ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বুধবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১৪

ফেলানীকে দ্বিতীয়বার খুন!

ফেলানীকে দ্বিতীয়বার খুন : ভারতে প্রহসনমূলক বিচারে খুনি বিএসএফ সদস্যকে বেকসুর খালাস মা বললেন রায় মানিনা, আর্ন্তজাতিক আদালতে বিচার চাইলেন বাবা কুড়িগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে নিহত হতভাগ্য বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানী খাতুনের খুনিকে বেকসুর খালাস দিয়েছে ভারতের একটি আদালত। বিএসএফের বিশেষ আদালতে বিচারের নামে প্রহসনের পর বৃহস্পতিবার রাতে ঘোষিত রায়ে অভিযুক্ত বিএসএফের হাবিলদার অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়েছে। রায় ঘোষণার পর অবিশ্বাস্য দ্র্রুততায় সে মুক্তি পেয়েছে। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তে ১৫ বছর বয়সী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ ১৮১ ব্যাটালিয়নের চৌধুরীহাট ক্যাম্পের জওয়ান অমিয় ঘোষ। ফেলানীর খুনিকে খালাস দেয়ার পর তাত্ক্ষণিকভাবে ভারতের প্রতি ‘নতজানু’ বলে সমালোচিত আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও গতকাল এ খবরে বাংলাদেশের বিশিষ্ট নাগরিক থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ফেলানীর বাবা-মা বলেছেন, এ রায়ের মাধ্যমে বিচারের নামে তামাশা করা হয়েছে। তারা আন্তর্জাতিক আদালতে ফেলানী হত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছেন। কাঁটাতারের বেড়ায় ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির পক্ষ থেকেও বিএসএফের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে ফেলানী হত্যার বিচারের জন্য চাপ দেয়া হয়। এরপর গত ১৩ আগস্ট ভারতের কুচবিহার জেলায় সোনারি বিএসএফ ছাউনিতে অমিয় ঘোষের বিচার শুরু হয়। পাঁচজন বিচারক এই বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনা করেন। আদালত পরিচালনা করেন বিএসএফের গোহাটি ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি কমিউনিকেশনস সিপি ত্রিবেদী। অমিয় ঘোষের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুন এবং বিএসএফ আইনের ১৪৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। সেনাবাহিনীর কোর্টমার্শালের অনুরূপ বিএসএফের নিজস্ব আদালত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্ট তাদের বিচার শেষ করে বৃহস্পতিবার। রায়টি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বাহিনীর মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হবে। তবে বিএসএফের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রায় সম্পর্কে এখনও কিছু জানানো হয়নি। ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মামা আবদুল হানিফ ভারতে গিয়ে এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। মেয়ে হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন ফেলানীর বাবা। কুড়িগ্রাম জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্রাহাম লিঙ্কন এ মামলায় ফেলানীর পরিবারকে আইনি সহায়তা দেন। তাদের সঙ্গে বিজিবি-৪৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউল হক খালেদও ভারতে গিয়ে মামলার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। যেভাবে নিহত হয় ফেলানী : ফেলানীর বাবা নাগেশ্বরী উপজেলার দক্ষিণ রামখানা ইউনিয়নের বানারভিটা গ্রামের নুরুল ইসলাম ১০ বছর ধরে দিল্লিতে কাজ করতেন। তার সঙ্গে সেখানেই থাকত ফেলানী, বাসায় বাসায় কাজ করত সে। দেশে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তাই মেয়েকে নিয়ে এক দালালের মাধ্যমে বেড়া পেরিয়ে দেশে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন নুরুল ইসলাম। সেই দালালের কথামত ফজরের আজানের সময়ই তাদের বেড়া টপকানোর কথা ছিল। স্থানীয় ক’জনের মাধ্যমে সেই দালাল বেড়া টপকানোর জন্য কাঠের পাটাতনের ব্যবস্থা করেছিল। নুরুল ইসলাম জানিয়েছিল, প্রথমে তিনি বেড়া টপকে বাংলাদেশের দিকে চলে যান। তারপর যখন ফেলানী একটি বেড়া টপকে অন্য বেড়ার দিকে এগোচ্ছিল, তখন তার জামা কাঁটাতারে আটকে যায়। আর সে সময়ে বিএসএফের এক সদস্য দেখে ফেলে এবং গুলি চালায়। এতে সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ফেলানী। এরপর প্রায় ৫ ঘণ্টা তার লাশ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে ছিল। পরে বিএসএফ সদস্যরা তার লাশ নিয়ে যায়। অবশ্য পরে তার লাশ ফেরত দেয়া হয়। ফেলানীকে হত্যার পর দিল্লিতে তার বাবার মুদি দোকানটিও লুটপাট করে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। আপিলের সম্ভাবনা কম : ফেলানীর পরিবারকে আইনি সহায়তা দেয়া কুড়িগ্রাম জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিঙ্কন বলছেন, বিএসএফ মহাপরিচালক এই রায়কে অনুমোদন দিলে তা হবে ‘চরম দুর্ভাগ্যজনক’। এতে বিএসএফের বেপরোয়া মনোভাব আরও উত্সাহিত হবে বলেও মনে করেন তিনি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ আছে কি-না জানতে চাইলে আব্রাহাম লিঙ্কন বলেন, এটি ছিল এক বিএসএফ সদস্যের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের মামলা। বিএসএফ আইনে বিশেষ আদালতে এই বিচার কাজ চলে। কাজেই আপিল করতে হলে ভারতকেই করতে হবে। ফেলানীর বাবা অথবা আমাদের পক্ষে আপিল করার সুযোগ নেই। তবে বাংলাদেশ সরকার বা ভারতের জনগণ আপিল করার জন্য ভারত সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আব্রাহাম লিঙ্কন বলেন, ‘এ বিচার পর্যবেক্ষণ করার জন্য আমাদের কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি। সাক্ষ্য গ্রহণের পরদিনই আমাদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এ রায়ের মাধ্যমে ভারত আত্মস্বীকৃত খুনিকে বেআইনি হত্যাকাণ্ডের জন্য আইনের নামে বৈধতা দিল।’ তিনি বলেন, ‘এ রায়ের ফলে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের জন্য আরও উত্সাহিত হবে।’ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আপিলের সুযোগ আছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে লিঙ্কন বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে যৌথ বৈঠকের মাধ্যমে যদি কোনো সিদ্ধান্ত আসে, তবে নতুন করে আদালত এ মামলাটি আমলে নিতে পারে বলে মনে করি।’ লিঙ্কন বলেন, ‘অমিয় যদি দোষী প্রমাণিত হতো এবং তার শাস্তি হতো, তাহলে সীমান্ত হত্যার ব্যাপারে ভারত আন্তর্জাতিক প্রশ্নের সম্মুখীন হতো।’ আন্তর্জাতিক প্রশ্ন ও চাপ এড়ানোর জন্যই ভারত প্রত্যক্ষভাবে এই রায় ‘বিকৃত’ করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, বিএসএফ মহাপরিচালক এ রায়কে অনুমোদন দিলে একটি নৃশংস হত্যাকে ‘আইনি বৈধতা’ দেয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গের একটি মানবাধিকার সংগঠনও রায়ের এ খবরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। কলকাতার মানবাধিকার সংস্থা সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) সেক্রেটারি কিরিটি রায় বলেন, ‘বিএফএফ সীমান্তে কেবল ত্রাসের রাজত্বই কয়েম করেনি, বিচারের নামে নাটকও সাজিয়েছে।’ প্রথম মামলাতেই ভাঁওতাবাজি : ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ সীমান্ত। বিএসএফের নির্বিচার গুলিতে প্রতিনিয়ত নিরস্ত্র ও নিরপরাধ বাংলাদেশীরা মারা যাচ্ছে। অথচ সরকার কার্যত এর কোনো প্রতিবাদ করছে না। দেশের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের হিসাবে, গত ১২ বছরে বিএসএফ প্রায় এক হাজার বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে। তবে ফেলানী ছাড়া একটি হত্যাকাণ্ডেরও তদন্ত বা বিচার করেনি ভারত। আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে প্রথমবারের মতো ‘বিচারের’ উদ্যোগ নিয়েছিল ভারত। তবে এটা ছিল চরম ভাঁওতাবাজি। এখানে বিচারের নামে যে প্রহসন চলবে—সে আশঙ্কা ছিল অনেকেরই। শেষ পর্যন্ত সে আশঙ্কাই সত্য হলো। খালাস পেল ফেলানীর খুনি। প্রথম মামলাতেই ধোঁকাবাজি করল ভারত। ফেলানীর বাবা-মায়ের মতে এ রায় বিচারের নামে তামাশা : আমাদের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, ফেলানীর খুনির খালাসের খবর শোনার পর তা মা জাহানারা বেগম বলেন, ‘আমার নির্দোষ মাইয়াডারে যে খুন করছে, তার ফাঁসি চাইছিলাম। কিন্তুক বিচারের নামে হেরা তামাশা করল।’ ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতে সাক্ষী দিয়া আইসা আশা করছিলাম বিচার পামু। কিন্তু এ কেমুন বিচার বুঝলাম না। মেয়েডারে চোখের সামনে পাখির মতন গুলি কইরা মারল কিন্তু তার কোনো বিচার হইলো না।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন