ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৩

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার ৪ বৃদ্ধ শিক্ষক

কুমিল্লা চারিদিকে চলছে গুম-খুন-মামলা-হামলা। যেন নৈরাজ্যকর এক বিভিষীকাময় পরিস্থিতি। নাগরিকরা পরবাসী এখন নিজ দেশেই। এ পরস্থিতি থেকে বাদ যাচ্ছে না আবাল-বৃদ্ধা-বনিতা কেউই। ‘যাকে ইচ্ছা ধরো, জেলে ঢুকাও ; নয়তো মেরে ফেলো’ এই যেন নীতি। কুমিল্লার মুরাদনগরের সাম্প্রতিক একটি চিত্র সরকারের সেই স্বেচ্ছাচারিতাকেই মনে করিয়ে দিচ্ছে বারবার। পুলিশি মামলার কবলে পরে শেষ বয়সে এসে চার শিক্ষকের চোখের পানি-ই হয়ে উঠেছে এখন একমাত্র অবলম্বন। সম্প্রতি মনিরুল, আবু তাহের, শামসুল ইসলাম এবং খোরশেদ মাস্টার-বয়োবৃদ্ধ প্রবীণ এই চার শিক্ষককের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করা হয়েছে। পুলিশি হয়রানিতে তারা এখন দিশেহারা। মনির মাস্টার। ৭৪ বছর বয়সের অশীতিপর বৃদ্ধ। শুভ্র দাড়ি আর পাঞ্জাবি-টুপিই তার এই বয়সের নিত্যদিনকার লেবাস। দেখলেই মনে হবে, এ এক সাদা মনের মানুষ। জ্ঞানের আলো ছড়িয়েই পার করেছেন পুরোটা জীবন। সাদামাটা, সাধারণ, নিরিবিলি এই মানুষটি শেষ বয়সে এসে কী না বিপদে পড়েছেন ! নিম্ন আদালতে জামিন অযোগ্য সন্ত্রাস দমন ও বিস্ফোরক আইনের ভয়াবহ মামলার ঘানি টানতে হচ্ছে তাকে। এক রকম পালিয়েই বেড়াচ্ছেন তিনি। অথচ কেন এই মামলা, তার দোষ-ই বা কি তা কিছুই জানেন না মনির মাস্টার। জানা গেছে, কয়েক দিন আগের ঘটনা এটি। গত ১৩ নভেম্বর কুমিল্লার মুরাদনগরে ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশে পুলিশ ও সরকার সমর্থকরা মিলে হামলা চালায়। এ সময় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় আহত হয় বিরোধী দলের আড়াইশ নেতা-কর্মী। পুলিশ দুই শতাধিক লোকের নাম উল্লেখ করে হাজার হাজার বিরোধী নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে। ওই মামলা থেকে বাদ যাননি ৯০ বছরের বৃদ্ধ থেকে নাবালক শিশুও। ৪২ বছর ধরে শিক্ষার আলো ছড়ানো মুরাদনগরের পান্তি গ্রামের মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির মাস্টার পুলিশের তিনটি মামলারই আসামি। অথচ মাস্টার জানেন-ই না কী তার দোষ। ১৮ দলের মিছিলেও ছিলেন না তিনি। অথচ এখন তিনি ফেরারী আসামী। পুলিশের নিয়মিত অভিযানে থাকতে পারছেন না বাড়িতে। এই বৃদ্ধ বয়সে মনির মাস্টার তাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। মনির মাস্টার কান্না জড়িত কন্ঠে এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘সারাজীবন ছেলে-মেয়েদের পড়িয়েছি, জ্ঞানের আলোতে বড় করেছি। কোনো দিন কোনো মন্দ কাজে জড়িত হইনি। আজ কেন এই বুড়ো বয়সে আমাকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। কোনো অপরাধ না করেই কেন আমাকে তিনটি মামলার আসামী হতে হয়েছে।’ নবীপুর গ্রামের ৬০ বছর বয়ষ্ক তাহের মাস্টারেরও একই পরিণতি। তার বিরুদ্ধেও ওই ঘটনায় সন্ত্রাস দমন ও বিস্ফোরক আইনে মামলা ঠুকে দেয়া হয়েছে। অথচ এই তাহের মাস্টার শিক্ষকতা জীবন থেকে অবসর নিয়ে সামাজিক কর্মকাণ্ডে সবসময় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তাহের মাস্টার ২৩ বছর প্রধান শিক্ষক ছিলেন মুরাদনগর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। মুরাদনগর উপজেলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতিত্ব করেছেন ১৯ বছর। ২০১০ সালে পেশা থেকে অবসরে গিয়ে সামাজিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত তিনি। আবু তাহের চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, শিক্ষক হিসেবে সম্মান পেয়ে আসছি সেই শুরু থেকে। অথচ এখন আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। তিনি বলেন, জীবনে এমন কোনো কাজ করিনি যার জন্য মামলার আসামী হয়ে পালিয়ে বেড়াতে হবে। সরাসরি রাজনীতির সঙ্গেও আমি সম্পৃক্ত নই। তাহলে কেন পুলিশি হয়রানির ভয়ে এখন আমাকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। প্রবীণ আরো দুই শিক্ষক শামসুল ইসলাম এবং খোরশেদ মাস্টারও আছেন আসামীর তালিকায়। তারাও ওইসবগুলোর মামলার আসামী হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পুলিশের ভয়ে। শিক্ষকরা জানান, ১৮ দলের সাথে আওয়ামী লীগ-পুলিশ সংর্ষষের ঘটনার সময় তারা সেখানে ছিলেন না। পরে তারা ওই ঘটনা শুনেছেন। আসামীর তালিকায় নাম শুনেও তারা অবাক হয়েছেন। শিক্ষকরা বলেন, তারা কেউই সরাসরি রাজনীতি করেন না। তাদের দোষ একটাই, তারা বিএনপিকে সমর্থন করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এজাহার নামায় আরো অনেক শিক্ষককে আসামী করা হয়েছে। ৭০-৮০ জন আসামী আছেন যাদের বয়স ৬০ বছরের ওপরে। অথচ মামলার এজাহারে তাদের বয়স দেখানো হয়েছে ৪০-৪৫ বছর। ৭৪ বছর বয়সী মনির মাস্টারের বয়স দেখানো হয়েছে মাত্র ৫৫ বছর। অভিযোগ রয়েছে- এই মামলা নিয়ে মুরাদনগর থানা পুলিশ ব্যাপক বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকার এক স্বনামধন্য ব্যবসায়ী জানান, এলাকার এক ব্যবসায়ী নেতা নির্বাচন এলেই এ ধরনের হয়রানি এবং অপকর্মের পথ বেছে নেন। এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ একজন আলেম বলেন, প্রবীণ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দিয়ে এভাবে হয়রানি করা কোন সভ্য সমাজের কাজ হতে পারে না। বিএনপিকে কিংবা কায়কোবাদকে যে কেউ-ই ভালোবাসতে পারে, তার মানে এই নয় যে বেছে বেছে ওইসব মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ঘায়েল করার অপচেষ্টা চালানো হবে। এটা খুবই জঘণ্য এবং নিন্দনীয় কাজ। এই পথে হেটে কারো মন জয় করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, মুরাদনগরে যারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য কোনো দিনই সফল হবে না। ......কাজি সাকিব......

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন