হাইকোর্টের কোনো রায়ে জামায়াতকে ‘জঙ্গি সংগঠন’ বলা হয়নি - প্রথম আলো
প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক ও টকশো আলোচক মিজানুর রহমান এক প্রবন্ধে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ’হাইকোর্ট জামায়াতকে জঙ্গী সংগঠন হিসাবে রায় দিয়েছে’ দেওয়া বক্তব্যকে অগ্রহণযোগ্য বলে দাবী করেছেন। আজ প্রথমআলোতে প্রকাশিত “জামায়াতঃআর হাইকোর্ট দেখাবেন না” শীর্ষক নিবন্ধে তিনি এসব কথা বলেন।
দশম সংসদ নির্বাচন উত্তর গনভবনে সংবাদ সম্মেলন হয় গতকাল ০৬ জানুয়ারী, ২০১৪, সোমবার। আর সেখানে বক্তব্য ও প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আ’লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা জামায়াত ও বিএনপি জামায়াত সম্পর্কের ব্যাপারে কথা বলেন।
তার বক্তব্যে বিরোধীদলীয় নেত্রীকে জামায়াত ছেড়ে আলোচনার আহবান জানান। একই সাথে তিনি বলেন, হাইকোর্ট জামায়াতকে জঙ্গী সংগঠন হিসাবে রায় দিয়েছেন।
মিজানুর রহমান বলেন, প্রকৃত সত্য হলো, হাইকোর্টের কোনো রায়ে জামায়াতকে ‘জঙ্গি সংগঠন’ বলা হয়নি। ট্রাইব্যুনাল তাকে যুদ্ধাপরাধী বা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। গোলাম আযমের ৯০ বছরের কারাদণ্ড হয়। গত আগস্টে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলকালে জামায়াত নিষিদ্ধের পক্ষে যুক্তি দেয় রাষ্ট্রপক্ষ। এর সুরাহা হয়নি। এ ছাড়া হাইকোর্টের একটি বৃহত্তর বেঞ্চ এক বিভক্ত রায়ে জামায়াতকে দেওয়া ইসির আগেকার সাময়িক নিবন্ধনের বৈধতা নিষ্পত্তি করেছে। ২:১ রায়ে হাইকোর্ট সাময়িক নিবন্ধন বাতিল করেছেন। কিন্তু এটি আপিল বিভাগে যে অবস্থায় আছে, তাতে জামায়াত যদি নির্বাচনে অংশ নিত, তাহলে হাইকোর্টের ওই রায় দেখিয়ে জামায়াতকে নির্বাচনে অযোগ্য করা কঠিন হতো। এর আগে জামায়াত প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কোনো দলকে নিষিদ্ধ করতে তাঁর পরিকল্পনা নেই। মনে হচ্ছে, তিনি তাঁর অবস্থান অপরিবর্তিত রেখেছেন। এবং জামায়াত প্রশ্নে আওয়ামী লীগ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে পারে।
নির্বাচন উত্তর সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর বক্তব প্রসংগে ও মিজানুর রহমান তার পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুশোচনা করলেন না, বরং তাঁর প্রকাশভঙ্গিতে আত্মতৃপ্তিই ফুটল। তিনি অন্তত বলতে পারতেন, জনগণ যতটুকু দিয়েছে, ততটুকুতে তিনি সন্তুষ্ট বটে। কিন্তু এতে তাঁর আত্মতৃপ্তির অবকাশ কম। বিজয় আছে, বিজয়ের গৌরব নেই। এই নির্বাচন তিনি চাননি। এমন নির্বাচনের পুনরাবৃত্তিও তিনি চান না। এটা নিতান্তই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, সত্যিকারের একটি প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন দিয়ে তিনি প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রে উত্তরণ চান। সংবিধানের বাইরের লোকেরাও জনগণের মন ভরাতে এটা বলেন। অবশ্য নির্বাচিতের তকমা থাকায় সেটা তাঁকে বলতে হলো না।
তিনি তার নিবন্ধে আহবান রেখে বলেন. জামায়াত নিয়ে উভয় দলের ভাঁওতাবাজি বন্ধ হোক। তবে সবার আগে সমাজে জামায়াত কীভাবে থাকবে, সে বিষয়ে সংসদকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ঢের হয়েছে, দয়া করে আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে রাজনৈতিক শিকার আর করবেন না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন