ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

মঙ্গলবার, ৫ জুন, ২০১৮

বাবা ফিরবে, নাম রাখবে


চব্বিশ দিন বয়সের যমজ শিশু দুটোকে পাশে নিয়ে কাঁদছেন মা। ডা. সজীবের স্ত্রীর চোখ দিয়ে যেন রক্তের স্রোত বেয়ে নামছে। বাচ্চা দুটো তাকিয়ে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে আপন মুখের দিকে। ভূমিষ্ঠ হবার পর থেকে যতবার মায়ের চোখে চোখ পড়েছে, বাচ্চা দুটি ততবারই নোনতা জলের ঘোলাটে আবরণ দেখতে পেয়েছে। আজকের চোখ দুটো আর ঘোলাটে নয়। এ যেনো রক্তঝরা লালচোখ।
সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর নিখোঁজ স্বামী ডা. সজিব। প্রায় মাস দেড়েক কোন খোঁজ নেই। সাদা পোষাকে তুলে নিয়ে গেছে পুলিশ। স্বামীর অপেক্ষায় পথ চেয়ে থাকতে থাকতে শুরু হলো তীব্র প্রসব যন্ত্রণা। পরম মমতায় মাথায় হাত রেখে এই কঠিন মূহুর্তে কপালের ঘামটুকু মুছে দেবার মানুষটি পাশে নেই। প্রসবের কষ্ট যেনো স্বামীর শূণ্যতার কষ্টে হারিয়ে গেছে। সময় গড়িয়ে ফুটফুটে শিশু কেঁদে উঠলো মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়ে। একজন নয়, দুজন। কিন্তু কোলে তুলে প্রথমে যে মানুষটির কান্না থামিয়ে হাসতে শেখানোর কথা সেই মানুষটিই নেই। আজানের ধ্বনিতে পৃথিবীর প্রথম শ্রবণের স্বাদ দিতে পারেনি গর্বিত এই পিতা।
মৃত্যুর পরোয়ানা মাথায় নিয়ে হায়েনাদের অসভ্য হাসি দেখতে দেখতে বাবা হবার দিন গুনছেন ডা. সজিব। অজ্ঞাত জায়গার বদ্ধ ঘরে বসেই ভাবছে, ওরা কি সুস্থভাবে পৃথিবীতে এসেছে? হয়তো ওদের কোলে তুলে নিতে পারবোনা কিন্তু কার মতো দেখতে হবে ওরা? আমার মতো নাকি ওদের মায়ের মতো? কতরকম প্রশ্ন ঘুরছে মাথায়। বড্ড লোভ হচ্ছে নিজের ঔরসজাত সন্তানকে একবার বুকে জড়িয়ে নিতে।
অন্ধকার ঘরটিতে প্রতিদিন-ই যেনো একবার করে মৃত্যু হয়। টর্চারের যন্ত্রণা আর পিশাচদের চিৎকারে বিষিয়ে উঠেছে অন্তর আত্মা। পাশে জহুরুলের মতো সঙ্গী আছে বলেই হয়তো এতো কষ্টের মাঝেও সান্তনার স্বাদ পায় ডা. সজিব। কিন্তু জহুরুলের মায়াভরা মুখটা দেখা হয়না বহুদিন। কেবল পাশ থেকে কন্ঠটা শুনতে পায়। চোখ যে সেই থেকেই বাধা। দিনভর কেবলই সাহস যুগিয়ে যায় জহিরুল। কত প্রেরণার্থক শক্তি তার কন্ঠে। আর ঘরটির চারদিকে পরিচিত রক্তের সুভাস যেনো মোহিনীশক্তি জোগায়। জসিম উদ্দিন, আবুজর গিফারী, সোহান, ইবনুল পারভেজ সহ অনেক পরিচিত ঘ্রাণ। পাশ থেকে জহুরুল ফিসফিস গলায় বলতে থাকে, 'বুকভরে নিশ্বাস নিয়ে দেখো আমাদের ভাইদের রক্তের জান্নাতি ঘ্রাণ ভাসছে। ওরা বরণমালা নিয়ে আমাদের জন্য তোরণ সাজিয়ে অপেক্ষা করছে। প্রভুর চাইতে স্ত্রী, সন্তান, সম্পদ কোন কিছুই তো আমাদের কাছে বেশী প্রিয় নয়। কালেমা জপতে জপতে প্রস্তুত হও গৌরবান্বিত মৃত্যুর।'
বাবা এসে নাম রাখবেন তার কলিজার টুকরো সন্তানদের। আকীকা হবে, সেই সাথে নিখোঁজ স্বামীকে ফিরে পাবার আনন্দ। জমিয়ে রাখা ইচ্ছে গুলো ভাবতে ভাবতে আবার কেঁদে উঠলো ডা. সজিবের স্ত্রী। স্বামীর গুলিবিদ্ধ লাশের খবর পেয়ে স্বপ্ন গুলোও দাফন হয়ে গেছে। বাবার দেয়া নামে আর বেড়ে ওঠা হবেনা ওদের। মায়ের চোখের ভাষাটাও ঠিক বুঝতে পারছে বাচ্চা দুটো। এই চব্বিশ দিনের জীবনেই ওরা শিখে নিয়েছে কষ্টকে বুকে চেপে বাঁচতে। কিন্তু মায়ের মলিন মুখটা ক্ষণেক্ষণে কাপিয়ে দিচ্ছে ছোট্ট হৃদপিন্ড গুলোকে। হয়তো পিতৃহীন পৃথিবীতে কষ্টের শুরু এখান থেকেই . . . .।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন