আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করতে ৫৪ দিন পর ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
গতকাল সোমবার রাত পৌনে ৯টা থেকে দুই ঘণ্টার বৈঠকে আন্দোলনের নতুন কৌশল নিয়ে পর্যালোচনা হয়। গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বেগম খালেদা জিয়া।
বৈঠক সূত্র জানায়, চলমান পরিস্থিতিতে আন্দোলনের নতুন কৌশল নিয়ে জোটের নেতাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেন খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে দেশ-বিদেশে কী কী কর্মসূচি গ্রহণ করা যায় তা পর্যালোচনা করা হয়। এরপর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে শিগগিরই লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সভায়। শীর্ষ নেতাদের পরামর্শের ভিত্তিতে খালেদা জিয়া দু’-একদিনের মধ্যেই সংবাদ সম্মেলন করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
বৈঠকে নির্বাচন, জোট নেতাকর্মীদের প্রাণহানি ও গ্রেফতার, নতুন সরকার গঠনের প্রেক্ষিত নিয়েও আলোচনা হয়। বিশেষ করে যেসব নেতাকর্মী খুন ও গুমের শিকার হয়েছেন, তাদের তালিকা প্রণয়ন এবং সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে খালেদা জিয়া দু’-একদিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানান এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) আলি আহমেদ।
বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। একদলীয় বাকশাল স্টাইলের সরকার গঠনের পর জনধিকৃত এ সরকারকে সরাতে কী কী কর্মসূচি নেয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে হাস্যরস সৃষ্টিকারী এ সরকারকে অল্প সময়ের মধ্যে পদত্যাগে বাধ্য করতে ১৮ দলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দৃঢ় প্রত্যয়ী বলে জানান অলি আহমেদ।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য রেদওয়ান উল্লাহ শাহেদী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী, খেলাফত মজলিস সভাপতি মওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনপিপি চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনডিপি চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা, বাংলাদেশ ন্যাপ সভাপতি জেবেল রহমান গাণি, ইসলামিক পার্টির এমএ মবিন, ন্যাপ ভাসানীর শেখ আনোয়ারুল হক, মুসলিম লীগের কামরুজ্জামান, জমিয়তে ওলামা ইসলামের মুফতি শাহিনুর পাশা, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনি।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ গত ১৮ নভেম্বর জোট নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিস্থিতি বিবেচনায় গত ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যান বেগম খালেদা জিয়া। মাঝে মাঝে ফোনে জোটের কিছু নেতার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তবে নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাকশালী স্টাইলের এ সরকারকে সরাতে নতুনভাবে কর্মসূচি প্রণয়ন করতে ১৮ দলের নেতাদের নিয়ে খালেদা জিয়া দীর্ঘ বৈঠক করলেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন