- সুপ্রীম কোর্টের যে পাঁচজন জাজ নিয়ে এই মামলার বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে, তার একজন "সুরেন্দ্র কুমার সিনহা"র ব্যপারে Skype scandal-এ জড়িত বিচারপতি নাজমুল সরাসরি "সিনহা সাহেব বলেছেন তিনটা ফাঁসির রায় দাও তাহলে তোমাকে আমরা সুপ্রীম কোর্টে নিয়ে আসতেছি" বলার পরও কী করে এই সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে এই মামলার জাজ হিসেবে রাখা হয়??
- যে "শামসুদ্দিন মানিক"র বিতর্কিত বিচারকার্যের বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা ৫০০ পৃষ্ঠার প্রমানসহ অভিযোগনামা দাখিল করেছে, সেই শামসুদ্দিন মানককে স্বয়ং শেখ হাসিনা খোদ নিজে তদারকী করে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রীম কোর্টে নিয়ে এসে এই আব্দুল কাদের মোল্লা মামলার এপিল ডিভিশানে বসিয়ে দিয়েছেন, এটা কি আসলে আদালতের কোনো বিচার নাকি খোদ আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়কে সুপ্রীম কোর্টে বসিয়ে দেয়া??
- কেনো 'International Commission of Jurists' মন্তব্য করতে বাধ্য হয়, "Abdul Quader Mollah death sentence violates international law"। কেনো খোদ Amnesty International আব্দুল কাদের মোল্লা মামলার ব্যপারে বলে, “This is the first known case of a prisoner sentenced to death directly by the highest court in Bangladesh. It is also the first known death sentence in Bangladesh with no right of appeal..Death sentence without right of judicial appeal defies human rights law.” ---------
- যে সাক্ষীর কথায় এই ফাঁসির রায় হয়েছে, হযরত আলী লষ্কর পরিবারের সেই সদস্যা মোমেনা বেগম মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর, মিরপুর জল্লাদখানা, আর আদালত এই তিনজায়গায় তিন রকম কথা কেনো বললেন? কেনো আদালতে আসার আগে এতগুলো সাক্ষাতকার এতগুলো পাবলিক কথাবার্তায় একবারের জন্যও তিনি আব্দুল কাদের মোল্লার নাম নেননি? বার বার খালি পাকিস্তানি আর্মিদের কথাই বলেছেন? ২০০৭ সালে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর কর্তৃপক্ষের কাছে দেয়া জবানবন্দীতে (যা কিনা এখনো সংরক্ষিত আছে, অবশ্য যদি এই ফাঁসির আদেশ কার্যকর করার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই তা সরিয়ে ফেলা না হয়) এই মামলার প্রধান সাক্ষী মোমেনা বেগম নিজের মুখে বলেন হযরত আলী লষ্কর পরিবারের হত্যাকান্ডের দুইদিন আগে তিনি শ্বশুড়বাড়ি চলে যাওয়ায় প্রানে বেঁচে যান! অথচ ২০১২ তে কোর্টে এসে তিনি বলেন তিনি ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন!!! কোর্টে আসার আগে কী ব্ল্যাক মেইল করা হয়েছিলোও তাকে যে তিনি এতবছর ধরে বলে আসা এক কথাকে পুরা উলটে বললেন?
- আব্দুল কাদের মোল্লা যুদ্ধকালীন পুরো সময়ে যে বাড়িতে লজিং থাকার ডিটেইলস দিয়েছেন আদালতকে এবং যে দুই মেয়েকে তিনি সেইসময় ঐ লজিং বাড়ীতে পড়াতেন, সেই দুই মেয়ের এক জামাই সরকারেরই উপর স্থানীয় কর্মকর্তা, কেনো ঐ পরিবারের কাউকেই (বিশেষ করে ঐ মেয়েদু'টোকে) আদালতে সাক্ষী দিতে আনতে রাজী হয়নি ট্রাইবুনাল? ঐ পরিবারের প্রধান (মেয়েদু'টোর বাবা) নিজে মুক্তিযুদ্ধের ট্রেইনিং অর্গানাইজ করতেন, তাহলে ঐ পরিবারকে ট্রাইবুনালের কেনো এত ভয়?
- এই আব্দুল কাদের মোল্লাই যদি "কসাই কাদের" হয়ে থাকে যে "তিনহাজার মানুষকে হত্যা করেছে" বলে ট্রাইবুনাল বিশ্বাস করে, কীভাবে সম্ভব এই কসাই কাদেরই ঠিক যুদ্ধের পরপরই ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে খোদ "শহীদুল্লাহ হল"এ ফেরত এসে থেকে ফার্ষ্ট ক্লাস ফার্ষ্ট হয়ে বের হয়?? যে যুদ্ধপরবর্তী সময়ে কিনা মুক্তিযোদ্ধারা একজন একজন করে খুঁজে খুঁজে দেশের প্রতিটা এলাকা থেকে রাজাকার এমনকি রাজাকার না এমনও মানুষকেও পাবলিকলি এক্সিকিউট করেছে, সেখানে কী করে "কসাই কাদের" খোদ ঢাকা ইউনিভার্সিটির শহীদুল্লাহ হলে থেকে পড়ালেখা করে?! কী করে সম্ভব সে সময় মুক্তিযুদ্ধের বলতে গেলে জন্মস্থান ঢাকা ইউনিভার্সিটির কেউই কসাই কাদেরকে চিহ্নিত করতে পারলোনা??? তাকে ধরে পাবলিকলি এক্সিকিউট করাতো দূরের কথা!!
- কী করে এই "কসাই কাদের"-ই পড়ালেখা শেষ করে উদয়ন স্কুলে টীচিং এ যোগ দেন, যে সময় কিনা ঐ স্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন মিসেস শারমীন, যিনি নিজে একজন শহীদ বুদ্ধিজীবির স্ত্রী!! কী করে সম্ভব এই "কসাই কাদের"-ই পরবর্তীতে বাংলাদেশ রাইফেলস স্কুল এন্ড কলেজে টিচিং করেন? এই দুই স্কুলের হাজার হাজার সুডেন্টদের পরিবার-অভিভাবক কেউই চিনলোনা এই কসাই কাদেরকে??? স্কুলের কথা বাদ, কোনো সাংবাদিকই বা চিনলোনা কেনো যখন এই "কসাই কাদের"-ই দুইবার Dhaka Journalists Union এর ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন?!?!
- আব্দুল কাদের মোল্লা মামলায় তার পক্ষ থেকে যতগুলো প্রমান পেশ করা হয়েছে, কেনো ট্রাইবুনাল একটা প্রমানকেও nullify করতে পারেনি? এমনকি করার দরকারও মনে করেনি! এমনকি রায়ে তার কিছুইই উল্লেখই করেনি!! এটা কী ধরনের বিচারের স্ট্যান্ডার্ড?!
- কেনো David Bergman এর মত ইন্টারন্যাশনাল বিদেশী সাংবাদিক তার ব্লগে বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী ট্রাইবুনালের legitimacy নিয়ে এত এত প্রশ্ন তুলেন? (http://www.blogger.com/profile/02674636000068693356)
- বংগবীর কাদের সিদ্দীকি বীরউত্তমের মত লোক, যে কিনা জীবনের কোনোরকম তোয়াক্কা না করে শেখ মুজিবের এক ডাকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো, সেই তিনি পর্যন্ত কেনো শাহবাগ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী তার কলামে স্যাটায়ার করে লিখেন- পিতা, কাদের মোল্লাকে নিয়ে দেশ এখন উত্তাল, পুরা দেশে এক নাম- কাদের মোল্লা! তার ফাঁসির দাবী চলছে। কিন্তু পিতা তুমি হয়তো এই কাদের মোল্লাকে চিনোনা, কারন আমাদের সময়ে যাদের যাদের বিচারের লিষ্ট আমরা বানিয়েছিলাম তাতে এই কাদের মোল্লা ছিলোনা। তুমি কীভাবে চিনবে, আমরাই তো কেউ চিনতাম না!!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন