ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সদর ইউনিয়নসহ স্থানীয় প্রায় সবক'টি বাজার এখন তরমুজে সমারোহ। মৌসুমের শুরুতেই আশাতীত উৎপাদন হওয়ায় চাষীদের মুখে ফুটেছে হাসি। দামও সাধারণের নাগালের মধ্যে। ইতিমধ্যে স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে রফতানি হচ্ছে এলাকার বাইরে।উপজেলার ওসমানগঞ্জ, নীরকমল, নুরাবাদ, মুজিব নগর, নজরুল নগর, চরকলমী, চরমানিকা, এওয়াজপুর, হাজারীগঞ্জ, রসুলপুর ইউনিয়নের চাষীরা জানিয়েছেন, বৃষ্ঠির কারনে তরমুজে ফল গুলো ঝড়ে ও নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চাষীরা চিন্তিত হয়ে পরে।তার পরও চাষীদের অধিক চেষ্টার ফল চরফ্যাশন এ বছরও তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিক্রি হচ্ছে সুলভমূল্যে। তরমুজের কাক্ষিত ফলন অর্থনৈতিক মুনাফায় বিরাট সহায়ক হয়েছে চাষীদের। তবে বাম্পার ফলন হলেও পরিবহনের সংকট এর কারনে সংরক্ষণের অভাবে সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে না পারলে যে কোনো মুহূর্তে পচনশীল এ পণ্যের মারাত্মক ভাবে ক্ষতিসাধিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এসব এলাকার চাষীরা।এছাড়াও প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে যাতায়াত দুর্গম হওয়ায় দেখা দিয়েছে পরিবহন সঙ্কট। এতে উৎপাদিত তরমুজ সঠিক সময়ে বাজারজাত নিয়ে বিপাকে পড়ার আশঙ্কা করছেন চাষীরা। অন্যদিকে এক ধরনের মধ্যস্বত্ব সুবিধাভোগী ফড়িয়াদের কাছেও ধরাশায়ী হচ্ছেন অনেক চাষী। ফলে ন্যায্যদর থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। চাষী মো. ইউছুব মোল্লা ও সাহেআলম বাবলুর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হরতাল ও অবরোধ এর কারনে ন্যায্যমূল্যে ও সঠিক সময় সার কিটনাশক না পেয়ে এ বছর তরমুজের চাষ করতে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। অনেক কষ্টে সার ও কিটনাশক সংগ্রহ করতে হয়েছে। এছাড়া অনাবৃষ্টি, খরা এবং নদী-নালার পানি দ্রুত নিম্নস্তরে নেমে যাওয়ায় পানি সেচের সঙ্কট হয়েছিল। বর্তমানে সড়ক ও নদীপথে তৈরি হয়েছে পরিবহন সঙ্কট। ফলে এর মধ্যেই বাজারজাত কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে জেলা ও উপজেলায় কোথাও হিমাগার না থাকায় সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থাই নেই।
যোগাযোগ দুর্গমতার কারণে যথাসময়ে বাজারজাতের সুবিধাও গড়ে ওঠেনি এ অঞ্চলে। এসব কারণে উৎপাদিত তরমুজ সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। ফলে তরমুজের বাম্পার ফলন হলেও চাষীরা ভুগছেন নানা আশঙ্কায়।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনোতোস সিকদার জানান,উপজেলায় প্রায় ৫৫০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০০০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টর জমিতে তরমুজের উৎপাদন ৪০-৪৫ মেট্রিক টন আসা করা যায়। আর গত বছর তরমুজের চাষ হয়েছে ৪০০০ হেক্টর জমিতে। এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত ফলন হয়েছে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও তরমুজের অধিক ফলন হয়েছে। তবে চরাঞ্চলের সাথে মোকামগুলোর যোগাযোগ দুর্গম হওয়ায় চাষীরা উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না।
ঢাকার নিউজ/কামরুজ্জমান শাহীন, চরফ্যাশন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন