(সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ |
দেশের বড় একটি দল নির্বাচন প্রতিহত করায় নির্বাচনের পর ভোটারদের নিরাপত্তা পুরোপুরি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। শনিবার দুপুরে স্থগিত আসনে নির্বাচন প্রস্তুতির বৈঠক শেষে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। দেশের বড় একটি দল নির্বাচন প্রতিহত করার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, বড় একটি দল নির্বাচন বর্জনের পাশাপাশি নির্বাচন প্রতিহত করার কারণে নির্বাচনে সহিংসতা বেশি হয়েছে। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাকারীদের কোন ছাড় দেয়া হবে না জানিয়ে সিইসি বলেন, যারা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করছে তারা সন্ত্রাসী, তাদের কঠোর শা¯িত্ম দেয়া হবে। কোনোভাবে ছাড় দেয়া হবে না। তারা যেখানে থাকুক খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই সময় নির্বাচনী এলাকাসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন হয়েছে আরো হবে বলেও দাবি করেন তিনি। ৯ জানুয়ারির পরও সেনাবাহিনী মাঠে আছে জানতে চাইলে কাজী রকিবউদ্দীন বলেন, ৯ জানুয়ারি পর্যšত্ম সশস্ত্র বাহিনী আমাদের বাজেটে এবং প্রয়োজনে মাঠে ছিল। এখন কোথাও থাকলে তা তাদের শীতকালীন মহড়া। নির্বাচনী এলাকায় সেনাবাহিনী ১৭ জানুয়ারি পর্যšত্ম মাঠে থাকবে। তবে সরকার চাইলে যে কোনো সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে পারে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহাপরিচালক-বিজিবি, আনসার, ভিডিপি, কোস্টগার্ড, এনএসআই, এসবি, ডিজিএফআই ও র্যাব, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পুলিশ, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, উপ-মহাপরিদর্শক (সংশ্লিষ্ট চার রেঞ্জ), ৬ ডিসি (সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা), ৬ জেলা পুলিশ সুপার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, পরিচাল, আনসার ভিডিপি (সংশ্লিষ্ট চার রেঞ্জ), সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা। ১৬ জানুয়ারি ৬ জেলার ৮টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে ৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। ৩৯২ কেন্দ্রে ভোটারেরা ভোট প্রদান করবেন। বৈঠকে উপস্থিত ৬ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা তাদের এলাকা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং প্রার্থীদের নানা অনিয়ম প্রতিরোধে নির্বাচন কমিশনের দিক নির্দেশনা চান। বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে দলমত নির্বিশেষে চিহ্নিত অপরাধী, চাঁদাবাজ, মাস্তান, অস্ত্রবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং কারো বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক বা বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়। কার্যপত্র অনুযায়ী প্রতি কেন্দ্রে ১০ জন অস্ত্রধারী পুলিশসহ ২৫ দায়িত্ব পালন করবে। তবে এবার ৫ জানুয়ারির চেয়ে অধিক গুরুত্ব এবং কঠোরভাবে দায়িত্ব পালনে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে প্রতি ১০ কেন্দ্রের জন্য ৪৩ জন সশস্ত্র বাহিনী, ৩ কেন্দ্রের জন্য ১৩২ জন পুলিশ সদস্য, ৫ কেন্দ্রের জন্য ৮২ জন র্যাব সদস্য এবং ১০ কেন্দ্রের জন্য ৪৩ জন করে বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। ৫ জানুয়ারির ধারাবাহিকতায় বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ইলেক্টরাল ইনকোয়ারী কমিটিকে সহায়তা করতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হবে। যারা নির্বাচনী অপরাধ খতিয়ে দেখবে। ৮ আসনের নির্বাচনে বিচারিক দায়িত্বে থাকবেন ৩০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গঠিত সমন্বয় সেল এবারও কাজ করবে। এতে পুলিশ, আনাসার, বিডিআর, সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার একজন করে প্রতিনিধি থাকবে। যারা ভোটগ্রহণের আগে থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকা সমন্বয়, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় ও ইসির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন