'ভীত নই, আমার হত্যাকারীদের বিচার হবে কেয়ামতের ময়দানে'
জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা তার মৃত্যুদণ্ডকে 'হত্যা' আখ্যা
দিয়ে বলেছেন, 'যারা আমাকে মিথ্যা অভিযোগে হত্যা করতে চায়, আল্লাহ তায়ালা
কেয়ামতের ময়দানে তাদের বিচার করবেন।'
আজ শনিবার গাজীপুরের কাশিমপুরে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর ষাট
সেলে আবদুল কাদের মোল্লার সাথে তার বড় ছেলে ও দুই মেয়েসহ স্বজনরা সাক্ষাৎ
করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
কারা তত্ত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীর কবির জানান, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের
বেলায় একমাসে একবার এবং সাধারণ বন্দিদের বেলায় ১৫দিনে একবার কারাবন্দিদের
সাথে দেখা করার সুযোগ থাকে। কিন্তু ফাঁসির আদেশ কারাগারে না আসায় আগের
নিয়মানুযায়ী (অর্থাত্ ১৫দিনে একবার) কাদের মোল্লার সাথে তার স্বজনেরা আজ
দেখা করেন।
জাহাঙ্গীর আরো জানান, বেলা ১২টার দিকে দুই মেয়ে আমাতুল্লাহ পারভিন ও
আমাতুল্লাহ লারজীন, বড় ছেলে মো. হাসান জামিল, ভাতিজা সামসুল ইসলাম এবং
শ্যালক রাগীবুল আহসান কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আবদুল কাদের মোল্লার সাথে
দেখা করেন। সেখানে আধাঘণ্টা নানা বিষয়ে আলোচনা ও সাক্ষাৎ শেষে সাড়া ১২ টার
দিকে তারা আবার কারাগার ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর সব শেষ আবদুল কাদের মোল্লার স্ত্রী সানোয়ারা
জাহান, ছেলে হাসান মওদুদ, নাতি নাইমা আক্তার, ভাতিজা নজরুল ইসলামসহ কয়েকজন
আত্মীয় স্বজন কারাগারে এসে কাদের মোল্লার সাথে সাক্ষাৎ করেন।
অসুস্থ্যতার কাছে সানোয়ারা জাহান আজ কারাগারে যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন
তার পরিবারের সদস্যরা।
সাক্ষাৎ শেষে তার স্বজনরা জানান, কারাগারে আবদুল কাদের মোল্লা মানসিকভাবে
অনেক মজবুত আছেন। তার বিরুদ্ধে ঘোষিত ফাঁসির আদেশে তিনি মোটেই বিচলিত নন।
তিনি তার পরিবারের সদস্যদেরকে ধৈর্য্য ধারণের উপদেশ দেন। ইসলামী আন্দোলনের
কর্মীদেরকেও ধৈর্য্য, সবর ও সংযত আচরণের আহ্বান জানান।
দেশের অন্যতম শীর্ষ ইসলামী নেতা আবদুল কাদের মোল্লা তার পরিবারে সদস্যদের
মাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশে একটি বার্তা দেন।
তার বার্তাটি হুবহু তলে ধরা হলো-
'আমি কোন অপরাধ করিনি, আল্লাহ সব জানেন'
'আমি ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের জন্য টার্গেটে পরিণত হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে
আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
আমার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে কোন প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী
প্রসিকিউশন হাজির করতে পারেনি। সম্পূর্ণ শোনা স্বাক্ষীর উপর ভিত্তি করে
মাননীয় ট্রাইব্যুনাল আমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছিলেন।
আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলায় ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক রায় ঘোষণার পর
সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে উঠে। তাদের দাবিতে ১৮
ফেব্রুয়ারী আইন সংশোধন করে আমার শাস্তি বর্ধিত করার জন্য সরকার পক্ষ আপীল
দায়ের করে।
নিম্ন আদালত মিথ্যা মামলায় আমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেও মহামান্য
সুপ্রীম কোর্ট বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে নজিরবিহীনভাবে সে দণ্ড
বৃদ্ধি করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন।
সম্পূর্ণ শোনা স্বাক্ষীর উপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ দণ্ড প্রদান দুনিয়ার
বিচার বিভাগের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা।
এই রায় বিস্ময়কর হলেও আমি এতে হতবাক হইনি। কারণ আমি ইসলাম ও ইসলামী
আন্দোলনের কারণেই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।
দুনিয়ায় যারা ইসলামী আন্দোলন করেছেন তাদের সবাইকে দুনিয়া থেকে উৎখাত করার
নানামুখি ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
এমনকি নবী-রাসূলদের উপরও চালানো হয়েছিল জুলুম এবং নির্যাতন। তাই ইসলামী
আন্দোলনের পথ হচ্ছে রক্তপিচ্ছিল কন্টকাকীর্ণ।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নবুওয়াতের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন কিন্তু
শাহাদতের দরজা খোলা রেখেছেন। যতদিন ইসলামী আন্দোলনের পথে শাহাদতের ঘটনা
ঘটবে ততদিন ইসলামী আন্দোলন বেগবান হবে।
আল্লাহ যাদেরকে চান, তাদেরকেই শহীদ হিসেবে কবুল করেন। আমি যদি মহান আল্লাহর
দরবারে শহীদ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হই, সেটাই আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ পাওনা।
সুতরাং মৃত্যুদণ্ডের ভয়ে আমি ভীত নই।
সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো অভিযোগে দুনিয়ার আদালত আমাকে শাস্তি প্রদান করে
পরকালের আদালতে আমার ন্যয়বিচার প্রাপ্তির সার্টিফিকেট দিয়েছে।
মহান আল্লাহ তায়ালা সকল অন্যায় ও বিভ্রান্তিকর বিচার থেকে মুক্তি দিয়ে
ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য ‘শেষ বিচারের দিনের’ কথা কোরআনে উল্লেখ
করেছেন।
সুতরাং আসল ফায়সালা হবে আখেরাতের আদালতে। আজকের বিচার সেদিন আমার মুক্তির
কারণ হবে। মহান আল্লাহর কাছে আমি অবশ্যই সেদিন ন্যায়বিচার পাবো।
আমি কোন অপরাধ করিনি। মহান আল্লাহ গোপন, প্রকাশ্য সকল খবর রাখেন। কোন
ব্যক্তিই আল্লাহর চোখে ফাঁকি দিতে পারবে না।
যারা আমাকে মিথ্যা অভিযোগে হত্যা করতে চায়, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের ময়দানে
তাদের বিচার করবেন। আমার জন্য আল্লাহর স্বাক্ষ্যই যথেষ্ঠ।
আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও এদেশের মানুষ একদিন মুক্তি পাবে। আল্লাহর দ্বীন
এখানে বিজয়ী আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সকল জুলুমের অবসান ঘটবে। আমি
মহান আল্লাহর কাছে আল্লাহর দ্বীনের বিজয় কামনা করি।
আমি দেশবাসীর নিকট আমার সালাম জানাচ্ছি ও তাদের নিকট দোয়া কামনা করছি। দেশ ও
জাতির এই কঠিন মুহূর্তে ধৈর্য্য, সহনশীলতা ও সংযত আচরণের মাধ্যমে
পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আমি আমার প্রিয় দেশবাসীর নিকট আহ্বান জানাই।
দুনিয়ায় না হলেও আখিরাতে আমার প্রিয় দেশবাসী, সহকর্মী ও আপনজনের সাথে
সাক্ষাৎ হবে, ইনশাআল্লাহ।'
ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স
লেবেল
- খবর
- মতামত- বিশ্লেষণ
- বিবৃতি
- রাজনীতি
- প্রেস বিজ্ঞপ্তি
- আন্তর্জাতিক
- প্রচ্ছদ
- আইনশৃঙ্খলা
- শোক সংবাদ
- বিবিধ
- স্মৃতি
- আইন-আদালত
- জাতীয় সংসদ নির্বাচন
- শিক্ষা
- ডেমোক্রেসি
- ইসলাম
- স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞান
- অর্থনীতি
- ইসলামী আন্দোলন
- সাহিত্য-সংস্কৃতি
- হাদীসের বাণী
- শীতবস্ত্র বিতরণ
- সভ্যতা
- ইতিহাস
- গল্প
- মিডিয়া
- শোকবাণী
- খেলাধুলা
- জাতীয়
- IIUC News
- চিঠি
- কৃষি
- দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
- প্রবাস
- গবেষণা
- আবিস্কার
- কুরআন
- সম্পাদকীয়
- বাণী
- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
- সাইবার ক্রাইম
- দারসুল কুরআন
- ব্রেকিং নিউজ
বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৩
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন