ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০১৬

নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার উদ্দেশ্যেই প্রধানমন্ত্রী জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন -ডাঃ শফিকুর রহমান


বাংলাদেশ বার্তাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৯ মে বিকেলে জাপানের স্থানীয় ইম্পেরিয়াল হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধণা সভায় প্রদত্ত বক্তব্যে “বিএনপি জামায়াতের জোট দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্যই পরিকল্পিতভাবে গুপ্ত হত্যা করছে। মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত, গীর্জার পাদ্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ নিরীহ সাধারণ মানুষ হত্যা করেই চলেছে।” মর্মে যে অসত্য বক্তব্য প্রদান করেছেন তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান গতকাল ৩০ মে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ বক্তব্যের মধ্যে সত্যের লেশমাত্রও নেই। তিনি জামায়াতে ইসলামীর ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্যেই এ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। 
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে আমি স্পষ্ট ভাষায় জানাতে চাই যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী হত্যা ও সন্ত্রাসের রাজনীতিকে ঘৃণা করে। তাই গুপ্ত হত্যা ও পুড়িয়ে মানুষ হত্যা এবং মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত, গীর্জার পাদ্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ নিরীহ সাধারণ মানুষ হত্যার সাথে জামায়াতের জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। দেশবাসী সকলেই জানেন যে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরাই বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করে এবং সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে তাদের বাড়ি-ঘর, জমি-জমা দখল করে ও তাদের হত্যা করে থাকে। এমনকি নিজেরাই নিজেদের নেতা-কর্মীদেরকে অহরহ হত্যা করছে। নিজেদের অপকর্ম আড়াল করার হীন উদ্দেশ্যেই তিনি এখন জামায়াতের বিরুদ্ধে অসত্য ও কাল্পনিক বক্তব্য দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তার এ বক্তব্য দেশের জনগণ যেমন বিশ্বাস করে না, তেমনি বিদেশী রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও তার এ অসত্য বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। 
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কখনো ধ্বংসের রাজনীতি করে না এবং দেশকে অস্থিতিশীল করে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে চায় না। সকলেই জানেন যে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে বিনা বিচারে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ও সাধারণ মানুষকে হত্যা, অপহরণ ও গুম করছে এবং দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেশকে অস্থিতিশীল করে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছে এবং বিনিয়োগের পরিবেশ নষ্ট করছে। সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বাড়ি-ঘর, সহায়-সম্পদ ভাংচুর করে ও জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিয়ে ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করছে। 
দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে সরকারের চরম ব্যর্থতার কারণেই দেশে গুপ্ত হত্যা, সন্ত্রাস, অপহরণ, গুম, হত্যা চলছে। এর সাথে তথাকথিত যুদ্ধাপরাধের বিচার বা রায় কার্যকরের কোন সম্পর্ক নেই। নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার উদ্দেশ্যেই প্রধানমন্ত্রী জামায়াতের বিরুদ্ধে অসত্য বক্তব্য দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। 
নিজের মান-মর্যাদা রক্ষার স্বার্থেই প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের অসত্য বক্তব্য প্রদান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।”

জামায়াতকে জড়িয়ে কালের কণ্ঠের মিথ্যাচারের তীব্র প্রতিবাদ


বাংলাদেশ বার্তাঃ   দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় “কক্সবাজারে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, লুটপাট, মন্দির, বাড়ি ঘর ভাংচুর” শিরোনামে এবং কালেরকণ্ঠ পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় “নির্বাচনে পরাজিত হয়ে হিন্দু পাড়ায় হামলা” শিরোনামে গতকাল ৩০ মে প্রকাশিত রিপোর্টে “কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের কুলিয়াপাড়ায় সংখ্যালঘুদের মারধর, বসতবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিএনপি এবং জামায়াতের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে” মর্মে যে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি জনাব হামিদুর রহমান আযাদ গতকাল ৩০ মে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের কুলিয়াপাড়ায় সংখ্যালঘুদের বাড়ী-ঘরে, মন্দিরে, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের মারধর করার সাথে জামায়াতে ইসলামীর কোন সম্পর্ক নেই। জামায়াতে ইসলামীর ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্যেই জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এভাবে অপপ্রচার চালিয়ে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।
কালের কণ্ঠের রিপোর্টের জবাবে আমি স্পষ্ট ভাষায় জানাতে চাই যে, জামায়াত নেতা জনাব আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির পর জামায়াত কর্মীরা কুলিয়াপাড়া গ্রামে কখনো হামলা চালায়নি। এটা কালের কণ্ঠের সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারের মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। 
তাই জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো থেকে বিরত থাকার জন্য আমি দৈনিক জনকণ্ঠ ও কালের কণ্ঠ পত্রিকা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

রবিবার, ২৯ মে, ২০১৬

৮২ প্রাণের বিনিময়ে শেষ হলো ৫ দফার ইউপি নির্বাচন


প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের নির্বাচন শেষ হয়ে আজ শেষ হলো ৫ম দফার নির্বাচন এখন ছলেছে ভোট গননা, তবে কি শুধুই ভোট গননা তার সাথে গুনতে হচ্ছে লাশেরও সংখ্যাটি ৫ দফা নির্বাচন শেষে আজ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৮২ জন । এই নির্বাচনে জনগণ যেমন নতুন নেতৃত্ব পেয়েছেন পাশাপাশি পরিবার হারিয়েছেন তাদের প্রিয়জন কিংবা আপনজনকে। এর মধ্যে পরিবারের আয়ের প্রধান যেমন আছেন, আছেন নারী, বৃদ্ধ ও শিশুরাও।
আগের চার ধাপের তুলনায় নির্বাচন কমিশনের ‘ভালো’ ভোটের আশার মধ্যেই আজ পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সহিংসতায় এক সদস্য পদপ্রার্থীসহ ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কেন্দ্র দখল, গোলাগুলি, জাল ভোট, অনিয়মের অভিযোগ এনে প্রার্থীদের ভোট বর্জনের চিত্র ছিল কম-বেশি আগের মতোই।
আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট চলে। ভোট শেষে একটু বিরতি দিয়ে শুরু হয় ভোট গণনা। সন্ধ্যার পর স্ব স্ব কেন্দ্র থেকেই ফলাফল ঘোষণা শুরু করবেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা।
এবার ৪৪ জেলায় ৭১৭ ইউপিতে ভোট হয়। এর মধ্যে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যুর খবর আসে তিন জেলা থেকে। তবে দুপুরেই নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে দাবি করেন, ‘তুলনামূলক ভালো’ ভোট হচ্ছে।
আজকের নির্বাচনী সহিংসতায় জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের কুঠিরচর এবতেদায়ি মাদ্রাসা কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও দলটির বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে চারজন নিহত হন। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত চারজন হলেন নুরুল ইসলাম (৬৫), জিয়াউর রহমান (৩৫), মাজেদ (১৪) ও নবীরুল (১৫)। তাঁদের মধ্যে নুরুল ইসলামের বাড়ি উপজেলার কুতুবের চর গ্রামে। বাকি তিনজনের বাড়ি একই উপজেলার শেখপাড়া গ্রামে। মাজেদ স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। আর নবীরুল নবম শ্রেণির ছাত্র।
চট্টগ্রামের পটিয়া থানার বড় উঠান ইউনিয়নের শাহ মিরপুর কেন্দ্র দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মো. ইয়াসিন নামে একজন সদস্য পদপ্রার্থী নিহত হয়েছেন। দুপুর দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের রাজগঞ্জ মাদ্রাসাকেন্দ্র দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তাড়া খেয়ে মাটিতে পড়ে সৈয়দ আহমেদ (৬০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। বেলা ১১টায় এ ঘটনা ঘটে।
ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রায় ৮০ জনের প্রাণহানি হয়েছে গণমাধ্যমের প্রকাশিত বিভিন্ন খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সময়ে আহত হয়েছে আরো পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। অনেক স্থানে নির্বাচনোত্তর সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। এ ছাড়া এবারের ইউপি নির্বাচনে বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার প্রবণতাও অনেক বেশি।
বরাবরের মতোই নির্বাচনী এলাকায় আজ মাঠে টহলে ছিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), পুলিশ, কোস্টগার্ড, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় দেড় লাখ সদস্য। সেই সঙ্গে ছিলেন নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম। নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ছিল।
এই ধাপে তিন হাজারেরও বেশি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদপ্রার্থী ছিলেন প্রায় ৩০ হাজার।
প্রথম ধাপে ২২ মার্চ, দ্বিতীয় ধাপে ৩১ মার্চ, তৃতীয় ধাপে ২৩ এপ্রিল ও চতুর্থ থাপে ৭ মে ইউপি নির্বাচনের ভোট হয়েছে।
পঞ্চম ধাপে চেয়ারম্যান পদে তিন হাজার ২৫৪ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২৭ হাজারের বেশি ও সংরক্ষিত সদস্য পদে সাত হাজারের বেশি প্রার্থী ছিলেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪১ জন এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এঁরা সবাই আওয়ামী লীগের।
পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছে ৭২৬ ইউপিতে, ৬২৯ ইউপিতে রয়েছে বিএনপির প্রার্থী, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ১৭৭টি, জাসদের ২১টি, বিকল্পধারার দুটি, ওয়ার্কার্স পার্টির ১৩টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ১২২টি, জেপির দুটি, ইসলামী ফ্রন্ট ১১টি, এলডিপি ছয়টি, সিপিবি পাঁচটি, জেএসডি একটি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ছয়টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট সাতটি এবং অপর একটি দল একটি ইউপিতে প্রার্থী দিয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর নানা কারণে এ পর্যন্ত ১৭টি ইউপির ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
ছয় ধাপের এ ভোটের জন্য গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপের তফসিল ঘোষণা হয়। ৪ জুন ষষ্ঠ ধাপের ভোটের মধ্য দিয়ে এ নির্বাচন শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।

শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে আগামী ৩০ মে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা জামায়াতের


বাংলাদেশ বার্তা ২৮ মে,২০১৬:  বর্তমান সরকার কর্তৃক চালু করা শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে এবং প্রস্তাবিত নীতিহীন শিক্ষা আইন প্রণয়ন করার প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান আজ ২৮ মে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “সরকার নীতি ও আদর্শহীন শিক্ষা আইন প্রণয়ন করে দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের নৈতিক অধঃপতনের দিকে ঠেলে দিয়ে জাতির মহাসর্বনাশ করার আয়োজন করছে। 
বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বক্ষেত্রে নৈতিক অবক্ষয়ের সয়লাব চলছে। এ সময় জাতিকে নৈতিক অবক্ষয় থেকে উদ্ধার করার লক্ষ্যে দেশের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাস ও মুল্যবোধের আলোকে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো সময়ের দাবি। সরকার তা না করে শিক্ষার সিলেবাস ও কারিকুলাম থেকে ইসলামের সুমহান মূল্যবোধ ও চেতনাকে সরিয়ে দিয়ে গায়ের জোরে আইন করে নীতিহীন শিক্ষার দিকে জাতিকে ঠেলে দিতে চায়। নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা না থাকলে নৈতিকতার দিক থেকে খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা জাতি দ্রুত ধ্বংসের গহ্বরে নিপতিত হবে। জাতি সরকারের এ নীতি-নৈতিকতা, বিশ্বাস ও মূল্যবোধহীন উদ্যোগকে কখনো মেনে নেবে না। সরকারের ইঙ্গিতে যারা এ কাজে হাত দিয়েছে তারা প্রকৃত অর্থে এ জাতির শুভাকাঙ্খী হতে পারে না। সরকারের এ নীতিহীন উদ্যোগের বিরুদ্ধে গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। সুতরাং জাতীয় দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে সরকারকে প্রস্তাবিত এ নীতি ও নৈতিকতাহীন শিক্ষা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ থেকে সরে আসার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। 
অন্যথায় সরকারের এ নীতিহীন উদ্যোগের ব্যাপারে জাতি এক ইঞ্চিও ছাড় দেবে না। আমরা আশা করতে চাই যে, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। দেশের শিক্ষিত সমাজ ও ওলামায়েকেরামসহ সর্বস্তরের জনগণকে এ ব্যাপারে সতর্ক থেকে সর্বাত্মক ভূমিকা পালনের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে আহ্বান জানাই। 
বর্তমান সরকার কর্তৃক চালু করা শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে ও সরকারের প্রস্তাবিত এ নীতিহীন শিক্ষা আইন প্রণয়নের প্রতিবাদে আগামী ৩০ মে রোজ সোমবার আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করছি। ঘোষিত এ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সর্বাত্মক সফল করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সকল শাখার প্রতি আমি আহ্বান জানাচ্ছি এবং দেশবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।”

রাউজানের প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন হযরত মাওলানা আব্দুস সাত্তার ইসলামাবাদীর মৃত্যুতে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত নেতৃবৃন্দের শোক


বাংলাদেশ বার্তা ২৮ মে, ২০১৬: রাউজান থানার ১০নং পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রাম নিবাসী, চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর প্রবীণ সদস্য (রুকন), প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুস সাত্তার ইসলামাবাদী তাঁর নিজ বাড়ীতে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজেউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। তিনি ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে যান। মরহুম মাওলানা আব্দুস সাত্তার ইসলামাবাদীর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর এবং জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, জননেতা মাওলানা মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম নগর জামায়াত সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম এক শোক বাণী প্রদান করেন।
শোক বাণীতে নগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবার বর্গের প্রতি সমবেদনা জানান। 
মরহুম মাওলানা আব্দুস সাত্তার ইসলামাবাদী হাটহাজারী মাদ্রাসা, পাকিস্তান ও ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে হাদীসের উপর উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন। 
শিক্ষাজীবন শেষে তিনি ঢাকা হাইকোর্ট জামে মসজিদ, ফরিদপুর কোর্ট জামে মসজিদ, চট্টগ্রাম কালুরঘাট ইস্পাহানী জুট মিল অফিসার্স কলোনী জামে মসজিদ, চাকতাই বায়তুন নুর (নয়া মসজিদের) খতিব হিসাবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। গত ২৭ মে ২০১৬ইং চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটাকারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল মরহুমের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কবর জিয়ারত করেন এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নগর জামায়াত নেতা মুহাম্মদ উল্লাহ, ডাক্তার মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান। এছাড়াও আওয়ামীলীগ নেতা এনামুল হক, একরামুল হক ও ইলিয়াছ হোসাইন প্রমুখ। 
মরহুমের নামাজে জানাজায় ইমামতি করেন সাতবাড়িয়া জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আব্দুল হালিম, এলাকার বহু আলেম, শিক্ষক,ব্যবসায়ীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

শুক্রবার, ২৭ মে, ২০১৬

ট্রানজিটের মাধ্যমে অল্প দামে স্বাধীনতা বিক্রি হয়েছে : রিজভী


ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়ায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ভারতের সাতটি প্রদেশে কেউ স্বাধীনতা দাবি করছে, কেউ স্বায়ত্তশাসন দাবি করছে। এগুলো দমন করার জন্য নাকি অস্ত্রশস্ত্র যাবে, তাহলে দেশের নিরাপত্তা কোথায় থাকবে?’
ট্রানজিট দেয়ার সমালোচনা করে কবির রিজভী বলেছেন, এটি হচ্ছে অল্প দামে দেশের স্বাধীনতা বিক্রি করে দেওয়া। ট্রানজিটের কারণে দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় রিজভী এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্বাধীনতা ফোরাম নামের একটি সংগঠন ওই আলোচনার আয়োজন করে।
ট্রানজিট নয়, আসলে ভারতকে করিডর দেওয়া হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, ‘একই দেশের মাল আবার একই দেশে যাবে আমার দেশের মধ্য দিয়ে—এটা ট্রানজিট না, এটা করিডর। করিডর মানেই হচ্ছে বিপর্যয়কর বিষয়।’ তিনি অভিযোগ করেন, করিডরের মাশুলও কম ধরা হয়েছে।
রিজভী বলেন, ‘আখাউড়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত যে ল্যান্ড ট্রানজিট দেওয়া হচ্ছে, এটা একেবারেই দুরভিসন্ধিমূলক এবং অল্প দামে দেশের স্বাধীনতা বিক্রি করে দেওয়া। সরকার আত্মাকে বিক্রি করে দিয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাম্প্রদায়িকতাকে সব সময়ই ঘৃণা করে----হামিদুর রহমান আজাদ


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্ক; ২৭ মে ২০১৬: দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় “সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় কলকাঠি নাড়ছে জামায়াত” শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্টে তখাকথিত ঘাতক দালাদ নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির গত ২৬ মে দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমদের সাথে সাক্ষাতকালে জামায়াত শিবিরের অদৃশ্য কলকাঠিতেই চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা বাড়ছে। জামাতীরা কৌশলে ঢুকে পড়ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে।” মর্মে যে ভিত্তিহীন মিথ্যা মন্তব্য করেছেন তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি জনাব হামিদুর রহমান আজাদ আজ ২৭ মে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন যে, “তথাকথিত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে যে মন্তব্য করেছেন তা ভিত্তিহীন মিথ্যা। 
শাহরিয়ার কবিরের ভিত্তিহীন মিথ্যা মন্তব্যের জবাবে আমি স্পষ্ট ভাষায় জানাতে চাই যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাম্প্রদায়িকতাকে সব সময়ই ঘৃণা করে। তাই সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় জামায়াতের কলকাঠি নাড়ার প্রশ্নই আসেনা। জামায়াতে ইসলামী স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। কাজেই জামায়াতের লোকদের কৌশলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে ঢুকে পড়ার প্রশ্ন অবান্তর। 
দেশী-বিদেশী সকলেই জানেন যে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই সংখ্যালঘুদের বাড়ী-ঘরে হামলা চালায়, ভাংচুর করে এবং তাদের জমি-জমা দখল করে থাকে। তাদের এসব অপকর্মের খবর মিডিয়ায় বহুবার প্রকাশিত হয়েছে। শাহরিয়ার কবির তাদের অপকর্ম আড়াল করার উদ্দেশ্যেই উদোরপিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর মত জামায়াতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মিথ্যা মন্তব্য করে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এ ধরনের ভিত্তিহীন মিথ্যা মন্তব্য করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। 
তাই জামায়াতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মিথ্যা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য আমি শাহরিয়ার কবিরের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

জুম‘আর দিনের ফযীলত (فضل يوم الجمعة) :


(১) জুম‘আর দিন হ’ল ‘দিন সমূহের সেরা’ (سيد الأيام)। এদিন আল্লাহর নিকটে ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চাইতেও মহিমান্বিত। এইদিন নিকটবর্তী ফেরেশতাগণ, আকাশ, পৃথিবী, বায়ু, পাহাড়, সমুদ্র সবই ক্বিয়ামত হবার ভয়ে ভীত থাকে’।[ ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৩৬৩ ‘জুম‘আ’ অনুচ্ছেদ-৪২।]
(২) জুম‘আর রাতে বা দিনে কোন মুসলিম মারা গেলে আল্লাহ তাকে কবরের ফিৎনা হ’তে বাঁচিয়ে দেন’।[আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১৩৬৭ ‘জুম‘আ’ অনুচ্ছেদ-৪২।]
(৩) এইদিন আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়। এইদিন তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় ও এইদিন তাঁকে জান্নাত থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এদিনে তাঁর তওবা কবুল হয় এবং এদিনেই তাঁর মৃত্যু হয়। এইদিন শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে ও ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে।
(৪) এদিন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর উপরে বেশী বেশী দরূদ পাঠ করতে হয়।[আবুদাঊদ, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৩৬১, ১৩৬৩।]
(৫) এই দিন ইমামের মিম্বরে বসা হ’তে জামা‘আতে ছালাত শেষে সালাম ফিরানো পর্যন্ত সময়ের মধ্যে[ মুসলিম, আবুদাঊদ, মুওয়াত্ত্বা, মিশকাত হা/১৩৫৬-৫৯ ও ১৩৬১ ‘জুম‘আ’ অনুচ্ছেদ-৪২; তিরমিযী হা/৪৯০-৯১, শরহ আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির (বৈরূত ছাপা ১৪০৮/১৯৮৭) ২/৩৬১ ও ৩৬৩-৬৪ পৃঃ।] এমন একটি সংক্ষিপ্ত সময় (سَاعَةٌ خَفِيْفَةٌ) রয়েছে, যখন বান্দার যেকোন সঙ্গত প্রার্থনা আল্লাহ কবুল করেন।[ মুসলিম, মিশকাত হা/১৩৫৭, ‘জুম‘আ অনুচ্ছেদ-৪২।] দো‘আ কবুলের এই সময়টির মর্যাদা লায়লাতুল ক্বদরের ন্যায় বলে হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জুম‘আর সমস্ত দিনটিই ইবাদতের দিন। অন্য হাদীছের [তিরমিযী হা/৪৮৯; মিশকাত হা/১৩৬০, ‘জুম‘আ’ অনুচ্ছেদ-৪২।] বক্তব্য অনুযায়ী ঐদিন আছর ছালাতের পর হ’তে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দো‘আ কবুলের সময়কাল প্রলম্বিত। অতএব জুম‘আর সারাটা দিন দো‘আ-দরূদ, তাসবীহ-তেলাওয়াত ও ইবাদতে কাটিয়ে দেওয়া উচিত।[ ইবনুল ক্বাইয়িম, যা-দুল মা‘আদ ১/৩৮৬।] এই সময় খত্বীব স্বীয় খুৎবায় এবং ইমাম ও মুক্তাদীগণ স্ব স্ব সিজদায় ও শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ ও দরূদের পরে সালামের পূর্বে আল্লাহর নিকটে প্রাণ খুলে দো‘আ করবেন। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এই সময়ে বেশী বেশী দো‘আ করতেন।[মুসলিম, মিশকাত হা/৮৯৪ ‘সিজদা ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-১৪; ঐ, হা/৮১৩ ‘তাকবীরের পর যা পড়তে হয়’ অনুচ্ছেদ-১১; মুসলিম, রিয়াযুছ ছালেহীন হা/১৪২৪/১৭, (বৈরূত ছাপা ১৪০৯/১৯৮৯) পৃঃ ৫৩৭।]
(৬) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুম‘আর দিন গোসল করে সুগন্ধি মেখে মসজিদে এল ও সাধ্যমত নফল ছালাত আদায় করল। অতঃপর চুপচাপ ইমামের খুৎবা শ্রবণ করল ও জামা‘আতে ছালাত আদায় করল, তার পরবর্তী জুম‘আ পর্যন্ত এবং আরও তিনদিনের গোনাহ মাফ করা হয়’।[ বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৩৮১-৮২, পরিচ্ছন্নতা অর্জন ও সকাল সকাল মসজিদে যাওয়া, অনুচ্ছেদ-৪৪।]
(৭) তিনি আরও বলেন, ‘জুম‘আর দিন ফেরেশতাগণ মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকেন ও মুছল্লীদের নেকী লিখতে থাকেন। এদিন সকাল সকাল যারা আসে, তারা উট কুরবানীর সমান নেকী পায়। তার পরবর্তীগণ গরু কুরবানীর, তার পরবর্তীগণ ছাগল কুরবানীর, তার পরবর্তীগণ মুরগী কুরবানীর ও তার পরবর্তীগণ ডিম কুরবানীর সমান নেকী পায়। অতঃপর খত্বীব দাঁড়িয়ে গেলে ফেরেশতাগণ দফতর গুটিয়ে ফেলেন ও খুৎবা শুনতে থাকেন’।[ মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৩৮৪, অনুচ্ছেদ-৪৪।]
(৮) তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুম‘আর দিন ভালভাবে গোসল করে। অতঃপর সকাল সকাল মসজিদে যায় পায়ে হেঁটে, গাড়ীতে নয় এবং আগে ভাগে নফল ছালাত শেষে ইমামের কাছাকাছি বসে ও মনোযোগ দিয়ে খুৎবার শুরু থেকে শুনে এবং অনর্থক কিছু করে না, তার প্রতি পদক্ষেপে এক বছরের ছিয়াম ও ক্বিয়ামের অর্থাৎ দিনের ছিয়াম ও রাতের বেলায় নফল ছালাতের সমান নেকী হয়’।[তিরমিযী, আবুদাঊদ, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত

How zakat can eliminate poverty - Ali Reza


Bangladessh Barta:May 27, 2016: Around 1400 years ago, a system of social security was introduced which turned semi-barbaric, desert faring Arabian tribes into one of the most prosperous and advanced nations in the world. This social security system involves transfer of surplus wealth from the rich to the poor to alleviate poverty in a sustainable way so that all people can enjoy their legitimate rights to live a life of safety and dignity. This groundbreaking economic system is called zakat.
Mentioned in the Holy Quran 88 times, #zakat is considered as one of the fundamental pillars of Islam and an indispensable instrument of the Islamic society. All the scholars of Islam unanimously agreed that, to be a Muslim, it is mandatory to pay zakat if s/he is eligible. This eligibility criterion for paying and receiving zakat is also clearly defined in the Quran. However, due to lack of awareness, the concept of zakat is often misunderstood in our society. Every year we can see how some zakat payers distribute food and clothes of inferior quality to the destitute people who often fall victim to stampede to collect those alms in the name of zakat.
Contrary to this malpractice, the wealth of zakat should be distributed in such a way so that the receivers can bring significant changes to their lives and livelihoods. There is no way of considering zakat as a tax, alms or donation; rather, in the Quran, zakat has been stated as the indisputable right of the poor, needy people. 
The Centre for Zakat Management (CZM) has come up with the goal to establish zakat as a tool to alleviate poverty and discrimination in a sustainable way by proper utilisation of zakat funds. Established in 2008, CZM has launched various initiatives to distribute the zakat funds to all segments of poverty-ridden and destitute people in our society. 
CZM's flagship project called Jeebika is a livelihood and human development programme through which 5404 families of more than 20 districts have become self sufficient by getting themselves involved in different income generating activities with the help of zakat fund. In principle, CZM officials transfer the zakat fund to the zakat recipients in several instalments while providing them training on different need-based professions, enable them to access the market and provide support to manage the collective zakat fund. In the year 2015 alone, there has been an increase of 59 percent in the amount of fund transfer since a total of 197, 00,000 BDT has been transferred to 1470 families in 10 different districts.
Besides, CZM has been running two specific initiatives to encourage entrepreneurship among the youth and women through skill development and self-employment. These initiatives are called Naipunno Bikasha and Mudareeb, thanks to which, last year, more than 1000 youth were trained on different professions and 770 of them were employed in different organisations. 
With two of its programmes, called Genius and Gulbagicha, this welfare organisation has taken the initiative to utilise zakat fund to spread quality education among poor, underprivileged children. Every year, it provides scholarship to thousands of students all over the country and imparts capacity development training to them. It also has another dedicated pre-primary education programme for the poor children living in urban slums and remote rural areas. 
With its own pre-primary learning centres, CZM has been providing innovative learning equipments and nutritious food for the children. With another initiative called Ferdousi, CZM has started to utilise zakat fund for the improvement of maternal and neonatal health. It provides free medicine and treatment by specialised doctors to pregnant and lactating mothers and organises awareness-raising sessions in the least privileged communities.
Besides these, CZM regularly organises motivational and awareness-raising programmes to make people aware of the true concept of zakat. Every year it organises 'Annual Zakat Fair' where different organisations participate, scholars and leaders take part in the discussions and beneficiaries of zakat share their inspiring stories. For its contribution to ensure sustainable development, CZM was awarded the Islamic Economy Award 2015 in the Waqf & Endowment category by the Global Islamic Economic Summit, Dubai, United Arab Emirates. 
According to a research done by Dr. Kabir Hassan, Prof. University of New Orleans, it has been calculated that each year BDT 25,000 crore of zakat can be obtained from Bangladesh and if distributed properly each extremely poor family can get two million taka from this huge fund. Zakat, in fact, is an opportunity, a possibility for Bangladesh to fight poverty in a sustainable way. If this system of social security can be utilised effectively like the initiatives taken by CZM, it will be very possible for Bangladesh to break free from the vicious cycle of poverty and be a self sufficient, prosperous nation. 

The writer is General Manager, Center for Zakat Management (CZM).

নতুন প্রজন্মকে ইসলাম বিমুখ করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করছে সরকার -ছাত্রশিবির


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ইসলামবিরোধী শিক্ষা আইন বাস্তবায়নের অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে এই ইসলামবিরোধী শিক্ষানীতি, শিক্ষা আইন এবং বিতর্কিত পাঠ্যসূচি বাতিল করে ইসলামী মূল্যবোধর ভিত্তিতে শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের দাবী জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। 
এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, “বিতর্কিত ইসলামবিরোধী শিক্ষা আইন বাস্তবায়নের অপচেষ্টা অবৈধ সরকারের ইসলামবিরোধী অবস্থানকে চূড়ান্তভাবে স্পষ্ট করেছে। তাদের এই অবস্থান ইসলামপ্রিয় ছাত্র-জনতা ও বিবেকবান মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। ২০১০ সালে বিতর্কিত ইসলামবিমুখ শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়। শুরু থেকেই ধর্মহীন এই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে জোর প্রতিবাদ জানায় দেশের আলেমসমাজ, বুদ্ধিজীবীবৃন্দ, রাজনৈতিক দলসমূহ, পেশাজীবী ও ইসলামপ্রিয় ছাত্রজনতা। ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে বিকল্প প্রস্তাবনাও সরকারের কাছে পেশ করা হয়। কিন্তু এসব দাবি ও সংশোধনীর প্রতি কোন তোয়াক্কা না করে সরকার বিশেষ এজেন্ডা বাস্তাবায়নে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে সেই বিতর্কিত শিক্ষানীতির আদলে ‘শিক্ষা আইন-২০১৬’ এর খসড়া প্রকাশ করে এবং তড়িঘড়ি করে তা পাশ করানোর উদ্যোগ নেয় যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিকৃত ও ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।”
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “সরকারের এই পদক্ষেপ ইসলাম ও দেশে বিরাজমান ইসলামী মুল্যবোধের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র। শুধুমাত্র ষষ্ঠ শ্রেণীর ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বইয়ের আরবি বানানে ৫৮টি ভুল এবং বিকৃত উপস্থাপনের প্রমাণ রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন শ্রেণীর বইয়ে পরিকল্পিতভাবে ইসলামবিদ্বেষী গল্প-কবিতা-প্রবন্ধ সংযোজন করা হয়েছে। একইভাবে সূক্ষ কৌশলে সংখ্যাগরিষ্ঠ কোমলমতি মুসলমান শিক্ষার্থীদের মাঝে বিজাতীয় সংস্কৃতি, ভিন্নধর্মীয় আচার-আচরণ ও কুসংস্কার-শিক্ষা সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। অপরদিকে জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষাকে শুধু সংকোচনই করা হয়নি, বরং ইসলাম ধর্ম বিষয়ক এবং মুসলিম সংস্কৃতির প্রতি উদ্দীপনামূলক গল্প-রচনা ও কবিতাসমূহ বাদ দিয়ে তদস্থলে নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদের প্রতি উদ্দীপনামূলক বিভিন্ন রচনা, গল্প ও কবিতা একতরফাভাবে প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশের শিক্ষানীতিতে সংখ্যালঘুদের সংস্কৃতি জোর করে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে যা কোন মুসলমানের পক্ষেই মেনে নেয়া সম্ভব নয়।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, “দেশে শিক্ষাব্যবস্থার সর্বক্ষেত্রে অরাজকতা বিরাজ করছে। অবাধে প্রশ্নপত্র ফাঁস, সেশনজট, শিক্ষাঙ্গনে সরকারদলীয় ক্যাডারদের সন্ত্রাস ও সীমাহীন দুর্নীতিসহ বিভিন্ন সমস্যায় শিক্ষাব্যবস্থা জর্জরিত। কিন্তু সরকার সেদিকে নজর না দিয়ে ইসলামবিরোধী শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের নীলনকশা নিয়ে এগিয়ে চলেছে যা জাতি বিনাশী সুগভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু নয়। আমরা হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, ইসলামপ্রিয় ছাত্র-জনতা গায়ে এক বিন্দু রক্ত থাকতে নাস্তিক্যবাদী এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দেবে না। সরকারের উচিৎ গুটিকয়েক নাস্তিক্যবাদীদের বলয় থেকে বের হয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আবেগ-অনুভূতি, মতামত ও ন্যায়সঙ্গত দাবীকে মূল্যায়ন করা। ২০১০ সালে প্রণীত শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন-২০১৬ এর খসড়া বাতিল করতে হবে। সেইসাথে আমরা ইসলামী মুল্যবোধের ভিত্তিতে শিক্ষানীতি, শিক্ষা আইন ও পাঠ্যসূচী প্রণয়ন করার জোর দাবি জানাচ্ছি।”

পৌরসভার নির্বাচনে কারচুপির প্রতিবাদ জামায়াতেরঃ সরকার পরিকল্পিতভাবে স্বৈরশাসন কায়েমের ষড়যন্ত্র করছে


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্ক; ২৭ মে, ২০১৬ঃ ২৫ মে তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ৯টি পৌরসভা নির্বাচনে ব্যাপক সন্ত্রাস, কারচুপি, জাল ভোট প্রদান, ভোট কেন্দ্র দখল করে ব্যালট ডাকাতি করে সরকারী দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করার প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান আজ ২৬ মে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “গত ২৫ মে অনুষ্ঠিত ৯টি পৌরসভার নির্বাচনে ব্যাপক সন্ত্রাস, কারচুপি, জালভোট প্রদান ও ভোট কেন্দ্র দখল করে ব্যালট ডাকাতি করে সরকারী দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করা হয়েছে। 
৯টি পৌরসভার সব কয়টিতেই ব্যালট ডাকাতি করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করে সরকার এবং সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন আবারও প্রমাণ করলো যে তাদের অধীনে এ দেশে কখনো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। ফেনী জেলার ছাগল নাইয়া পৌরসভা নির্বাচনে বোমাবাজী, ভোট কেন্দ্র দখল করে সরকারী দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যালট ডাকাতি করা হয়েছে। সরকারী দলের সন্ত্রাসীদের তান্ডবে কক্সবাজার জেলার টেকনাফে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজের ভোটটি পর্যন্ত দিতে পারেননি। ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার কসবা পৌরসভায় বিরোধী দলের প্রার্থীর পোলিং এজেন্টসহ অন্যান্যদের পোলিং এজেন্টদের ভোট কেন্দ্র থেকে জোর পূর্বক সরকারী দলের সন্ত্রাসীরা বের করে দিয়েছে। নোয়াখালী পৌরসভায় সরকারী দলের সন্ত্রাসীরা ভোট কেন্দ্র দখল করে বিরোধী দলের প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের জোর করে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার কারণে বিরোধী দলের প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করতে বাধ্য হয়েছেন। 
নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টিতে ফেনীর ছাগল নাইয়া, নোয়াখালী ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার কসবা পৌরসভায় সবচেয়ে বাজে নির্বাচন হয়েছে। এ পৌরসভাগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা ভোট কেন্দ্র দখল করে ব্যালটে সিল মেরেছে। নির্বাচন কমিশনের এ বক্তব্যই প্রমাণ করে যে, গত ২৫ মে’র অনুষ্ঠিত কোন পৌরসভায়ই’ নির্বাচন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। এর দ্বারা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের চরম ব্যর্থতাই প্রমাণিত হয়েছে। 
সরকার নিজের দলের প্রার্থীদের ছলে বলে কলে কৌশলে বিজয়ী করার জন্য গোটা নির্বাচন ব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকার পরিকল্পিতভাবে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করে দিয়ে দেশে একদলীয় স্বৈরশাসন কায়েম করার ষড়যন্ত্র করছে। এ ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। 
২৫ মে যে সব পৌরসভায় ব্যাপক সন্ত্রাস, ভোট ডাকাতি, কারচুপিসহ নানা অনিয়ম হয়েছে সেগুলোর নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করে পূনরায় নির্বাচন দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০১৬

সদা হাস্যোজ্জ্বল থেকে আচরণে আন্তরিক হোন -মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত


ছাত্র সংবাদঃ মানুষ সামাজিক জীব। সামাজিক জীব হিসেবেই প্রতিনিয়ত তাকে সমাজের অন্যান্য মানুষের সাথে চলতে ফিরতে হয়, কথা বলতে হয়। এটি মানুষের জীবনাচরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। গুরুত্বপূর্ণ এ অধ্যায়ে শুধুমাত্র আচরণের কারণেই একজন আরেকজনের বন্ধু হয়, একজন আরেকজনের শত্রু হয়, একজন আরেকজনকে কাছে টেনে নেয়, একজন আরেকজনকে দূরে ঠেলে দেয়। আচরণের এই ভিন্নতার কারণেই মানুষের পরিচয়ও ভিন্নভাবে ফুটে ওঠে। ফুটে ওঠে মানুষের রুচিবোধের বৈশিষ্ট্য। মানুষ যা করে তা করতে গিয়ে যদি ভদ্র, মার্জিত ও সুন্দর আচরণের আশ্রয় নেয় তবে তাতেই বিকশিত হয় তার রুচিবোধ। কারণ, মানুষের আচরণই তার অন্তরের অনুভূতির প্রকাশ, মানুষের মধ্যে কে ভালো, কে মন্দ তা নির্ভর করে তার অন্তরের অনুভূতি থেকে প্রকাশিতব্য আচরণের ওপর।
আমার আর আপনার মূল পরিচয় শুধুমাত্র বাহ্যিক আচরণে ফুটে ওঠে না, এটা হয়তো সাময়িক কোনো খ্যাতি দিতে পারে। কিন্তু আমার আপনার ভেতরকার মানুষটির প্রকৃত আচরণই মূল পরিচয় বহন করে। সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী মহামানব রাসূল (সা) তার বক্ষের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘আত্তাকওয়া হাহুনা’ অর্থাৎ মুত্তাকির পরিচয় এখানে (অন্তরে), তার বাহ্যিক চাল-চলন বা আচরণে নয় বরং তার ভেতরকার বিষয় ফুটে ওঠার মাধ্যমে প্রকাশ হয়।
মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় আচরণগত দিকের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে সদা হাস্যোজ্জ্বল থাকার মাধ্যমে। যিনি সদা হাস্যোজ্জ্বল থেকে আচরণে আন্তরিক হতে পারেন তিনিই সবার হৃদয় জয় করতে পারেন, সবাইকে কাছে টানতে পারেন। আচরণের সাথে সদা হাস্যোজ্জ্বল থাকার ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র রয়েছে। একজন দায়িত্বশীল মানুষ তার অধীনস্থদের কাছে টানার ক্ষেত্রে কতটুকু সফল হবেন তা নির্ভর করবে তার সদা হাস্যোজ্জ্বল আচরণের ওপর। সদা হাস্যোজ্জ্বল থেকে যদি আচরণে আন্তরিক হওয়া যায় তাহলে সবার সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়া সম্ভব এবং সবাইকে কাছে টানাও সম্ভব। যিনি সবাইকে কাছে টানতে পারেন তিনি সহজেই সবার প্রিয়ভাজন হতে পারেন।
মানুষ স্বীয় চরিত্রে পরস্পরকে আপন করে নেয়। সদগুণাবলি অলঙ্কারস্বরূপ। নিজের মাঝে লুকিয়ে থাকা সদগুণাবলিগুলোকে সদা হাস্যোজ্জ্বল থেকে আচরণে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেয়া উচিত। কারণ, সদালাপ, সদগুণাবলি বিকাশেই কল্যাণ নিহিত। বদগুণাবলি তথা বদঅভ্যাস বিকাশে কোনো গৌরব নেই। কারো সাথে যখন সাক্ষাৎ হয় এবং কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি হয় তখন হাস্যোজ্জ্বল থেকে আন্তরিকভাবে কথা বলার সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়। সাক্ষাৎদাতা এবং সাক্ষাৎপ্রত্যাশী উভয়েই আন্তরিক সম্ভাষণ কামনা করেন। আন্তরিক সম্ভাষণ আর হাসিমুখে কথা বলা অন্যের সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায়। সাক্ষাৎকে ফলপ্রসূ করতে হলে একটি বিষয় স্মরণ রাখতে হবে, তা হলো সাক্ষাতের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হবে হাসিমুখে আন্তরিকতা বিনিময় করা।
কথার যেমন মূল্য আছে তেমনি কথার মাধ্যমে মানুষের যে আচরণ প্রকাশ পায় তার মূল্যও অনেক বেশি। কারণ যথার্থ আচরণ ছাড়া মূল্যবান কথাও অর্থহীন হয়ে যায়। একজনের সাথে সাক্ষাৎ করার সময় গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে গিয়ে যদি গুরুত্বহীন তথা মূল্যহীন ও অমূলক আচরণ করা হয় তখন গুরুত্বপূর্ণ কথাটাই বলার আর সুযোগ থাকে না। বাচালতা, মিথ্যা আর মলিনতার আশ্রয় নিয়ে কথা বলার চেয়ে চুপ থাকাই ভালো। যারা এসবের আশ্রয় নেয় তারা রাসূল (সা) এর কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত হিসেবে বিবেচিত হন। এ প্রসঙ্গে হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে- রাসূল (সা) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যেসব লোক বাচাল, দুর্বোধ্য ভাষায় এবং অহঙ্কারের সাথে কথা বলে তারা আমার কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত এবং কিয়ামতের দিন তারা আমার থেকে অনেক দূরে থাকবে। (তিরমিজি)
অসহিষ্ণু হয়ে কথা বলা, প্রশ্নের উত্তর দেয়া, সামান্য কারণেই তেতে ওঠা এসবই অসুন্দর ও আন্তরিকতার বিপরীত। এগুলো সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়। কারণ, এতে পারস্পরিক আস্থা ও সম্পর্কের ভিত নড়বড়ে করে দেয়। সদা হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় কথা বলতে পারাটা মার্জিত রুচির পরিচয় বহন করে। ভদ্রতার পরিবেশ বজায় রাখে। বিরুদ্ধবাদীদের বিরুদ্ধে কথা কিংবা গালি শোনা মাত্রই উগ্র হয়ে ওঠা কিংবা ক্রোধ নিয়ে জবাব দেয়ার মধ্যে কোনো সফলতা নেই। সামান্য একটু অপমান কিংবা অবহেলায় উত্তপ্ত না হয়ে একটু অপেক্ষা করা, ধৈর্য ধারণ করা উচিত। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা সূরা ফুরকানের ৬ নম্বর আয়াতে বলেন, আর তাদেরকে যখন অজ্ঞ ব্যক্তিরা সম্বোধন করে তখন তারা বলে সালাম (তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক)।
যদি কারো সাথে বিতর্কও করতে হয় তবে তা করতে হবে উত্তম পন্থায়। কেননা মানুষের মধ্যে সর্বোত্তম তারাই যারা উত্তম পন্থা অবলম্বন করে। সূরা নাহলের ১২৫ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন- আর লোকদের সাথে পরস্পর বিতর্ক কর উত্তম পন্থায়। তর্ক করার অর্থ হলো হেরে যাওয়া যুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া। তর্কে আসলে জেতা যায় না শুধু মনের তুষ্টি অর্জন করা যায়। এখানে জিতলেও আপনি হারবেন আর হারলে তো কথা নেই। যত তর্কে জিতবেন তত আপনার কাছ থেকে লোক দূরে সরে যাবে, দিন দিন আপনি বন্ধু হারাবেন। সূরা আনকাবুতের ৪৬ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেছেন- তোমরা সুন্দর পন্থা ব্যতীত আহলে কিতাবদের সাথে বিতর্ক করো না। মুজাদ্দেদ-ই-আল ফেসানি (রহ) বলেছেন- ভালো কথা বন্ধুদের পর্যন্ত পৌঁছাতে চেষ্টা কর। বিরুদ্ধবাদীদের সাথে বিতর্কে অবতীর্ণ হয়ো না। সূরা লোকমানের ১৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে- আর লোকদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে কথা বলো না। মানবতার মহান শিক্ষক রাসূল (সা)-এর আচরণেও ছিল বদমেজাজ আর কাঠিন্যতা পরিহার। তাইতো তিনি সবাইকে কাছে টেনে নিয়েছেন, আপন করে নিতে পেরেছেন। এ প্রসঙ্গে সূরা আলে ইমরানের ১৫৯ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ রাসূল (সা)কে উদ্দেশ করে বলেন- আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য নরম দিল ও সুহৃদয় হয়েছেন। যদি বদমেজাজি ও কঠিন হৃদয়ের হতেন তবে লোকেরা আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যেতো।
অনেক সময় আপনার আমার অহঙ্কার আর আত্মম্ভরিতাপূর্ণ আচরণের কারণে লোকেরা দূরে সরে যায়। আপনার জ্ঞান-গরিমা, সম্মান-মর্যাদা, বুদ্ধি-বিবেক বেশি বলে নিজেকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করবেন তা হতে পারে না। বরং তা আপনাকে আরো ছোট করে তুলবে। মেধাহীন দুর্বলের সাথে রূঢ় আচরণ করবেন তা হতে পারে না বরং সেটা আপনার অর্জনকে ধ্বংস করে দেবে। আপনি বড় মানুষ বলে অন্যের সাথে ‘দেমাগ’ দেখিয়ে কথা বলবেন, নিজেকে অন্য উচ্চতায় রাখার চেষ্টা করবেন! এমন হলে আপনার কাছ থেকে সবাই দূরে সরে যাবে।
জ্ঞান-গরিমাই সবকিছু নয় বরং আচরণ দেখেই বোঝা যায় ব্যক্তিটি কতটা সম্মানিত কতটা সুন্দর মনের অধিকারী। হাদিসে এসেছে, একবার হযরত জাবির ইবনে সুলাইম (রা) রাসূল (সা)-এর কাছে উপদেশ চাইলে রাসূল (সা) বললেন- কাউকে কখনো গালিগালাজ করো না। জাবির বলেন, এরপর আমি কখনো আজাদ, গোলাম এমনকি উট, বকরিকেও গালি দেইনি। রাসূল (সা) আরো বললেন- ভালো ও নেকির কোনো কাজকে তুচ্ছজ্ঞান করো না, তোমার ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে কথা বলবে, প্রতিদিনের ছোট ছোট কথা, ছোট ছোট ব্যবহার, একটুখানি সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণে ব্যক্তির মর্যাদা, মনুষ্যত্ব ও ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। যিনি তার জীবনের পথচলায় মিথ্যা কথা, নিষ্ঠুর বাক্য ও প্রতারণা থেকে মুক্ত থেকে অন্যের সাথে আচরণ করতে পারেন তার জীবনটা সত্যিই সার্থকজীবন। হাস্যোজ্জ্বল আচরণে যদি আপনি দোষশূন্য নির্মল ও মহৎ আচরণ করেন তাহলে দেখবেন দুরাচার, দুষ্ট লোকও লজ্জায় আপনার সামনে মাথানত করবে।
যখন মনে যা আসে তাই না বলে কথায়, কাজে, ব্যবহারে, শব্দ চয়নে কৌশলী হওয়া প্রয়োজন। কখন কী বলা দরকার, কতটা বলা প্রয়োজন তা নির্ধারণ করা আবশ্যক। কী বলতে হবে, কী না বললে ভালো হয় তাও আগেই অনুধাবন করা প্রয়োজন, এমন কথা পরিহার করা উচিত যা মানুষকে আঘাত দেয়। তিক্ত মনোভাব নিয়ে কথা বললে পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ, কথা একবার বলে অপরের মনে আঘাত দিয়ে ফেললে তা আর ফিরিয়ে নেয়া যায় না।
হাসিমুখে কথা বলে আন্তরিক আচরণ দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করা বর্তমান প্রেক্ষাপটে এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ উত্তীর্ণ হতে পারাই সার্থকতা। সদা হাস্যোজ্জ্বল থেকে আচরণে আন্তরিক হওয়ার মাধ্যমে শুধুমাত্র অন্যের হৃদয় জয় করাই হয় না, শুধুমাত্র মানুষকে কাছে টানাই হয় না, বরং এটি একটি ইবাদতও বটে। এ প্রসঙ্গে হযরত আলী (রা) বলেছেন- মানুষের সাথে হাসিমুখে কথা বলাটাও একটা ইবাদত। আলী (রা) আরো বলেন- মুমিনের চেহারায় প্রস্ফুটিত থাকে একটি হাস্যোজ্জ্বল আনন্দের রেখা। দুঃখ সমাহিত থাকে তার অন্তরের গভীরে, তার আত্মা হয় প্রশস্ত। আসুন আমরা সকলেই সদা হাস্যোজ্জ্বল থেকে আচরণে আন্তরিক হই।

লেখক : সম্পাদক, মাসিক ছাত্রসংবাদ।

বৃটিশ পত্রিকা ডেইলি মেইলের চাঞ্চল্যকর তথ্য -------- রিজার্ভ চুরির মূল হোতারা থাকেন ভারতে!


বাংলাদেশ বার্তাঃ  বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পেছনে মূল হোতারা রয়েছে ভারতে। এক বছরের বেশি সময় ধরে তারা হ্যাকিংয়ের পরিকল্পনা করে। আর এটা একজনের নয়, কয়েকজনের কাজ। বৃটেনের ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে সূত্রের বরাত দিয়ে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, এসব হ্যাকারের হদিস পাওয়া সম্ভব নয়। গত ফেব্রুয়ারিতে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৫ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে হ্যাকাররা। এর মধ্য থেকে তারা মাত্র ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নিতে সমর্থ হয়। এই অর্থ লোপাটের ঘটনা নিয়ে তদন্ত করছে একাধিক সংস্থা। তবে এখনও পর্যন্ত ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কারও সন্ধান পাওয়া যায়নি। মেইল অনলাইনকে একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই রাজকোষ কেলেঙ্কারি কোনো একজন ‘হোতা’র কাজ নয়। এই কাজে একাধিক ব্যক্তি জড়িত এবং তারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই ঘটনার পরিকল্পনা করেছে। 
সূত্রটি বলেছে, ‘এতে সংশ্লিষ্টরা ভারতে রয়েছে এবং তারা সম্ভবত প্রক্সি (ইন্টারনেটে নিজের প্রকৃত অবস্থান গোপন করে ভার্চুয়াল অবস্থান দেখানোর পদ্ধতি) ব্যবহার করছে। সে কারণেই তাদের ধরা যাচ্ছে না। তারা ভারতের কেন্দ্রেই অবস্থান করছে এবং কয়েকজন রয়েছে বাইরে। কারিগরি দিক থেকে তারা এতটাই শক্তিশালী যে তাদের সন্ধান পাওয়াই সম্ভব নয়।’ ওই সূত্রটি আরও বলেছে, ‘এসব ব্যক্তি খুব সহজেই নিজেদের লুকাতে পারে এবং ২/৩ মিনিটের মধ্যেই হারিয়ে যেতে পারে।’ সূত্রটি জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ লোপাট হওয়া অর্থের কিছুটা উদ্ধার করতে পারলেও পুরোটা পারেনি এবং এর হোতাদের সারাজীবন নিশ্চিন্তে পার করে দেয়ার জন্য দেড় কোটি ডলারই যথেষ্ট।
এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনকে ফিলিপাইনে শনাক্ত করা গেলেও কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি। ফিলিপাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ অবশ্য ফিলিপাইনের ব্যাংকে পৌঁছানো ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার উদ্ধারে দেশটির কর্তৃপক্ষের ওপর আস্থা রেখেছেন। এদিকে ফিলিপাইনের অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের (এএমএলসি) নির্বাহী পরিচালক জুলিয়া আবাদ জানিয়েছেন, কিম ওংয়ের কাছে থাকা দেড় কোটি ডলার ফেরত দেয়া হয়েছে। আরও দুই কোটি ৮০ লাখ ডলার রয়েছে ম্যানিলার ক্যাসিনো সোলেয়ারে এবং এক কোটি ৭০ লাখ ডলার রয়েছে রেমিট্যান্স কোম্পানি ফিলরেমের কাছে। আরও এক কোটি ২০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের ক্যাসিনো সিস্টেমের মধ্যেই রয়েছে বলে মনে করেন জুলিয়া আবাদ। 
তবে ম্যানিলার একজন বেসরকারি গোয়েন্দা অগাস্টাস এসমেরাল্ডা রয়টার্সকে বলেছেন, এই ঘটনাকে ব্যাংকের হ্যাকিং হিসেবে দেখা উচিত হবে না। তিনি বলেন, ‘এটা অনেকটা হ্যাকারদের নিযুক্ত করে অর্থ চুরির ঘটনার মতো। এর পিছনে রয়েছেন এমন ব্যক্তি যিনি ব্যাংক, অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং সিস্টেম ও ক্যাসিনো সম্পর্কে জানেন। আমার কাছে এটাকে মনে হয়েছে আধুনিক সময়ের ওশান’স ১১। একে বলা যেতে পারে ম্যানিলা ১২।’ উল্লেখ্য, ওশান’স ১১ একটি হলিউড সিনেমা যাতে লাস ভেগাসের একটি ক্যাসিনো থেকে অর্থ চুরি করে ১১ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল।উৎসঃ মানব জমিন

আমরা নিরাশ নই, হতাশ নই, মহান আল্লাহই যথেষ্ট...


 বাংলাদেশ বার্তাঃ  হত্যা করা হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী'র আমীর বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের একজন সিপাহসালার মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে। 
শহীদ হিসেবে মহান আল্লাহর কাছে ফিরে গেলেন শহীদ মতিউর রহমান নিজামী। মহান আল্লাহর কাছে বিনীত প্রার্থনা তিনি যেন তাঁর এই প্রিয় বান্দার শাহাদাত কবুল করে শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদায় তাকে সমাসিন করেন। আল্লাহুম্মা আমীন। শহীদ মতিউর রহমান নিজামী’র রেখে যাওয়া দ্বীন বিজয়ের কাজ অব্যাহত থাকবে, বাংলাদেশের জমিন শহীদ নিজামী’র রক্তে উর্বর হবেই, ইন'শা'আল্লাহ। 
এই বন্ধুর পথে পথিকদের এই শপথে বলিয়ান হতে হয়, যে পথে ধরে রবের দরবারে চলে গেলেন প্রিয় নেতা-"ইন্নাস সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন।"
অর্থঃ"নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ সকল কিছুই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য" (সুরা আল আনাআম-১৬২)
ওদের মূল টার্গেট আমাদের হত্যা করে আমাদের পথচলাকে রুদ্ধ করে দেয়া। কিন্তু ওরা জানেনা আমাদের পথচলা চিরকল্যাণের তরে, সত্যের তরে, হেরায় আলোয় উদ্ভাসিত। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সত্যকে যুগে যুগে দাবিয়ে রাখতে চেয়েছিল মিথ্যাশ্রয়ীরা, কিন্তু তাদের স্বপ্ন কখনো পুরণ হয়নি, অনন্তকাল ধরে তা পুরণ হবেও না, ইনশা‘আল্লাহ। 
এই পথের যাত্রীদের অপরাধ শুধু আল্লাহর পথে চলা। আল্লাহর পথে চলা যদি পৃথিবীর স্বার্থান্বেষী মহলের দৃষ্টিতে অপরাধ হয়, আল্লাহর পথের পথিকরা সেই অপবাদ-নিন্দা সয়ে নিতে কুন্ঠিত নয়, যদি যায় জীবন, ঝুলতে হয় ফাঁসির রশিতে তবেও তারা পিছপা নয়। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন- "ওই ঈমানদারদের সাথে তাদের শত্রুতার এছাড়া আর কোন কারণ ছিল না যে, তারা সেই আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল” (সুরা আল-বুরুজঃ ৮)।
একজন নিরাপরাধ মানুষকে রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যা করার চাইতে জঘন্য অপরাধ আর কি হতে পারে? কিছু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া হলুদ রঙ মেখে উল্লাসে মেতে উঠেছে। তাদের বিবেক আর তথাকথিত বিবেকবানদের বিবেকের কাছে যে কেউ প্রশ্ন করতে পারে যে, যে মানুষগুলোকে (জামায়াত নেতৃবৃন্ধকে) রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যার আয়োজন করা হচ্ছে, আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে তাদের বিরুদ্ধে কেন কারও কোন অভিযোগ-অনুযোগ ছিলনা? হঠাৎ করে কেন মিথ্যা, বানোয়াট, বায়বীয় ও ধারণাবশত অভিযোগে এদের রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যা করােএত জরুরী হয়ে পড়েছে? নিশ্চয় এর উত্তর দিতে কথিত বিবেকবান ব্যক্তিরা আমতা আমতা করলেও সময়ের ব্যবধানে ইতিহাস হয়ত তাদের ক্ষমা করবেনা। আমরা এতে বিক্ষুদ্ধ, এমন রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহ নিশ্চয় সীমালঙ্ঘনকারীদের দুনিয়া ও আখেরাতে অপদস্থ করবেন, আর মজলুম ব্যক্তিদের সম্মানিত করবেন, ইনশাল্লাহ। 
এই জঘন্য ঘটনাকে দিব্যি রাজনৈতিক হত্যাকান্ড ছাড়া আর কি বলা চলে? মিথ্যা সাক্ষ্য ও খোঁড়া যুক্তি দিয়ে যারা একটি আদর্শ মুছে দিতে চায় তারা সত্যিই চরম নির্বোধ। যারা "সঙ্গে থাকলে সঙ্গি, দূরে থাকলে জঙ্গি" এমন উপাধি দিতে সামন্যতম কার্পণ্যবোধ করেনা তারা যে কতবড় নির্লজ্জ তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তাদের মুখোশ জাতির সামনে উম্মোচিত, দেশের সচেতন মানুষ সুযোগ পেলেই এর জবাব দেবে। এদের প্রতি মানুষের কোন শ্রদ্ধা, ভালবাসা আস্থা নেই। এরা ক্ষমতার মসনদে গায়ের জোরে, অন্যায়ভাবে অস্ত্রবাজী করে ও প্রশাসনকে অপব্যবহার করে টিকে আছে। এদের অবস্থা ঘুনেধরা তকতকে ফ্রেমের মত, যে কোন সময় তারা ক্ষমতার মসনদ থেকে খসে পড়তে পারে, যা সময়ের ব্যাপার মাত্র। জোর করে অনেক কিছু করা যায়, কিন্তু বেশী দিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায়না, যা বারবার প্রমানিত। 
আল্লাহ দেখতে চান তাঁর বান্দারা তাঁর পথে অবিচল কিনা, আমরা তাঁর কাজে অবিরত কিনা! শাহাদাৎ আল্লাহর বান্দার জন্য এক অপার নেয়ামত। আল্লাহ যদি তাঁর পথের পথিককে পছন্দ করে শাহাদাতের মর্যাদা প্রদান করতে চান তার চেয়ে সৌভাগ্যশীল কে হতে পারে? যুগে যুগে নানা মিথ্যা অভিযোগে অসংখ্য নবী-রাসুল ও তাদের অনুসারীদের হত্যা করা হয়েছে, আজকের ঘটনা এ আর নতুন কি? 
ইসলামের অনুসারীদের শাহাদাতের রক্ত যে ময়দানে ঝরেছে সেই ময়দান ইসলামের জন্য উর্বর হয়, ইসলামপন্থীরা নতুন শক্তিতে বলিয়ান হয়, ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র ভেস্তে যায়। সত্যের বিজয় ঘনীভূত হয়। বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে যারা দেশ থেকে ইসলামী তাহজীব-তামুদ্দুন ও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায় তাদের স্বপ্ন কখনো পূরণ হবেনা, ইনশা’আল্লাহ। শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যেতে পারেনা। আল্লাহ তা'য়ালা আমাদের প্রিয় নেতা ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালারকে কবুল করুন। এদেশে দ্বীনের পথে আন্দোলনের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের চুড়ান্ত ত্যাগ-কুরবানীকে কবুল করুন। আমীন।
আমাদেরকে মহান আল্লাহ ধৈর্য্য, ত্যাগ ও কুরবানীর মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে দ্বীনের পথে আগুয়ান হওয়ার তাওফিক দিন। হাসবুনাল্লাহি নে'য়মাল ওয়াকিল, নে'য়মাল মাওলা ওয়া নেয়মান নাছির। 
আমরা নিরাশ নই, হতাশ নই, মহান আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট।

-আবদুল জব্বার
সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার আবাহন, একজন কথিত মডেল সাবিরা ও নষ্ট সমাজের রূঢ় রূপ... -ব্লগার পুস্পিতা

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ সাবিরা হোসেন, কথিত মডেল! মডেল-অভিনেতা-অভিনেত্রী মানেই তথাকথিত আধুনিকদের স্বপ্নের রাজা-রাণী! সাজ-গোজ, পোষাক-আসাকের সাথে সাথে তাদের মতো হাটা-চলা-বলার চেষ্ঠাও অনেকে করে থাকেন। তারাই তাদের জীবনের আদর্শ!

সেই ধরনের কথিত সুন্দরী, আকর্ষনীয় সাবিরাকে করতে হলো আত্মহত্যা! খবরটি নিয়ে তেমন উৎসাহী ছিলাম না। কিন্তু তার আত্মহত্যার কারণ ও নোটের কথা গুলো যখন প্রকাশ হলো তখন আগ্রহ বেড়ে গেলো। মনে হলো তার কথাগুলোতে শিক্ষনীয় আছে কোটি তরুণীর।
কি সেই শিক্ষাটি? একজন মেয়ে যখন তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ- নিজের আব্রু কোন প্রকার বৈধ সামাজিক বন্ধন ছাড়া পুরুষের কাছে হারিয়ে ফেলে তখন সেই পুরুষের কাছে ওই তরুণী ব্যবহৃত টিস্যু পেপার যে হয়ে যায়, তা সাবিরা এই সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। নষ্ট সংস্কৃতির খপ্পড়ে পড়ে সাবিরা সবকিছুই বিয়ে ছাড়াই দিয়ে বসেছে কথিত বন্ধু বা প্রেমিকের কাছে। খুবই নাকি বিশ্বাস করেছিল! সে জন্যেই নাকি স্ত্রীর মতো সবকিছুই দিয়ে দিয়েছিল। সবকিছু, সবকিছুই! 
বিনিময়ে কি পাওয়া গেলো? কেন, টিস্যু পেপারের মতো ছুড়ে ফেলে দেয়া। বুঝিনা একটি মেয়ে কি করে এভাবে কথিত পুরুষকে বিশ্বাস করে! ভালোবাসার নামে যখন পুরুষ, মেয়েটিকে স্ত্রীর মতো ব্যবহার করতে চায় তখনই তো মেয়েটির সতর্ক হয়ে যাওয়ার কথা। তখনই তো মেয়েটির বুঝা উচিত ভালোবাসা নয়, এখানে ভিন্ন কিছু ওই নষ্ট পুরুষের চাওয়া। আধুনিক মেয়েগুলো নিজেদের এত জ্ঞানী মনে করে, এত প্রগতিশীল দাবী করে, এই সামান্য বিষয়টিও বুঝতে পারে না?! আশ্চর্য!
মেয়ে, নিজেকে এত আধুনিক ও প্রগতিশীল দাবী করো, কিন্তু নিজের শরীর, আব্রু, ইজ্জত আরেকটি ছেলের কাছে বিলিয়ে দেয়া যে ঠিক না, তা বুঝতে পারো না? আশেপাশে এত অধঃপতন দেখেও তোমাদের শিক্ষা হয় না? কিভাবে একজন ছেলের কাছে বিয়ের আগেই সবকিছু সপে দাও? দেয়ার সময় মাথায় আসে না যে প্রতারিত হতে পারো? আসবে কিভাবে? তথাকথিত আধুনিক সংস্কৃতি তো তোমাদের এটিই শিক্ষা দিচ্ছে। অবাধে মেলামেশা করো, উদ্দাম হও, লাম্পট্যপনাতে জড়িয়ে পড়ো। তোমার কি এই বোধটুকুও আসে না যে, তোমার শ্রেষ্ঠ সম্পদই যখন বিয়ের আগে কোন প্রকার সামাজিক স্বীকৃতি ও চুক্তি ছাড়াই একজন ছেলে নিয়ে নিয়েছে তখন পরবর্তীতে সেই ছেলের তোমাকে বিয়ে করার প্রয়োজন কি? 
তাই দেখা যায় সাবিরার মতো সুন্দরী, আধুনিকাও সেই পুরুষের কাছে তুচ্ছ হয়ে যায় যখন বিয়ে বহির্ভূত ভাবে সবকিছু দিয়ে দেয় ওই পুরুষকে। সবকিছু হারানোর পর সাবিরা বুঝতে পারে সে এখন তুচ্ছ! তুচ্ছ না হয়েও বা কি হবে?! কারণ সাবিরাদের মতোই অপসংস্কৃতির ছোঁয়ায় বিবেকশুণ্য হাজারও তরুণী আশেপাশে আছে যাদের ওইসব নষ্টপুরুষরা যখন তখন খুঁজে পায় ও ব্যবহার করতে পারে। যেখানে সাবিরার মতো বা তার চেয়ে আরও কথিত উন্নত-আধুনিক-সুন্দরী কাউকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তখন কেন ওই নষ্ট পুরুষরা ব্যবহৃত টিস্যু পেপার সাবিরার জন্য বসে থাকবে?
কিন্তু সাবিরা কি তুচ্ছ হয়ে যাওয়ার মতো ছিল? কি ছিল না তার? রূপ? সৌন্দর্য? মাধুর্য? কমনীয়তা? স্বাভাবিক ভাবে একজন পুরুষ যা চায় তার কোনটি তার কমতি ছিল? তারপরও কিভাবে সে ফেলনা হয়ে গেলো? বিশাল প্রশ্ন। আত্মহত্যার নোট পড়ে ও ভিডিও দেখে এটি বুঝা যায় আসলে সবকিছু থাকার পরও সে হারিয়ে ফেলেছিল তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদটি। যা কথিত আধুনিক মেয়েরা সাবিরার মতোই ফাঁদে পড়ে হারাচ্ছে অহরহ। কেন জানি না, ওই সব আধুনিক ও কথিত শিক্ষিতরা কেন সবকিছু হারানোর আগে বিষয়টি বুঝতে পারে না! 
সাবিরার আত্মহত্যার নোট পড়ে আবারও হেফাজতে ইসলাম বা এদেশের ইসলামী দলগুলোর সেই দাবীর কথা মনে ভেসে উঠে। তারা দাবী করেছিল, "ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ বন্ধ করা উচিত।" সাবিরাদের পরিণতি দেখে কি এই দাবীর যৌক্তিকতা ফুটে উঠে না? হেফাজত বা ইসলামী দলের এই দাবী আসলে শুধু তাদের বা ইসলামের নয় বরং প্রতিটি বিবেকবান মানুষের। যাদের বিবেক নষ্ট হয়ে গিয়েছে, যারা চায় নারীদের পরিণতি সাবিরাদের মতো হোক, তারা ছাড়া আর কেউ কি এই দাবীর বিরোধীতা করতে পারে? 
বর্তমান বাংলাদেশের তথাকথিত নারীবাদী-প্রগতিশীল-মুক্তমণাদের মূল শত্রু ইসলাম। নারী অধিকারের নামে তারা সবসময় বিরোধীতা করতে থাকে ইসলামের। তাদের সেই ইসলাম বিরোধীতার মূল কারণ তারা আসলে এদেশের তরুণ-তরুণীদের সাবিরা-নির্ঝরদের মতো তৈরি করতে চায় যাদের নীতি, নৈতিকতা, মানবিকতা, চরিত্র, ইসলাম কোন কিছুই থাকবে না, তারা হবে শুধু অশ্লীলতা, যত্রতত্র অবাধ যৌনতা ও যৌন লালসা সর্বস্ব মাতাল কিছু জীব। ওসব জীব দেশ, জাতি, সমাজ, ভবিষ্যৎ কোন কিছুই নিয়ে ভাববে না, ভাববে শুধু কিভাবে অবাধে লালসা মিটানো যায়। 
কিন্তু এক্ষেত্রে একমাত্র ও শুধুমাত্র বাঁধা ইসলাম। তাই বর্তমান বাংলাদেশে নৈতিকতা ধ্বংসের সকল পথ খুলে দেয়া হয়েছে। নৈতিক চরিত্র তৈরির সকল পথ আস্তে আস্তে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। তার ধারাবাহিকতায় বতর্মান বাংলাদেশে ইসলাম, ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতি একপ্রকার নিষিদ্ধ এবং ইসলামী ব্যাক্তিত্বরা কারাগারে বা ফাঁসির কাষ্ঠে। একদিকে অশ্লীলতা, অনৈতিকতা ছড়ানোর কারিগর ভারতীয় অশ্লীল অপসংস্কৃতির নায়ক-নায়িকাদের জন্য বাংলাদেশকে অবারিত করে দেয়া হয়েছে, অন্যদিকে ইসলামকে নির্বাসনে পাঠানো হচ্ছে।
কারণ ভারত, হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ট্রানজিট-কোরিডোর সম্পন্ন ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী যে রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে তাতে সুস্থ-সচেতন-দেশপ্রেমিক-নৈতিকচরিত্র সম্পন্ন মানুষের কোন প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন শুধু বোধশক্তিহীন, অধঃপতিত চরিত্রের জীব সাবিরা-নির্ঝরদের। তাই এই সাবিরা শেষ সাবিরা নয়, আরো অনেক অনেক সাবিরা বর্তমান সাবিরার পরিণতির দিকে ধেয়ে চলেছে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী নষ্ট সংস্কৃতির কবলে পড়ে...

বুধবার, ২৫ মে, ২০১৬

❝দেশবাসীর প্রতি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর, জনাব মকবুল আহমাদ-এর আহ্বান❞

প্রিয় দেশবাসী,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ আজ এক কঠিন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, নাগরিক অধিকার, মৌলিক অধিকারসহ মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার আজ বিপর্যস্ত। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি এত চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আজ হত্যা, ধর্ষণ, খুন, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করবে, তারাই আজ আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে চলেছে। প্রকাশ্যে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়ে পড়েছে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সমাজে মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচারাঙ্গণের অবস্থা আজ সবার সামনে পরিস্কার। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা তো দূরের কথা, তা আজ সরকারের ইচ্ছা পূরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবার অভিযোগ উঠেছে। দেশের জনগণের রাজনৈতিক অধিকার বলতে কিছু নেই। সংবিধানে প্রত্যেক নাগরিকের মতামত প্রকাশ, সভা-সমাবেশ ও রাজনৈতিক দল করার অধিকার স্বীকৃত থাকলেও সরকার তা হরণ করে নিয়েছে। সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে বিরোধীদল দমন, একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও দেশকে রাজনীতিহীন করার পরিকল্পিত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে ফৌজদারী অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হচ্ছে। জনগণের প্রতি সরকারের কোন দায়-দায়িত্ব নেই। প্রতীয়মান হচ্ছে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের পরিবর্তে নানাভাবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। দেশের জনগণ নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন। গোটা দেশ আজ এক বৃহৎ কারাগারে পরিণত হয়েছে। জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনের মহোৎসব চলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে লুটেপুটে ফোকলা বানিয়ে ফেলা হচ্ছে।

.জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে বাংলাদেশ আমার আপনার এবং সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের। গুটি কয়েক অসৎ, লুণ্ঠুনকারী ও সুবিধাবাদী চক্রের হাতে এ দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেয়া যায় না। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য রাষ্ট্র নামক প্রতিষ্ঠানটির প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার যে প্রক্রিয়া চলছে তার বিরুদ্ধে আমাদেরকে সোচ্চার হতে হবে।
.দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার পরিবর্তে, অশান্তি সৃষ্টি করার কাজে ব্যবহার করছে। দেশের আদালতগুলো সরকার শতভাগ আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চায় বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য আদালতগুলো বিরোধীদলের নেতাকর্মীদেরকে বিচারের নামে প্রহসন করে শাস্তি দেয়ার যন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দেশের সীমান্ত অরক্ষিত। দেশের সম্পদ আওয়ামী ক্যাডাররা লুটপাট করে নিচ্ছে। উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কোষাগার থেকে হাজার হাজার কোটি ডলার হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। দেশের শিক্ষাঙ্গণে ভয়াবহ নৈরাজ্য বিরাজ করছে। সরকারের অফিস দলীয় অফিসে রূপান্তরিত হচ্ছে। পেশাদারিত্বের পরিবর্তে মেধাহীন দলীয় ক্যাডারদেরকে পদোন্নতি দিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহ দখল করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের বাইরে কারো কোথাও কোন স্থান নেই। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাংলাদেশ মেধাশূন্য জাতিতে পরিণত হবে এবং বসবাসের অনুপযোগী হয়ে দাঁড়াবে। এ অবস্থা বন্ধের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। দেশের এ নাজুক পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ রক্ষার আন্দোলনে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমরা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি

❝বিধ্বস্ত জামায়াত, মন্ত্রীর গণতন্ত্র আবিষ্কার❞


বাংলাদেশ বার্তাঃ বিধ্বস্ত জামায়াতের সুদিন ফেরাতে কি নিষ্ক্রিয় বিএনপিকে লাগবে? পাবলিক মনে করে, আওয়ামী লীগ একাই যথেষ্ট। দেশকে জেলখানা বানানোর আগে, কলঙ্কমুক্ত করার আগে, ভারতকে উন্নতির সবচেয়ে বড় পার্টনার করার আগে, আওয়ামী লীগ কি একবারও পাবলিক সেন্টিমেন্ট আমলে নিয়েছিল? কেন বারবার ‘সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র’ হয়? সোস্যাল মিডিয়ায় এত রক্তক্ষরণ; কেন নিউ ইয়র্ক টাইমস এতবার সম্পাদকীয় লিখল! কার্টুনিস্টদের যাবজ্জীবন দিলেও ক্যান্সার সারবে না, মলম বাদ দিয়ে কেমোথেরাপি দরকার। 
সরকারের আচরণে দারুণ পাবলিক সিমপ্যাথি উপভোগ করছে বিধ্বস্ত জামায়াত। যারা মনে করে মানুষ হতে হলে দল লাগে, অতীত-বর্তমান কোনোটাই নেই, ভবিষ্যতের তো প্রশ্নই ওঠে না। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বৃত্তায়ন টিকিয়ে রেখে, টিকে আছে নিজেরা। বরং দুর্বৃত্তায়নের বাইরে এসে নিজের চেষ্টায় কোটিপতি হলে অভিনন্দন। যত দিন পর্যন্ত রাজনীতির চোখে পৃথিবী দেখা হবে, পরিবর্তন অসম্ভব। প্রতিটি মানুষের কাছেই কিছু শেখার আছে। তবে ব্যক্তিপূজকদের পরিবর্তনের সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই পত্রিকার প্রথম থেকে শেষ পাতার খবর, ১০ বছর ধরেই এক জায়গায়। 
অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম তুলে সাপের গর্তে পা দিয়েও ভীত নই। ১৯ বছরের কেউ যদি গণধর্ষণে নামে তাহলে ওই এলাকার ঘরে ঘরে যত ধর্ষিতা আর যুদ্ধশিশু, আন্তর্জাতিক বিচারের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে সবাইকে ট্রাইব্যুনালে আনা হোক। তার পরেও সুখরঞ্জন বালীর ঘটনা ঘটেছে এবং নিজামীর মামলায় সাক্ষীর ভিডিও ইন্টারভিউ, জীবন বাঁচাতে সাক্ষ্য দিয়েছি। যুক্তি খণ্ডানোর বদলে বেছে নিলো একজন সংখ্যালঘুর ৮০ বছরের ভিটার ওপর আক্রমণ।

মহাপণ্ডিত সক্রেটিস বলেছেন, ‘আমিই মহাজ্ঞানী। কারণ একমাত্র আমিই জানি, আমি আসলেই কিছু জানি না।’
একজন মন্ত্রী বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের সুফল পেতে জঙ্গি দমনের বিকল্প নেই’ (৬ মে নয়া দিগন্ত)। ’৭৩, ’৭৪ দেখা মানুষেরা বলবেন, ভূতের মুখে রামনাম! একমাত্র আওয়ামী লীগই হালাল-হারাম, একপাত্রে সব সম্ভবের দল। এরশাদ আমল থেকে যাদের সাথে রাস্তায় এবং সংসদে, সেই নিজামীরাই মহাজোটের চোখে জঙ্গি আর সামরিক শাসক এরশাদ গণতন্ত্রের ডুগডুগি হয়ে গেলেন কোন লজিকে?
ইরাক যুদ্ধের পর এশিয়ার আর কোনো সরকারের সমালোচনায় এতগুলো সম্পাদকীয় কি লিখেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস? পশ্চিমের মিডিয়াগুলো পুতিন কিংবা সিসির চেয়ে এ দেশের ১৪ দলকে কেন এত গুরুত্ব দিচ্ছে? 
পাড়ার প্রত্যেকেই যখন গ্রামের এক পরিবারকে বারবার ভুল ধরিয়ে দিতে থাকে এবং তার পরেও যখন নিত্যনতুন ভুলের তালিকা নিয়ে ফিরে আসে, সমস্যা পাড়ার লোক নয়, বরং ওই পরিবারটি। সুতরাং পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি থেকে রানা প্লাজা বিষয়ে ক্রিশ্চিয়ান আমানপোরের তীব্র বাক্যবাণ এবং রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারসহ মাঝখানে যত ঘটনা, একসাথে এতগুলো মানুষ ভুল হয় কী করে? ভাবুন ঠাণ্ডামাথায়।
জঙ্গি হত্যা করে গণতন্ত্র খাওয়াতে গেলে যা হয়, উদাহরণ মধ্যপ্রাচ্য। পাইকারি হারে মানুষ খুন করলেই যদি গণতন্ত্র আসত, মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা ইরাক, লিবিয়া, আফগানিস্তানের মতো হতো না। ‘বন্দুকের নলে আরবে বসন্ত আসেনি, এসেছে আইএস।’ হলোকাস্টের কথা বলি; কিন্তু আরব বসন্তে কত লাখ মারা গেছে? হয়তো এভাবে মানুষ না মারলে, মধ্যপ্রাচ্যের এই পরিস্থিতি হতো না। জোর করে গণতন্ত্র খাওয়ানো যায় না, তুলেও নেয়া যায় না। ন্যাটোর কাটা খাল ধরেই মধ্যপ্রাচ্যে কুমির। গাদ্দাফি হত্যার পরে হোয়াইট হাউজে ওবামা আর হিলারির উচ্ছ্বাস দেখেছি। ড্যাডি বুশ, ‘মিশন একমপ্লিশড।’ স্থিতিশীল মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে প্রায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়ার জন্য দায়ী আরব বসন্তের অদ্ভুত গণতন্ত্র মেডিসিন। পশ্চিমারা এখন বলছে, ভুল করেছি। 
আমাদের গণতন্ত্রের আইনস্টাইনদের সমস্যা হলো, না বোঝেন জঙ্গিবাদ, না গণতন্ত্র। ‘আইএসকে যদি আরব বসন্ত খাওয়ানো যেত, বাংলাদেশেও কথিত জঙ্গি খুন করে গণতন্ত্র আনা যেত।’ মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনা থেকে কোনো শিক্ষা না নিলেও ১৭ কোটি মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলার অধিকার কে দিলো?
জরুরি যে বিচারগুলো হয়নি
আমরা কি হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে বারান্দায় ফেলে রেখে জ্বরের রোগীর ওপর সর্বশক্তি প্রয়োগ করিনি? দেখা যাক, বিচারের অগ্রাধিকার কার! বিষয়টি এ রকম, হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে ১০ ঘণ্টা বসে থেকেও ডাক আসে না; কিন্তু পাঁচ মিনিট আগে আসা রোগীকে নিয়ে ডাক্তারদের হুলস্থুলের কারণ, জ্বরের রোগীর তুলনায় হার্ট অ্যাটাকের রোগীর গুরুত্ব বেশি। ১০ বছরে এত অর্থসন্ত্রাস সত্ত্বেও একটি ফিন্যানসিয়াল ক্রাইমেরও বিচার হয়নি। 
ক) ৬ মে ২০১৬, কলকাতার আনন্দবাজারের স্বীকৃতি, এই সরকারের আমলে ৫০ হাজার কোটি টাকার অধিক পাচার হলে, সুফল ভারতও পেয়েছে। ‘যাদের জেলখানার ভেতরে থাকার কথা, তারা বাইরে ঘুরে বেড়ায় কী করে? টাকা পাচারের র‌্যাকেট নেহাত ছোট নয়। এত বড় চক্র এক দিনে গজায়নি, ধীরে ধীরে ডানা গজিয়েছে... রফতানি বাণিজ্যে সবচেয়ে বেশি আয় পোশাক শিল্পে, পাচার চক্রে তারাই যুক্ত, পোশাক যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য শুল্ক নেয়া হয় না। কম দামে মাল কিনে বেশি দাম দেখানো হয়, অতিরিক্ত টাকা ফাঁক গলে চলে যায় বিদেশে... অপরাধীদের জেরা করলেই জানা যাবে, কোন দেশে কত টাকা যাবে।’ খ) অর্থনীতির আসল খোরাক পুঁজিবাজার। এই বাজারে এক ডলার বিক্রি হয় ১০ থেকে ৫০০ ডলার কিংবা বেশি দামে। পুঁজিবাজার থেকে অর্থ না তুলে নিলে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের মুক্তবাজার অর্থনীতি সম্ভব নয়। অন্যথায়, এক হাজারের বদলে ১০টা পিজাহাট। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যা করল, সেটাই পুঁজিবাজারের আয়না। কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট, আমরা সব বুঝি। সর্বশেষ উদাহরণ, শর্তের ব্যত্যয় ঘটিয়ে নতুন ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারের বাইরে থাকার যে অনুমতি দিলো সরকার, অর্থসন্ত্রাসীদের মহোৎসব। স্টক মেনিপুলেশনের সন্ত্রাসী দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ এবং মুদ্রাসন্ত্রাস করেও বিচারের বাইরে, উদাহরণ পানামা পেপার্স এবং গভর্নর আতিউর। তদন্ত রিপোর্ট হাতে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা, অপরাধীরা এত বেশি প্রভাবশালী যে বিচার সম্ভব নয়। গ) প্রথম আলোকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা, বেসিক ব্যাংকের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা লুট করা ফিন্যানসিয়াল ক্রিমিনালের বিচার সম্ভব নয়; কারণ বিষয়টি রাজনৈতিক অর্থাৎ রাষ্ট্রের বিশেষ ব্যক্তির আত্মীয়। ঘ) ২০১০ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত গভর্নর আতিউরের আমলে প্রায় সাড়ে তিন লাখ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্র“প, রূপালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ইত্যাদি পৃথিবীতে একমাত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংক লুণ্ঠনের দৃষ্টান্ত। ব্যবস্থা নেয়ার বদলে তার জন্য অশ্র“সজল চোখ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগপত্র? গডফাদারদের শিরোমণিকে বিচারের আওতায় আনলে অনেক অর্থসন্ত্রাস ঠেকানো যেত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কি রবীন্দ্রপূজা আর রাখাল বালকের গল্প? এই ম্যালেরিয়ার কথা আনন্দবাজার বলেছে পরে। অর্থনীতির ফাঁপা বেলুনটির কথা দেশী লেখক-গবেষকেরা আগেই বলেছেন; কিন্তু কেউ কি গভর্নর কিংবা অর্থমন্ত্রীর টিকিটিও ছুঁতে পেরেছে? ব্যাংক ডাকাতি ঢাকা দেয়ার চেষ্টা করলেও ফেডারেল রিজার্ভ সাফ জানিয়েছে, চোর ঘরেই। হবুচন্দ্রের আজব তদন্তে গবুচন্দ্রের উদয়। মিলিয়ন ডলারের সংসদীয় অর্থ কমিটির হানিমুন কি শেষ হয়নি? ঙ) মানবজমিন ১৬ মে, ১ বছরেই ৭৬ হাজার কোটি টাকা পাচার। নয়া দিগন্ত ১০ মে, নিরাপত্তা পেলে টাকা ফিরে আসবে : আ ফ ম মোস্তাফা কামাল। মন্ত্রী নিজেই স্বীকার করলেন। অর্থনীতির জন্য বাংলাদেশ কত অনিরাপদ। রাজনৈতিক আত্মীয়স্বজনেরা লুট করা এবং কর ফাঁকি দেয়া বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাঠায় যার কিছুটা প্রকাশিত হলো পানামা পেপার্সে। বিভিন্নভাবে রাঘব বোয়ালদের নাম ঠেকিয়ে রেখেছে দলের গডফাদারেরা। মানবজমিন, ‘জিএফআই-এর রিপোর্টে খারাপের তালিকায় ১৪৯-এর মধ্যে ২৬তম বাংলাদেশ। ১০ বছরে অর্থপাচারের পরিমাণ পাঁচ হাজার ৫৫৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা দেশের দুই বছরের বাজেটের সমপরিমাণ।’ চ) প্রথম আলোতে অর্থমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারে স্বীকারোক্তি, চুরির জন্য ১০০ ভাগ দায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গভর্নরের দায়িত্বে ৬ আঙুলের ছাপ। ছ) মিডিয়া খুললেই লাশ, রক্ত, চুরির ছড়াছড়ি, যেন বাতাসা আর জীবনের মূল্য এক। মন্ত্রী মায়ার জামাই ৭ মার্ডারের অভিযুক্ত একজন, সাড়ে পাঁচ মাস হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনে? সাগর-রুনি, ত্বকী, ৭ মার্ডারের মতো বহু চাঞ্চল্যকর খুনের আসামিদের বেলায় রাজনীতির আলামত? রাজাকার মন্ত্রীকে ঝোলানোর কোনো লক্ষণই নেই। জ) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন, প্রতিটি ব্লগার হত্যাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা, তদন্ত চলছে, আইএস নেই, জঙ্গিরা ঘরের। দাবি, দেশের আইনশৃঙ্খলা আমেরিকার চেয়ে ভালো।’ মন্ত্রীকে বলি, শুধু ঘুষ দেয়ার অভিযোগে সিজারের ৪৪ মাসের জেল হয়েছে। 
ঝ) তিন বছর পরেও সোহেল রানার মতো দুর্ধর্ষ খুনির বিচার আদালতে তোলাই হয়নি! অথচ সব অপরাধীর নাকি এক পরিচয়, ‘২০ দল’। ঝ) বিশ্বজিতের নৃশংস খুনিদের ফাঁসি কার্যকর করা অগ্রাধিকারের তালিকার, ১ নম্বর। চাপাতি লীগের ১২ খুনি এখনো ভ্যাকেশনে। দলীয় একজনের ফাঁসির দড়িটি একদিন আগে সরিয়ে নেয়া হলো। দলের খুনিদের রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে ক্ষমার ঐতিহাসিক রেকর্ড। ঞ) ধরা পড়েও কালো বেড়ালের বিচার হয়নি...।
উদাহরণগুলো প্রমাণ করল, সন্দেহাতীত নয়; বরং বিরোধী দলের বেলায় সব কিছুই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। তবে ফাঁসি কার্যকর করার ঘটনা বাংলাদেশকে মোটেও কলঙ্কমুক্ত করেনি। রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারই সব নয়, আরো আসছে। 
বন্দীদের একজনও কি সোহেল রানার চেয়ে দুর্ধর্ষ? জেলের ভেতরে থেকে বিদ্রোহ কিংবা অভ্যুত্থানের উপযুক্ত? সর্বশেষ বৃদ্ধের শরীর এতই দুর্বল, নিয়মের কম সময়েই লাশ নামাতে হলো। বিচারের অগ্রাধিকার কি খণ্ডাতে পেরেছি? 

প্রতিটি স্বাধীনতা যুদ্ধেরই দুই পক্ষ। বিজয়ীরা পরাজিতদের শাস্তি দেয়, আবার উল্টোটাও হয়। উদাহরণস্বরূপ, কিউবা বিপ্লব খ্যাত চে গুয়েভারা মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও বলিভিয়া স্বাধীন করতে গেলে তাকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’র অপবাদ দিয়ে খুন করা হলো। এসব উদাহরণ বহু। শেষ পর্যন্ত পরাজিত হলে বরং ম্যান্ডেলাকেই ফাঁসি দিতো ব্রিটিশ। 
আমাদের রাষ্ট্রধর্ম বহাল থাকা-না-থাকা নিয়ে আন্দোলনের বিষয়টিও ভাবতে হবে। মানবাতাবিরোধী অপরাধ করে থাকলে অবশ্যই ফাঁসি হবে কিন্তু বিচারও সন্দেহাতীত হতে হবে। তা করতেই জাতিসঙ্ঘের আওতায় আইসিসির জন্ম। প্রতিবারই স্বচ্ছ বিচারের দাবিতে জাতিসঙ্ঘ প্রতিবাদ করে। পাবলিকের প্রশ্ন, জাতিসঙ্ঘ যদি নিজের আইনে বিশ্বাস করে, ফাঁসি হয় কী করে? 

অভিযোগ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ব্যক্তিই নির্দোষ। একটি উদাহরণ, ’৯৬-এর চাঞ্চল্যকর মামলায় সন্দেহাতীত প্রমাণ না হওয়ায় জোড়া খুনি ‘ও জে সিমসন’কে খালাস দিতে বাধ্য হলো মার্কিন কোর্ট। দীর্ঘ ট্রায়াল শেষে উকিলের বিখ্যাত যুক্তি, ‘গ্লাভস্ ডোন্ট ফিট সো ইউ মাস্ট বি একুইটেড।’ অর্থাৎ দস্তানা হাতে পরানো যাচ্ছে না, মক্কেলকে মুক্তি দিতে হবে। বাংলাদেশে রায় কি সন্দেহাতীত? হলে, মৃত্যুদণ্ড নিয়ে এত সমালোচনা কেন? জাতিসঙ্ঘ, হিউম্যান রাইটস্ ওয়াচ, জন কেরির ফোন... রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের বার্তা কী? বিচার সন্দেহাতীত হলে, সরকার কেন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বদলে সবাইকে মিথ্যাবাদী ও শত্র“ মনে করে! এর মানে কি, বিশ্বজুড়ে প্রত্যেকেই ভুল এবং সরকার একাই পণ্ডিত? প্রমাণ ছাড়া বিদেশী পত্রিকা একটি কথাও লিখবে না। বিচার স্বচ্ছ হলে সরকারের উচিত উল্টো টাইমসের বিরুদ্ধে মামলা করা। টাইমস্ লিখেছে, ‘বিচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে।’ আইনমন্ত্রী এবং অ্যাটর্নি জেনারেল অনেকেই টাইমসের সঙ্গে একমত, ‘বিচার রাজনৈতিক’। জেল কোডের বদলে সরকারের দ্রুত রায় কার্যকরের মোটিভ অবশ্যই আইসিসির বাইরে (মাহবুবে আলম, সরকারের সিদ্ধান্তে রায় কার্যকর।)। যারা খুনি সোহেল রানাকে তিন বছর পরেও আদালতে তোলেনি, তারাই তাড়াহুড়ায় ফাঁসি দেয়। যুক্তি খণ্ডানোর বদলে সবাইকে ভুল বলাটা কোনো আইনেই সন্দেহাতীত বিচার নয়।
নিজামীদের ওপর বেজায় ক্ষিপ্ত মোদি। হোটেল সোনারগাঁওয়ে সে কথাই জানিয়ে দিলেন খালেদাকে, এর পরেই খালেদা বোবা। মোদিরা চাইলে হবে না, এমন সাহস কার? চিত্রপরিচালক গৌতম ঘোষ, ‘দেশ দুটোই থাকবে কিন্তু সীমান্তের সেলাইটা শিথিল হবে।’

আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের সঙ্গে ‘আন্তর্জাতিক’ বাক্যটি যুক্ত। ফলে ট্রাইব্যুনালের প্রতিটি কাজই হতে হবে আইসিসির আইন অনুযায়ী। সমালোচনা করলেই অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে আত্মসমর্পণ। ‘আন্তর্জাতিক আইন কবে অভ্যন্তরীণ হয়?’ 
বিজেপির কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের দেরি নেই, তখন বাংলাদেশ হবে কুরুক্ষেত্র। স্বাধীন কাশ্মির অ্যাক্টিভিস্ট আজমল গুরুর স্ত্রীর বক্তব্য, ‘ব্রিটিশরা অনেক ভালো ছিল। তারা ভগৎ সিং-এর লাশ পরিবারকে ফেরত দিয়েছিল। আমার ১৪ বছরের ছেলে শ্রীনগরে কবর খুঁড়ে রেখেছে, তিহার জেল থেকে বাবার লাশ তুলে ফেরত দেয়া হবে। পাকিস্তানিরাও ভালো; কারণ, সর্বজিতের দেহ পরিবারকে ফেরত দিয়েছিল। আমার চোখে ভারত একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র।’ 

বিশ্বের কাছে প্রমাণ করতে চাইছে, এদের ক্ষমতায় না রাখলে বাংলাদেশ হবে আফগানিস্তান, সরকার পতন হলে লাখ লাখ মানুষ মরবে। ঘরের জঙ্গিবাদ প্রচারে, আন্তর্জাতিক মহলে লবি করছে ভারতও। জামায়াতকে সন্ত্রাসী দল ঘোষণায় দিল্লির অসম্ভব তৎপরতা। লক্ষ্য একটাই, ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা এবং সেই মাফিক অগ্রিম প্রোগ্রামও দেয়া শেষ। সবাই বোকা নয়। কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র যখন আলোচনার টেবিলের বদলে কামান তুলে নেয় হাতে, সেটাই ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া...। এই দেশে আইএস আছে কি না, সময় বিচার করবে। কিন্তু সরকারের কর্মকাণ্ড জঙ্গিদের জন্য সবুজ সঙ্কেত। -

মঙ্গলবার, ২৪ মে, ২০১৬

জামায়াতে ইসলামীর ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে সরকার রেহাই পাওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে -ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের


বাংলাদেশ বার্তাঃ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ, এইচ, মাহমুদ আলী গত ২২ মে বিকালে ইউরোপিয় ইউনিয়নের দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে “বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকান্ডগুলো জামায়াত করেছে। সাম্প্রতিক সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী ও তার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনগুলো যেমন, জামায়াতুল মুজাহিদীন (জেএমবি), আনসার-আল-ইসলাম, আনসারুল্লাহ বাংলা টীম, হরকাতুল জিহাদ-আল-ইসলাম (হুজি-বি), হিজবুত তাহরীর বাংলাদেশ এবং আল-মুজাহিদ এই হত্যাকান্ডগুলোর সঙ্গে জড়িত রয়েছে।” মর্মে যে ভিত্তিহীন অসত্য বক্তব্য প্রদান করেছেন তাতে বিস্ময় প্রকাশ করে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের আজ ২৩ মে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ, এইচ, মাহমুদ আলী জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে যে ভিত্তিহীন অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন তাতে আমি বিস্ময় প্রকাশ করে তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তার এ বক্তব্য সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমি স্পষ্ট ভাষায় জানাচ্ছি যে, সাম্প্রতিক সংঘটিত কোন হত্যাকান্ডের সাথে যেমন জামায়াতের কোন স¤পর্ক নেই, তেমনি পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বর্ণিত উপরে উল্লেখিত কোন সংগঠনের সাথেই জামায়াতের কোন সম্পর্ক নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অসত্য বক্তব্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সম্মানিত বিজ্ঞ কূটনীতিকদের বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। তার মনে রাখা উচিত যে, তিনি যদি মনে করে থাকেন যে, তিনিই সব কিছু জানেন ও বুঝেন অন্যরা কিছুই বুঝে না তাহলে সেটা হবে তার মস্তবড় বোকামী। বিজ্ঞ কূটনীতিকগণ বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভালভাবেই অবহিত আছেন। কাজেই আমি আশা করি তাদের অসত্য বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা যাবে না। 
বাংলাদেশে বর্তমানে সরকার অব্যাহতভাবে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা কর্মীসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্য দিবালোকে বাসাবাড়ী থেকে ধরে এনে গুম করছে ও হত্যা করছে। তাদের হত্যা থেকে সাধারণ মানুষও রেহাই পাচ্ছে না। 
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিনাবিচারে মানুষ হত্যা করছে ও গুম করছে। আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী নেতা-কর্মীরা নিজেদের দলের নেতা-কর্মীদের পর্যন্ত নির্বিচারে হত্যা করছে। তারা সংখ্যালঘুদের জায়গা জমি, ঘর-বাড়ী দখল করছে ও সংখ্যালঘুদের হত্যা করছে। দেশে বর্তমানে যে সব গুম, হত্যা, সন্ত্রাস ও ডাকাতি, ছিনতাই, দখলদারী, চাঁদাবাজী চলছে তার নাটের গুরু আওয়ামী লীগ। এ কারণেই দেশের জনগণের মনে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে যে, সাম্প্রতিক যে সব হত্যাকান্ড হচ্ছে তার সাথে কি আওয়ামী লীগই জড়িত? 
জামায়াতে ইসলামীর ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে সরকার রেহাই পাওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জামায়াতের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে সরকার রেহাই পাবে না। বাংলাদেশ সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের দেশ। এ দেশ কোন দল, ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীর সম্পত্তি নয়। এ দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হলে দেশবাসী সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির রাজনীতিকে ঘৃণা করে। 
আমি স্পষ্ট ভাষায় চ্যালেঞ্জ দিয়ে জানাতে চাই যে, জামায়াতুল মিজাহিদীন (জেএমবি), আনছার-আল-ইসলাম, আনসার উল্লাহ বাংলা টীম, হরকাতুল জিহাদ (হুজি-বি), হিজবুত তাহরীর বাংলাদেশ এবং আল-মুজাহিদ ইত্যাদি সংগঠনের সাথে জামায়াতে ইসলামীর কোন সম্পর্ক নেই। এগুলো জামায়াতের অংগ সংগঠন হওয়ার প্রশ্নই আসে না। জামায়াতের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্যেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঐ সব উগ্র সংগঠনের সাথে জামায়াতের সম্পর্ক থাকার কথা জুড়ে দিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছেন। 
আমরা বহুবার বলেছি যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতিতে পরিচালিত হয়ে আসছে। সরকার এবং সরকারী দল রাষ্ট্রীয় ও দলীয় সন্ত্রাসের সাথে সংশ্লিষ্ট। দেশকে সন্ত্রাস মুক্ত করতে হলে আগে সরকার এবং সরকারী দলের কর্মকান্ডে পরিবর্তন আনতে হবে। দেশের জনগণ সন্ত্রাসমুক্ত দেশ চায়। 
আমি দৃঢ়তার সাথেই বলছি যে, সাম্প্রতিক সংঘটিত কোন হত্যাকান্ডের সাথে জামায়াতের কোন সম্পর্ক নেই। কাজেই এ ধরনের বিভ্রান্তিকর অসত্য বক্তব্য রাখা থেকে বিরত থাকার জন্য আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

বুধবার, ১৮ মে, ২০১৬

সাদেক খানের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর

বাংলাদেশ বার্তাঃ ২১শে পদকপ্রাপ্ত ভাষা সৈনিক বিশিষ্ট কলামিস্ট, সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক সাদেক খানের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ গতকাল সোমবার দেয়া শোকবাণীতে বলেন, সাদেক খান একজন দেশপ্রেমিক সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক ছিলেন। তার ক্ষুরধার লিখনী দেশবাসীকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করেছে। তার মৃত্যুতে জাতি একজন দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবীকে হারালো। তিনি তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। তার রূহের মাগফিরত কামনা করে দোয়া করেন-আল্লাহ যেন তার নেক আমলসমূহ কবুল করে তাকে জান্নাতবাসী করেন। 
তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন এবং গুণগ্রাহীদের প্রতি তিনি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

নিজামীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সৌদি গেজেট

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্ক, ১৯ মে ২০১৬: জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দন্ডিত হওয়ার পর আদালতের দেয়া মৃত্যুদ-াদেশ কার্যকর নিয়ে প্রশ্নতুলেছে সৌদি গেজেট। সৌদি আরবের ওই পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে দেশটির সাবেক কূটনীতিক ড.আলী আল গামদী ‘কোন পাপে নিজামীকে ফাঁসি দেয়া হল’ এমন প্রশ্ন তুলে এক নিবন্ধ লিখেছেন। এ নিবন্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে। আমাদের সময় ডটকমের সৌজন্যে পাঠকদের অবহিত করতে প্রতিবেদনটি পরিবেশন করা হল।

অতি সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার বিরোধী দলের নেতা ও জামায়াতে ইসলামের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেছে। বাংলাদেশের বর্তমান শাসকরা আন্তর্জাতিক অনুরোধ উপেক্ষা করেই সাবেক এ মন্ত্রী ও সাংসদকে ফাঁসিরকাষ্ঠে ঝুঁলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকর করে।
অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে’র (আইসিটিবি)’র রায়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা বিরোধী নেতাদের মধ্যে মাওলানা নিজামী পঞ্চম। এ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার ও জবাবদিহিতার জন্য। কিন্তু পদ্ধতিগত অনিয়ম, বিচারে রাজনৈতিক কারসাজি ও আইনি পক্ষপাতদুষ্টতা এর বৈধতাকে কলঙ্কিত করেছে। ৪৫ বছর আগে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন যদ্ধাপরাধের অভিযোগে তার মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়। এ যুদ্ধে অখ- পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন হয়ে বাংলাদেশ নামে নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পরিহাসমূলক বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করার পর নিজামীর মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে, যেখানে মৌলিক আন্তর্জাতিক মানদন্ডের ব্যাপক অভাব ছিল।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা, অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশন ও ব্রিটিশ হাউজ অব লর্ডস এর মতো প্রায় সকল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো আইসিটিবি ও এর বিচার প্রক্রিয়ায়কে আন্তর্জাতিক মানদ-ের পরিপন্থি ঘোষণা করেছে। এছাড়াও কয়েকজন আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীও একই অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে আমেরিকার এক রাষ্ট্রদূত ও এক মানবাধিকার বিশেষজ্ঞের নাম উল্লেখযোগ্য।
এটি দুর্ভাগ্যজনক যে, বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক সমালোচনা ও অনুরোধে কোনো কর্ণপাতই করেনি। এর পরিবর্তে সরকার সেইসব বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে টার্গেট অব্যাহত রেখেছে, যাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭২ সালের শুরু থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকা- পর্যন্ত শাসনামলে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ করা হয়নি। মুজিবুর রহমান এমনকি যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ১৯৫ জন পাকিস্তানি সৈন্যকেও ক্ষমা করে দিয়েছিলেন।
নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সই হওয়া একটি ত্রিদেশীয় চুক্তির আওতায় তিনি এই রাজক্ষমা করেছিলেন। বাংলাদেশের দলগুলোর মধ্যে পুনরায় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই এ চুক্তি সই করা হয়। এ সবকিছুই করা হয় ‘ভুলে যাওয়া ও ক্ষমা করা’ নীতির ভিত্তিতে। সেই সাথে শেখ মুজিবুর রহমান একটি বিখ্যাত উক্তি করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘পৃথিবী জানুক, বাঙালিরা কিভাবে ক্ষমা করতে পারে। ’
যুদ্ধাপরাধের দায়ে এখন যাদের বিচার করা হচ্ছে এবং যাদের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে, মুজিব কন্যা ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তার ক্ষমতাকালীন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কখনই তাদের বিচারের কথা বলেননি। এই বিচারের পেছনে শেখ হাসিনার গোপন কৌশল রয়েছে। তিনি বিরোধী নেতাদের নির্মূলের মাধ্যমে বিরোধী দলগুলোকে অত্যধিক দুর্বল করতেই এই কৌশল নিয়েছেন। যাতে করে তিনি বাংলাদেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে বামপন্থিদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে পুনরায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে। অথচ এসব বামপন্থিরা তার বাবার প্রধান শত্রু ছিল। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে তিনি ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে তথা কথিত আইসিটিবি প্রতিষ্ঠা করেন। শুধু নাম ছাড়া এই ট্রাইব্যুনালে আন্তর্জাতিক মানের কিছুই নেই। ট্রাইব্যুনালে আন্তর্জাতিক বিচারকও নেই। যুদ্ধাপরাধের অভিযুক্তদের কোন আন্তর্জাতিক আইনজীবী নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিশেষজ্ঞ ও বিখ্যাত আন্তর্জাতিক আইনবিদ টবি এম ক্যাডম্যানকেও বাংলাদেশে প্রবেশে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে। ঢাকা বিমানবন্দর নামার পর অবিলম্বে তাকে সেখান থেকেই ফেরত পাঠানো হয়। এমনকি যখন স্থানীয় আইনজীবীরা আসামী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে কাজ করতে আসে, তাদেরও বিব্রতকর অবস্থায় ঠেলে দেয়া হয়। এধরনের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে অন্য একজনকে হুমকি দেয়া হয় এবং যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কাজ করতে করা প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়।
মাওলানা নিজামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এবং কৃষি ও শিল্প বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বিচারে আন্তর্জাতিক মান ও নিয়ম বজায় রাখা হয়নি।
দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায়, আসামি পক্ষের আইনজীবীদের তাদের মক্কেলের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য মাত্র ২০ দিনের সময় দেওয়া হয়। অপর দিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের সময় দেওয়া হয় প্রায় ২ বছর। একইভাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের ২৬ জন সাক্ষীর অনুমোদন দেওয়া হয়। অন্যদিকে আসামীর পক্ষে মাত্র ৪ জন সাক্ষী হাজিরের অনুমোদন দেয়া হয়। এই সব দৃষ্টান্ত স্পষ্ট করে যে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এসব বিচার করা হয়েছে।
এখানে কোনো সন্দেহ নেই, এ ট্রাইব্যুনাল ও এর রায়ের সঙ্গে জড়িতরা ইতিহাসে জায়গা করে নেবে, যে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে কয়েকজন নির্দোষ ব্যক্তির মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে। এই ট্রাইব্যুনাল শুধু বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার উপর আঘাত হানবে না, এটি দেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের সুনামেও আঘাত হানবে। শেখ মুজিব পাকিস্তানি সেনাদের সহায়তাকারীদের ‘ভুলে যাওয়া ও মার্জনা’র ভিত্তিতে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন।
চূড়ান্তভাবে পর্যবেক্ষক টবি এম ক্যাবম্যানের উদ্ধৃতি বলতে চাই। হাফিংটন পোস্টের ওয়েবসাইটে তিনি লিখেছেন, নিজামীকে অন্যায়ভাবে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে। ক্যাডম্যান ওই নিবন্ধে বলেন, ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিমকোর্টের দেওয়া রায় আন্তর্জাতিক বিচারের মানদন্ড বজায় ছিল না।
আন্তর্জাতিক আইনি বিশারদরা নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকরের দুই দিন আগে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে একটি বিবৃতি প্রদান করেন। ওই বিবৃতিতে ইন্ডিপেডেন্ট গ্রুপ অব প্রসিকিউটরস ও জাজেজ ও একাডেমিকদের স্বাক্ষর ছিল।
লেখক: ড.আলী আল গামদী সৌদি আরবের দক্ষিণপূর্ব এশিয়া বিষয়ক সাবেক কূটনৈতিক।
উৎসঃ   আমাদের সময়