ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

রবিবার, ১৫ মে, ২০১৬

হে! জাতীয় বীর আপনাকে সালাম ও অভিনন্দন -ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম


বাংলাদেশ বার্তা ১৫মে ২০১৬ঃ হে! বিশ্বনন্দিত ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম নেতা, মুসলিম উম্মাহর বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর, আমাদের প্রাণপ্রিয় শ্রদ্ধেয় নেতা আপনাকে লক্ষ-কোটি সালাম। দীর্ঘ সময় জুলুম-নির্যতন, অন্যায়-অবিচারের মোকাবেলা করে আপনি এ জাতির সামনে এখন ধৈর্য্য ও ইনসাফের প্রতিক। সময়ের ব্যবধানে হয়ত আপনি মহান আল্লাহর প্রিয় মেহমান হতে যাচ্ছেন! এই সৌভাগ্য একাই আপনার এই জন্য হে! জাতীয় বীর আপনাকে অভিনন্দন। 
সারা জীবন অন্যায়ের সামনে মাথা না নোয়াবার যে দীক্ষা আমাদের দিয়েছেন আপনি জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত তা পালন করেছেন অক্ষরে-অক্ষরে। বাতিলের কোন চক্রান্ত, ষড়যন্ত্রই আপনাকে কাবু করতে পারেনি। আপনি এখন ১৬ কোটি মানুষের দুরান্ত সাহসের বাতিঘর এ জন্য আপনাকে মোবারকবাদ। যারা আপনাদেরকে আজ স্ব্ধাীনতা বিরোধী বলে ফাঁসি দিচ্ছে তারা নিজেরাও স্বীকার করবেন এটি রাজনৈতিক কারণেই শুধু। এদেশের তরুন প্রজন্ম আপনাদেরকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করবে। হে! সিপাহসালার আপনাকে হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা আর শ্রদ্ধার মাল্যদান ছাড়া আমাদের কাছে আর কি আছে! আপনার মুক্তির জন্য আমরা কিছুই করতে পারিনি। মুসলিম বিশ্বের অনৈক্য আর ক্ষমতার রাজনীতির কারণে কেউ খুব উল্লেখযোগ্য ভূমিকাও রাখতে পারেনি। এ দূর্ভাগ্য মুসলিম উম্মাহর। আপনি কোন ব্যক্তি নন। আপনি গোটা মুসলিম উম্মাহর সম্পদ। কিন্তু দূর্ভাগ্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলো আজ পাচাটা গোলামের জিগিরে আবদ্ধ। আপনার বিদায়ে আমাদের ভারাক্রান্ত হৃদয়ে রক্তক্ষরন আর অব্যক্ত বেদনায় অশ্রু বিসর্জিত হচ্ছে। প্লিজ আমাদের নিজগুনে ক্ষমা করবেন। 
হে আল-কুরআনের দায়ী আপনাকে হত্যার সরকারী চক্রান্তে বিক্ষুব্ধ ও ভারাক্রান্ত গোটা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ। হে সংগ্রামী বীর আপনি যখন শাহাদাতের পরম সৌভাগ্য লাভের আশায় পাগলপারা তখন সারা পৃথিবীর ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা এখন এক শাসরুদ্ধকর অবস্থা অতিক্রম করছে। আল্লাহর দরবারে বায়তুল্লাহর গেলাফ ধরে আর নামাজে চোখের পানিতে জায়নামাজ ভাসাচ্ছে পৃথিবীর লক্ষ-কোটি মানুষ। তাদের কন্ঠে আকুতি-হে! জীবন-মৃত্যুর মালিক মহান পরওয়ারদেগার তুমি আমাদের ফরিয়াদকে কবুল কর। হে! আরশের মালিক তুমি আমাদের অশ্রুসিদ্ধ বিনীত আকুতি কবুল কর।
শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা, শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে হত্যার পর আপনাকে হত্যার গভীর চক্রান্ত চলছে। আল্লাহ প্রদত্ত মেধার বিস্ময়কর প্রতিভা আপনি। অসংখ্য আলেম ও ইসলাম প্রিয় জনগণের রুহানি উস্তাদ আপনি। ২০১৫ সালে আমেরিকার বিখ্যাত “দ্যা রয়েল ইসলামিক স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টার” প্রকাশিত তালিকায় বিশ্বের ৫০০ জন প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তির অন্যতম হিসাবে আপনাকে মর্যাদা দিয়েছে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আপনার বলিষ্ঠ ভূমিকা বাংলাদেশের মর্যাদাকে বহির্বিশ্বের কাছে উজ্জ্বল করেছে। দূর্নীতিমুক্ত ও ইনাসফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের অগ্রসেনানী আপনি। বাংলাদেশ গড়ার দূর্নীতিমুক্ত একটি সুখী-সমৃদ্ধ ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের কারিগর আপনি ও শহীদ আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ। এ জাতি চিরদিন আপনাদের স্মরণ রাখবে।
কিন্তু যার জন্য এত ফরিয়াদ রোনাজারি আহাজারি তিনি নি:শ্চল, আটল এবং অবিচল। তাঁর মধ্যে নেই কোন উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার চাপ। বরং কারাগার থেকে দৃঢ়তার সাথে উচ্চারণ করলেন-“জীবন-মৃত্যুর মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। মহান আল্লাহ আমার মৃত্যুর জন্য যে সময় ও স্থান নির্ধারণ করে রেখেছেন ঠিক সে সময় এবং সে স্থানেই আমার মৃত্যু হবে। তার আগেও নয়, পরেও নয়। আমার মাঝে কোন দুর্বলতা নেই। আমি কোন অন্যায় করিনি। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য এ সরকার আমাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। আল্লাহ যদি আমাকে শহিদী মৃত্যু দেন তাহলে সেটা হবে আমার চরম সৌভাগ্য। 
আমি আমার পরিবার, সংগঠনের সর্বস্তরের জনশক্তি ও দেশবাসীকে ধৈর্য ধারণ করার আহবান জানাচ্ছি। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। আমি স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করছি প্রাণের মালিক আল্লাহ। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমি দেশবাসীকে আমার সালাম জানাচ্ছি ও দোয়া চাচ্ছি যাতে আমি জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত ঈমানের ওপর দৃঢ় ও অবিচল থাকতে পারি। আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টির জন্য যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। আল্লাহ আমার জন্মভূমি এই প্রিয় বাংলাদেশকে ইসলামের জন্য কবুল করুন”। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনেও থেকে ও ধৈয্য, সহনশীলতা আর নিজ জন্মভূমির প্রতি আপনার ভালোবাসা গোটা জাতিকে উজ্জীবিত করেছে। 
হে জাতীয় বীর আপনার বিরুদ্ধে আনা এ সবই কাগুজে অভিযোগ। আপনি এ সমাজেই বেড়ে ওঠা সর্বজন শ্রদ্ধেয় জাতীয় ব্যক্তিত্ব খেতাবে ভূষিত। আপনি কাউকে একটু ধমক আর কটুকথা বলার নজির নেই। এই দীর্ঘ জীবনে নেই কোন অন্যায় অবিচার-জুলুম আর অমানবিকতার কোন চিহ্ন!। বরং চরম শত্রুও স্বীকার করবেন ব্যক্তিগত জীবনে আপনি অত্যন্ত ভদ্র, মার্জিত, পরিশীলিত, মৃদুভাষী, অমায়িক ব্যবহার, স্বচ্ছ চিন্তার অধিকারী ও সরল জীবন-যাপনে অভ্যস্ত। আপনি সত্যিই এক অসাধারণ ইসলামী ব্যক্তিত্ব হিসেবে সকলের নিকট সমাদৃত। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দেশবাসীর কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ মানুষ হিসেবে দেশবাসীর হৃদয়ে আপনি স্থান করে নিয়েছেন। এদেশের জনগণ কখনো আপনাদের ভূলবেনা।
আপনাকে আজ যারা এমন ভয়ঙ্করভাবে উপস্থাপন করছে দীর্ঘ ৪৫ বছরে তারা আপনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোন জায়গায় একটি মামলা অথবা জিডিও করতে পারেনি। আপনি দুটি মন্ত্রণালয় চালিয়েছেন অথচ আপনার বিরুদ্ধে এক টাকার দূর্নীতিও আবিষ্কার করা যায়নি। বরং লক্ষ-লক্ষ মানুষের ভোটে এদেশের জনগন আপনাকে বার-বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় রেখেছেন সততা, দক্ষতা, দেশপ্রেমের উজ্জল দৃষ্টান্ত। আপনি হয়ে উঠেছেন ন্যায়, ইনসাফের প্রতিক। আপনাকে লক্ষ-কোটি সালাম ও অভিনন্দন।
অর্ধ শতাব্দী কাল আপনি এ জমীনে আল-কুরআনের আহবান পৌছিয়েছেন দেশের প্রতিটি প্রান্তে-প্রান্তে। মানবতার সেবায় যে জীবন নিয়জিত করেছেন আর আপনাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র চলছে মানবতা বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য!! কি সেলুকাস এ পৃথিবী! কি অদ্ভুত আর বিষ্ময়কর আমাদের রাজনীতি! কত নিষ্ঠুর, নোংরা, কুলষিত, ক্ষমতার মোহে দিকভ্রান্ত আওয়ামীলীগের এই নেতিবাচক শিষ্টাচার বহির্ভূত অ-পরাজনীতি! ধিক আজকের সমাজের এই ঘৃনিত বিষবাস্পকে। ধিক্ আওয়ামীলীগের এই অমানবিক, ফ্যাসিস্ট চরিত্রকে। কিন্তু মনে রাখতে হবে ইতিহাসের চাকা বার-বার ঘুরে আসে। সুতরাং এক মাঘে শীত যায় না, আর আওয়ামীলীগের ক্ষমতা ও চিরস্থায়ী নয়।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আর যে ব্যক্তি জেনে বুঝে কোন মুমিনকে হত্যা করে, তার শাস্তি হচ্ছে জাহান্নাম। সেখানে সে চিরকাল থাকবে। তার ওপর আল্লাহর গযব ও তাঁর লানত এবং আল্লাহ তার জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন।” (৪ ঃ ৯৩) আজ আপনাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে আপনি হয়ে উঠবেন অমর! এগিয়ে যাবেন জান্নাতের দিকে। আর হত্যাকারীরা জাহান্নামকেই নিজেদের ঠিকানা বানিয়ে নিচ্ছে? যুগের পর যুগ শতাব্দীর পর শতাব্দী দুনিয়া বাসী খুনিদের অভিশাপ দিতে থাকবে।
এদেশের মানুষ বিপুল ভোটে দুই দুইবার আপনাকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। কৃষি ও শিল্পমন্ত্রী হিসাবে সর্বমহলে নিজেকে একজন সৎ, দক্ষ ও অমায়িক নেতার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। আপনার সাথে কাজ করা ব্যক্তিরা তা একবাক্যে স্বীকার করেছেন। বিদায়ের বেলায় আপনার মন্ত্রণালয়ের সচিব আইয়ুব কাদরীকে কাঁদতে দেখেছি। এতে বুঝা যায় আপনার সহকর্মীরা আপনাকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতো। মেধা ও নৈতিকতা সমন্বয়ে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবার জন্য ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে সংগ্রাম করে আসা মানুষ আপনি। জেল-জুলুম, নির্যাতন আর রক্তাক্ত পথ পাড়ি দিয়ে নিজেই এখন মজলুমের এক আবহ হয়ে দন্ডায়মান। বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন, স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রাম, শিক্ষা আন্দোলন, ১/১১ বিরাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্র, কেয়ার-টেকার সরকার আন্দোলন, সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আপনি ছিলেন আপোষহীন। মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা সংগ্রামে জীবন বাজি রেখে সর্বদা সোচ্চার থেকেছেন। এদেশের মানুষের তাহজীব-তামুদ্দুন, ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সবার অধিকার রক্ষার আন্দোলনে ছিলেন আছেন প্রথম কাতারে। জীবননাশের চেষ্টাও হয়েছিল অনেকবার। কিন্ত কিছুই আপনাকে টলাতে-দমাতে পারেনি। নাস্তিকতাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের রক্তচক্ষু মোকাবেলা করে নীতির প্রশ্নে সদা আপোষহীন ছিলেন আপনি। কেবলমাত্র ইসলামী আন্দোলন করার আপরাধে আজ ফাঁসির মুখোমুখি। সরকার শুধুমাত্র আদর্শিক কারণেই আপনাকে হত্যার পাঁয়তারা করছে।
বর্তমান ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের রোশানলে পড়ে কারাগারের চার দেয়ালে বন্দী প্রায় ৬ বছর। আপনার অনপস্থিতিতেও ক্ষুরধার লেখনি, সুনিপুণ বক্তব্য এদেশের তরুণ সমাজকে আলোড়িত করেছে দারুনভাবে। আপনার ব্যক্তিত্ব, নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা, নিষ্ঠা-আন্তরিকতা ও দেশ প্রেমের মাধ্যমে আপনি হয়ে উঠেছেন একটি সফল প্রতিচ্ছবি। দূর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন তা সত্যিই বিরল। এই অহংকার বাংলাদেশের জনগণের। 
হে সিপাহসালার আপনি ন্যায় বিচারের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলগণকে প্রেরণ করেছি সুস্পষ্ট প্রমাণসহ এবং তাদের সঙ্গে দিয়েছি কিতাব ও ন্যায়নীতি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।” (৫৭:২৫) অন্যত্র বলা হয়েছে-“আল্লাাহ তা’আলা কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বিচারক নন?”(৯৫ঃ৮) হযরত আলী (রাঃ) বলেছিলেন- “ক্ষমতাপ্রাপ্ত রাজপুরুষের অত্যাচার ও বিচারাসনে বসিয়া বিচারকের অবিচারের মতো মন্দ কর্ম আর নেই।” আজ বাংলাদেশ সরকার যে আইন দিয়ে কথিত যুদ্ধোপরাধীদের বিচার করছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত, সমালোচিত, বিতর্কিত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, কালো আইন হিসেবে খ্যাত। বিশ্বের বড় বড় সংবাদ মাধ্যমগুলো আশঙ্কা করে আসছে, সরকার তার পরিচিত প্রতিপক্ষ এবং রাজনৈতিক শত্রুদেরকে দমন করতেই এ বিচারকে ব্যবহার করছে।” আবারো মনে হয় সেই সত্যই প্রমাণিত হতে চলছে।
আমাদের সমাজে আজ গণহত্যাকারী, খুনী, কোটি কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনকারী, সশস্ত্র সন্ত্রাসী, দূর্নীতিবাজ, লম্পট, চরিত্রহীনরা যেন সাধু! আর নিরাপরাধীদেরকে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে মিডিয়া ট্রায়াল আর বিকৃত উপস্থাপনার মাধ্যমে বানানো হচ্ছে মানবতা বিরোধী! গোয়েবলসীয় সূত্রের আলোকে চলছে সত্যপন্থীদের বিরুদ্ধে এই অসত্য প্রচারণা।
আল্লাহ বলেন- “যারা আল্লাহর ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে তারাই তাদের রবের কাছে ‘সিদ্দীক’ ও ‘শহীদ’ বলে গণ্য। তাদের জন্য তাদের পুরস্কার ও ‘নূর’ রয়েছে। আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতকে অস্বীকার করেছে তারাই দোযখের বাসিন্দা। (৫৭:১৯)
হযরত উম্মে হারেসা বিনতে সারাকা থেকে বর্ণিত, “তিনি হুজুর (ﷺ) এর দরবারে এসে আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্ল¬াহ, আপনি কি হারেসা সম্পর্কে কিছু বলবেন না? জঙ্গে বদরের পূর্বে একটি অজ্ঞাত তীর এসে তাঁর শরীরে বিঁধে যায় এবং তিনি শহীদ হন। যদি তিনি জান্নাতবাসী হয়ে থাকেন তাহলে আমি সবর করবো, অন্যথায় প্রাণ ভরে কাঁদব। হুজুর (ﷺ) জবাব দিলেন, হারেসার মা, বেহেশতে তো অনেক বেহেশতবাসীই রয়েছেন, তোমার ছেলে তো সেরা ফেরদাউসে রয়েছেন।” আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত নবীজি বলছেন, বালা মুসিবত অর্থাৎ পরীক্ষা যত কঠিন হবে, তত বড় পুরস্কার প্রদান করা হবে। (যদি বান্দা বিপদ মুসিবতে দিশেহারা হয়ে সত্যের পথ থেকে সরে না যায়।)
সুতরাং ঈমানের প্রত্যেক দাবীদারকে অনিবার্যভাবে পরীক্ষার চুল্লী অতিক্রম করতে হবেই। বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করতে হবে, বিপদ-মুসিবত ও সংকটের মোকাবিলা করতে হবে। এর ব্যতিক্রম অতীতেও হয়নি এখনো হবে না। হযরত রাশেদ বিন সা’দ জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেছেন। কোনো এক ব্যক্তি রাসূলূল্ল¬াহ (ﷺ) কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্ল¬াহর রাসূল (ﷺ)! কবরে সকল মুমিনের পরীক্ষা হবে, কিন্তু শহীদের হবে না, এর কারণ কী? হুজুর (ﷺ) জবাবে বললেন, “তার মাথার ওপর তলোয়ার চমকানোই তার পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট।”
হে প্রানপ্রিয় নেতা (মাওলানা নিজাম) আপনি এখন বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের প্রাণপুরুষ শহীদ হাসানুল বান্না, সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী, সাইয়েদ কুতুব শহীদ, ওমর মুখতার, অধ্যাপক গোলাম আযম এর কাতারে দন্ডায়মান। ঈমান-ইলম, আমল, সংগঠন পরিচালনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে আপনি যেন মাওলানা মওদূদীর-ই প্রতিচ্ছবি ধীশক্তিসম্পন্ন। আপনার স্থির চিন্তার ব্যক্তিকে বিশ্ববাসী দেখেছে ২৮ অক্টোবর ২০০৬ পল্টনের রক্তাক্ত প্রান্তরে। এমনই এক দিনে মাওলানা মওদূদীর সম্মেলনে যখন হামলা চালানো হয়েছিল। মাওলানা মওদূদীকে লক্ষ্য করে যখন মুহুর্মুহু গুলি করা হচ্ছিল তখন সবাই বসে পড়ল। আর চিৎকার করে সবাই বলল, মাওলানা বসুন বসুন! সেদিন তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বললেন, আমিই যদি বসে যাই তাহলে দাঁড়িয়ে থাকবে কে? তার আল্লাহর প্রতি অগাধ তাওয়াক্কুল সেদিন সবাইকে উজ্জীবিত করেছিল। ঠিক তেমনি ২৮শে অক্টোবর ১৪ দলের সন্ত্রাসীদের মুহুর্মুহু গুলির আওয়াজ স্তব্ধ করতে পারেনি আপনার দৃঢ় কদমকে। অসংখ্য ভাইয়ের শাহাদাত, আহত, রক্তাক্ত জমিনে দাঁড়িয়েও আপনার কণ্ঠ ছিল তেজোদীপ্ত। ছিলেন আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুলে ভরপুর। ছিলেন পাহাড়ের মতো অটল এবং অবিচল। সে দিন যেন মাওলানা মওদূদীরই প্রতিচ্ছবি-ই দেখেছি। 
যুগে যুগে নবী-রাসূল ও সত্যপন্থীদের ওপর জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন, নিপীড়ন হয়েছে নানাভাবে, নানা কৌশলে। কিন্তু কোন দলন নিপীড়নই ইসলামী আন্দোলনের পথচলা থামিয়ে দিতে পারেনি, এখনও পারবে না ইনশাল্লাহ। আপনি শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিত্বই নয়, এদেশের তৌহিদী জনতার কণ্ঠস্বর, গণমানুষের নেতা, বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। আপনাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ শুধু মিথ্যাই নয়, যুদ্ধের শ্রেষ্ঠ মিথ্যাচার। ইতিহাস বলে শহীদের রক্ত বৃথা যায় না। শহীদের রক্তের সিঁড়ি বেয়ে বিজয় আসবেই। 
তিবরানীতে হযরত মুয়াজ বনি জারুন (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদীস যাতে বলা হয়েছে যে, ইসলামের রাজনৈতিক অবস্থা যখন বিকৃত হয়ে যাবে, তখন বিপদগামী শাসকরা কর্তৃত্বশীল হবে এবং তারা সমাজকে ভ্রান্ত পথের দিকে নিয়ে যাবে। তাদের নির্দেশ মেনে চললে জনগণ গোমরাহ হয়ে যাবে। আর তাদের নির্দেশ অমান্য করলে তারা তাদের হত্যা করবে। এ কথা শোনার পর লোকেরা জিজ্ঞেস করলো তারপর তারা কি করবে, তিনি বললেন : সে সময়ে তোমাদেরকে হযরত ঈসার সহচরগণ যা করছিল তাই করতে হবে। তাদেরকে করাত দিয়ে চিরে ফেলা হয়েছে। শূলে চড়ানো হয়েছ, তবুও তারা বাতিলের কাছে আত্মসর্মপণ করেননি।

তাইতো কবি বলেছেন-
“ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয় গান,
আসি অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা দেবে কোন বলিদান।”

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন