ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৪

কূটনৈতিক নির্ভরতাই ডুবিয়েছে বিএনপিকে.....


আত্মনির্ভরতার বদলে অতিমাত্রায় কূটনৈতিক নির্ভরতাই কাল হয়েছে বিএনপির জন্য। ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতার কারণে দলটি মনে করেছে, জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব কিছুতেই একতরফা নির্বাচন হতে দেবে না। যে কারণে আলাপ-আলোচনা ও সমঝোতার জন্য শেষ সময় পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করেছে। অথচ বিকল্প হিসেবে কঠোর আন্দোলন ও তা বাস্তবায়নের কৌশল দলটি প্রণয়ন করতে পারেনি। এছাড়া দলের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও নেতাদের মধ্যকার অনৈক্যও আন্দোলন সফল না হওয়ার জন্য অনেকাংশে দায়ী। আত্মসমালোচনায় দলটির অধিকাংশ নেতাকর্মী কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বের সক্ষমতা ও ঢাকা মহানগরীর সাংগঠনিক দুর্বলতাকেও দায়ী করছেন। তারা বলছেন, রাজনৈতিকভাবে সফল হলেও রণ-কৌশল বা আন্দোলনের দিক থেকে বিএনপি ব্যর্থ হয়েছে। আর এজন্যই ব্যাপক জনসমর্থন থাকা সত্ত্বেও তা কাজে লাগানো যায়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আমেনা মহসিনের মতে, এক ধরনের সমন্বয়হীনতার অভাব বিএনপির মধ্যে প্রথম থেকেই ছিল। তাছাড়া কোনো প্রো-অ্যাকটিভ ভূমিকাও তারা নিতে পারেনি। পাশাপাশি অতিমাত্রায় বিদেশনির্ভর হওয়াও বিএনপির ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড পছন্দ করেনি। কিন্তু বিএনপিও ইতিবাচক ও বিকল্প কোনো ভিশন জনগণের সামনে স্পষ্ট করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে জনগণ শেষ পর্যন্ত কোনো দিকে যায়নি। তারা আন্দোলনেও সম্পৃক্ত হয়নি; আবার ভোট দিতেও কেন্দ্রে যায়নি।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দৃষ্টিতে জনসম্পৃক্ততার অভাবে বিএনপির আন্দোলন পুরোপুরি সফল হয়নি। পাশাপাশি জামায়াতের ওপর নির্ভর করাও তাদের ঠিক হয়নি। তার মতে, একটি সফল বিরোধী দলের যেসব কলা-কৌশল থাকার কথা বিএনপি তা প্রণয়ন ও ব্যবহার করতে পারেনি। সম্ভবত কর্মীরাও দলে উপেক্ষিত ছিলেন। ফলে তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কিছুটা ব্যর্থ হয়েছে- তা সত্ত্বেও বিএনপি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে এটা বলা যাবে না। কারণ দেশের জনগণ এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। একতরফা নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হলেও তার কপালে অবশ্যই একটি কলংকের তিলক স্পষ্ট হয়ে থাকবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, অতিমাত্রায় কূটনৈতিক নির্ভর হওয়া বিএনপির ঠিক হয়নি। পাশাপাশি দলের মধ্যে অনৈক্য ও সমন্বয়হীনতা; বিশেষ করে ঢাকা মহানগরী নেতাদের আন্দোলনের প্রতি অনীহার কারণে চূড়ান্ত সফলতা পাওয়া যায়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও এটা বলা যাবে না যে, আন্দোলন পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। কারণ বিএনপির আন্দোলন ও বর্জনের কারণেই দেশ-বিদেশে কোথাও নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আবদুল মঈন খান অবশ্য বিএনপির ব্যর্থতার কথা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, বিএনপি ব্যর্থ হলে সরকারকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩টি, আর ভূয়া নির্বাচনের মাধ্যমে ১৪৭ আসনে নির্বাচন করতে হতো না। তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলন সফল হয়েছে বলেই সরকারকে লেজে-গোবরে অবস্থার মধ্য দিয়ে একটি প্রহসনের নির্বাচন করতে হয়েছে।
বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান মনে করেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে দেশ-বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ করার ক্ষেত্রে বিএনপির আন্দোলন অবশ্যই সফল হয়েছে। তবে এটা ঠিক যে, বিএনপির অগ্রবাহিনী বা নেতৃত্বের সক্ষমতা ও দৃঢ়তার অভাবে সেই আন্দোলকে গণঅভ্যুত্থানে পরিণত করা যায়নি। তিনি বলেন, জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ থাকলেও সঠিক কৌশল প্রণয়নের মাধ্যমে তাদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা যায়নি। তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতার মধ্যে কমিটমেন্টের অভাবও দেখা গেছে। ঢাকা মহানগরী বিএনপির ব্যর্থতাও আড়াল করা যাবে না।
অতিমাত্রায় কূটনৈতিক নির্ভরতা : ভারত ছাড়া জাতিসংঘ এবং বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশ সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন করার জন্য চাপে রেখেছে সরকারকে। পাশাপাশি সহিংস আন্দোলন বন্ধের জন্য তারা চাপে রেখেছে বিরোধী দল বিএনপিকে। সরকারের শেষ দু’বছরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে ঢাকাস্থ কূটনৈতিকদের দফায় দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। মধ্যস্থতা করতে ঢাকা সফর করেছেন জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও কর্মকর্তা। সব মিলিয়ে নির্বাচনের আগে এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যে, একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠান সরকারের জন্য খুবই কঠিন হবে বলে অনেকে মনে করতে থাকেন। সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি মূল্যায়নে অনেকে তৃতীয় শক্তির উত্থানের আশংকাও প্রকাশ করেন। ফলে বিএনপি মনে করে, সরকার নির্বাচন করতে পারবে না। অনেকে এমনও আলোচনা করেন যে, সরকার রাজি না হলে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো সরকারকে চাপের মুখে ফেলতে বাণিজ্য অবরোধসহ বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করবে। কিন্তু নির্বাচন বন্ধে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো এ পর্যন্ত বিবৃতি ছাড়া কিছুই দেয়নি। নির্বাচনের পরেও সরকারকে অভিনন্দন না জানালেও তারা সরকারকে চাপে ফেলতে অন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় তারা বলছে, সরকারকে তারা চাপ দিতে পারবে। কিন্তু সরকার রাজি না হলে তারা কী করতে পারে। অপরদিকে সেই তুলনায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত বরং সরকারের সমর্থনে বেশি এগিয়ে এসেছে। অনেকের মতে, নৈতিক ও কৌশলগত সব ধরনের সহায়তা সরকারকে ভারত দিয়েছে; যাতে অনেক ঝুঁকি থাকার পরেও যেমনই হোক একটি নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সরকারের জন্য কিছুটা সহজ হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিএনপির মূল্যায়ন হল; বিশ্বের প্রায় সব দেশ পক্ষে থাকলেও বিএনপির তা কাজে লাগেনি। অথচ একমাত্র ভারত পক্ষে থাকায় সরকার টিকতে পেরেছে। তাই ভৌগলিক অবস্থানগত বাস্তবতায় কৌশলগত কারণে ভারতকে পক্ষে না হলেও অন্তত ‘নিরপেক্ষ’ অবস্থানে আনার জন্য উদ্যোগ নেয়া উচিত ছিল বিএনপির বলে অনেকে মনে করেন।
বিএনপির কেউ কেউ মনে করেন, তাদের বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর অবস্থান নেয়ার প্রধান কারণ গত বছর মার্চে সেদেশের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির বাংলাদেশ সফর। সে সময় পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও অবরোধ কর্মসূচির কারণে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া প্রণবের সঙ্গে দেখা করতে যাননি। এর ফলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। পাশাপাশি রাষ্ট্র হিসেবে ভারত এ ঘটনা ভালোভাবে নেয়নি বলে অনেকে মনে করেন। সে কারণেই ভারতকে খুশি করার জন্য ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য খালেদা জিয়া দিলেও তা কাজে লাগেনি। সব মিলিয়ে বিএনপির এখনকার মূল্যায়ন হল; কূটনৈতিক নির্ভরতা কমিয়ে রাজপথের আন্দোলন বেগমান করলে তাদের আজকের এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতো না।
সুবিধাবাদ ও অন্যান্য কারণ : আন্দোলন সফল না হওয়ার কারণ হিসেবে অন্য অনেক বিষয়ের সঙ্গে বিএনপি নেতারা সুবিধাবাদী চরিত্রের কিনা এ আলোচনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। বলা হচ্ছে; দলের প্রতি নেতাকর্মীদের কমিটমেন্ট অনেক কম। প্রত্যেকেই চান আন্দোলন সফল হোক তারা ‘সুবিধা’ পাবেন। অথচ কেউই এজন্য ঝুঁকি নেবেন না। বিশেষ করে প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন এমন নেতারা ঝুঁকি নিতে চাইছেন না বলে অভিযোগ উঠছে। গত ওয়ান-ইলেভেনের সময় থেকে সংস্কার-অসংস্কার প্রশ্নে বিরোধ, দলের মহাসচিব পদ নিয়ে বিরোধ, সর্বপরি ঢাকা মহানগরীর নেতৃত্ব নিয়ে মির্জা আব্বাস ও সাদেক হোসেন খোকার বিরোধকে কেন্দ্র করে দলটিতে এক ধরনের সাংগঠনিক স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। নেতাদের মধ্যে চলছে দোষারোপের রাজনীতি। আব্বাস সমর্থকদের মতে, খোকা মহানগরীর নেতা, ঢাকার আন্দোলনের দায়িত্ব তার। খোকা সমর্থকরা বলছেন, আমরা ব্যর্থ হলে আব্বাস সমর্থকরা বসে আছেন কেন? গ্রেফতার হওয়ার পরে আব্বাস সমর্থকরা বলেন, আন্দোলনের দায়িত্ব এড়াতে খোকা ইচ্ছা করে জেলে গেছেন। অপরদিকে খোকা সমর্থকদের প্রশ্ন, খোকা না হয় জেলে আছেন; আব্বাস পারলে দেখাক: তিনি কেন বসে আছেন! সূত্র মতে, নির্বাচনের পরেও আব্বাস ও খোকা সমর্থরা পরস্পরকে দায়ী করছেন। খালেদা জিয়ার কাছেও অভিযোগ গেছে ঢাকা মহানগরীর বিরুদ্ধে। জবাবে খালেদা জিয়া বলেছেন, তিনি ঢাকা মহানগরী পুনর্গঠন করবেন। ১৮ দলীয় জোটের বাইরে থাকা অন্য দলগুলোকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত না করতে পারা বিএনপির আরেকটি ব্যর্থতা বলে বিবেচিত হচ্ছে। দলের বড় একটি অংশ মনে করছে, জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি স্পষ্ট করার পাশাপাাশি নির্বাচনের বাইরে থাকা সিপিবি, বাসদ, গণফোরাম, জেএসডি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগসহ অন্য দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে খালেদা জিয়ার একসঙ্গে আন্দোলনে যাওয়া উচিত ছিল। এতে বিএনপির গণমুখী চরিত্র বা অবস্থান স্পষ্ট হতো। কিন্তু এ প্রশ্নে বিএনপির এক ধরনের অনীহা ছিল। অবস্থাটা এমন পর্যায়ে ছিল যে. বিএনপি ক্ষমতায় আসছে; সুতরাং ওই দলগুলো নিজ গরজেই বিএনপির পক্ষে থাকবে। পক্ষান্তরে কোন কোন ইস্যুতে জামায়াতকে বিএনপি সমর্থন করে, আর কোন ইস্যুতে করে না তাও জনগণের মধ্যে স্পষ্ট করা উচিত ছিল বলে অনেকে মনে করেন। তাদের মতে, এ ধরনের কৌশল নেয়া হলে যুদ্ধাপরাধ ও জামায়াতের সঙ্গে বিএনপিকে জড়িয়ে অভিযোগ তোলার সুযোগ সরকার পেতো না।
হেফাজতে ইসলামসহ অন্য ইসলামী দলগুলোর সমর্থনও বিএনপি কাজে লাগাতে পারেনি। ২৯ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে হেফাজতে ইসলামীরও ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ ও তৎপরতায় হেফাজত শেষ পর্যন্ত ওই কর্মসূচি থেকে বিরত থাকে। নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বকে খুশি করতে হেফাজতে ইসলামকে খালেদা জিয়া আস্থায় নেননি। দায় না নিয়ে দলটির সঙ্গে তিনি কেবল কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। ফলে তারা বিএনপির ওপর সন্তুষ্ট নয়।
যদিও ১৮ দলীয় জোট ও বিএনপিকে অক্ষত রাখার পাশাপাশি সিপিবি-বাসদসহ বেশ কয়েকটি দলকে নির্বাচনে বাইরে রাখতে পারা রাজনৈতিকভাবে বিএনপির এক ধরনের সফলতা বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও বিএনপি ভাঙ্গা দূরে থাক জোটের শীর্ষ কোনো নেতা; এমনকি সংস্কারপন্থী বলে পরিচিত একজন নেতাকেও সরকার নির্বাচনে নিতে পারেনি। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন