রিভিউ আবেদন খারিজের পর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা না চাওয়ায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর এখন সময়ের ব্যাপার। মঞ্চ এবং জল্লাদসহ ফাঁসির সকল আয়োজন চূড়ান্ত। এ অবস্থায় ফাঁসি কার্যকরের পর কামারুজ্জামানকে কোথায় দাফন করা হবে তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। কামারুজ্জামানের ইচ্ছা অনুযায়ী তার বড় ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামি শেরপুরের গ্রামের বাড়িতে দাফন করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন জেলার মুক্তিযোদ্ধারা।
দাফনের বিষয়ে হাসান ইকবাল ওয়ামি বলেন, ‘ফাঁসি কার্যকর হলে বাবাকে তার ইচ্ছা অনুযায়ী শেরপুরের বাজিতখিলা ইউনিয়নে নিজের গড়া এতিমখানার মাদ্রাসা প্রাঙ্গণেই দাফন করা হবে।’
অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের লাশ শেরপুরের মাটিতে দাফন করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলার মুক্তিযোদ্ধারা। গত সোমবার তারা বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে মৌখিকভাবে অবহিত করেছেন। পরে মঙ্গলবার সকালে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ইউনিট কমান্ডার ও কামারুজ্জামানের স্ত্রীর বড়ভাই এ.এস.এম.নুরুল ইসলাম হিরু স্মারকলিপির মাধ্যমে এই দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন।
কামারুজ্জামানের লাশ দাফন করতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে কামারুজ্জামানের এই আত্মীয় বলেন, ‘আমরা চাই না একাত্তরের নরঘাতক কামারুজ্জামানের লাশ শেরপুরের পবিত্র মাটিতে দাফন হোক। কামারুজ্জামানের দাফন প্রতিহত করতে নকলা, নালিতাবাড়িসহ শেরপুরে প্রবেশের চারটি পথে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নেবে।’
শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামান তার আপন ভগ্নিপতি এটিকে জীবনের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি উল্লেখ করে হিরু বলেন, ‘বোনের বিয়ের সময় আমি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু পরিবার বিয়ের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় তাদের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেছি। আদর্শের সঙ্গে আমি কোনো সময়ই আপস করিনি।’
তবে হাসান ইকবাল ওয়ামি বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘১৯৯১ সালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার হওয়ার কারণে তিনি সরকার থেকে বিভিন্ন ধরনের অনুদান ও টাকা-পয়সা পেয়েছেন। ওই টাকা হালাল করার জন্য তিনি বর্তমানে এসব প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।’
কামারুজ্জামানের দাফন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উনার (হিরু) কথায় দেশ চলে না। শেরপুরও চলে না। আমাদের এলাকায় কোনো সমস্যা নেই। বাবার দাফন শেরপুরেই হবে।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন