১) ইসলাম কখন মানুষের মধ্যে শ্রেণীবিভেদ তৈরী করেনি। সকল মানুষ এক কাতারে কাধে কাধ মিলিয়ে নামাজে দাড়িয়ে এটাই প্রমাণ করে, ইসলামের দৃষ্টিতে সবাই সমান। তাই ইসলাম কখন ‘শ্রমিক’ ও ‘মালিক’ নামে দুটি শ্রেণী তৈরী করেনি। বরং ইসলামে প্রত্যেক মানুষকেই শ্রমিক বলে বর্ণনা করা আছে । এ সম্পর্কে কুরআন পাকে আছে: “নিশ্চয় আমি (আল্লাহ) মানুষকে সৃষ্টি করেছি পরিশ্রমী বা শ্রমজীবী করে।” (সূরা বালাদ : আয়াত শরীফ ৪)
কিন্তু ইহুদী পূজিবাদীরা সর্বদা চেয়েছে, তাদের সুবিধার্থে সমাজে মালিক-শ্রমিক তথা শোষক ও শোষিত নামে দুটি শ্রেণী তৈরী করতে। তাই ‘পহেলা মে বা শ্রমিক দিবস’ পালনের অর্থই হচ্ছে, সমাজে মালিক ও শ্রমিক নামক দুটি শ্রেণীর উদ্ভব করা।
২) অনেকে বলতে পারে, এ দিবসটি থেকে একজন শ্রমিক যে দৈনিক ৮ ঘণ্টা ডিউটি করবে তার ধারণা পাওয়া যায়। কিন্তু একজন মুসলমান হিসেবে দিনে ৮ ঘণ্টা ডিউটি করতে হবে, এ ধারণা জন্য পহেলা মে পালনের দরকার নেই। কেননা পবিত্র হাদীস শরীফে নবীজি এ সম্পর্কে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন। এ সম্পর্কে হাদীস শরীফে আছে: নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিনের সময়কে তিন ভাগ (৮ ঘণ্টা+৮ ঘণ্টা+৮ ঘণ্টা) করে নেওয়ার জন্য তালিম দিতেন। এক ভাগ আল্লাহর ইবাদত এবং দীনের ফিকিরের জন্য, এক ভাগ পরিবার পরিজনের সাথে সময় দেয়ার জন্য এবং আরেক ভাগ ব্যক্তিগত কাজ ও নিজের শরীরিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য নির্দিষ্ট করে নেয়ার তা‘লীম দিতেন। (শামায়িলে তিরমিযী, পৃ. ২২)
অর্খাৎ এজন মানুষ দিনের মধ্যে ৮ ঘন্টা বাইরের কাজ করবে, ৮ ঘণ্টা পরিবার পরিজনের সাথে (ঘুম আছে) দিবে এবং ৮ ঘণ্টা ইবাদত বন্দেগী ও দ্বীনের ফিকিরে (তালিম-তালকীন গ্রহণ) থাকবে।
৩) পবিত্র দ্বীন ইসলাম পরিপূর্ণ। পবিত্র কুরআন পাকে আছে: “আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম। তোমাদের প্রতি আমার নেয়ামত বা অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।”(সূরা মায়েদা:৩)
পবিত্র দ্বীন পরিপূর্ণ। এখানে স্পষ্ট করে বর্ণনা করা আছে একজন শ্রমিকের অধিকার কেমন ও কতটুকু হবে, তাই অন্য কারো থেকে শ্রমিকের অধিকার ধার নেওয়ার কোন দরকার মুসলমানদের নেই। এ সম্পর্কে হাদীস শরীফে আছে:
ক) "রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা শ্রমিককে তার ঘাম শুকানোর আগেই পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।" (ইবনে মাজাহ)
খ) রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন - "মহান আল্লাহ বলেন, ক্বিয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির প্রতিপক্ষ হব। যে আমার নামে কোন চুক্তি করে তা বাতিল করেছে। যে ব্যক্তি কোন স্বাধীন মানুষকে বিক্রি করেছে এবং যে শ্রমিকের দ্বারা পুরোপুরি কাজ আদায় করে নিয়েছে, কিন্তু তার পারিশ্রমিক প্রদান করেনি।" [হাদীস নং ১৩২০ - বুখারী শরীফ]
এখন কেউ যদি, পবিত্র দ্বীন ইসলাম বাদ দিয়ে, আজ থেকে ১২৯ বছর আগে আমেরিকার শিকাগো শহরে কি না কি ঘটেছে, নাস্তিক বামপন্থীরা কি করছে সেটা অনুসরণ করে ‘পহেলা মে’ পালন করে, তবে তা কখনই গ্রহণযোগ্য হবে না। কেননা হাদীস শরীফে স্পষ্ট উল্লেখ আছে: “যে যার সাথে মিল রাখে তার হাশর-নশর তার সাথে হবে ”। তাই ইসলাম বাদ দিয়ে যারা নাস্তিক্যবাদীদের পহেলা মে পালন করবে, তার হাশর-নশর নাস্তিকদের সাথে হবে। নাউযুবিল্লাহ মিন জালিক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন