বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান গতকাল এক বিবৃতিতে দাবি করে বলেছেন, গণতন্ত্র, দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচানো এবং জনগণের ন্যায্য ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৮ দলীয় জোট অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। সরকার দলীয় স্বার্থে গণতন্ত্রের কবর রচনা করে একদলীয় শাসন কায়েমের জন্য প্রহসনের নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। দেশের বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে ৫ তারিখের একদলীয় প্রহসনের নির্বাচন বন্ধের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের একমাত্র সমাধান হলো নিরপেক্ষ ও সবার নিকট গ্রহণযোগ্য নির্বাচন মর্মে অভিমত প্রকাশ করে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের প্রতি আবারো আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু সরকার সে সবের তোয়াক্কা না করে নিজেদের অঙ্কিত ছকে পুনরায় ক্ষমতায় আসার জন্য একদলীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ নির্বাচন হচ্ছে বহুদলীয় গণতন্ত্র হত্যার নির্বাচন। জনগণ যে কোনো মূল্যে গণতন্ত্র হত্যার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ে তুলবে।
বিবৃতিতি তিনি আরও বলেন, বর্তমান জালেম অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার প্রজাতন্ত্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করছে। বিরোধী দলের কথা বলার সব দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতা, ১৮ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আজ ৫ দিন যাবত্ অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের ঘর থেকে ধরে এনে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। চলছে গণগ্রেফতার। আজ সারাদেশে শতাধিক লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপরদিকে জঙ্গিবাদের ধোয়া তুলে আওয়ামী ক্যাডাররা প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশের সহায়তায় সশস্ত্র মিছিল ও সমাবেশ করে প্রমাণ করেছে, তারা নিজেরাই সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিবাদী।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, সরকারের একগুঁয়েমি, হটকারিতা ও ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার নেশা দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের দোহাই দিয়ে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য নির্বাচনের কথা বলছেন। অথচ তিনি নিজেই সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন সবচেয়ে বেশি। সংবিধানে মিছিল, সমাবেশের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তা করতে দিচ্ছেন না।
বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ বানচাল করার জন্য সরকারের দলীয় ক্যাডাররা গোটা ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালিয়ে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে তাতে গণতন্ত্রের কবর রচিত হয়েছে। সুপ্রিমকোর্ট, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী, জাতীয় প্রেস ক্লাব, সাংবাদিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলার শিকার হয়েছে। এরপর আওয়ামী লীগের মুখে গণতন্ত্রের বুলি মানায় না। তিনি ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ উপায়ে দেশব্যাপী টানা অবরোধ কর্মসূচি সফল করে তোলার জন্য দেশের আপামর জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন