ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩

মুজাফফর নগরের কান্না

'ধরুন, শূন্য দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রচণ্ড শীতের মধ্যে পেটে প্রচণ্ড ক্ষুধা নিয়ে, ছিন্ন-ভিন্ন তাঁবুতে একটি পাতলা কম্বল মুড়ে কোনো রকমে শুয়ে আছেন। এমন অবস্থায় গভীর রাতে শিশির ছুঁয়ে ছুঁয়ে শরীরকে ভিজিয়ে দিল।' ভারতের মুজাফফরনগরের দাঙ্গাপীড়িত মুসলমানদের একজন সাংবাদিককে ভয়াবহ এই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিচ্ছিলেন এভাবেই। উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগরে হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গা হয়েছে সেই আগস্ট -সেপ্টেম্বরে। দাঙ্গা বললে ভুল হবে। বরং মুসলমানদের উপর সংখ্যাগুরু হিন্দুদের আক্রমণ বলা চলে। সেই আক্রমণে অন্তত ৫০ জন মুসলিম নিহত হন, ধর্ষিত হন অনেক মুসলিম নারী-কিশোরী। বাড়িঘর, গবাদি পশু, ফসলি জমি কোনো কিছুই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাঁচতে পারেনি। আক্রমণ থেকে বাঁচতে মুসলমানেরা বাড়িঘর ছেড়ে খালি হাতেই দূর- দূরান্তে পাড়ি দিয়েছেন আশ্রয়ের আশায়। কিন্তু সেই আশ্রয় কী তাদের মিলেছে? এর উত্তর পাওয়া যাবে ভারতীয় বিখ্যাত দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন থেকে। দাঙ্গাপীড়িত মুসলমানেরা এখন আশ্রয় নিয়েছেন মুজাফফরনগর শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে একটি খোলা মাঠে। জায়গাটির আয়তন হবে একটি ফুটবল মাঠের অর্ধেকের মতো। সেখানে খোলা মাঠে শামিয়ানা টানিয়ে চলছে দিনাতিপাত। এই দিনাতিপাত কবে শেষ হবে তা কেউ জানে না। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দাঙ্গাপীড়িত পরিবারগুলোকে পাঁচ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অল্প এই ক্ষতিপূরণও সব পরিবারের ভাগ্যে জুটেনি। এর মধ্যেই এসে গেছে শীতকাল। উপমহাদেশজুড়েই নেমেছে শীত। হিমালয়ের অনতিদূরে অবস্থিত উত্তর প্রদেশের এই শরণার্থী শিবিরগুলো এখন শীতের হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে। প্রচণ্ড শীতে ইতোমধ্যেই শরণার্থী শিবিরের ১১টি শিশু মারা গেছে। শরণার্থী শিবিরে এখন ৭৪ জন গর্ভবতী নারী রয়েছেন যাদের মধ্যে ২৪ জন খুব শীঘ্রই মা হতে যাচ্ছেন। গর্ভবতী এসব নারী ভুগছেন মারাত্মক পুষ্টিহীনতা ও চর্মরোগে। আশ্রয় শিবিরের শিশুরা এই শীতেও খালি পায়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে। তাদের জন্য নেই একটি গরম কাপড়ও। শিবিরে আশ্রয় নেয়ার পর সম্ভ্রম হারানোর ভয়ে ৮৫ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরী মেয়েকে বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন তাদের বাবা- মা। গত সপ্তাহে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট স্থানীয় প্রশাসনকে শিবিরে আশ্রয় নেয়া লোকজনের জন্য জরুরী ত্রাণ সহায়তা দেয়ার আদেশ প্রদান করে। কিন্তু সেই আদেশ এখনো আদেশই রয়ে গেছে। ৪৮০টি পরিবারের প্রায় সাড়ে তিন হাজার নারী, পুরুষ ও শিশু শীতের কামড়ে কাবু হয়ে পড়েছেন। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে তারা মুজাফফরনগর ছেড়ে পূর্বাঞ্চলীয় শ্যামলী জেলার শরণার্থী শিবিরে ছুটে যাচ্ছেন। গত জানুয়ারিতে মুজাফফরনগরের তাপমাত্রা দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছিল। আর মাত্র কদিন পরই আসছে আরেকটি জানুয়ারি। তবে, সবচেয়ে ভয়াবহ শীত নেমে থাকে ডিসেম্বরের শেষের দিকে। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট দিন হচ্ছে ২২ ডিসেম্বর। ছোট দিন মানেই সূর্যের অবস্থান থাকে কম। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই তাপমাত্রা নেমে যায়। মোটামুটি হিসেবে আমাদের এই উপমহাদেশে ২২ ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করেই শীতের তীব্রতা ঘনীভূত হয়। এই তীব্র শীত, সঙ্গে ক্ষুধা তো আছেই। এই নিয়েই দিনযাপন করছেন মুজাফফরনগরের দাঙ্গাপীড়িত মুসলমানেরা। তারা জানেন না তাদের এ শীত আর ক্ষুধা কবে দূর হবে। 'টাইমস অব ইন্ডিয়া' ও 'দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস' অবলম্বনে শাহ মোহাম্মদ আতিকুল্লাহ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন