মীর কাসেম আলীর কথিত মানবতা বিরুধী মামলার রায় হয়েছে গত ৩ নভেম্বর-২০১৪
আর তার পরিবারের সাথে দেখা হয়েছে নভেম্বরের ২ তারিখ।বিভিন্ন প্রতিকুলতায় ট্রাইবুনালে কার যাওয়া সম্ভব হয়নি।দেশের জনগনের মতই আমরাও টিভিতে ঈ দেখলাম আর পেপারে পড়লাম।জীবনের সবচেয়ে এই ট্রাজিক সময়ে তার কাছে আপন জন একদম কেউই থাকল না।
রায় হওয়ার আগে সপ্তাহে ১বা দেখা করতে পারা যেত। হঠাৎ রায়ের তারিখ ঘোষনায় সে দেখা করার সুযোগ আর পাওয়া গেল না।
কারাগারের নিয়ম বড়ই মজাদার!! মীর কাসেম কে কারাগারে নিয়ে ১ম রাতেই রেখেছে ফাসীর সেলে কেন্দ্রীয় কারাগারের যেখানে এখন কামারুজ্জামান ভাই আছেন।কোর্ট থেকে ৫ ম দিনে যথন ডিভিশনের আদেশ করা হল তখন তা বাস্তবায়নে কারাকর্তৃপক্ষের সময় লেগে গেল অনেক দিন। কারন; কোর্টের আদেশ এসে হাতে পেলে তবেই তারা ব্যবস্থা নিবেন।নতুবা
ব্যবস্থা নেয়ার নিয়ম নেই।কিন্ত সেই কারাগারেই যখন ফাসির হুকুম হল
তখন কোর্ট থেকেই শুরু হল বাস্তবায়ন-কাগজ এসে পোছানের দারকার পরল না।এমনকি তার আগের রুমে গিয়ে নিজের জিনিষগুল যে নিয়ে আসবে গুছিয়ে সে অবকাশটাও দেয়া হলনা --সোজা ফাসির সেলে।নিজামী ভাইর বেলাতেও দেখা গেছে চট্টগ্রাম থেকেই তাদের কে কয়েদির পোষাক পড়িয়ে ঢাকা আনা হয়েছে। এ সময়ে তাদের আর তর সয় না।
দাদা-নাত্নীদের সাক্ষাত
দীর্ঘ ৫ মাস হয়ে গেল রায় হয়েছে আর মীর কাসে আলী ফাসির সেলে অবস্থান করছেন।দু'বার আইনবিদদের সাথে দেখা করা ছাড়া আমাদের কার সাথে দেখা হয়নি।যতবার চেস্টা করা হয়েছে ততবার ঈ কোন না কোন উছিলায় দেখা করতে দেয়া হয়নি।এবার মরিয়া হয়ে আমরা ১ লা আপ্রিল চলে গেলাম কাশিমপুর কারাগারে সাথে দুই নাতনী সুবহা আর সা'লাবা। সুবহার স্কুলে সেদিন স্পোর্টস সে আবার যেমন খুশি সাজো তে প্রিন্সেস সাজার কথা।কিন্ত যেই শুনল দাদা ভাইর কাছে যাচ্ছি অমনি বুকে দু'হাত দিয়ে এমনভাবে বলল"কত দিন দা'ভাইকে দেখিনা "!! তাকে না নিয়ে আর পারা যায়?!?! প্রিন্সেস নিয়েই চললাম।সাক্ষাত
ডাক এল --৩ বছরের কারা জীবনে আমরা এভাবে আর কখন দেখা করিনি।হাটতে হাটতে কলাপ্সেবল গেট পার হয়ে এই গলি সে গলি পার হয়ে এল আর এক কয়েদখানা।দেয়াল + লোহার গরাদের পরে গরাদ তারপর গরাদ। বজ্র আটুনী। মীর কাসেম কে আগেই এনে রাখা হয়েছে।বাইরের পরিস্কার আলো থেকে এসে কিছুই দেখতে পাচ্ছিনা শুধু শুনতে পাচ্ছি উভয় পক্ষের সালাম বিনিময়।সুবহা সা'লাবা তো হতবাক। দাদাভাই চিয়ার আপ করার জন্য বলছেন "হালুম... হালুম... আমি রয়েল বেংগল টাইগা..র হালুম।বিস্মিত সুবহা বলে "দা ভাই অরা তোমাকে কিসে ভরেছে? তমাকে কি আটকে রেখেছে দা ভাই......এটার নাম কি জেল দাভাই!! দাদাভাই যে কত কিছু করে হাত তালি দিয়ে গান গেয়ে কবিতা বলে নানা কথা জিজ্ঞেস করে মন ভুলাতে চেস্টা করছেন কিন্ত তারা কিসুতেই মানতে পারছেনা এমন এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি।সা'লাবার মুখে না আছে কথা না আছ হাসি।সুবহা একবার হাসে একবার প্রশ্ন করে আবার দাদা ভাই কে দেখে।দাদা ভাইর গলাটা একবার ধরে এলেও জোরে হেসে উঠেন।কারারক্ষির হাত থেকে লাঠিটা নিয়ে গ্রীলের ফাকে ঢুকিয়ে দেন। বলেন ধর তো দাভাই।সুবহা চেস্টা করে ধরে। সা'লাবা ১টা আংগুল ছোয়ায় --আর দাদা ভাই সে লাঠি নিয়েচুমু খায় বারবার...
আন্দোলনের ভাইদের প্রতি
খোজ খবর নিলেন সবার পরিবার-আত্মীয় স্বজন- অফিস- সংগঠন -ময়দান। এক পর্যায় গলাটা মনে হয় এক্টু ধরে এল।পরমুহুর্তেই সাম্লিয়ে নিয়ে বললেন "আমি খুব জিহাদের মুডে আছি।রুমের দরজায় লাল অক্ষরে লেখা আছে "মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত"। তাই প্রতি মুহুর্তেই আল্লাহর কাছে আত্ম-সমর্পণ আর জিহাদের ময়দানে পদচারণা। আল্লাহর ওয়াদা -আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম কারির আহল আর আহারের দায়িত্ব তিনি নিজ হাতে নিয়েছেন। তাই ময়দানের ভাইদের কেও বলবে নির্ভয়ে কাজকরে যেতে। ফয়সালা আল্লাহর ই হাতে............
*লেখিকা ও সহধর্মীনী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন