শিশির আবদুল্লাহ, দৈনিক আমারদেশ, সোমবার ৩০ ডিসেম্বর ২০১৩,
চারদিকে হায়েনার লাল চোখ। আতঙ্ক সবার মধ্যে। কখন হামলে পড়ে কার ওপর! তবে এই আতঙ্কে জড়সড় হয়ে বসে থাকার জো নেই কিন্তু। এ উপত্যকা থেকে হায়েনার পালকে তাড়াতেই হবে যে কোনোভাবে। না হলে এরা অচিরেই বংশ বিস্তার করে গ্রাস করে ফেলতে পারে পুরো উপত্যকাবাসীকেই। যথেষ্ট আতঙ্ক থাকার পরও এই শুধু তাড়না থেকেই গতকাল মাঠে নেমেছিলেন ঢাকার নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। তারা তাদের ভোটের অধিকারের কথা চিত্কার করে বলতে চেয়েছিলেন। তারা চেয়েছিলেন বিশ্বকে জানিয়ে দিতে যে, ভিনদেশিদের সহায়তায় যত চোখ রাঙানোই হোক না কেন এই বাংলাদেশের মানুষ তা উপেক্ষা করার সাহস ও সামর্থ্য ভালোভাবেই রাখে।
দেশের মানুষের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে তাই গতকাল সকালে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গনে জড়ো হয়েছিলেন কয়েকশ’ আইনজীবী। দেশের সেখানেই তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার অনুযায়ী কথা বলছিলেন। দেশের মানুষকে জিম্মি করে সরকারের অসাংবিধানিক ও ফ্যাসিবাদী আচরণের সমালোচনা করছিলেন তারা। এটা ফ্যাসিবাদ সহ্য হয়নি। তাই বাংলাদেশের ইতিহাসে সব ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার রেকর্ড ভঙ্গ করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা হামলা চালায় সুপ্রিমকোর্টে। সেখানে তারা পিটিয়ে আহত করে অন্তত ৩০ জন আইনজীবীকে। ভাংচুর করে ব্যাপক। কিন্তু আওয়ামী বর্বরতা প্রকাশের জন্য কি এই আচরণ যথেষ্ট? যাদের ২০০৬ সালের আটাশে অক্টোবরের কথা মনে আছে তারা অবশ্যই বলবেন, ‘না, আওয়ামী পৈচাশিকতার বোঝার জন্য এটুকু যথেষ্ট নয়।’ আওয়ামী লীগাররা তা তো আরও ভালো করেই জানে। তাই তারা তাদের সেই ২৮ অক্টোবরের আচরণের পুনঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে। তারা সেখানে একাধিক মহিলা আইনজীবীকে পেটাতে পেটাতে মাটিতে ফেলে তাদের গায়ের কাপড় খুলার চেষ্টা করেছে। একজন মহিলাকে পিটিয়ে মাটিতে ফেলার পর একজনকে দেখা গেছে মহিলার গায়ে বুট জুতা দিয়ে পাড়াচ্ছে। সাপের মতো পেটানোর পর একজন মধ্য বয়স্ক মহিলার গায়ে বুটসহকারে উঠে পাড়ানোর দৃশ্য কি আপনাকে ২৮ অক্টোবরের সেই লাশের ওপর উঠে আওয়ামী হায়েনাদের নৃত্যের দৃশ্যগুলো স্মরণ করিয়ে দেয়নি?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন