পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের হোসেইনী দালানের সামনে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে বোমা হামলায় ১জন যুবক নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়। এই পৈশাচিক ও মর্মান্তিক ঘটনার মোকাবেলা করার জন্য বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান আজ ২৫ অক্টোবর এক বিবৃতি প্রদান করেছেন ঃ-
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “হোসেইনী দালানের সামনে ২৩ অক্টোবর গভীর রাতে শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় ১জন যুবক নিহত ও শতাধিক পুরুষ-নারী ও শিশু আহত হয়। যুগযুগ ধরে শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ে পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে তাজিয়া মিছিল বের করে। বাংলাদেশে তাজিয়া মিছিলে কখনো বোমা হামলা হয়নি। এই পৈশাচিক ঘটনা ঘটার পর জাতি আশা করেছিল সরকার জাতির বৃহত্তর স্বার্থে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড মোকাবেলা করার ডাক দিবে। কিন্তু অত্যন্ত দু:খজনক ঘটনা হলো, সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ জাতীয় ঐক্যের আহ্বানের পরিবর্তে রাজনৈদিক প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করছেন। তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলার ঘটনা আমাদের জাতীয় জীবনে বড় ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা। এই ঘটনা কারা ঘটিয়েছে তা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে বের করা অত্যন্ত জরুরী। যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে না পারে। কিন্তু সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ তদন্ত করার আগেই যেভাবে বিরোধী দল বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে দায়ী করে বক্তব্য দিতে শুরু করেছেন তাতে প্রকৃত সন্ত্রাসী চিহ্নিত হবে না। ফলে দুর্বৃত্তরা আড়ালেই থেকে যাবে। সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করার একমাত্র পথ হচ্ছে, জনগণের সুদৃঢ় ঐক্য। এ ছাড়া অন্যকোন পথে দুর্বৃত্তদের মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে আগাম বক্তব্য দিয়ে তদন্তকে প্রভাবিত করা উচিত নয়। আমরা আশা করবো সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ এমন কোন বক্তব্য দিবেন না যাতে নিরপেক্ষ তদন্ত বাধাগ্রস্ত হয়। নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই কেবলমাত্র প্রকৃত সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত ও দমণ করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে দোষারোপ করে সরকার ও প্রশাসনের কতিপয় দায়িত্বশীল ব্যক্তি যে বক্তব্য দিয়েছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে আমি আবারো বলতে চাই, এই পৈশাচিক ঘটনা ঘটার পরপরই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। আমি আবারো দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথে এই নৃশংস ঘটনার কোন সম্পর্ক নাই। আমরা এ ধরনের সন্ত্রাসী, প্রাণঘাতী ও নোংরা কর্মকা-কে তীব্রভাবে ঘৃণা করি। দেশের মানুষ শান্তিতে বাঁচতে চায়। সকল সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সরকার কোন ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ গ্রহণ করলে আমাদের দলের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
আমি আশা করি, সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ দায়িত্বহীন বক্তব্য প্রদান করা থেকে বিরত থাকবেন এবং জাতির বৃহত্তর স্বার্থে সকলকে সাথে নিয়ে এ সন্ত্রাসের মোকাবেলা করবেন। অন্যথায় এ সন্ত্রাস আমাদের গণতন্ত্র ও উন্নয়নসহ গোটা সমাজকে ধ্বংস করে দিবে। ”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন