মোহাম্মদ আখলাক, বয়স ৫০। ভারতের উত্তরপ্রদেশের ছোট শহর দাদরি নিবাসী এই মানুষটিকে গরুর মাংস খাওয়ার ‘অপরাধে’ নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ফরেনসিক ল্যাবের পরীক্ষায় বেরিয়ে এসেছে আরো নির্মম এক সত্য। মোহাম্মদ আখলাকের বাড়িতে যে মাংস ছিল, তা গরুর নয়, বরং খাসির মাংস ছিল! ইন্ডিয়া টাইমসের খবরে জানা গেল এই মর্মান্তিক ঘটনা।
গেল সোমবার রাতে মোহাম্মদ আখলাকের এলাকার মানুষজন তার বাড়িতে হামলা করে। সে গরুর মাংস খায় এবং ফ্রিজে রেখে দিয়েছে, এই ‘অপরাধের’ সন্দেহে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী।
উত্তর প্রদেশের প্রধান স্বরাষ্ট্রসচিব দেবাশিষ পান্ডার বক্তব্য, ‘এটি কোনো সাধারণ হত্যাকাণ্ড নয়। সর্বোচ্চ এবং কঠোরতম আইনে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে যাতে ভবিষ্যতে আর কখনো এমন ঘটনা না ঘটে।’ স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে এটিও নিশ্চিত করা হয়েছে যে মোহাম্মদ আখলাকের বাড়িতে গরু নয়, বরং খাসির মাংস সংরক্ষণ করা ছিল।
‘আমরা মোহাম্মদ আখলাকের ফ্রিজে পাওয়া মাংস পরীক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দিয়েছিলাম। আমরা সেখান থেকেই জানতে পেরেছি যে সেগুলো মোটেও গরুর মাংস ছিল না’, বলেন নয়ডার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট এন পি সিং। তিনি এ কথাও জানান যে হত্যাকারীদের সঙ্গে কট্টরপন্থী কোনো হিন্দুত্ববাদী সংস্থারও সংযোগ নেই।
এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে রাজ্য সরকারকে এ বিষয়ে যথাসম্ভব দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে এবং অপরাধীদের খুঁজে বের করে তাদের কঠোর শাস্তি দিতে বলেছে।
শুধু মোহাম্মদ আখলাকই নন, তাঁর ২২ বছর বয়স্ক ছেলে দানিশকেও বেধড়ক পিটিয়েছে উন্মত্ত এলাকাবাসী। ২০০ জনের মতো মানুষ আক্রমণ করেছিল তাঁর বাসায়। দানিশ মারা না গেলেও গুরুতর আহত, সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন। পুলিশি নিরাপত্তায় থাকলেও তাঁদের পরিবার এখন তীব্র আতঙ্কে ভুগছে এবং ওই এলাকা থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার চিন্তা করছে।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশ অঞ্চলে গো-হত্যা নিষিদ্ধ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন