ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৩

মুক্তিযুদ্ধে গৌরবগাথা অবদান রাখা সেই পুলিশের এ কোন চেহারা দেখছে দেশের মানুষ?

পুলিশ কি ভিনদেশি বাহিনী ’৭১-এ পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল ঢাকার রাজারবাগের পুলিশ। মুক্তিযুদ্ধে গৌরবগাথা অবদান রাখা সেই পুলিশের এ কোন চেহারা দেখছে দেশের মানুষ? জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনী বিরোধী দলের আন্দোলন ঠেকাতে জনমনে ত্রাস সৃষ্টি করছে। জনগণের অর্থে পরিচালিত পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের কেউ কেউ জনগণের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। শাসক দলের পাতানো নির্বাচন প্রতিহতের বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ঠেকিয়ে দিতে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে তারা। পুলিশের নৃশংস ভয়াবহতায় মানুষ আতঙ্কিত, সন্ত্রস্ত। এমনকি ৩ বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঔদ্ধ্যত্বপূর্ণ আচরণ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে গড়ে উঠা পুলিশ বাহিনীর এ অপেশাদারির ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এ কোন পুলিশ দেখছে দেশের মানুষ? এ পুলিশ কি ভিনদেশি বাহিনী? সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাদের অনেকেই এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর রণপ্রস্তুতি, দৌড়ঝাঁপ এবং রুদ্রমূর্তি দেখে মনে হয় দেশে যেন যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। ’৭১-এর ২৫ মার্চ এবং মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস পাকিস্তান সেনারা যেভাবে বাংলাদেশের দামাল ছেলেদের ঘায়েল করতে মুসলিম লীগ, জামায়াত ও নেজামে ইসলামের নেতাকর্মীদের সহায়তা করেছে। বর্তমান পুলিশের ভূমিকাও যেন তেমন। পুলিশের সামনে সুপ্রিম কোর্টে বিক্ষোভকারী আইনজীবীদের ওপর হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ছাত্রলীগ-যুবলীগের লাঠিয়ালরা পুলিশের সামনেই আদালতের ভেতর আইনজীবীদের ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ পুলিশ তাদের বাধা না দিয়ে সহযোগিতা করেছে। হামলার সময় রেহানা নামে এক আইনজীবীকে বিবস্ত্র করা হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবে একই ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের প্রার্থীবিহীন পাতানো নির্বাচন সফল করতে দেশকে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। মানুষ চায় সব দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত হোক সবার প্রত্যাশা সেটাই। ৫ কোটি মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে বর্তমান সরকার দিল্লির ইন্ধনে পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় আসতে চায়। জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের প্রভাবশালী শক্তিগুলো চায় স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এ প্রত্যাশা জানিয়ে তারা বিশ্বের দেশে দেশে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন। দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ চায় নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সবাই চায় গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। ২৮ ডিসেম্বরেও দেশের বিশিষ্টজন রেহমান সোবহান, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাইয়িদ, সুলতানা কামাল, ড. আকবর আলি খান, ড. শাহদীন মালিক, মাহফুজ আনাম, ড. দেবপ্রিয় ভট্টচার্য, ড. হোসেন জিল্লুর রহমানসহ দুই শতাধিক ব্যক্তিত্ব ৫ জানুয়ারির পাতানো নির্বাচন বন্ধ করে সংলাপের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি করেছেন। তারা জানিয়েছেন সংবিধানের মধ্যে থেকেই এটা করা সম্ভব। কীভাবে এটা সম্ভব সে পথও দেখিয়ে দেন বিশিষ্টজনেরা। দেশের এই সিনিয়র নাগরিকদের মুখে দেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রত্যাশার প্রতিধ্বনি ঘটেছে। অথচ সরকার একগুঁয়েমির মাধ্যমে পাতানো নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছে। আর সরকারের এই গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকা-ের সহায়তা দিচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একজন বিশিষ্টজন বললেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার নামে পুলিশের যা খুশি তাই করা উচিত নয়। যাকে তাকে গুলি করাও নয়। জনগণের নিরাপত্তার নামে নাগরিকদের আতঙ্কের মধ্যে ফেলে গোটা দেশের ভীতির সৃষ্টি করা নয়। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস যেমন বাংলাদেশ ভূখ-ের মানুষ পাকিস্তান বর্বর বাহিনীর ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারতেন না। রাতে যখন তখন পাকিস্তান বাহিনী দেশের বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষকে গভীর রাতে ধরে নিয়ে যেত চোখ বেঁধে। পাকিস্তানি শাসকের নির্দেশে যৌথবাহিনী সে সময় রাতে গণগ্রেফতার করতো। এ যৌথ বাহিনীর সঙ্গে থাকতো সরকার সমর্থিত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। ঠিক তেমনি ঘটনা এখন ঘটছে অহরহ। ইউনিয়ন, জেলা উপজেলা, বিভাগ ও রাজধানীতে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের করা তালিকা নিয়ে ওইসব সংগঠনের নেতাদের নিয়ে যৌথবাহিনী গ্রেফতার চালাচ্ছে। যৌথ বাহিনীর গ্রেফতারের ভয়ে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরাই শুধু নয়; দেশের মানুষও আতঙ্কিত। রাতে পুলিশের গ্রেফতারের ভয়ে নিজ ঘরে ঘুমাতে পারেন না; আবার বাইরে বের হলেও হয়রানি ও তল্লাশির ভয়ে তটস্থ থাকেন। বিরোধী দলের ‘পাতানো নির্বাচন ঠেকাও’ আন্দোলন শুরু হওয়ার পর সেই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যুদ্ধ নেই বিগ্রহ নেই তারপরও ভোটের অধিকারের দাবিতে গণতান্ত্রিক আন্দোলন ঠেকাতে পথে পথে ব্যাংকার বানিয়ে জনগণের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করা হচ্ছে। গতকালও ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’তে যাতে মানুষ অংশগ্রহণ করতে না পারে সে জন্য রাজধানীর রাজপথের পাশাপাশি মহল্লায় মহল্লায় টহল দিয়ে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মী ও জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়। নাগরিকের নিরাপত্তা দেয়ার অর্থ কী জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা? রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের অর্থ কি সারাদেশ থেকে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা? বাস, লঞ্চ, ট্রেন বন্ধ করে দেয়া কি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার সজ্ঞায় পড়ে? গত কয়েকদিনে সারাদেশে গণহারে হাজার হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় শতাধিক মানুষ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। সহিংসতা, অগ্নিদগ্ধ হয়েও মারা গেছে অনেক রাজনৈতিক কর্মী ও নিরীহ মানুষ। বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া যাতে নয়াপল্টনে যেতে না পারেন সে জন্য তার গুলশানের বাসায় শত শত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বালুর ট্রাক রেখে সেখানে প্রতিরোধব্যূহ গড়ে তোলা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্যদের আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, পুলিশ আমার সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করতে পারে না। আজকে তো এমন অনেক চেহারা দেখা যায়, যাদের চেনা যায় না যে তারা আসলেই বাংলাদেশি কি না। বাংলাদেশের আজকের যে কর্মসূচি ছিল, আপনারা যদি আসলেই দেশকে ভালোবাসতেন, তাহলে আজকে ছিল আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং.. এবং ডেমোক্রেসি ফর রোড মার্চ। গণতন্ত্রও চাবেন না, দেশ রক্ষা করতেও চাবেন না। গোলামি করবেন? দালালি করবেন? এই গোলামি তো রাখবে না। লেন্দুপ দর্জির (সিকিমের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী) ইতিহাসটা পড়ে দেখেন। সেও কিন্তু টেকে নাই বেশি দিন। তাকেও বিদায় দিয়েছে। দালালি করে দেশ বিক্রি করে। কাজেই এই দেশ বিক্রি চলবে না হাসিনার। আর হাসিনার দালালি করে লাভ হবে না। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে থাকেন। জনগণের সঙ্গে থাকেন। দেশের মানুষের সঙ্গে থাকেন। তবেই কাজ দেবে। দেশ বাঁচবে, মানুষ বাঁচবে। আজকে সবার দায়িত্ব হয়ে গেছে দেশ বাঁচানো, মানুষ বাঁচানো। আর আপনারা ঘরে ঘরে ঢুকে মানুষ হত্যা করছেন। মনে করে যে এগুলোর হিসাব নেই। এই মা-বোনের কান্না, এই আলেম এতিমের কান্না, এই বিডিআরের অফিসারদের স্ত্রী-সন্তানদের কান্না এগুলো কি বৃথা যাবে? এগুলো কোনো দিনও বৃথা যাবে না। এখানে যাদের দেখছি তাদের অনেকের চেহারা অপরিচিত। পুলিশ প্রশাসনে কর্মরত দলবাজ কর্মকর্তাদের নিয়ে তিনি আরো কিছু কথা বলেছেন। প্রশ্ন হলো সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর এ কেমন আচরণ? মুক্তিযুদ্ধে গৌরবময় ভূমিকা রাখা পুলিশের এ ভূমিকা কেন? বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীতে অনেক যোগ্য ও মেধাবী কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা বিভিন্ন সময় সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং জনগণের পাশে থেকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের মানুষ পুলিশ প্রশাসনে কর্মরত দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সে ভূমিকাই প্রত্যাশা করে। সরকারের মন্ত্রীদের ন্যায়-অন্যায় আদেশ নির্দেশ পালনের নামে ভিনদেশি বাহিনীর আচরণ না করে এদেশের মাটি ও মানুষের সন্তান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে এটাই সবার প্রত্যাশা। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট নিয়ে রচিত রাজারবাগ ’৭১ নামে একটি নাটক রয়েছে। সে নাটকে দেখানো হয় ১৯৭১ সালের ২৫ মে মার্চ ভয়াল রাতে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী অতর্কিত বাংলার নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তারা নির্বিচারে হত্যা করে নারী, শিশু, পথচারীসহ হাজার হাজার নিরীহ মানুষ, জ্বালিয়ে- পুড়িয়ে দেয় বাড়িঘর, দোকানপাট। তাদের ঐ পৈশাচিকতার প্রথম টার্গেট ছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স। ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত শক্তিশালী পাক সামরিক বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্যের সামনে পিছু না হটে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের বীর পুলিশ সদস্যরা পুরনো থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সম্মুখ যুদ্ধে। সূচনা হয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধের ইতিহাস। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ পুলিশ দেশের স্বাধীনতা অর্জনে যে ভূমিকা রেখেছে; সেভাবেই পুলিশ বাহিনী এখন দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষায় ভূমিকা রাখবেন সে প্রত্যাশা মানুষের। দেশের পুলিশ সদস্যদের ভিনদেশি আচরণ মানুষ দেখতে চায় না। উৎসঃ ইনকিলাব

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন