ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

শনিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০১৪

জামায়াতের পাশাপাশি সরকারের নজিরবিহীন ‘রোষানলে’ পড়েছে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও

চেয়ারপার্সন অবরুদ্ধ লক্ষাধিক মামলা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা সরকারের নজিরবিহীন ‘রোষানলে’ বিএনপিও রাজপথের আন্দোলনে জামায়াতের পাশাপাশি সরকারের নজিরবিহীন ‘রোষানলে’ পড়েছে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও। দলের চেয়ারপার্সন থেকে শুরু করে মফস্বলের সমর্থকদের নামেও রয়েছে একাধিক মামলা। স্বাধীনতার পর দলটি সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকলেও সরকারের এমন রোষানলে তারা আগে কখনো পড়েনি। একদিকে মামলার ঝাল, অন্যদিকে দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই রয়েছে কারাগারে। যারা বাইরে আছেন তারাও গ্রেফতার আতঙ্কে ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। দলের চেয়ারপার্সন ও সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া এখন গুলশানে একরকম ‘গৃহবন্দি’। তার সাথে দলের কাউকেই দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। গত ৭ দিন ধরে তাকে বাসার বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না। তার বাসার দুই পাশে রাখা আছে বালু ভর্তি ট্রাক। প্রধান ফটকে অবস্থান করছে শতশত পুলিশ-র‌্যাব। দলটির অবস্থা এমন যে, গত এক মাসের অধিক বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালাবদ্ধ। সেখানে নেই দলের কোনো নেতা-কর্মী। গ্রেফতারের ভয়ে সেখানে এখন কেউই যান না। দূর থেকে ভবনটিকে দেখতে ‘পরিত্যক্ত ভবনের’ মতোই মনে হয়। এই সরকারের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যলয়। গেল বছরে দু’বার তছনছ করা হয়েছে কার্যালয়ের ভেতরে। বিএনপির অভিযোগ, ব্যাপক লুটপাটের পাশাপাশি সেখানে ভাংচুর চালিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ক্ষমতাসীনদের এমন ভয়াবহ নির্যাতন মাথায় নিয়ে নতুন বছরের কার্যক্রম শুরু করেছে দলটি। উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সরকরের শুরু থেকেই নির্যাতনের শিকার হয়েছে। দলটির শীর্ষ নেতাদের অধিকাংশই কারাগারে। কথিত মানবতাবিরোধী বিচারের নামে সরকার তাদের ফাঁসির ব্যবস্থা করছে। যে বিচার ব্যবস্থা নিয়ে দেশে-বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রত্যক্ষ দৃষ্টিতে বিএনপিকে ‘দুর্বল’ মনে হলেও পরোক্ষ দৃষ্টিতে তারাই শক্তিশালী। বিএনপিকে ভয় পায় বলেই সরকার এখন হামলা, মামলা, খুন ও নির্যাতনের পথ বেঁচে নিয়েছে। নিজদল আওয়ামী লীগ ছাড়া সরকারের পাশে এখন আর কেউই নেই। দেশের সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক এমনকি জাতিসংঘসহ বিদেশীরা এখন সরকারের বিরুদ্ধে। সবাই সরকারের এমন সংবিধান বিরোধী কর্মকা-ের সমালোচনায় মুখর। মামলার জালে ‘আটকা’ বিএনপি : রাজপথের আন্দোলনে সরকারের ‘রোষানলে’ পড়ে মামলার জালে আটকা পড়ছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এ ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। পুলিশের হাতে আটক হওয়া একাধিক নেতা-কর্মী জানান, মামলায় সহায়তার জন্য বিএনপির কোনো নেতা বা দলীয় আইনজীবীকে খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা কেবল বড় নেতাদের মামলায় সহায়তা দিয়ে তাদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেন। এ অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ও লিগ্যাল এইড সেলের সদস্য ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম বলেন, দল থেকে সব নেতা-কর্মীকেই প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে সিনিয়র নেতাসহ যেসব নেতা-কর্মী হাইকোর্টে আসেন তাদের আইনজীবীরা সহায়তা করে থাকেন। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা যারা জাতীয় নির্বাচনে দলের প্রার্থী থাকেন, তারাই দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মামলার ব্যাপারে ব্যাপক সহায়তা করে থাকেন। দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত এক মাসের মধ্যে ৫ দফায় ২০ দিনের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে বিভিন্ন মামলায় আসামী করা হয়েছে বিরোধী দলের অন্তত ৭০ হাজার নেতা-কর্মীকে। এদের অনেকেই রাজপথের পাশাপাশি ছুটছেন আদালতে। গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত সাড়ে ৬ হাজারের বেশি বিএনপি ও সহযোগী দলের নেতা-কর্মীকে। এছাড়া গত এক সপ্তাহে মামলা হয়েছে আরো ১০ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। গ্রেফতার করা হয়েছে হাজারের অধিককে। বিএনপিকে আন্দোলনের বাইরে রাখতে সারাদেশে লাখ লাখ বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীকে সরকার মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে, এখনও জড়াচ্ছে। সূত্র জানায়, গত তত্ত্বাবধায়ক ও বর্তমান সরকারের আমলে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ২৫টি। এর মধ্যে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ছয়টি। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রয়েছে ১৪টি, আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে আছে ছয়টি মামলা। তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধেও একটি মামলা রয়েছে। হরতালে গাড়ি পোড়ানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় একাধিকবার কারাগারেও গেছেন তিনি। সম্প্রতি আর কয়েকটি মামলায় তাকে আসামী করা হয়েছে। বিএনপি নেতাদের মধ্যে যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের বিরুদ্ধে সব্বোচ্চ ১০৩টি মামলা করা হয়েছে। যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে ৩৯টি মামলা করা হয়েছে। ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বর্তমানে কারাগারে আটক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৭০ এরও অধিক। এহসানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে রয়েছে ৩৩টি মামলা। এসব মামলার মধ্যে ব্যানিটি ব্যাগ চুরির মামলাও রয়েছে। এছাড়া শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তরিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, এম কে আনোয়ার, ব্রি. জে. (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ফজলুর রহমান পটল, আব্দুস সালাম পিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লাহ বুলু, রিজভী আহমেদ, মিজানুর রহমান মিনু, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, মজিবুর রহমান সরোয়ার, মশিউর রহমান, বিশেষ সম্পাদক নাদিম মোস্তফা, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এহছানুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক কেএম মোশাররফ হোসেন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া অধিকাংশ জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া : গুলশানে নিজের বাসায় অবরুদ্ধ অবস্থায় ৭ দিন অতিবাহিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ১৮ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধের নামে সরকার তাকে ‘গৃহবন্দি’ করে রেখেছে। ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া নির্বাচন প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে ২৯ ডিসেম্বর ঢাকামুখী ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই বলতে গেলে তিনি অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। তিনি যাতে বাসা থেকে বের হতে না পারেন সেজন্য বাসার দুই পাশে ৫টি বালু ভর্তি ট্রাক রাখা হয়েছে। বাসার সামনে অবস্থান নিয়েছে শতশত পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। সূত্র মতে, কর্মসূচি ঘোষণার পরের দিন ২৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া তার গুলশানস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে যান। তারপর ২৬ ডিসেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত পুলিশী বাধায় বাসভবন থেকে বের হতে পারেননি। রাজধানীর গুলশানে তার বাসার সামনে পুলিশের উপস্থিতির সংখ্যা কমানো হলেও নজরদারি রয়েছে আগের মতোই। বাসার সামনে এখনো রয়েছে বালুভর্তি ট্রাকের ব্যারিকেড। রাস্তার পাশে রয়েছে জলকামান। মোতায়েন আছে পুলিশ, র‌্যাব ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা। এমনি পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার বেলা ৩টা থেকে পৌনে ৫টা পর্যন্ত খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবনে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা। এ সময় খালেদা জিয়ার দুই উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহ উদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বেগম জিয়ার সাথে বৈঠক করেন যুক্তরাজ্যের দূত রবার্ট গিবসন। খালেদা জিয়ার মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তারা জানান, গতকাল বুধবারও নজরদারি রয়েছে আগের মতোই। তাই দলীয় নেতা-কর্মী বা অন্য কেউ বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাসায় প্রবেশ করতে পারেননি। পুলিশ বেষ্টনিতে কেন্দ্রীয় কার্যালয় : এ সরকারের আমলে বেশ কয়েকবার নেতাশূন্য হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। তবে এবারের মতো দীর্ঘ সময় ছিল না। গত এক মাসেরও অধিক সশয় ধরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নেতা-কর্মী শূন্য। পুলিশি প্রহরায় ‘বন্ধ’ রয়েছে কার্যালয়টি। গ্রেফতারের ভয়ে কেউ ভিড়ছেন না এ এলাকায়। মূল ফটকে ঝুলছে তালা। গত ৩০ নভেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আটক করা হয় দলের যুগ্ম-মহাসচিব (দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) রুহুল কবির রিজভীকে। এরপর থেকে কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মী কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি। এরমধ্যে কয়েকদফা অবরোধও পার করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল। সবশেষ গত রোববারের ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’র অনুষ্ঠানস্থল নয়াপল্টনে জড়ো হননি দলের কোনো নেতা-কর্মী। তাই রিজভী আটকের পর থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছেন দায়িত্বরত কয়েকজন স্টাফ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া কার্যালয়ে সামনে কাউকে দেখা যায় না। এদিকে শুধু কার্যালয় অবরুদ্ধ করেই ক্ষান্ত থাকেনি সরকার। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে দুই দফায় ব্যাপক তছনছের ঘটনাও ঘটিয়েছে। গেল বছরের মার্চ মাসে প্রথমে হানা দেয় পুলিশ। সেবার কার্যালয়ের ভেতরে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট চালায় পুলিশ। সেবার কার্যালয় থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতাদের অনেককেই গ্রেফতার করা হয়। সর্বশেষ গত ৩০ নবেম্বর ভাংচুর চালানো হয় কার্যালয়টিতে। সেদিন মধ্যরাতে রুহুল কবির রিজভীকে টেনে-হিঁচড়ে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নাজেহাল করা হয় মিডিয়াকর্মীদের। এরপর থেকেই মূূলত বিএনপি কার্যালয় একরকম নেতা-কর্মী শূন্য। সমর্থক বেড়েছে : আন্দোলনে দলটি ভালো নয়- এমনটাই সবার ধারণা। দলটির নেতা-কর্মীরা ধরে নিয়েছিলেন, সামনে নির্বাচন হবে আর তারা ক্ষমতার মসনদে বসবেন। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতি যে এতো সরল নয়- সেই সরলটি বিএনপি নেতারা ধরতে পারেননি। দীর্ঘদিন আন্দোলনে বিমুখ থেকে হঠাৎ করে ২৫ অক্টোবর থেকে মাঠে নামার চেষ্টা করে বিএনপি। কিন্তু রাজনীতিও একটা খেলা। আর যেকোনো খেলার জন্য ওয়ার্মআপ দরকার, দরকার মাঠ। কিন্তু আন্দোলনের জন্য মাঠ পেলেও দলটি কোনোটাই করেনি। সেই কারণে প্র্যাকটিস ছাড়া মাঠে নামলে যা হয় তাই হয়েছে বিএনপির। লড়াইয়ে নামতে প্রস্তুতি দরকার। আর রাজনৈতিক দলের প্রস্তুতি হলো ভালো সাংগঠনিক কাঠামো। সক্রিয় কর্মী। আর মিডিয়া। এর কোনোটাতেই নেই বিএনপি। আছে কেবল সমর্থক। একসময় ছাত্রদল ছিল বিএনপির প্রাণ। ছাত্রদল আছে কি- এমন প্রান্তিক মন্তব্য এখন অনেকে করছেন। আর যুবদল তো রেষারেষিতে খ--বিখ-। রাজনীতির লড়াইয়ে নামার আগে এই দুটো সংগঠনের গুরুত্বের কথা মাথায় রাখেননি মূল দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। ফাঁকা মাঠে লাঠি মিছিল করছে সরকারি দল। বাইরে আন্দোলন, ঢাকা ফাঁকা : দেখা গেছে, নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ঢাকার বাইরে বিএনপি আন্দোলন জমাতে পেরেছে। পুরো দেশকে তারা রাজধানী থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। তবে ঢাকার মাঠ ফাঁকা। মহানগরের নেতাসহ এখানকার সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরাও আন্দোলনে ছিলেন না। অথচ টানা কয়েক দফা হরতাল-অবরোধে কয়েকটি বিভাগীয় শহর এবং বেশিরভাগ জেলা থেকে ঢাকা বিচ্ছিন্ন রাখতে সক্ষম হয়েছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এ কারণে তৃণমূলের ওপর দলটির প্রধান খালেদা জিয়া খুশি, একই সঙ্গে ঢাকার নেতাদের ওপর ক্ষুব্ধ। ধারণা করা হয়েছিল, খালেদা জিয়ার আহ্বানে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’র কর্মসূচিতে এখানকার নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকবেন। তবে তাও চোখে পড়েনি। এমনকি দলের চেয়ারপার্সনকে তার বাসায় অবরুদ্ধ রাখার পরও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি রাজধানীতে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকার সমর্থকদের কড়া অবস্থানের পরও ঢাকার বাইরে গণতন্ত্র অভিযাত্রা কর্মসূচির সমর্থনে বেশকিছু জেলায় নেতা-কর্মীদের মাঠে দেখা গেছে। ঢাকার নেতাদের মাঠে না থাকার কারণ হিসেবে এখানকার নেতারা দায়ী করছেন দলের মহানগর আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা ও সদস্য সচিব আব্দুস সালামকে। এই দুই নেতা নিজেদের পছন্দমতো লোকদের টাকার বিনিময়ে কমিটিতে স্থান দেয়ায় থানা ওয়ার্ডের নেতারা মাঠে নেই বলে অভিযোগ তাদের। বলা যায়, বিএনপির পেশাজীবী সংগঠনগুলোই খানিকটা সক্রিয়। এরমধ্যে আছেন আইনজীবী, শিক্ষক ও সাংবাদিক। কিন্তু বিএনপিপন্থি সাংবাদিকদের বেশিরভাগই পেশাহীন। নিজেদের মধ্যে গ্রুপিংও আছে। এরপরও বলা যায়, এই তিন পেশার লোকজন বিএনপিকে খানিকটা অক্সিজেন দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্দোলনে অভ্যস্থ না হওয়ার কারণেই বেশ কয়েক বছর ধরে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলন করলেও তাতে সরকারের টনক নড়াতে পারেনি বিএনপি। দেশে-বিদেশে এই দাবির পক্ষে ব্যাপক সমর্থন থাকলেও বিএনপির নের্তৃত্বের কারণে রাজধানীতে সেটি জমে উঠেনি। দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম ও সংস্থার জরিপে নির্দলীয় সরকারের পক্ষে জনমতের কথা উঠে আসলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি দলটি। এ যেন ‘পড়ে পাওয়া ধন পায়ে ঠেলে দেয়ার’ মতো অবস্থা। এছাড়া একসঙ্গে পাঁচ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে নিজেদের প্রার্থীর বিজয়ে বিএনপির জনসমর্থন স্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু এ জয়কে আন্দোলনের শক্তিতে পরিণত করতে পারেনি দলটি। নির্ভরতা : নিজে মাঠে না থেকে অন্যের ওপর নির্ভরতা বিএনপিকে সবচেয়ে বেশি দুর্বল করেছে। কূটনৈতিক, জাতিসংঘসহ মাঠে থাকা কয়েকটি সংগঠনের ওপর ভর করে এগিয়েছে দলটি। অথচ নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করেনি দলটি। সবকিছু ভাসা ভাসা। কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুলিশী প্রহরায় বন্ধ। গুলশান কার্যালয়ও অকার্যকর, লোক নেই। বিশ্বাসী মানুষ নেই। নির্ভরযোগ্য মানুষের অভাবে আছেন খালেদা জিয়া। দেখা গেছে, আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচন নিয়ে সমঝোতা করতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছে বিএনপি। সেজন্য দলের শীর্ষ নেতা ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টাদের নিয়ে একটি কূটনৈতিক টিমও গঠন করা হয়। তবে বছরজুড়ে এই টিমের তৎপরতা থাকলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সুখবর পায়নি দলটি। সবশেষ সংকট সমাধানে জাতিসংঘের ভূমিকায় আশার আলো দেখতে পায় বিএনপি। তবে সংস্থাটির মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর সফরে এ আশা আরো বেড়ে যায়। কিন্তু এ নিয়েও দলটি স্বস্তির দেখা পায়নি। তবে এখনো চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে দলটি। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন