দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর হামলার শিকার হয়ে যশোরের অভয়নগর উপজেলার চাপাতলা গ্রামের মালোপাড়ার ১০৪টি হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরিবার এলাকা ছাড়লেও আবার তারা এলাকায় আসতে শুরু করেছে। নির্বাচনের দিন সকাল ১০টায় প্রথম ওই পাড়ার বাসিন্দাদের ওপর হামলা শুরু হয়ে রাত পর্যন্ত চার দফায় এ হামলা হয়। এতে এলাকার মানুষ ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পাশের ভৈরব নদ পার হয়ে অপর পাড়ে গিয়ে আশ্রয় নেয়। আর এ হামলার জন্য ভিন্ন ভিন্ন মত থাকলেও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হুইপের অনুসারী হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এসব হামলা ও ভাংচুর হয়েছে। মজার বিষয় হলো, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলার সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াতকে অভিযুক্ত করলেও ক্ষতিগ্রস্তরা বলছে, বিএনপি ও জামায়াতের নেতারাই আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। শুক্রবার মানবাধিকার সংস্থা শারি ও হিউম্যানিটিওয়াচের একটি প্রতিনিধি দল মালোপাড়া পরিদর্শন শেষে গতকাল সকালে খুলনা মহানগরীর হোটেল রয়্যালে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান। সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, নির্বাচনের দিন সকাল ১০টার দিকে বিশ্বজিত্ নামের এক যুবক ভোট দিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। পথে তার বন্ধুরা জিজ্ঞাসা করে তুই কোথায় গিয়ে ছিলি। সে জবাবে বলে, ভোট দিয়ে এলাম। এ সময় তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে এ বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আবার সংঘর্ষ হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের হুইপ আবদুল ওহাবের সমর্থক গ্রাম্য ডাক্তার জাহিদ বিষয়টি মীমাংসা করার কথা বলে উসকে দিয়ে হামলা করেছে বলে মালোপাড়ার ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছে। এভাবে দফায় দফায় হামলা হলে একপর্যায়ে মালোপাড়া বাসিন্দারা স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। আর এসব হামলার সময় স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে ফোন করলে তারা আশ্বাস দিলেও কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরে রাত সাড়ে ৮টায় জেলা পুলিশ সুপারকে জানানে তারা পদক্ষেপ নেন। সম্মেলনে বলা হয়, ঘটনার সময় কোনো ব্যবস্থা না নিলেও পরের দিন নবনির্বাচিত এমপি রণজিত ও পরাজিত প্রার্থী আবদুল ওহাব, উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মালেক, ডিসি, এসপিসহ সুশীল সমাজ, নাগরিক নেতা, এনজিও কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সম্মেলনে শারি ও হিউম্যানিটিওয়াচের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শারি’র ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর রঞ্জন বকসী নুপু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন হিউম্যানিটিওয়াচের প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল, অ্যাওসেডের প্রকল্প সমন্বয়কারী পলাশ দাশ এবং হিউম্যানিটিওয়াচের সমন্বয়কারী শরিফুল ইসলাম সেলিম। সম্মেলনে বলা হয়, দশম জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা হতে পারে, এই আশঙ্কায় ‘শারি’ গত ২৭ ডিসেম্বর ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু নিশ্চিত করেন যে, হিন্দু সম্প্রদায়কে সম্ভাব্য হামলা থেকে রক্ষা করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা সরকার গ্রহণ করেছে। কিন্তু দেশব্যাপী সংঘটিত হামলার ঘটনা প্রমাণ করে সরকার তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। স্থানীয় উপজেলা ও জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ বিভাগও কোনোভাবেই এই হামলার ঘটনার দায় এড়াতে পারে না। তাদের গাফিলতির কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, দেশের সব ধরনের নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশন দায়িত্বপ্রাপ্ত। নির্বাচনকালীন জনপ্রশাসনও নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ মোতাবেক কাজ করতে বাধ্য। একটি স্পর্শকাতর জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে এ ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা করেছেন সব পক্ষ। সেক্ষেত্রে যথাযথ নির্দেশনা দিতে এবং উপযুক্ত নির্দেশনা (যদি থাকে) মনিটরিং ও কার্যকর করতে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ১০৪টি পরিবারের জন্য সরকার এ পর্যন্ত দুই লাখ টাকা, দেড় টন চাল ও ১৩৪টি কম্বল বিতরণ করেছে। যা পরিবারপ্রতি গড়ে এক হাজার ৯২৩ টাকা, সাড়ে ১৪ কেজি চাল ও একটি করে কম্বল। এ ধরনের সহযোগিতা নিতান্তই অপ্রতুল এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি উপহাসের সমতুল্য। তবে ওই গ্রাম ও পাশের গ্রামের বিএনপি-জামায়াতের পাঁচটি বাড়িঘর যৌথবাহিনী ও মুখোশধারীরা ভাংচুর করলেও তাদেরকে কেউ খোঁজ-খবর নিচ্ছে না। তারাও মানবেতর জীবনযাপন করছে। সম্মেলনে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পর্যাপ্ত পুনর্বাসন সহায়তা ছাড়া দ্রুত এ ক্ষত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়। তবে এসব ভাংচুর করা বাড়ির লোকজন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত নয় বলে মালোপাড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছে। সম্মেলনে নির্বাচনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতনে দায়ীদের বিচারের জন্য অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনাল গঠনের সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলা হয়, স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত যত হামলা হয়েছে তার একটিরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি। দ্রুতবিচারে এ ধরনের ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হলে তা ভবিষ্যত হামলা থেকে ঝুঁকিপূর্ণদের রক্ষা করবে। আয়োজনকারীরা মনে করেন, এ ধরনের মামলা পরিচালনার জন্য কমপক্ষে জেলা জজের সমমর্যাদাপূর্ণ বিশেষ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচার কাজ জরুরিভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব। সুত্র- আমারদেশ
ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স
লেবেল
- খবর
- মতামত- বিশ্লেষণ
- বিবৃতি
- রাজনীতি
- প্রেস বিজ্ঞপ্তি
- আন্তর্জাতিক
- প্রচ্ছদ
- আইনশৃঙ্খলা
- শোক সংবাদ
- বিবিধ
- স্মৃতি
- আইন-আদালত
- জাতীয় সংসদ নির্বাচন
- শিক্ষা
- ডেমোক্রেসি
- ইসলাম
- স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞান
- অর্থনীতি
- ইসলামী আন্দোলন
- সাহিত্য-সংস্কৃতি
- হাদীসের বাণী
- শীতবস্ত্র বিতরণ
- সভ্যতা
- ইতিহাস
- গল্প
- মিডিয়া
- শোকবাণী
- খেলাধুলা
- জাতীয়
- IIUC News
- চিঠি
- কৃষি
- দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
- প্রবাস
- গবেষণা
- আবিস্কার
- কুরআন
- সম্পাদকীয়
- বাণী
- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
- সাইবার ক্রাইম
- দারসুল কুরআন
- ব্রেকিং নিউজ
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন