি পায় তাহলে মনে হয় প্রশ্ন করা অবান্তর হবেনা যে, সরকার কি সত্যি রোগ কমানোর চেস্টায় এসব উদ্যোগ নিচ্ছেন নাকি চিকিৎসা খাত থেকে আয় বৃদ্ধির চেস্টায় এসব চোখ ধাধানো হাসপাতাল ভবন, সে প্রশ্ন ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে উঠেছে। কারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই তুর্কিতে রুগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা বর্তমান পরিসংখ্যানই বলে দেয়।স্বাস্হ্য মন্ত্রনালয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী ৭৫ মিলিয়ন অধীবাসীর তুরস্কে ২০১৪ সালে ২৯২ মিলিয়ন বার (মোআইনা)রোগীরা ডাক্তারের চিকিৎসা নিয়েছে। ২০১০ সালে বার্ষিক ৫.৫ মিলিয়ন রোগীর অপারেশন হয়েছিল যা ২০১৪ সালে এসে ১০ মিলিয়ন অতিক্রম করেছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ২০১০ সালে ৬.৩৬১ মিলিয়ন ছিল যা ২০১৪ সালে ৭.৫ মিলিয়নে উন্নীত হয়েছে। নিচের লিংকে দেখুন বিস্তারিত http://www.haberturk.com/…/1087657-son-5-yilin-muayene-amel…
প্রকাশিত রিপোর্ট মতে সরকারও হাসপাতালগুলোকে নির্দিষ্ট সংখ্যক রোগীর ব্যাপারে আশ্বস্থ করেছে।তাহলে বাজারের খাদ্যদ্রব্যগুলোতে দিন দিন আমাদের দেশের মত কম মানের পন্য বা ভেজাল বৃদ্ধি পাওয়া একই সুত্রে গাথা কিনা চিন্তার বিষয়।
প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী তুরষ্কের ওষধ সেক্টরের ৪৫% নিয়ন্ত্রন করে আমেরিকা। তুরষ্ক কৃষিকাজের জন্য বীজের বড় অংশ আমদানী করে ইসরাইল থেকে। যেমন ২০১৪ সালের টমেটো বীজ আমদানীর ছোট্ট একটা পরিসংখ্যান দেখুন। তুর্কি ইসরাইল থেকে ২২% টমেটো বীজ আমদানী করে যেখানে ফ্রান্স থেকে ১৮% আমেরিকা থেকে ৯%, ইতালি থেকে ৮%, চীন থেকে ৮% বীজ আমদানী করে। https://odatv.com/israilden-ne-kadar-tohum-aliyoruz-1002151…
এখন প্রশ্ন হল ইসরাইল থেকে আমদানীকৃত বীজগুলো কতটুকু নিরাপদ ?
একটি কল্যান রাষ্ট্রে দেশ থেকে সুচিকিসার মাধ্যমে রোগ ও রোগীর সংখ্যা কমানোই কাম্য। কিন্তু শহর চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর প্রকাশিত এক রিপোর্টে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের ভবিষ্যত ২৫ বছরের পরিকল্পনার মধ্যে হাসপাতালের বেডে রোগীর হার ৭০% এর নীচে না নামানোর পরিকল্পনাই লক্ষনীয়। অর্থাৎ হাসপাতালগুলোতে ৭০% এর নীচে যেন সীট খালী না থাকে সে পরিকল্পনার অভিযোগ সত্যি ফেলে দেয়ার মত নয়।বিস্তারিত দেখুন এই লিংকে https://saadet.org.tr/…/1502289420sehir-hastaneleri-raporu-…
ইসরাইল সম্পর্ক ও মিল্লিগুরুশ আন্দোলন থেকে আলাদা হওয়ার কারণ
বর্তমান বিশ্বে সবার সাথে বন্ধুত্ব কারু সাথে শত্রুতা নয় নীতিতে মুসলমানরা ইচছায়-অনিচ্ছায় বিশ্বাস করলে ও অমুসলিমরা করে কিনা তা বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্বের প্রশ্নে অমুসলিমরা সেই আদি কাল থেকেই নির্ভরতার পরিচয় দিতে পারেনি। মুসলমানরা শক্তিশালী হোক, দুর্বল হোক সর্বাবস্থায় যাকেই বিশ্বাস করেছে, ক্ষতি করতে ভুল করেনি অমুসলিমরা, বিশেষ করে ইহুদীরা। এজন্যই আল্লাহ কিছু সীমা-রেখা টেনে দিয়েছেন । আল্লাহ মুসলমানদের প্রধান শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ইহুদীদেরকে। তুরস্কের মিল্লিগুরুশ নেতা জনাব এরবাকানের কার্যক্রমের প্রধানত বিরুধী ছিল ইহুদীবাদ, কারন মুসলমানরা শত্রু চিনতে ভুল করলে ও ইহহদীরা কখনোই ভুল করেনি । এই ইসরাইল ও আমেরিকাকে কৌশলগত বন্ধু হিসাবে গ্রহন করেই একে পার্টির যাত্রা শুরু করেন জনাব এরদুয়ান।
ফাজিলেত পার্টি(বর্তমান সাদাত পার্টির) থেকে আলাদা হবার মুল চার কারনের মধ্যেপ্রথমটি ছিল ইসরাইল ও আমেরিকাকে কুশলগত বন্ধু হিসেবে গ্রহন করা।
দ্বিতীয় কারণ ছিল সুদ ভিত্তিক পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থা প্রসঙ্গে।(অর্থাৎ এরবাকান ক্ষমতায় থাকাকালে রাস্ট্রের অর্থব্যবস্থা সুদমুক্ত করার অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়ে দেশকে সুদমুক্ত একটি অর্থব্যবস্থা উপহার দিতে চেয়েছিলেন এবং অনেক ক্ষেত্রে সফলতাও পেয়েছিলেন। এতে তুরষ্ক লাভবান হলে ও ক্ষতি হত সারা বিশ্বের প্রধান লুটেরা-সন্ত্রাসী ইসরাইলের। তাই ইসরাইলের সাথে কৌশলগত জোট করার জন্য সুদভিত্তিক অর্থব্যবস্থা চালু করাও জরুরী হয়ে পড়ে। জনাব এরদোগানসহ উচ্চ পর্যর্যিায়ের নেতারা সুদের পক্ষে বক্তৃতা দিতে শুরু করেন এবং সুদকে আল্লাহর দেয়া একটি “বরকত” বলে মন্তব্য করেন ) https://www.youtube.com/watch?v=vh9OSLeUrN0
তৃতীয় কারণ ছিল, ইউরোপীয়ান খৃশ্চিয়ান সভ্যতাকে তুরষ্ক সভ্যতার প্রজেক্ট হিসেবে গ্রহন করবে কিনা। জনাব এরবাকান বলেছিলেন, ৯৯% ভাগ মুসলমানদের দেশ তুরষ্ক কখনই ইউরোপকে সভ্যতার প্রজেক্ট হিসাবে গ্রহন করতে পারে না। তিনি বলেছিলেন, ইউরোপ থেকে মুসলমানরা গ্রহন করতে পারে এমন কোন সভ্যতা অন্তত তাদের নেই। কিন্তু জনাব এরদোগান সাহেবরা ইউরোপকে (মেদেনিয়াত প্রজেসি) সভ্যতার প্রজেক্ট হিসাবে গ্রহন করে ইউরোপিয় ইউনিয়ন ভুক্ত হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে থাকলেন । কিন্তু আফসোসের বিষয় হল ইউরোপ তুর্কিকে ইউরোপিয়ান জোট ভুক্ততো করলই না বরং খোদ বৃটেন গণভোটের ফলে কিছু দিন আগে ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে গেল।
চতুর্থ কারণ ছিল লিবারেল ডেমোক্রেসি।
মৌলিক এ চারটি কারণকে সামনে রেখে জনাব এরবাকানের মিল্লিগুরোশ তথা ইসলামী আন্দোলন থেকে আলাদা হয়ে নিজেরা একেপি (আদালাত এবং কালকিনমা) পার্টি গঠন করলেন।
মিল্লিগুরুশের আদর্শিক পরিচয় মুছে ফেলার জন্য আমরিকা, ভ্যাটিকান সিটিসহ বিভিন্ন দিকে সফর শুরু করলেন । “আমরা মিল্লিগুরুশের পোশাক খুলে ফেলেছি” ইত্যাদি বক্তৃতা দিয়ে নিজেদেরেকে লিবারেল ডেমোক্রেসির প্রবক্তা হিসাবে উত্থাপন করেন। দেখুন বিস্তারিত https://www.youtube.com/watch?
v=RCyxrjpdIik&t=7s Erbakan , Tayyip Erdoğan'ın nasıl gömlek değiştirdiğini anlatıyor
ভাঙ্গন পরবর্তী পরিস্থিতি
ইতোপুর্বে বারবার নিষিদ্ধ হলেও সবাই একজোগে কাজ করায় পরবর্তীতে আরো শক্তিশালী হয়ে ক্ষমতায় এসে সত্যিকার অর্থে দেশ ও মুসলিম মিল্লাতের জন্য অকল্পনীয় উন্নয়ন ও ভুমিকা রাখছিলেন জনাব এরবাকান। কিন্তু জনাব এরদোগানসহ তুলনামুলক ভাবে তরুন অংশটি তাদের এতদিনের অভিবাবক জনাব এরবাকানকে প্রত্যাখ্যান করে হঠাৎ নতুন পার্টি গঠন করায় সত্যিই দুর্বল হয়ে পড়েন জনাব এরবাকান সহ মুল আন্দোলন। একটি সংগঠন পরপর চারবার নিষিদ্ধ হয়ে সবকিছু ক্রোক বা নিষিদ্ধের আওতায় পড়ে যতটুকুনা দুর্বল হয়েছিল তার চেয়ে বেশী দুর্বল হয়ে পড়ে নিজের গড়েতুলা লোকজন যখন ছেড়ে চলে যায় তখন । তবু থেমে থাকেনি আন্দোলন । শুরু করেন আবার নতুন পথচলা। গড়ে তুলেন সাদাত পার্টি। নেতৃত্বের সংকট দেখা দেয়, ফলে বৃদ্ধ বয়সে আবার পার্টির সভাপতির দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
অন্য দিকে সুবক্তা, ক্যারিশম্যাটিক নেতা জনাব এরদোগানের পক্ষে প্রচারনা চলে যে, এটি এরবাকানের নতুন একটি পরিকল্পনা। পার্টি বারবার নিষিদ্ধ হওয়ার ফলে ভিন্ন নামে নতুন পার্টি চালু করিয়েছেন। ফলে এতদিন এরবাকানের গড়ে তুলা ভোটারগণ মিডিয়ার ব্যাপক কৌশলী প্রচারনার মুখে বিশ্বাস করতে শুরু করলেন এটি এরবাকানের নতুন পরিকল্পনা তাই এরদোগানকে ভোট দিলে এরবাকানকে দেয়া হবে তাই এরদোয়ানের ভোট বেড়ে যায়।
ইসলামী ভাবধারার জনগণের মাঝে ভীতি সঞ্চার করা হয় এই মর্মে যে, এরদোগানকে ভোট না দিলে কামালপন্থীরা (সিএইচপি) ক্ষমতায় আসবে, আবার জুলুম নিরযাতন শুরু করবে। ফলে ইসলামী ভাবধারার লোকজন কামালপন্থীদেরকে ঠেকাতে জনাব এরদোগানকে ব্যাপক সমর্থন দিতে থাকে।
অন্য দিকে ইসরাইলী-আমেরিকান লবি জনাব এরদুয়ানকে জনাব এরবাকানের তুলনায় অধিকতর লিবারেল ও জনকল্যানমুখী পরিচয় দিয়ে ব্যাপক সমর্থন করতে থাকে।সুদের ব্যাপক প্রচলন, লিবারেলিজম, ব্যভিচারকে শাস্তিযোগ্য অপরাধের তালিকা থেকে মুক্ত করে দেয়া, ইসরাইল ও আমেরিকা কৌশলগত বন্ধু, ইত্যাদি কারণে ইসলাম বিমুখ বা বিরুধী জনগন ও ব্যাপক সমর্থন দিতে থাকে। যদিও এখন স্বার্থ পুরণ হওয়ায় জনাব এরদোগানের বিকল্প দল বা ব্যক্তি খুঁজছে পশ্চিমারা যা বিভিন্ন সময়ের অভ্যুত্থান চেষ্টা থেকে বুঝা যায়।
সাদাত পার্টির কম ভোটের প্রশ্নে জনাব এরবাকানের ভিডিও, জনাব রেজাই কোতান, বর্তমান সভাপতি জনাব তেমেল কারামোল্লাওগলোর বক্তব্য থেকে উপরোক্ত কারণগুলোর পাশাপাশি আমার কাছে আরেকটি কারণ গুরুত্বপুর্ণ মনে হয়েছে তা হল তুর্কির নির্বাচনের ব্যারেজ সিস্টেম । অর্থাৎ সাধারণ নির্বাচনে কোন দল ১০% ভোট না পেলে সে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেনা। ফলে ভোটারগণ হতাশ হয়ে আর ভোট দিবেনা একান্ত নিবেদিত কর্মী ছাড়া। এখন একেপির ভোটের জোয়ারের এই দিনে একজন ভোটার চিন্তা করে সাদাত পার্টিকে ভোট দিলে যদি ১০% না পায় তাহলে আমার ভোট নষ্ট হবে তার চেয়ে বরং এরদোগানকে ভোট দিই। তাই সাদাত পার্টি বরাবরই দাবী করে আসছিল যেন ব্যারেজ সিস্টেম বাদ দেয়া হয় । এখন সাদাতের ভোট বাড়া মানে একেপির ভোট কমা। তাই জনাব এরদোগান সাদাত পার্টির ভোট বৃদ্ধির আশংকায় ব্যারেজ সিস্টেম বহাল রেখেছেন। ফলে সাদাত পার্টির ভোট আটকে আছে ২% এর মধ্যে । চলবে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন