বাংলাদেশ বার্তাঃ আওয়ামীলীগের প্রথমসারির একজন নেতার ছেলে বি চৌধুরী- বাবা কফিল চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত যেতে চাইলে তিনি বাবাকে একলাই ভারত সীমান্তে রেখে আসেন, বৃদ্ধ বাবার সাথে যেতে রাজি হন নি এবং মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন নি। বাবা আর ভায়রা শহীদুল্লাহ কায়সার থেকে শুরু করে পারিবারিক আত্বীয়দের সবাই ঘোর আওয়ামীলীগার এবং চরম বামপন্থী। সারাজীবন তাদের সাথেই চলাফেরা করেছেন, তাদের নেটওয়ার্ক বজায় রাখা এবং তাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়াই তার সামাজিকতা।
আনুষ্ঠানিক ধর্মকর্ম করেন, তবে সাংস্কৃতিক ভাবে চরম বাম-রাম মনষ্ক, রবীন্দ্রনাথকে প্রায় পূজা করেন, রবীন্দ্রসংগীতকে প্রার্থনার মতো মনে করেন, চেম্বার থেকে বাসা-গাড়ি সারাক্ষন রবীন্দ্র সংগীতে ডুবে থাকেন। ক্ষমতার আগ্রহেই জিয়াউর রহমানের বিএনপি তে যোগ দিয়েছিলেন, আওয়ামীলীগের তার বাবার জেনারেশনের সিনিয়র নেতাদের সাথে পাল্লা দিয়ে অতিদ্রুত বড় পদে যেতে পারবেন না- সেই হিসেব থেকে। নতুন দল হিসেবে বিএনপির নেতৃত্বশূন্যতার সুযোগে সহজে অনেক বড় পদ পেয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি তে থাকা অবস্থাতেই তাকে সবাই আওয়ামীলীগার বলতো।
বিএনপির দ্বিতীয় প্রধান নেতা থাকা অবস্থাতেই তার সামাজিক সাংস্কৃতিক নেটওয়ার্ক এবং মনের টান আওয়ামীলীগের প্রতিই বেশি ছিল- তা খালেদা জিয়া সহ সবাই জানতো, এমনকি স্বয়ং আওয়ামীলীগের অনেক নেতাই তাকে নিজেদের লোক হিসেবেই দেখতো। জিয়াউর রহমান শহীদ হবার সময় তার পাশের কক্ষেই বি চৌধুরী শোয়া ছিলেন- অথচ জিয়াউর রহমানের মহাসচিব হলেও খুনিরা তাকে কিছুই করলো না! এসব খালেদা জিয়া ভালোই বুঝতেন, তাই খালেদা তাকে কখনো বিশ্বাস করতেন না।
খালেদা জিয়া প্রথমবার ক্ষমতায় আসলে ভারতীয় লবি তাকে প্রেসিডেন্ট বানানোর জন্য অনেক চেষ্টাই করেছিল- কিন্তু ম্যাডাম রাজি হন নি। ম্যাডাম কিছুদিনের জন্য বিদেশে গেলে বি চৌধুরী সংসদে জামায়াত নিষিদ্বের আলোচনা শুরু করে দেন, ম্যাডাম ফিরে এসে তা ভণ্ডুল করে দেন। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসলে তিনি প্রথমে তাকে ফরেইন মিনিস্টার বানান- তখন আমেরিকা গিয়ে গ্যাস রফতানি সহ নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন, আর সে সুবাদে কলিং পাওয়েল সহ আমেরিকার স্টেস্ট ডিপার্টমেন্টের সাথে সম্পর্ক করে ফেলেন।
যাই হোক- ভারতীয় এবং আমেরিকান লবির চাপে পড়েই খালেদা তাকে অনিচ্ছা আর অবিশ্বাস সত্বেও প্রেসিডেন্ট বানান। প্রেসিডেন্ট হয়েই তিনি তার পুরোনো আওয়ামী-বাম-রাম নেটওয়ার্কের সাথেই বেশি সম্পর্ক রাখা শুরু করেন, খালেদাকে না জানিয়ে চরম আওয়ামীপন্থী সেনাপ্রধান হারুন রশিদ এর সাথে বৈঠক করে নানা চক্রান্ত শুরু করে দেন। প্রেসিডেন্ট থাকাবস্থায় তিনি জাতীয়তাবাদী ইসলামপন্থী কোন কিছুকেই তেমন প্যাট্রোনাইজ করতেন না, তাদের প্রজেক্ট বা প্রোগ্রাম নানা অজুহাতে এড়িয়ে চলতেন, তাদেরকে দেয়া অনেক প্রতিশ্রুতি ঠুনকো বা মিথ্যা অজুহাতে শেষ মুহূর্তে ভঙ্গ করতেন। অথচ বামদের প্রজেক্ট প্রোগ্রামে ঠিকই যেতেন প্যাট্রোনাইজ করতেন।
তিনি আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুস সামাদের বাসায় চলে যান দেখা করতে, অথচ বিএনপি নেতারা তার সাথে দেখা করতে পারতো না। তার স্পর্ধা এতো বেড়ে গিয়েছিল যে জিয়াউর রহমানের শাহাদাত দিবসে তার মাজার জিয়ারতের প্রয়োজনও মনে করেন নি- অথচ জিয়াউর রহমান যে শুধু তার দলের প্রতিষ্ঠাতা এবং তার রাজনৈতিক জন্মদাতা ছিলেন তাই নয়; জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বলতে গেলে তার চোখের সামনেই ঘটেছিল- সেই ব্যক্তিগত অনুভূতি টুকুনও তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন। তাই খালেদা জিয়া তাকে উচিত প্রাপ্য এবং উচিত শিক্ষাই দিয়েছিলেন!
বিএনপি তে থাকা অবস্থাতেই যে লোক ছিল এমন চরম আওয়ামীপন্থী, বাম-রাম মনষ্ক, বিএনপি থেকে বিতাড়িত হবার পর সে লোক কিভাবে এখন আওয়ামীলীগের চাইতে বিএনপি কে বেশি ভালোবাসবে?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন