বাংলাদেশ বার্তাঃ জামায়াত কর্মীদের ব্যক্তিগত রিপোর্ট বইটি দেখলাম। এতে রয়েছে কুরআন-হাদীস-ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন এবং জামায়াতে নামাজ আদায়ের হিসেব রাখার কলাম, দাওয়াতী টার্গেট, কর্মী টার্গেট, কর্মী যোগাযোগ, বই বিলি, সামাজিক কাজ এবং আত্ম-সমালোচনা করা হয়েছে কিনা, কতটুকু হয়েছে তার হিসেব রাখার কলামও। খুব সুন্দর।
আমার দৃষ্ট নিবন্ধ হয়েছে দাওয়াতী এবং কর্মী টার্গেট কলাম দু'টির প্রতি। প্রত্যেক জামায়াত কর্মীর কমপক্ষে চারজন দাওয়াতী এবং চারজন কর্মী টার্গেট থাকা বাঞ্চনীয়। অনেক বন্ধু টার্গেট খুঁজে পান না। আমি মনে করি বর্তমান পরিস্থিতিতে দাওয়াতী এবং কর্মী টার্গেটে নিজের সন্তানদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিৎ। তারা লাইনে আসার পর সে শুণ্যস্থানে অন্যদেরকে বসানোর চেষ্টা করুন। আমাদের অসচেতনতার ফলে আমাদের সন্তানগুলো ইসলাম বিরোধীদের টার্গেটে যেন পরিণত না হয়।
চট্টগ্রামের মাননীয় মেয়ের সাহেবের সম্মানীত পিতা চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদের দীর্ঘ দিনের ইমাম ছিলেন। একজন ইমামের সন্তান চট্টগ্রামের মেয়র হয়েছন। অনেক বড় পাওনা। কিন্তু একজন ইসলামি ব্যক্তিত্বের সন্তানের আরো কিছু ইসলামী পরিচয় থাকা বাঞ্চনীয় ছিল, যা হয়নি। খুঁজলে এমন অনেক পাওয়া যাবে যে, পিতা বড় বুজুর্গ-পীর ছিলেন কিন্তু সন্তান সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী, এমনকি নাস্তিকও হয়ে গেছেন। সন্তানদের প্রতি নিজেদের যদি কোন প্রচেষ্টা না থাকে তাহলে সেজন্য নিঃসন্দেহে পিতা-মাতা দায়ী হবেনই।
মাওলানা মওদূদীকে (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর স্ত্রী যখন নিজের সন্তানদের প্রতি মনোযোগী হতে বলতেন তখন তিনি জবাব দিতেন, 'আমার কয়েকজন সন্তান নিয়ে পড়ে থাকলে লাখ লাখ সন্তানের কী হবে, যারা উচ্ছন্নে যেতে বসেছে?'
আলহামদুলিল্লাহ্! মাওলানার প্রচেষ্টায় পাক-ভারত-বাংলা উপমহাদেশ ডিঙ্গিয়ে সমগ্র বিশ্বের লাখো ছেলে মেয়ে উচ্ছন্নে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়ে ছহীহ দ্বীনের পথ ধরেছেন।
তবে তাঁর এক ছেলে ফারু মওদূদী তাঁর(র) মৃত্যুর পর জামায়াতের সম্পত্তি তাঁর বাবার মনে করে এবং অন্যান্য দলের মতো বাবার পরে সন্তান দলীয় প্রধান হওয়ার খায়েশ পূরণ করতে না পেরে উচ্ছনে গিয়েছেন। পাকিস্তান জামায়াতের সাথে মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়েছেন এবং এ সুযোগে তাঁকে মামপন্থীরা হাতে করেছেন। আপনাদের জানা থাকার কথা, কিছুদিন আগে আমাদের মুরগী কবীর(১৯৭১ পাক হানাদারদের নিকট মুরগী সাপ্লাইয়ার) তাকে দাওয়াত করে এনেছিলেন জামায়াতের বিরুদ্ধে ফতোয়া(!) আদায় করার জন্য।
যাই হোক, মাওলানা মওদূদী (র) যে নিজের সন্তানদের প্রতি একেবারে নজর দেননি তা নয়। তাঁর অন্যান্য সন্তানেরা দ্বীনের উপর অটল আছেন, আলহামদুলিল্লাহ্!
তবে ইতিহাস বলে, হেদায়াত নসীব না থাকলে নবীর(আঃ) সন্তানও কাফের থেকে যায় আবার আল্লাহর ইচ্ছায় কাফেরের সন্তানও নবী( আঃ) হয়ে যেতে পারেন। হযরত নূহ (আঃ) এর ছেলে কেনান এবং হযরত ইবরাহীম (আঃ)এর পিতা আজর এর বড় উদাহরণ।
তবে নসীবের উপর ছেড়ে দিয়ে বসে থাকার কোন সুযোগ নেই। আমাদের চেষ্টার পরও যদি কেউ হেদায়াত প্রাপ্ত না হয়, তাহলে বলতে হবে হেদায়াত তার নসীবে নেই। কিন্তু আমাদের গাফলতির কারণে যদি আমাদের সন্তান সন্ততি উচ্ছন্নে যায় এজন্য আমরাই দায়ী হবো।
আল্লাহ আমাদের সন্তানদের প্রতি রহম করুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন