ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৩

সেনাবাহিনীকে ট্রামকার্ড করার চেষ্টা?

‘হায় আল্লাহ! এতো রক্ত!! এ জন্যই কী মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি? আইনের শাসন, ইনসাফ আর ন্যায় বিচার নিশ্চিত করে শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে নতুন দেশের জন্ম দিয়েছি। স্বাধীন দেশে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের একি চেহারা দেখছি? আর কত রক্ত দেখলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ১৬ কোটি মানুষকে মুক্তি দেবেন?’ মতিঝিলে এক বাস যাত্রীর এ উক্তিকে থামিয়ে দিয়ে আরেক যাত্রী বললেন, ‘ভাই কয়েকদিন অপেক্ষা করেন; সেনাবাহিনী নামানো হচ্ছে। নির্বাচনের কয়েকদিন আগে সেনাবাহিনী নামিয়ে আন্দোলনকারীদের ডা-া মেরে ঠা-া করে দেবে। তখন আর রক্ত দেখতে হবে না।’ বাসযাত্রীদের এসব কথা শুনে খেঁকিয়ে উঠলেন ড্রাইভার। বলেন, ‘বললেই হলো? সেনাবাহিনী দেশের সন্তান না? তারা জনগণের বিরুদ্ধে নামবে কেন? শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, আওয়ামী লীগের নেতারাও সেটা চায়; চাচ্ছেন না শুধু শেখ হাসিনা। জনগণকে ভয় দেখাতে পাতানো নির্বাচন নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করতে চাইলেই হলো? ইসির কথায় সেনাবাহিনী নামবে না।’ এসব অভিব্যক্তি রাজনীতি থেকে দূরে থাকা সাধারণ মানুষের। শাহবাগে বাসে বোমা হামলায় ১৯ জনকে অগ্নিদগ্ধের ঘটনা শোনার পরও জীবিকার তাগিয়ে কর্মস্থলে যেতে যাদের বাসে উঠতেই হচ্ছে এসব তাদের কথা এবং সেনাবাহিনী নিয়ে মূল্যায়ন। এতো অনিশ্চয়তা আর সংকটের মধ্যেও তারা চাচ্ছেন না আন্দোলন ঠেকাতে সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করা হোক। প্রশ্ন হলো সত্যিই কি সেনাবাহিনীকে পাতানো নির্বাচন নিশ্চিত করতে মাঠে নামানো হচ্ছে? দিল্লীর আঁকা ছকের নীল নকশার নির্বাচন সফল করতে সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করার জন্যই কি এই চেষ্টা? মিলিয়ন ডলারের এ প্রশ্নের জবাব খুঁজছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু জবাব নেই।    
দেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে আইনের শাসন অপরিহার্য। একই সঙ্গে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, বিচার বিভাগ, সংসদ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, সিভিল প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী, সেনাবাহিনীসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষতা অপরিহার্য। কিন্তু সেনাবাহিনী ছাড়া অন্য সব প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষ এবং সবার ভরসাস্থল হিসেবে সেনাবাহিনীর সুনাম অটুট রয়েছে। সেটাকেও বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশন। সর্বদলীয় (!) সরকারের আজ্ঞাবহ বোধবুদ্ধিহীন, মানবতার চিন্তাহীন কাজী রকিবউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন কী দেশপ্রেমী সেনাবাহিনীকে ট্রামকার্ড হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টায় সফল হবে? আধা সামরিক বাহিনী বিডিআর নিয়ে যে পৈশাচিক খেলা হয়েছে সে ক্ষত এখনো শুকায়নি। তারপরও জনগণের ভরসাস্থল হিসেবে পরিচিত সেনাবাহিনীকে (তারা জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালনে সাফল্য দেখাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে গৌরবময় ভূমিকা রেখেছে। হাতিরঝিলকে নয়নাভিরাম করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইল্যা, সিডর ও ঘূর্ণিঝড়ে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের হয়ে ভোটারদের আইডিকার্ড করেছে) ভোটের সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নামানোর প্রক্রিয়া চলছে। প্রশ্ন হলো সেনাবাহিনীর দায়িত্ব কি দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা? 
দেশের সাংবিধানিক ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা কেমন? ৪২ বছরে এসব প্রতিষ্ঠান জনগণের আস্থা কতটুকু অর্জন করেছে? বিচার বিভাগ নিয়ে যত কম বলা যায় ততই ভাল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান কয়েকবছর আগে বলেছিলেন, ‘হাইকোর্ট হলো গরীবদের জন্য সোনারগাঁও হোটেলের মতো। গরীব মানুষ যেমন সোনারগাঁও হোটেলে প্রবেশ করতে পারেন না; তেমনি টাকার অভাবে তারা ন্যায় বিচার পেতে হাইকোর্টে যেতে পারেন না। কারণ সেখানে গেলে আইনজীবীদের যে অর্থ দিতে হয় তা গরীবের পক্ষে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়।’ প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হক বলেছেন, ‘হাইকোর্টে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুই পরিবর্তন হয়। যেদিকে বৃষ্টি সেদিকে ধরা হয় ছাতা। মামলা কোনো ব্রেঞ্চে গেলে আইনজীবীরা জানতে পারলেই তারা বুঝে যান মামলার অবস্থা কি হতে পারে।’ তারপরও মানুষ হাইকোর্টের প্রতি আস্থা রাখতে চায়; আস্থা রাখছে। কিন্তু সাবেক প্রধান বিচারপতি এম খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে ‘বিতর্কিত’ রায়ের মাধ্যমে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়ে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান পদ পুরস্কার লাভ করলেন। সেখানে বসে তিনি এখন একদলীয় পাতানো নির্বাচনের কলকাঠি নাড়ছেন।
জাতীয় সংসদের অবস্থা সবার জানা। আইন প্রণয়নের এ প্রতিষ্ঠানকে সরকারের ইচ্ছাপূরণের প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা হয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণার আগেই সংবিধান সংশোধনের জন্য ১৫ সদস্যের বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটি ২৭টি বৈঠক করেছে। দেশের প্রখ্যাত আইনজীবী থেকে শুরু করে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতামত নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখার পক্ষে অবস্থান নেয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় সবকিছু বাদ দিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। সংবিধান নিয়ে মায়াকান্না করে এক দলীয় নির্বাচন হচ্ছে। অথচ সংবিধানে নির্দেশনা থাকার পরও বিদেশি কোনো গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির আগে সংসদে আলোচনা করা হয় না। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের অবস্থা আরো করুণ। সার্চ কমিটির মাধ্যমে এই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলেও এ কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা যেন সরকারের আজ্ঞাবহ। বুদ্ধিজীবীদের ভাষায় মেরুদ-হীন বিএনপির ভাষায় সরকারের ক্রীতদাস। এ কমিশন শুধু সরকারের আজ্ঞাবহ নয়; নজীরবিহীন ভাবে নিজেরাই নিজেদের ক্ষমতা খর্ব করেছে। আওয়ামী লীগের আয়নায় দেশের চিত্র দেখে তারা এতো রক্তপাতের মধ্যেও বলছেন এ অবস্থায় নির্বাচন করা সম্ভব। তারা এখন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার নামে সেনাবাহিনীকে নামিয়ে জনগণের প্রতিপক্ষ করতে চাচ্ছেন। অথচ বিশিষ্টজনেরা সব সময় বলছেন সেনাবাহিনীর কাজ দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা নয়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমানের কিছু বিপ্লবী বক্তৃতা ছাড়া দেশের মানুষ কোনো কিছু পায়নি। দেশের মানবাধিকারের চরম অবস্থায়ও তিনি সরকারকে বিব্রত হয় তেমন কিছু করছেন না। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনেক ঘটনা ঘটলেও মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান টিভি ক্যামেরার সামনে কিছু বিপ্লবী কথা বলেন। ওই পর্যন্তই। দেশের জনগণকে নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। মানবাধিকার কর্মীদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে পদে পদে। দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যত সরকারের পুলিশ বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটি বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দফায় দফায় মামলা এবং হয়রানি করলেও এখন পর্যন্ত সরকার দলীয় কোনো নেতার দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করেনি। বিশ্বব্যাংকের কাছে দুর্নীতিগ্রস্ত সৈয়দ আবুল হোসেন ভাল মানুষ এবং রাতের আধারে ৭০ লাখ টাকাসহ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পিএস ধরা পড়লেও সুরঞ্জিত কোনো অন্যায় করেনি বলে সার্টিফিকেট দেন। প্রশাসনকে ব্যপকভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য মাঠ প্রশাসনকে সাজানো হয়েছে। সিভিল প্রশাসন কার্যত ছাত্রলীগ-যুবলীগ পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের অবস্থা আরো খারাপ। সেখানে এখন যোগ্যতার মূল্যায়ন হয় রাজনৈতিক পরিচয়ে। পুলিশ প্রশাসনে গোপালগঞ্জকরণের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীকে চাকরি দেয়া হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী এ প্রশাসন অনেক আগেই নিরপেক্ষতা হারিয়ে ফেলেছে। বিডিআরের নাম পরিবর্তন করে বিজিবি রাখা হয়েছে। নাম পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাদের ক্ষমতাও খর্ব করা হয়েছে। এখন সীমান্তে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বিএসএফ প্রায়ই গুলি করে বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করছে। অথচ বিজিবির নাকি গুলি করার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে না। পিলখানায় বিডিআরের বিদ্রোহের নামে ৫৮ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার যে বর্বরোচিত ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে জনমনের ক্ষোভ এখনো দূর হয়নি। বিদ্রোহের নামে বিডিআরের লোকজন সেনাবাহিনীর এতোগুলো মেধাবী কর্মকর্তাকে হত্যা করে; অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই খুনের নেতৃত্ব দেয়া ১৪ কর্মকর্তার সঙ্গে সরকারি বাসায় সমঝোতার বৈঠক করেন। পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের সময় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক আর মির্জা আজম বলেন, ‘এখানে প্রচুর টাকা ঢালা হয়েছে’। সচিত্র সেসব কথা মিডিয়ায় প্রচারও হয়েছে। প্রশ্ন হলো সে টাকা ঢাললো কে? বাংলাদেশের দেশপ্রেমী সেনাবাহিনীর শত্রু কারা? বিডিআর হত্যাকা-ের বিচার হলেও আওয়ামী লীগ নেতাদের এ সব বক্তব্যের জবাব দেশবাসী জানতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত দেশের সেনাবাহিনীর মেধাবী এতোগুলো অফিসারকে হত্যার মাধ্যমে যে ক্ষত সৃষ্টি করা হয়েছে সে ক্ষত বহুদিন জাতিকে বহন করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই এদেশের সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা এবং দমিয়ে রাখার চেষ্টা হয়েছে। রক্ষী বাহিনী গঠন করে সেনাবাহিনীকে উপেক্ষা করা হয় শেখ মুজিবুর রহমানের সময়। সে সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বর্তমানে বিভিন্ন দলের সঙ্গে যুক্ত এমন একাধিক নেতারা জানান, সে সময় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সৈনিকদের ছেঁড়া জুতা পড়তে হলেও রক্ষী বাহিনীকে সুসজ্জিত করা হয়েছিল। অতীতের এ সব প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেও বলা যায় বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এখন জাতির অহংকার। সরকারের অনৈতিক অস্তক্ষেপে দেশের অধিকাংশ সাংবিধানিক ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান যখন বিতর্কিত এবং মানুষের আস্থা হারিয়েছে তখন সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষ আস্থাশীল। মানুষ এখনো মনে করে সেনাবাহিনী হচ্ছে দেশের মানুষের শেষ ভরসাস্থল। রাজনীতিকদের ব্যর্থতার কারণে ১/১১ ঘটেছিল। দেশের বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষ মনে করেন সহিংসতা, লগী বৈঠা কালচার এবং রাজনীতিকদের ব্যর্থতার কারণে সেনাবাহিনী এসেছিল। অবশ্য বর্তমানের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাবি করেছিলেন ১/১১ সরকার আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী সারাবিশ্বে প্রশংসা পাচ্ছে। জাতিসংঘের হয়ে বিশ্বের দেশে দেশে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সদস্যরা (পুলিশও রয়েছে) সাফল্যের সঙ্গে শান্তি ফিরিয়ে এনেছে। দেশের অভ্যন্তরে ঘূর্ণিঝড়, সিডর, আইল্যায় তারা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ঢাকার বিষফোঁড়া হিসেবে খ্যাত হাতিরঝিলকে সংস্কার এবং ব্রিজ কালভার্ট স্থাপনের মাধ্যমে নয়নাভিরাম দর্শনীয় স্থানে পরিণত করেছে। ভোটার আইডিকার্ড কার্যত সেনাবাহিনীর সাফল্যের ফসল। এর আগে বিএনপি সরকার ভোটার আইডিকার্ড প্রকল্পে শত কোটি টাকা খরচ করেও সফল হতে পারেনি। সেনাবাহিনী সে সাফল্য দেখিয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন সংকটময় এবং দুর্যোগময় সেনাবাহিনীর জোয়ানরা জনগণের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ এই সেনাবাহিনী নিয়ে বিব্রতকর বক্তব্য দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজির ওয়াজেদ জয়। বিদেশি পত্রিকায় তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে শতকরা ৩৫ জন জঙ্গি রয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক এ মন্তব্যের জোড়ালো প্রতিবাদ দেশের মানুষ করেছে। পুলিশ প্রশাসনে অনেক যোগ্য ও মেধাবী কর্মকর্তা রয়েছে। তারা কাজ করতে চান। কিন্তু দলীয়করণের কারণে তারা অনেকেই কোণঠাসা। সরকার দলীয় লোকদের পুলিশ প্রশাসনে নিয়োগ দিয়ে এবং কিছু দলবাজ কর্মকর্তাকে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ওই প্রশাসনকে নিজেদের ইচ্ছামতো ব্যবহার করছে। বিরোধী দলকে দমনের জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। বাসে আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষের শরীর। অথচ সেগুলো রোধ করতে পারছে না সরকার। সরকারের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রী-এমপি ও সরকারি দলের নেতারা বিরোধী দলকে আন্দোলনে উসকে দিচ্ছে। বিরোধী দল আন্দোলন করছে সে আন্দোলনে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়ছে। অথচ মানুষ মরছে নিত্যদিন। চলন্ত বাসে আগুন দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। সরকার সে দায় অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে। প্রশ্ন হলো জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব কার? সরকারের দায়িত্ব কি শুধু বিরোধী দলকে দায়ী করা? নির্দলীয় সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের দাবির আন্দোলনে দেশের অবস্থা টালমাটাল। মানুষ চায় নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। জাতিসংঘ, প্রভাবশালী দেশ, দাতা সংস্থা, দেশের বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী সবাই চাচ্ছে সব দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। কেবল দিল্লী চাচ্ছে বিএনপিকে বাইরে রেখে পাতানো নির্বাচন। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে তারা সুবিধা পাবে। যার জন্যই দিল্লীর নীতি-নির্ধারকরা লেখেন ‘এতোদিন বাংলাদেশ দিল্লীকে দিয়েছে এখন আওয়ামী লীগকে দিল্লীর দেয়ার পালা।’ ‘যেভাবেই হোক প্রভাব খাটিয়ে হলেও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে।’ দিল্লীর খুঁটির জোরে সরকার আর নির্বাচন কমিশন বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচন করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। কিন্তু দেশের মানুষ জেগে উঠায় রাজধানীর বাইরে সরকারের দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ কমে এসেছে। ঢাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সরব উপস্থিতি হামলা মামলার ভয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের তা-বের কারণে আন্দোলনের ঢেউ দুর্বল হলেও সারাদেশে আন্দোলন চরম উত্তাপ ছড়িয়েছে। এ অবস্থায় বিএনপি পাতানো নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে। জনগণ জেগে ওঠায় পাতানো নির্বাচন করা কঠিন। জেগে উঠা মানুষকে পুলিশ প্রশাসন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশ যখন তখন মানুষের ওপর গুলি ছুঁড়েও আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সেজন্য সিইসি কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ জনগণের ভরসাস্থল নিরপেক্ষ সেনাবাহিনীকে মাঠে নামিয়ে ট্রামকার্ড হিসেবে ব্যবহার করে এক দলীয় নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায়। প্রশ্ন হচ্ছে এদেশের সন্তান সেনাবাহিনী সবকিছুই দেখছে। তারা নির্বাচন কমিশনের ট্রামকার্ড হয়ে জনগণের মুখোমুখি হবে কেন?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন