বাংলাদেশ বার্তা নিউজ ডেস্ক: দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার দলটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান।
বিবৃতি তিনি বলেন, “ঈদুল ফিতরের পরের দিন ১৯ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলার মুলিবাড়িতে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাস দু’টির চালকসহ ১৭ জন যাত্রী নিহত ও অর্ধশত যাত্রী আহত হয়েছে। গত ২৩ জুলাই গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও অন্যান্য স্থানে মোট ৩১ জন যাত্রী নিহত হয়েছে। একদিনেই ৩১ জন যাত্রী নিহত হবার ঘটনা পরিস্থিতির ভয়াবহতাই প্রমাণ করে। বিশেষ করে পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার এক সপ্তাহ আগে এবং পরে দুর্ঘটনার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়।
বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, গত ২০১৪ সালের ঈদুল ফিতরের পূর্বের ১ সপ্তাহে ৮৫টি ও পরের ১ সপ্তাহে ১০৪টি সড়ক দুর্ঘনায় ২৫৬ জন লোক হতাহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাব মতে, ২০১৪ সালে প্রায় ছয় হাজার সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় সাড়ে আট হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে এর কয়েকগুণ বেশী লোক। অনেকে চিরদিনের জন্য পঙ্গু হওয়ায় তাদের পরিবারে বিপর্যয়ে নেমে এসেছে। সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার জন্য বর্তমান সরকার যে সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার অধিকাংশই বাস্তবায়ন হয়নি। অথচ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী প্রতিনিয়তই মিডিয়ার সামনে যাত্রীদের নিরাপত্তা প্রদানের কথা বলছেন।”
“যানবাহন চলাচল আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ না করার কারণেই এভাবে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় হাজার হাজার লোক নিহত হচ্ছে এবং অসংখ্য লোক আহত ও পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণেই দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। কোথাও কোন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলে সরকার তাৎক্ষণিকভাবে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেই তার দায়িত্ব শেষ করে। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তির বিচার ও দুর্ঘটনা রোধের কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় না। যে কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে।”
“বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) হিসেব মতে, সারা দেশে ৩ লক্ষ ১৩ হাজার ৬৫৪টি ফিটনেসবিহীন যানবাহন রয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পবিত্র ঈদুল আযহার সময় এ ফিটনেসবিহীন গাড়ীগুলো রাস্তায় নামানোর কারণেই দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যায়।”
“ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন পুরোনো যানবাহন চলাচল বন্ধ এবং অনভিজ্ঞ গাড়ী চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করে গাড়ী চালকদের যান চলাচল আইন কঠোরভাবে মেনে চলতে বাধ্য করা এবং প্রত্যেকটি সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান ও সেই সাথে সড়ক এবং মহাসড়কের ভাঙ্গাচুরা রাস্তাগুলো দ্রুত মেরামত করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন