২১৫ বছর অাগে কেরালা'র রাজা ছিলেন ত্রিভাঙ্কুর !
তার অামলে পুরুষরা গোঁফ রাখতে চাইলেও কর দিতে হতো ! অার নারীদের দিতে হতো স্তনকর ! স্থানীয় ভাষায় যাকে বলা হত - "মূলাক্করম " !
অাইনটি এরকম, ব্রাহ্মণ ব্যতীত হিন্দুধর্মের অন্য কোন নারী তার স্তন আবৃত রাখতে পারবে না ! নারীদের স্তন রাখতে হবে অনাবৃত, উন্মুক্ত ! আবৃত করতে হলে বা স্তন ঢেকে রাখতে চাইলে দিতে হবে স্তনশুল্ক ! অাবার এই শুল্কের পরিমাণ নির্ভর করবে স্তনের আকারের উপর ! যার স্তন যতবড় তার শুল্ক ততো বেশী !
এই স্তনশুল্কের মোটা অংশ চলে যেত পদ্মনাভ মন্দিরে ! গিনেস বুকের তথ্য অনুযায়ী, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী মন্দির !
৩৫ বছর বয়সী কৃষ্ণ বর্নের অতীব সুন্দরী এক নারীকে প্রায়ই কাজের জন্য বাইরে যেতে হতো ! তবে সে সবসময় তার স্তন ঢেকে রাখতো !
হঠাৎ একদিন সে শুল্ক সংগ্রাহকের নজরে পড়লো, শুল্ক সংগ্রাহকরা তার কাছে স্তনশুল্ক দাবী করলো ! অস্বীকৃতী জানিয়ে মেয়েটি বললো, স্তন আমার, তাকে আবৃত রাখব, নাকি অনাবৃত রাখব তা ঠিক করার তুমি কে ! অামি শুল্ক দেবো না !.....
প্রতিদিন শুল্ক সংগ্রাহকরা তার বাড়িতে এসে তাকে শুল্ক দেওয়ার জন্য চাপ দিতে লাগলো ! দিনে দিনে করের বোঝাও বাড়তে থাকে !
অবশেষে একদিন কর দিতে রাজী হলো মেয়েটি ! শুল্ক সংগ্রাহকদের বাইরে অপেক্ষা করতে বলে দরজা বন্ধ করে ঘরের ভিতরে চলে যায় সে, তারপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলে তার স্তন দুটি ! তারপর নিজের স্তনদ্বয়কে কলাপাতার অাবরণে মুড়িয়ে শুল্ক সংগ্রাহকের হাতে শুল্কস্বরূপ তুলে দেয় তার রক্ত মাখা স্তন ! তারপর বলে, যে জিনিসের জন্য অামাকে অতিরিক্ত শুল্ক গুনতে হয়, সেই জিনিসই অামি রাখবো না..... বিস্বয়ে হতবাক হয়ে যায় শুল্ক সংগ্রাহকসহ পাড়া প্রতিবেশী সবাই !
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মেয়েটির মৃত্যু হয় ! পুরো ভারতে ছড়িয়ে পড়ে এই ঘটনা ! কয়েকদিন পর রাজা ত্রিভাঙ্গুর স্তনশুল্কসহ সকল প্রকার অবৈধ শুল্ক বাতিল করতে বাধ্য হন !
নিজের অজান্তেই মেয়েটি 1859 সালে ভারতে সংগঠিত "কাপড় দাঙ্গা"র বীজ বপন করে যায় ! নিজেকে কতটা ভালবাসলে এমনটা করা যায় ভাবতে পারেন ? এই আত্মপ্রেমী নারীর নাম নাঙেলি !
মানুষ নিজেকে সবচেয়ে বেশী ভালোবাসে অথচ নিজের অাত্বত্যাগের বিনিময়ে পুরো কেরালার নারীদের অাব্রু রক্ষা করেছিলো বীরাঙনা নাঙেলি ! সেও পারতো বাকী সব নারীদের মতো স্তনশুল্ক মেনে নিতে ! শুল্ক দেওয়ার মতো সক্ষমতাও তার ছিলো ! কিন্তু পৃথিবীতে কেউ কেউ বুকে অাগুন নিয়ে জন্মায় ! কোনো অন্যায় তাদের সামনে অাসলেও তা তাদের বুকে স্থান পায় না, বুকের অাগুনে ভস্মিভূত হয়ে যায় সব অন্যায়গুলো ! তাইতো নিজের সুখ/শান্তি/চাওয়া-পাওয়া সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে নারীদেরকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখিয়েছিলো নাঙেলি !
কাহিনী এখনো বাকী ! নাঙ্গেলির শরীর তখনও চিতায় দাউদাউ করে জ্বলছে ! হঠাৎ একটা লোক দৌড়ে এসে সেই চিতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ! লোকটা নাঙ্গেলির স্বামী ! ভারতের ইতিহাসে, স্ত্রীর সঙ্গে সহমরণে যাওয়া কোনো পুরুষের প্রথম এবং শেষ ঘটনা ! ইতিহাস এই প্রেমিক পুরুষের নাম খোদাই করার তাগিদ অনুভব করে নি ! কিন্তু যে অাগুন নাঙেলি জ্বালিয়ে দিয়েছিলো ভারতীয় নারীদের মনে, তা অাজও জ্বলজ্বল করে ! তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখেছে !
অাজ অাপনার দেশের ১০০ভাগ চাকরি প্রার্থীর মধ্যে ৫৬ভাগ চাকরী তারাই পাচ্ছে যাদের কোটা অাছে, বাকী ৪৪ ভাগ পাচ্ছে যার মেধার জোর অাছে সে, সেখানেও অাবার অগ্রাধিকার পাচ্ছে ঘুষ, দলীয় প্রভাব ইত্যাদি !...
অাজ অাপনাকে স্তন কেটে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে হবে না, অন্তত এটা স্বীকার করুন যে, অাপনার সাথে একটা অন্যায় হচ্ছে ! বর্তমান সুবিধালোভী শাষকেরা তাদের সুবিধা ভোগ করার জন্য একটা বড় অন্যয় অাপনার উপর চাপিয়ে দিচ্ছে ! অাপনি অাপনার অবস্থান থেকে সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন !
অার কতোকাল সকল অন্যায়-অবিচার মাথা পেতে সহ্য করবেন !
প্রমান করার সময় এসেছে, অাপনার বিবেক এখোনো পুরোপুরি ক্ষয়ে যায় নি !
অাওয়াজ তুলুন অারেকবার !
প্রমান করার সময় এসেছে, অাপনার বিবেক এখোনো পুরোপুরি ক্ষয়ে যায় নি !
অাওয়াজ তুলুন অারেকবার !
সংগ্রহীত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন