ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৩

পুলিশের ছররা গুলিতে চোখের আলো নিভে যাচ্ছে আমেনার

পুলিশের ছররা গুলিতে চোখের আলো নিভে যাচ্ছে আমেনার। বাম চোখের আলো নিভে গেছে চিরতরে। ডান চোখের আলোও নিভু-নিভু। দু’চোখেই অঝোরে ঝরছে পানি। হুইল চেয়ারে বসে আছেন গার্মেন্টকর্মী আমেনা বেগম। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসছে সব স্বপ্ন। সুন্দর এই পৃথিবী, স্বামী-সন্তান, বাবা-মা, ভাইবোন, আত্মীয়-স্বজন কাউকে কি আর কোনদিন দেখতে পাবেন না? অজানা আশঙ্কায় কেঁপে ওঠে তার মন। তার কান্না যেন শেল হয়ে বিঁধছে আশেপাশের সবাইকে। কান্না শেষে তীব্র আকুতি আমেনার। আপনারা কি আমার একটা চোখও ফিরিয়ে দিতে পারেন না?
গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর রামপুরায় দুপুরের খাবার শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে জামায়াত-শিবিরের মিছিলের উপর পুলিশের নির্বিচারে গুলি বর্ষণের মাঝে পড়ে যান গার্মেন্টকর্মী আমেনা বেগম। পুলিশের ছররা গুলিতে মারাত্মক আহত হন তিনি। বুক, মাথা, দুই হাতের পাশাপাশি অসংখ্য ছররা গুলি বিদ্ধ হয় তার চোখে-মুখে। আমেনা এখন আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি দুই চোখে কিছুই দেখতে পারছেন না। তার চারদিকে এখন অন্ধকার।
গতকাল দুপুরে হাসপাতালের পঞ্চম তলায় ৫৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ২৯ নম্বর বেডের পাশে হুইল চেয়ারে বসে আছেন তিনি। চোখ দু’টো লাল টকটকে। চোখের কোণে রক্তের জমাট, পাপড়িতেও। একটু পরপর তুলা দিয়ে চোখ মুছছেন। যন্ত্রণায় মাঝে-মধ্যে দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন। মানসপটে হয়তো ভেসে উঠছে চার বছরের সন্তান রাজিয়াকে। গ্রামের বাড়িতে থাকে সে। স্বপ্ন ছিল তাকে ঢাকায় এনে স্কুলে ভর্তি করানোর। স্বামী রাজু রিকশাচালক। একজনের আয়ে সংসার চলছিল না। তাই নিজেও ঢুকেছেন গার্মেন্ট কারখানায়। সংসার সচ্ছল হলেই মেয়েকে ঢাকায় আনবেন। কিন্তু এসব স্বপ্ন এখন অলীক, মরীচিকার মতো।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আমেনা বলছিলেন, শুক্রবার দুপুরে মালিবাগ আবুল হোটেল থেকে রামপুরা বিটিভি ভবন পর্যন্ত সড়কে জামায়াত-শিবিরকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলে। ওই সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান আমেনা বেগম। তিনি জানান, দুপুরে গার্মেন্ট থেকে উলন রোডের বাসায় খেতে গিয়েছিলেন। খাওয়া শেষে তাড়াহুড়া করে ঘর থেকে বের হন। কারণ একটু দেরি হলেই গার্মেন্টে ঝামেলা হবে। এমনকি বেতনও কাটতে পারে। তাই বের হয়ে বিকট শব্দ শুনেও অন্য সহকর্মীকে নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। হঠাৎ পুলিশের গুলি। তারপর আর কিছু মনে নেই। কারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে এর কিছুই তিনি জানেন না। জ্ঞান ফিরলে দেখেন সারা শরীরে ছররা গুলির চিহ্ন। চোখেও দেখতে পাচ্ছেন না কিছু। এখন তার মনে একটাই প্রশ্ন, তার চোখ কি ভাল হবে? চোখ নষ্ট হয়ে গেলে একমাত্র মেয়েকে কে দেখবে? তার জীবন কি এখানেই থেমে যাবে? এসব ভাবনা এখন ঘুরপাক খাচ্ছে আমেনার মধ্যে। তার একটাই কথা, আমি তো কোন দোষ করিনি। আমার কেন এমন হলো?
আমেনার প্রতিবেশী বোন নার্গিস আরা জানান, স্বামী রাজুর সঙ্গে আমেনা বেগম থাকেন রামপুরা উলন রোডের ৩৪৪/১/এ বাসায়। রাজু রিকশাচালক। আমেনা রামপুরা বাজার সংলগ্ন সাফা ব্লু ফ্যাশনের কর্মী। তার পিতা আতাউর ভ্যানচালক, থাকেন বাড্ডায়। তারা দুই বোন। এর মধ্যে আমেনা ছোট। চার বছর বয়সী মেয়ে রাজিয়া থাকে বাগেরহাটে নানির সঙ্গে।
তিনি জানান, রাজু একা কাজ করে সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছিল। তাই ৪ মাস আগে ৪৫০০ টাকা বেতনে সাফা গার্মেন্টে যোগ দেন। মেয়েকে পাঠিয়ে দেন নানীর বাড়িতে। তাদের ইচ্ছা ছিল এ বছর গ্রামের বাড়ি থেকে মেয়েকে এনে স্কুলে ভর্তি করাবেন। কিন্তু সব যেন চোখের সামনেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।
স্বজনরা জানান, ঘটনার পর আমেনাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পাঠানো হয় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে। চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তার চোখ দু’টো বাঁচাতে। তারা অবশ্য এখনও আশা ছাড়েননি। তবে নিশ্চিত করেও কিছু বলতে পারছেন না। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ইউনিট-২ এর সহকারী রোজিস্ট্রার ডা. এম. কাদির জানান, আমেনার বাম চোখের কর্নিয়ার (মণি) মধ্যে একটি ও ডান চোখের সাদা অংশে একটি গুলি ঢুকে আছে। গুলি দু’টি অনেক ভেতরে থাকায় অপারেশন করেও দেখা যায়নি। তবে এক্স-রে করে দেখা গেছে, গুলি আছে চোখের মধ্যে। খুবই গভীরে। চোখ ঘোলা থাকায় অপারেশন করে সেগুলো বের করা সম্ভব হয়নি। ঘোলা কাটতে ১৫দিন থেকে এক মাস সময় লাগতে পারে। এরপর তাকে রেটিনা বিভাগে পাঠিয়ে চোখ থেকে গুলি বের করতে আবার চেষ্টা করা হবে বলে জানান চিকিৎসক।
আমেনার স্বামী রাজু জানান, হাসপাতাল আমেনার সব চিকিৎসা সরকার ফ্রি করে দিয়েছে কিন্তু তারপরও কিছু কিছু খরচ আমাদের নিজেদের করতে হয়। আমার যে অবস্থা তা দিয়ে এসব চালানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকবার আমেনার গার্মেন্ট কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত গার্মেন্ট মালিক পক্ষ আমাদের কোন সাহায্য করেনি। এমনকি আমেনাকে দেখতে পর্যন্ত আসেনি।http://mzamin.com/details.php?mzamin=+MzUyOA%3D%3D&s=Mw%3D%3D
......কাজি সাকিব......

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন