ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

রবিবার, ১৫ জুলাই, ২০১৮

আইআইইউসির সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী: আমরা সরকারী ও বেসরকারী বিম্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোন পার্থক্য করিনা

বাংলাদেশ বার্তাঃ  যে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে পারেনি তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন,তাদের বিরুদ্ধে অব্যাহত চাপ রেখেও সঠিক ধারায় আনা কঠিন হয়ে পড়ছে। এভাবে তারা বেশিদিন চলতে পারবে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন,বর্তমানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে জেন্ডার সমতা নির্ধারিত সময়ের আগেই অর্জিত হয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ও ছয় বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তির ক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা অর্জনে আমরা সক্ষম হবো।
গতকাল সকালে সীতাকুণ্ড কুমিরাস্থ আইআইইউসি (আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম)’র ৪র্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন অনুষদের ২২ হাজার ৮৫৯ জন ছাত্রছাত্রীদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এরমধ্যে ১২ হাজার ৩৫৮ জনকে স্নাতক এবং ১০ হাজার ৫৫১ জনকে মাস্টার্স ডিগ্রী প্রদান করেন শিক্ষামন্ত্রী।
রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় চ্যান্সেলর মোআব্দুল হামিদের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সমাবর্তনের দায়িত্ব পালন করে তার বক্তব্যে আরও বলেছেনযে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সফল হতে পারেনিবিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার পরিবেশ ও নির্ধারিত শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেযারা মুনাফার লক্ষ্য নিয়ে চলতে চানযারা নিজস্ব ক্যাম্পাসে এখনও যাননিযারা একাধিক ক্যাম্পাসে পাঠদান পরিচালনা করছেন তাদের বিরুদ্ধে অব্যহত চাপ রেখেও সঠিক ধারায় আনা কঠিন হয়ে পড়ছে। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া তারা আর কোন পথ খোলা নেই।
তিনি দেশের বাস্তবতা এবং জনগণের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও টিউশন ফি’সহ সকল প্রকার ব্যয় একটি সীমা পর্যন্ত নির্ধারিত রাখতে উদার দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেন।
এ সময় শিক্ষামন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সবাইকে ব্যবসা ও মুনাফার চিন্তা ত্যাগ করে জনকল্যাণে সেবার মনোভাব ও শিক্ষার জন্য অবদান রাখার আহবান জানিয়েছেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেশনজট নিরসনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে জানিয়ে নাহিদ বলেনবেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এরমধ্যে রয়েছে প্রেক্ষাপটের পরিবর্তনবিকল্প মাধ্যমের উদ্ভাবনবিশ্বায়নের প্রতিফলনতথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উন্নয়নপ্রাসঙ্গিকতা নিশ্চিতকরণপ্রচলিত শিক্ষা কার্যক্রমের সংস্কার ও নতুন কার্যক্রমের সূচনা। বেসরকারি উদ্যোগ এসব বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সেশনজট নিরসন করে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতিতে অবদান রাখছে।
বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার প্রত্যাশিত মান নিশ্চিতকরণে ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বমানে উন্নীত করার লক্ষ্যে সরকার গুরুত্ব দিয়ে এ সেক্টর তদারকি করছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেনবাংলাদেশের লক্ষ্য সুদূর প্রসারি এবং দৃঢ়। ২০২১ সালের মধ্যেই অর্থাৎ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর পূর্বেই আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবো। ইতিমধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছি। ২০৪১ সালে আমরা উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব সমাজে স্থান করে নিতে চাই।
দারিদ্র দূরীকরণ এখনো আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তা দূরীকরণে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি আরও বলেনততদিন দেশ উন্নত হবে নাযতদিন পর্যন্ত দেশ পরিচালনার জন্যদেশের অর্থনীতির হাল ধরার জন্য,পর্যাপ্ত সংখ্যক জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ প্রকৃত উচ্চ শিক্ষিত নাগরিক আমরা সৃষ্টি করতে না পারি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করার জন্য বলেছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেনবিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জ্ঞানচর্চাগবেষণা ও নতুন জ্ঞান অনুসন্ধান করতে হবে। নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সৃষ্ঠ জ্ঞান জাতির মৌলিক ও বিশেষ সমস্যাগুলোর সমাধান দিতে পারে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সে ধরণের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
নাহিদ আরও বলেনবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ এবং গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য অব্যহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এজন্য বিষয় বাছাইশিক্ষাক্রম উন্নয়নশিক্ষাদানের পদ্ধতি অব্যহতভাবে উন্নত ও যুগোপযোগী করতে হবে।
শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্থিতিশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বহুমাত্রিক শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে শিক্ষার্থীদেরকে সম্পৃক্ত করার যথোপযুক্ত পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর থাকতে হবে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের থাকতে হবে বিশ্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি এবং জাতি ও বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো জ্ঞান ও অন্তর্দৃষ্টি। এজন্য বৈজ্ঞানিকপ্রযুক্তিগত ও তথ্য বিপ্লবের সুযোগ গ্রহণ করে তাদেরকে যুগোপোযোগী মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে।
বর্তমান সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এনেছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ বলেনবর্তমানে শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসাথে শিক্ষাব্যবস্থায় ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে। এর মাঝে বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ সারাবিশ্বে অতুলনীয় বলে বিশ্ব সংস্থাগুলো বিবেচনা করেছে। যথাসময়ে ভর্তিক্লাস শুরুপরীক্ষা গ্রহণফলাফল প্রকাশ,সৃজনশীল পদ্ধটি প্রবর্তনমাল্পিমিডিয়া ক্লাস চালুস্কুলভিত্তিক কম্পিউটার শিক্ষার প্রবর্তনসহ শিক্ষার সামগ্রিক উন্নতির লক্ষ্যে দেশবরেণ্য শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং অ্যাক্রিডিটেশন আইন প্রণয়ন ইত্যাদি শিক্ষায় শৃঙ্খলা এবং মান উন্নয়নে বিরাট অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা সরকারী ও বেসরকারী বিম্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোন পার্থক্য করিনা। বর্তমান সরকার উচ্চ শিক্ষার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে অনেকগুলো সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে এবং এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুণগত মান ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সবল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি নারী শিক্ষায় আমাদের অর্জন সারাবিশ্বের প্রশংসা অর্জন করেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সার্কভুক্ত সব দেশের চেয়ে এগিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার অনেক আগেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে ভর্তির ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার জেন্ডার সমতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেনমিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস এর লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০১৫ সালের পূর্বেই ২০১২ সালে আমরা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুল ভর্তির ক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা অর্জন করেছি। বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ে ছাত্রীর হার ৫১ শতাংশ এবং ছাত্রের হার ৪৯ শতাংশ। মাধ্যমিক পর্যায়ে এর হার যথাক্রমে ৫৩ ও ৪৭ শতাংশ। আগামী তিন বছরের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ও ছয় বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তির ক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা অর্জনে দেশটি সক্ষম হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
নতুন প্রজন্মকে আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে প্রস্তুত করাই শিক্ষার মূল লক্ষ্য উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেনপ্রচলিত গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থায় তা সম্ভব নয়। বর্তমান যুগের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ আধুনিক বিশ্বমানের শিক্ষা ও জ্ঞান প্রযুক্তিতে দক্ষনৈতিক মূল্যাবোধ ও দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ এক পরিপূর্ণ মানুষ তৈরি করা আমাদের লক্ষ্য। তারা আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবে এবং ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।
তিনি এ সময় দেশ ও দশের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করে তুলতে এবং ভালো মানুষ হয়ে বিশ্বসভায় মুখ উজ্জল করতে নবীন স্নাতকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির স্নাতক ও স্নাতকোত্তরধারী শিক্ষার্থীদের উদ্দ্যেশ্যে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেনআজ আপনাদের জন্য আনন্দের দিন। আপনাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন আজ পূরণ হচ্ছে। আজ আপনারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত সনদ গ্রহণ করেছেন।
তিনি এ সময় শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেনএ সাফল্য ও গৌরব অর্জন করতে আপনাদেরকে এবং আপনাদের অভিভাবকগণ ও সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলীকে অনেক শ্রম ও মূল্য দিতে হয়েছে। অনেকগুলো ধাপ পার হয়ে আজকের এ সমাবর্তনে যোগ দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হয়েছে। নিজ মেধাশ্রম ও প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আপনারা তা অর্জন করেছেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষাজীবন এখানে শেষ হলেও কর্মজীবন এখান থেকেই শুরু জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেনআপনাদের অর্জিত শিক্ষা ও জ্ঞান এখন বাস্তব কর্মজীবনে প্রয়োগ করতে হবে। যে জ্ঞান অর্জন হয়েছে তা যেন সমাজের কম আলোকিত মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া,প্রজ্ঞা ও মেধা যেন সাধারণ মানুষের প্রাণে সাহস জোগায় এবং কর্মক্ষেত্রে ও সমাজে যেন সূচিত করে ইতিবাচক পরিবর্তন।
আদর্শ জাতি গঠনে নৈতিক শিক্ষা খুবই জরুরী বলে মন্তব্য করে নাহিদ বলেনশিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি করা বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এর শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধ ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করতে হবে যা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সহায়তা করবে।
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর কেএম গোলাম মহিউদ্দিন বলেনযেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সমাবর্তন অনুষ্ঠান সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ একাডেমিক উৎসব। ৪র্থ সমাবর্তনের মাধ্যমে ২২ হাজার ৮৫৯ জন ছাত্রছাত্রীদেরকে ডিগ্রী দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে ৩৬ জনকে চ্যান্সেলর পুরস্কার এবং ২৩০ জনকে ভাইন চ্যান্সেলর পুরস্কার দেওয়া হবে।
তিনি বলেনউচ্চ শিক্ষা গ্রহণে এখন অসংখ্য মেধাবী ছাত্রছাত্রীর প্রথম পছন্দ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষা প্রদান সারাদেশে একটা বিপ্লব সাধন করছে। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এ বিপ্লবের প্রথম সারির অংশীদার। সামাজিক কল্যাণ ও উন্নয়নে আগ্রহীজাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের স্বনামধন্য জ্ঞানীগুনী কিছু ব্যক্তির উদ্যোগে ১৯৯৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়।
৪৩ একর জমির উপর নিজস্ব ক্যাম্পাসে প্রায় সাড়ে ৬ লাখের অধিক বর্গফুট জায়গায় ৪০টি ভবনে ৬টি অনুষদের ১১টি বিভাগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির। এখানে ৩০৭জন সার্বক্ষণিক শিক্ষকসহ ৪০০ শিক্ষক শিক্ষা প্রদান করছেন। পর্যাপ্ত পরিমাণ অত্যাধুনিক ল্যাবপ্রায় ১৫ হাজার ৫০০টি ইজার্নালস ও ইবুকস৩৫ হাজার টাইটেলের ৮ হাজার ৬১০টি বইয়ের লাইব্রেরী নিয়ে সমৃদ্ধ এই বিশ্ববিদ্যালয়।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এরমধ্যে ভারতনেপালশ্রীলংকাচীনসোমালিয়ামালদ্বীপনাইজেরিয়া,ইথিওপিয়া ও সুদানের ২ শতাধিক বিদেশী ছাত্র অধ্যয়ন করছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অমুসলিম শিক্ষার্থীও লেখাপড়া করছেন বলে জানিয়েছেন আইআইইউসি’র উপাচার্য প্রফেসর কেএম গোলাম মহিউদ্দিন।
এছাড়া উপাচার্য জানিয়েছেনবিশ্ববিদ্যালয়টিতে গবেষণার কাজকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করার জন্য সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড পাবলিকেশন (সিআরপিনামে আলাদা একটি ডিভিশন রয়েছে। যার বাৎসরিক ব্যয় ১ কোটি টাকার অধিক। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৮০জন পিএইচডি ডিগ্রীধারী রয়েছেন। গবেষণায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আইআইইউসি’র অবস্থান তৃতীয়। কান্ট্রি র‌্যাঙ্কিয়ে বিশ্বের ১১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আইআইইউসি’র অবস্থান ২৪তম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য কে এম গোলাম মহিউদ্দিন বলেনতোমরা যারা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ নিয়ে জীবনের আরেকটা অধ্যায়ে প্রবেশ করছো তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা নিবেদন করতে চাই। আমরা তোমাদেরকে নিছক গতানুগতিক শিক্ষা প্রদান করিনি। একজন আলোকিত নাগরিক হওয়ার আধুনিক ও নৈতিকতার সমন্বিত শিক্ষা উপহার দিয়েছি। যাতে তোমরা নিজেদেরকে একজন যোগ্য নাগরিকনৈতিক ও মানবিক মানুষ এবং সর্বক্ষেত্রে আইআইইউসি’র অ্যাম্বেসেডর হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারো।
২০১৯ সালের শেষে অথবা ২০২০ সালের প্রথমভাগে ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। যেখানে ২০১৬ থেকে ২০১৮ সেশনের ছাত্রছাত্রীদের ডিগ্রী প্রদান করা হবে। এছাড়া অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সংযুক্ত আরব আমিরাতে রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা আব্দুর রহমান আলী হাকিম বিন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা কার্যক্রমের সার্বিক তদারকির জন্য তিনি সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আব্দুর রহমান বলেনবিশ্ববিদ্যালয়টির পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে আমি ছুটে এসেছি। বাংলাদেশের শ্রমিক থেকে শুরু করে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার সর্বস্তরের জনগণ সংযুক্ত আরব আমিরাতের উন্নয়নের জন্য এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দু’দেশের মধ্যে বন্ধত্বপূর্ণ সম্পর্ক আগামীতে আরও জোরদার হবে বলে জানিয়েছেন আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা আবদুর রহমান।
এছাড়া সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনচেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল মান্নান এবং কনভোকেশন স্পিকার’স হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর মোহাম্মদ আলী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেনসমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহবায়ক ডমোদেলোয়ার হোসাইন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছেসমাবর্তন অনুষ্ঠানে ২২ হাজার ৮৫৯ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বাধিক শিক্ষার্থী ব্যবসায় অনুষদের। এ অনুষদের অধীনে ১৪ হাজার ১৫২ জন শিক্ষার্থীকে সম্মানসূচক ডিগ্রী প্রদান করা হয়। এছাড়া মোট শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১২ হাজার ৩৫৮ জনকে স্নাতক এবং ১০ হাজার ৫৫১ জনকে মাস্টার্স ডিগ্রী প্রদান করেন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিকে যেসব শিক্ষার্থীদের সিজিপিএ ৪.০০ বা তার ঊর্ধ্বে তাদের ৩৬জনকে চ্যান্সেলর পুরস্কার এবং সিজিপিএ যাদের ৩.৯০ থেকে ৩.৯৯ তাদের ২৩০ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এর আগে অনুষ্ঠানের মূল পর্বের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলওয়াত ও জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি সম্মামনা প্রদর্শন করা হয়। পরে অতিথিদের মাঝে ত্রেস্ট বিতরণ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির পক্ষ থেকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন