মহাজোট সরকারের দুর্নীতির মহামারি !
৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী সহ মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদ বেড়েছে সর্বোচ্চ ১০৭ গুণ !!
সরকারি দলের এমপিদের অনেকের গত পাঁচ বছরে
সম্পদ বেড়েছে বহুগুন। তাদের মধ্যে বিগত সময়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত
প্রতিমন্ত্রীর সর্বোচ্চ ১০৭ভাগ সম্পত্তি বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনাসহ গত পাঁচ বছরে সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের আয় বেড়েছে
বিভিন্ন পরিমাণে। নির্বাচন কমিশনে দায়ের করা হলফনামা অনুসারে
প্রধানমন্ত্রীর মালিকানায় গত পাঁচ বছরে ২ কোটি ২ লাখ ৪৩ হাজার ১৩৫ টাকার
সম্পদ বেড়েছে। কমিশনে জমা দেয়া ২০০৮-০৯ অর্থবছরের আয়কর বিবরণী অনুযায়ী শেখ
হাসিনার নিট সম্পদ ছিল ৩ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার ৯০৪ টাকার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের
আয়কর বিবরণীতে তা বেড়ে হয়েছে পাঁচ কোটি ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৩৯ টাকা।
তথ্য অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নামে ৬ একর কৃষিজমি রয়েছে, যার আনুমানিক দাম ৬
লাখ ৭৮ হাজার টাকা। এখান থেকে তিনি বছরে ৭৫ হাজার টাকা পান। এ ছাড়া মৎস্য
খামার থেকে বছরে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করেন। গাছ বিক্রি থেকে বছরে তার আয়
১০ লাখ টাকা। ব্যাংকে তার ৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা আছে। আর ব্যাংকে
প্রধানমন্ত্রীর স্থায়ী আমানত (এফডিআর) রয়েছে ৫ কোটি টাকার কিছু বেশি। দান
সূত্রে পাওয়া তার একটি গাড়ি রয়েছে। তার কাছে থাকা স্বর্ণ ও অন্যান্য
মূল্যবান ধাতু ও পাথরনির্মিত অলঙ্কারাদির মূল্য ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
আসবাবপত্র রয়েছে ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার। হলফনামা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর
শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ।
মহাজোটের দুই শরিক দলের অন্য দুই নেতা হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেনন
টকশো থেকে পাওয়া অর্থকে আয়ের অন্যতম উৎস বলে উল্লেখ করেছেন। রাশেদ খান মেনন
তার নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখ করেন, ব্যবসা থেকে বার্ষিক ৬ লাখ টাকা এবং
পত্রিকায় লেখা ও টিভি টকশো বাবদ বার্ষিক আয় এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু’র ব্যবসা থেকে বার্ষিক ৮ লাখ ৫ হাজার ৪৫০,
চাকরি থেকে ১৬ লাখ ৫০ হাজার ১৩২ এবং টিভি টকশো থেকে এক লাখ ৮১ হাজার ২০০
টাকা আয় করেন। হলফনামা অনুসারে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের আয়ের
বেশির ভাগই আসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তার নামে থাকা শেয়ার থেকে। শেয়ার,
সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে তিনি বছরে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করেন,
চাকরি থেকে আয় করেন ১১ লাখ ৩ হাজার টাকা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম লিখেছেন তার পেশা
সমাজসেবা।
সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নিজের নামে কোন ব্যাংকে টাকা জমা
নেই। তবে স্ত্রীর নামে ৬ লাখ ৯১ হাজার ৯০৬ টাকা জমা আছে। তিনি বছরে কৃষি
খাত থেকে ১ লাখ ১৮ হাজার, বাড়ি ভাড়া থেকে ৫ লাখ ২০ হাজার ৯১৮ টাকা আয় করেন।
শেয়ারবাজার থেকেও তার আয় আছে। তবে তা মাত্র ২৪ হাজার ১৯৯ টাকা।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির নগদ টাকার পরিমাণ দেড় লাখ টাকা।
মন্ত্রী হিসেবে পেয়েছেন ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা পারিতোষিক।
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নগদ টাকার পরিমাণ মাত্র ৫৫ হাজার টাকা।
প্রতি বছর ‘পেশা’ থেকে তিনি ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৭০০ টাকা আয় করেন। সাংবাদিকতা,
বর্তমানে এমপি ও মন্ত্রী হিসেবে বেতন-ভাতা এবং বই ও পত্রপত্রিকায় লিখে তিনি
এ টাকা পান বলে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া তার নিজের নামে উত্তরায় ৫ কাঠা
জমিসহ ২৫ তোলা স্বর্ণ আছে। হলফনামায় ৭৫ হাজার টাকা সমপরিমাণের আসবাবপত্রের
কথাও উল্লেখ করেছেন যোগাযোগমন্ত্রী। শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে নিজেকে বিএ
পাস দেখিয়েছেন তিনি। রওশন এরশাদ ১০০ ভরি স্বর্ণালঙ্কারের মালিক। শেয়ারে তার
বিনিয়োগ আছে প্রায় ২৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। নগদ টাকা ৫ লাখ ২৬ হাজার টাকাসহ
বছরে বাস, ট্রাক ও মোটরগাড়ির ব্যবসা থেকে তার আয় ১ কোটি ২৮ লাখ ২৩ হাজার
৭৫০ টাকা আয় করেন বলে উল্লেখ করেছেন।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের নিজের নামে কোন জমি নেই।
তার নগদ টাকার পরিমাণ মাত্র ২১ হাজার। তবে স্ত্রীর নামে ৫ দশমিক ৫১ একর
জমিসহ প্রায় ৫ লাখ টাকা আছে। বছরে বাস, ট্রাক ও মোটরগাড়ির ব্যবসা থেকে
প্রায় ৩১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৮ টাকা আয় করেন।
আবদুল মান্নান খান: আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী আবদুল
মান্নান এবং তার স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ গত ৫ বছরে বেড়েছে ১০৭ গুণ।
নির্বাচন কমিশনে দায়ের করা হলফনামা অনুযায়ী, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের
প্রাক্কালে এ মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর মোট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ
ছিল প্রায় ১০ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। কিন্তু, সম্প্রতি পেশ করা ২০১৩-১৪
অর্থবছরের আয়কর বিবরণীতে অবিশ্বাস্যভাবে সে অর্থের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে
১১ কোটি ৩ লাখ টাকায়। কিন্তু, হলফনামায় আবদুল মান্নান তার সম্পদের উৎসের
কথা বিশদ ও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেননি।
নূর-এ-আলম চৌধুরি: আওয়ামী লীগের আরেক আইনপ্রণেতা মহাজোটের শাসনামলে
নূর-এ-আলম চৌধুরি লিটন ও তার স্ত্রী গত ৫ বছরে সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৬৭ গুণ
বাড়িয়েছেন। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের প্রক্কালে তিনি যে হলফনামা পেশ
করেছিলেন, তাতে তাদের স্থাবর ও অস্থাবর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৬২ লাখ
৬৩ হাজার টাকা। কিন্তু, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নির্বাচন কমিশনে পেশ করা আয়কর
বিবরণীর তথ্যানুযায়ী, গত ৫ বছরে এ দম্পতির যৌথ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১
কোটি ৬৪ লাখ টাকায়।
হাসান মাহমুদ: পরিবেশ মন্ত্রী হাসান মাহমুদের স্ত্রী নুরান ফাতেমা ৫ বছর
আগে সাধারণ একজন গৃহিণী ছিলেন। সে সময় তার সম্পদের পরিমাণ ছিল মাত্র ৬০
হাজার টাকা। কিন্তু, তা ২,২৯০ গুণ বেড়ে পৌঁছেছে ১৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকায়।
মন্ত্রী অবশ্য যুক্তি দেখিয়ে বলেছেন, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ, ২০০৮
সালের নির্বাচনের আগে তিনি যে গভীর সমুদ্রের কন্টেইনার সেবা ‘বিসমিল্লাহ
মেরিন সার্ভিস’ ব্যবসাটি শুরু করেছিলেন, সে ব্যবসাটি স্ত্রীর নামে
স্থানান্তরিত করেছেন। হাসান মাহমুদের সর্বশেষ পেশ করা আয়কর বিবরণী অনুযায়ী,
২০০৮ সালে তিনি ৩৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকার মালিক ছিলেন, যা ৪ গুণ বেড়ে এখন
দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭২ লাখ টাকায়। তিনি আরও দাবি করেছেন, স্ত্রী ও
বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে তিনি ধার হিসেবে ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা নিয়েছেন।
অর্থাৎ, এ দম্পতির মোট স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ এখন ১৫ কোটি ৪৬ লাখ
টাকা। ২০০৮ সালে দুই জনের মিলিত সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩৮ লাখ ১৭ হাজার টাকা,
যা গত ৫ বছরে ৪০ গুণ বেড়েছে।
আসলামুল হক: ৫২ বছর বয়সী অসলামুল হক ছিলেন সাধারণ ভূ-সম্পত্তির মালিক।
অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করা এ ব্যক্তির গত ৫ বছরে সম্পদ বেড়েছে
অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে। মহাজোট ক্ষমতায় আসার আগে তিনি সাড়ে ৫ একর জমিসহ মোট
১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার মালিক ছিলেন। আর, এখন তার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৫
কোটি টাকা এবং একই সঙ্গে ১৪৫ দশমিক ৬ একর জমির মালিক তিনি।
নজরুল ইসলাম বাবু: আওয়ামী লীগের আরেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু ও তার
স্ত্রী গত ৫ বছরে তাদের সম্পদের পরিমাণ ২৪ দশমিক ৭৮ গুণ বৃদ্ধি করেছেন।
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের প্রক্কালে তিনি যে হলফনামা পেশ করেছিলেন,
তাদের স্থাবর ও অস্থাবর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ২১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।
কিন্তু, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নির্বাচন কমিশনে পেশ করা আয়কর বিবরণী অনুযায়ী, গত
৫ বছরে এ দম্পতির যৌথ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকায়।
জাহাঙ্গীর কবির নানক: আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী
জাহাঙ্গীর কবির নানক ও তার স্ত্রী গত ৫ বছরে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা আয় করেছেন।
যৌথভাবে তাদের সম্পত্তির পরিমাণ হচ্ছে ৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ২০০৮ সালের নবম
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাদের সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯৭ লাখ ৮৪ হাজার
টাকা। এর মধ্যে নানকের স্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ ৫ কোটি ৭ লাখ টাকা, যা ৫
বছর আগে ছিল ৫২ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাদের বার্ষিক আয় ছিল ৯ লাখ ৪৩ হাজার
টাকা। কিন্তু, নির্বাচিত হওয়ার পর তা দাঁড়ায় ৪৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকায়।
অর্থাৎ, এ দম্পতি যৌথভাবে তাদের সম্পত্তির পরিমাণ ৮ গুণ বৃদ্ধি করেছেন।
আবদুস শহীদ: আওয়ামী লীগের আইনপ্রণেতা ও জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ আবদুস শহীদ ও
তার স্ত্রী গত ৫ বছরে ৩ দশমিক ০২ গুণ সম্পদ বাড়িয়েছেন। মহাজোট ক্ষমতায়
আসার আগে এ দম্পতির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ৮৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
আর এখন তাদের সম্পত্তির পরিমাণ ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
শেখ সেলিম: আওয়ামী লীগের নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম তার মোট স্থাবর-অস্থাবর
সম্পত্তি দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছেন। ২০০৮ সালে তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ২
কোটি ৯ লাখ টাকা। এখন তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
ফটো ইডিটঃ ওসমান আহমেদ সাকিব
ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স
লেবেল
- খবর
- মতামত- বিশ্লেষণ
- বিবৃতি
- রাজনীতি
- প্রেস বিজ্ঞপ্তি
- আন্তর্জাতিক
- প্রচ্ছদ
- আইনশৃঙ্খলা
- শোক সংবাদ
- বিবিধ
- স্মৃতি
- আইন-আদালত
- জাতীয় সংসদ নির্বাচন
- শিক্ষা
- ডেমোক্রেসি
- ইসলাম
- স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞান
- অর্থনীতি
- ইসলামী আন্দোলন
- সাহিত্য-সংস্কৃতি
- হাদীসের বাণী
- শীতবস্ত্র বিতরণ
- সভ্যতা
- ইতিহাস
- গল্প
- মিডিয়া
- শোকবাণী
- খেলাধুলা
- জাতীয়
- IIUC News
- চিঠি
- কৃষি
- দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
- প্রবাস
- গবেষণা
- আবিস্কার
- কুরআন
- সম্পাদকীয়
- বাণী
- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
- সাইবার ক্রাইম
- দারসুল কুরআন
- ব্রেকিং নিউজ
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৩
মহাজোট সরকারের দুর্নীতির মহামারি ! ৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী সহ মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদ বেড়েছে সর্বোচ্চ ১০৭ গুণ !!
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন