ছাত্রলীগের অব্যাহত সন্ত্রাস ও এইচটি ইমামের অনৈতিক বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রশিবির কুমিল্লা মহানগরী শাখা।
ছাত্রলীগের অপকর্মের বিরুদ্ধে সারাদেশের সকল শ্রেণীর মানুষ ক্ষুদ্ধ। প্রথম আলো পত্রিকায় তথ্য উপাত্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশ করেছে। গতকাল ২২ নভেম্বর দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা সম্পাদকীয়তে সরকার এবং আওয়ামীলীগকে উদ্দেশ্য করে “ছাত্রলীগ সম্পদ না বোঝা” শীর্ষক কলাম লিখেছেন। আজ দৈনিক নয়াদিগন্ত সম্পাদকীয় লিখেছেন। নয়াদিগন্ত পত্রিকার সম্পাদকীয় সম্মানিত পাঠকবৃন্দের জন্য হুবহু তুলে ধরলাম।
“বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ছাত্রলীগ একটি নিয়ন্ত্রণহীন ছাত্রসংগঠনে পরিণত হয়েছে। হত্যা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলÑ হেন অপরাধ নেই যার সাথে ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতা নেই। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীরা এদের বিরুদ্ধে কখনোই কোনো জোরালো পদক্ষেপ নেয়নি, বরং ছাত্রলীগের ভেতরে অন্য ছাত্রসংগঠনের লোক ঢুকে পড়েছে বলে এদের অপকর্ম জায়েজ করার চেষ্টা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের অভিভাবকত্বের পদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ছাত্রলীগের নেতারা পরে তার সাথে দেখা করে ভালো হয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্রলীগ ভালো হওয়া তো দূরে থাক, আরো বেশি সহিংস, আরো বেশি ভয়ঙ্কররূপে আবির্ভূত হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক দিক হচ্ছে, ছাত্রলীগের ওপর ক্ষমতাসীনদের আশীর্বাদের কোনো ঘাটতি হয়নি; বরং তাদের নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বিরোধী ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এমনকি নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে।
সরকার প্রায়ই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, সহিংসতা আর জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে থাকে। বাস্তবতা হচ্ছে, দেশের প্রধান সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠন হচ্ছে ছাত্রলীগ। যে সংগঠন শুধু বিরোধী দল নয়, নিজেদের লোককেও হত্যা করতে দ্বিধা করছে না। এই সংগঠনের অস্ত্রবাজদের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ গণমাধ্যমে বারবার প্রচারিত হলেও তাদের গ্রেফতার করা হয় না, বরং আহত হলে রাষ্ট্রীয় খরচে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। কার্যত ছাত্রলীগের মাধ্যমে সন্ত্রাসকে এখন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হচ্ছে।
এর ফল হিসেবে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস ও অরাজকতার কারণে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ছয় বছরে নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সন্ত্রাসের শিকার হয়ে ছয় বছরে মারা গেছে ৩৯ জন। এর বাইরে ভিন্নমতাবলম্বী বহু ছাত্র নিহত হয়েছে। বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের যে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় তাকে ধ্বংস করেছে ছাত্রলীগ। আক্ষরিক অর্থে ছাত্রলীগ এখন একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে এ সংগঠনটির বিরুদ্ধে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন