11 Apr, 2015 ‘চিন্তা করো না, আল্লাহ চান তো তোমাদের সবার সাথে দেখা হবে জান্নাতে। তোমরা সবাই সৎ জীবনযাপন করবে। হালাল রুজি কামাই করবে’- কথাগুলো বলেছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। গত ৬ এপ্রিল কারা কর্তৃপক্ষের চিঠি পেয়ে পরিবারের সদস্যরা তার সাথে সাক্ষাত করেন। মনে হচ্ছিল এটাই তাদের শেষ সাক্ষাত। ওই বিবেচনাতেই তিনি কথাগুলো বলেছিলেন।
মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বড় ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামি দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, আব্বা বলেছেন, তার এ মৃত্যু নিঃসন্দেহে শহিদি মৃত্যু। তিনি এজন্য আনন্দিত। এভাবে মৃত্যুবরণ করতে পারা সৌভাগ্যের বিষয়। তিনি বলেছেন, কতভাবে কত মানুষের মৃত্যু হয়। যেকোনো দুর্ঘটনা বা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারতেন। কিন্তু এ মৃত্যু আনন্দের। মৃত্যু নিয়ে তিনি ভীত নন।
গত ৬ এপ্রিল কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর ওই দিনই কারা কর্তৃপক্ষ দুপুরের পর কামারুজ্জামানের মিরপুরের বাসায় চিঠি পাঠায়। বিকেল পাঁচটার মধ্যে পরিবারের সদস্যদের কারাগারে কামারুজ্জামানের সাথে সাক্ষাতের জন্য যেতে বলা হয়। কামারুজ্জামানের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, ভাই, ভাতিজা, ভাগ্নিসহ মোট ১৬ জন সদস্য সন্ধ্যা পৌনে সাতটা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা তার সাথে সাক্ষাৎ করেন।
কামারুজ্জামানের বড় ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামিও ছিলেন এ ১৬ জনের মধ্যে।
হাসান ইকবাল ওয়ামি তার পিতার সাথে ওই সাক্ষাৎ বিষয়ে দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, আব্বা আমাদের বলেছেন, তার অবর্তমানে আমাদের মা আমাদের অভিভাবক। তিনি আমাদের নসিহত করে বলেছেন, তার মৃত্যুতে আমরা যেন কোনোভাবেই বিচলিত না হই। তিনি বলেছেন, তিনি জুলুমের শিকার। ইসলামী আন্দোলনের সাথে যুক্ত থাকা এবং রাজনীতির কারণেই তার আজকের এ পরিণতি। তিনি আমাদের অভয় দিয়ে বলেছেন, চিন্তা করো না, আল্লাহ চান তো একদিন তোমাদের সবার সাথে দেখা হবে জান্নাতে।
হাসান ইকবাল বলেছেন, একদিন এদেশে ইসলামের বিজয় হবে সেটাই আব্বার আশা। একদিন এ দেশের তরুণরা সত্য ইতিহাস জানবে।
আপনাদের পক্ষ থেকে তাকে কী বলেছেন জানতে চাইলে হাসান ইকবাল বলেন, আমরা আব্বার কাছে দুঃখপ্রকাশ করে বলেছি আইনি লড়াইয়ে আমরা তাকে মুক্ত করতে আনতে পারলাম না। এজন্য আমরা দুঃখিত।
উৎসঃ নয়া দিগন্ত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন