বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ঈদের দিনে আরব ইতিহাসবিদ আল ওয়াকিদির (মৃত্যুসন ৮২৩ খৃ.) ঘরে কোন পয়সাকড়ি নেই যা দিয়ে ছেলেমেয়েদের জন্য কিছু কেনাকাটা করবেন। স্ত্রীর তাকিদে আল ওয়াকিদি ঘনিষ্ট হাশেমী বন্ধুর কাছে গেলেন কিছু পয়সা ঋণ করতে। উদার বন্ধুর হাতের কাছেই ছিল থলেভর্তি স্বর্ণমুদ্রা। পুরোটাই দিয়ে দিলেন তাকে।
আল ওয়াকিদি সবেমাত্র স্বর্ণমূদ্রার থলেটি নিয়ে বাড়ি পৌছেছেন, এমন সময় তার আরেক বন্ধু হাজির; একই আবদারে। আল ওয়াকিদি মনস্থির করলেন এই থলের অর্ধেকটা দিয়ে দিবেন তার বন্ধুকে। কিন্তু আল ওয়াকিদির এমন সিদ্ধান্তে কড়া আপত্তি জানালেন তার স্ত্রী। স্ত্রীর সাফকথা- তোমার হাশেমী বন্ধুর কাছে যখন তুমি গেলে সে চিন্তুা-ভাবনা না করে তোমাকে পুরো থলেটাই দিয়ে দিল; আর তুমি কিনা তোমার এই বন্ধুকে মাত্র অর্ধেকটা দিতে চাচ্ছ, তুমি তো বেশ কৃপণ!
স্ত্রীর এমন আপত্তিতে শেষপর্যন্ত পুরো থলেটাই নিয়ে আসলেন বন্ধুকে দেয়ার জন্য। থলের দিকে চোখ পড়া মাত্রই বন্ধুর চক্ষু চড়কগাছ। এ থলে তুমি কোথায় পেলে? এ তো আমি আমাদের হাশেমী বন্ধুকে ধার হিসেবে দিয়েছিলাম। অবাক আলওয়াকিদিও। তাহলে এই ঘটনা! তুমি তোমার সকল অর্থকড়ি আমাদের হাশেমী বন্ধুকে ধার দিয়েছিলে, তার কাছে ধার চাওয়ায় সেও পুরোটা আমাকে ধার দিয়ে দেয়, আর এখন একই থলে আমি তোমাকে ধার দিচ্ছি! দুজনেই মুগ্ধ, তাদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের দৃষ্টান্তে এবং উদারতায়।
খবর ছড়িয়ে পড়ল পুরো শহরে। এর মুখ ওর মুখ হয়ে খবর গিয়ে পৌছল খলিফা মামুনুর রশীদের কাছেও। নিজের এলাকায় এমন ঘটনা ঘটনে অনেক উৎফুল্ল তিনি। নিজের দরবারে তিন জনকেই আমন্ত্রণ জানালেন সম্মানের সাথে। তারা যখন আসলেন, খলিফা তাদের প্রত্যেকের জন্য এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা পুরষ্কার ঘোষণা করলেন। তিন জনকে তাদের প্রাপ্য এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা হস্তান্তর করার পর খলিফা আল ওয়াকিদিকে আবার ডাকলেন। হাতে আরেকটি থলে গুজে দিলেন। তার নিজেরটার চেয়ে বড়, এমনকি দ্বিগুণ। বিস্ময়ের সাথে আল ওয়াকিদি জিজ্ঞেস করলেন, এটা কার জন্য! খলিফা উত্তর দিলেন, ‘তোমার স্ত্রীর। তবে সে তোমার চেয়েও উদার; তাই তার জন্য দুই হাজার স্বর্ণমূদ্রা।’
লিখেছেনঃ Ehsanul Islam
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন