ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল, ২০১৫

সিটি নির্বাচনের বড় ফ্যাক্টর ‘এইচ টি ইমাম ফরমুলা’!


ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর তিনটি সিটি কর্পোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে বহুল আলোচিত, বিতর্কিত ও নিন্দিত ‘এইচ টি ইমাম ফরমুলা’ প্রয়োগের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই ফরমুলায় নির্বাচন হলে তার ফলাফল হবে পূর্বনির্ধারিত। যা মহাজোট সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের বিশশ্বাসযোগ্যতাকে শেষ বারের মতো প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন।
বহুল আলোচিত এই ফরমুলায় “রিক্রুটেডদের দিয়ে মোবাইল কোর্ট করিয়ে নির্বাচন’ করার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচন সংক্রান্ত কুট-কৌশল নির্ধারক এইচ টি ইমাম। গতবছর ১২ নবেম্বর ছাত্রলীগের এক অনুষ্ঠানে ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের ‘ভেতরের কথা’ প্রকাশ করে দেন তিনি। তিনি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের উপর নিজেদের দলীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবহার করার কথাও প্রকাশ করেন। বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে নির্বাচন সম্পর্কে বিরোধীদলীয় অভিযোগকে সরকারি মহল উড়িয়ে দিয়ে আসলেও উপদেষ্টা ইমামের বক্তব্যে তা সরকারি স্বীকৃতি লাভ করে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় বাংলাদেশ পুলিশের, প্রশাসনের যে ভূমিকা; নির্বাচনের সময় আমি তো প্রত্যেকটি উপজেলায় কথা বলেছি। সব জায়গায় আমাদের যারা রিক্রুটেড তাদের সঙ্গে কথা বলে, তাদের দিয়ে মোবাইল কোর্ট করিয়ে আমরা নির্বাচন করেছি। তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তারা বুক পেতে দিয়েছে। আমাদের যে ১৯ জন পুলিশ ভাই প্রাণ দিয়েছে, তোমাদের মনে আছে এরা কারা? সব আমাদের মানুষ।’ একই অনুষ্ঠানে দলীয় প্রার্থীদের চাকরি প্রদান প্রসঙ্গে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘যখনই কারো বায়োডাটা নিয়ে যাই, বলি যে এরা সুযোগ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময়ই জিজ্ঞেস করেন তারা কি ছাত্রলীগ করেছে? কোথায় পদধারী ছিল? তোমরা অনেকেই বল ছাত্রলীগের চাকরির কথা। দেখ, আমার চেয়ে, নেত্রীর চেয়ে অন্য কারো দরদ কী বেশি আছে? আমরা তো জান-প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করি। নেত্রী বলেন, যেভাবেই হোক আমাদের ছেলেদের একটা ব্যবস্থা করে দাও। তোমাদের লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হবে। তারপরে আমরা দেখব।”
কলঙ্কজনক ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যা ঘটে : ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত হয় বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ, সর্বনিম্ন ভোটার উপস্থিতি, জাল ভোটের মহোৎসব ও ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে সেগুলো পূরণ করা, একেকজন শত শত ভোট দিয়ে উল্লাস প্রকাশ, সর্বাধিক সংখ্যক কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হওয়া, বহুসংখ্যক প্রার্থীর ভোট বয়কটের ঘোষণা দেয়া প্রভৃতি ঘটনা দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে চরমভাবে কলঙ্কিত করে। অন্তত ৪১টি কেন্দ্রে আদৌ কোনো ভোট পড়েনি- এমন ঘটনাও ঘটে। আবার বেলা ১টার মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশ ভোট কাস্টিং হলেও বিকেল ৪টায় তা হয়ে যায় ৭০ ভাগের ওপরে। দলের একেকজন কর্মী ১শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ পর্যন্ত ভোট দেবার ‘গৌরব’ অর্জনে সক্ষম হয়। অনেক স্থানে পুরো একটি পরিবারের ভোট অন্যরা দিয়ে দেয়। বিভিন্ন কারণে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ৫শ’ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করতে হয়। তিনশ’ আসনের মধ্যে অর্ধেকেরও কম আসনে ভোট করতে গিয়েও এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন অভিযোগ এনে ভোট গ্রহণের দিনে অন্তত ২০ জন প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। তাদের মধ্যে মহাজোটের শরীক জাতীয় পার্টি, জাসদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ছিলেন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রাণহানির ঘটনাও একটি রেকর্ড। শুধু নির্বাচনের দিনই ২১ জনের মতো লোক নিহত হবার খবর পাওয়া যায়। বিশ্লেষকদের মতে, এ নির্বাচনকে ঘিরে যে সহিংসতা হয়েছে তা অতীতের কোনো নির্বাচনে দেখেননি দেশবাসী। এদিকে গতবছর প্রথমদিকে কয়েক দফায় অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে অনিয়ম, কারচুপি ও সহিংসতা ঘটে ব্যাপক হারে। প্রথম দু’দফার নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থীরা ব্যাপক বিজয় অর্জন করতে থাকায় নড়েচড়ে বসে সরকারি মহল। পরের উপজেলা নির্বাচনগুলোতে কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই, জাল ভোট, পুলিশের গুলী, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ব্যাপক ঘটনা সংঘটিত হতে থাকে। এ সময় বিভিন্ন মহল থেকে নির্বাচন কমিশনকে বারবার সতর্ক করার পরও তারা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি নির্বাচনে আইনবহির্ভূত কর্মকা-ের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ উঠে। ফলস্বরূপ বিরোধীজোটের প্রার্থীদের বিজয়ী হবার সংখ্যা কমতে থাকে।
নির্বাচন কমিশনকে অপব্যবহারের রেকর্ড : সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনকে অপব্যবহারের ক্ষেত্রে এবার এক নয়া রেকর্ডও স্থাপিত হয়। নির্বাচন কমিশন কার্যত সরকারের আজ্ঞাবহ একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। অভিযোগে প্রকাশ, সেই বিরোধী দলবিহীন নির্বাচনে সরকারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন অনেক ক্ষেত্রেই অনিয়মকে নিয়ম হিসেবে চালিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ‘লাঙ্গল’ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া, আ’লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামের ‘বেআইনি’ চিঠিকেও গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষদিন বেশকিছু আসনের প্রার্থীর তালিকা বারবার রদবদল করা প্রভৃতি। আ’লীগের সঙ্গে শরিকদের সমঝোতা রক্ষা করতে গিয়ে তারা এই অনিয়ম করে। বিভিন্ন জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তারা ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩ ডিসেম্বরের তারিখ দিয়ে অবৈধভাবে প্রার্থীদের কারো মনোনয়নপত্র বাতিল, আবার কারো মনোনয়নপত্র বৈধ দেখায়। যে কারণে জাপার বেশ কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন জমা দেয়ার পরও তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। আ’লীগের নির্বাচনী জোটের অনুকূলে ‘নৌকা’ প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রেও কমিশন আইন মানেনি। জাতীয় পার্টি সরে পড়ায় অনেক আসনে প্রার্থীসংকট দেখা দিলে কমিশনের পরামর্শে রিটার্নিং কর্মকর্তারা অনেক প্রার্থীকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে মনোনয়নপত্র শুদ্ধ করে দেন। এ ছাড়াও, নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে সরকারি দল কোনো নিয়মেরই তোয়াক্কা করেনি। কিন্তু সেদিকে নির্বাচন কমিশন ঘুরেও দেখেনি। নবগঠিত বিএনএফকে নিবন্ধন দিতে চরম কূটচালের আশ্রয় নিতে দেখা যায়। যা ছিল একেবারে নগ্ন আচরণ।
এরই মধ্যে যা ঘটেছে : তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনেও আতঙ্ক তাড়া করে বিরোধী সমর্থক-প্রার্থীদের। গ্রেফতার আতঙ্কের কারণে বেশিরভাগ বিএনপি সমর্থক প্রার্থীই সরাসরি মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাননি। কেউ আইনজীবী কেউ-বা পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বিরোধী জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীদের বেশিরভাগই একাধিক মামলার আসামী। বিরোধী নেতাদের অভিযোগ, সরকার ২০ দলকে বাইরে রেখে প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে মেয়র পদসহ সব কয়টি কাউন্সিলর পদ দখলের পাঁয়তারা করছে। বিরোধী জোট যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেই লক্ষ্যে গত তিন মাসে কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে থানা ও ওয়ার্ড নেতাদের বিরুদ্ধে ডজন ডজন মামলা দিয়ে রেখেছে। তারা বলছেন, নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে আসলে সবাই গ্রেফতারের শিকার হবেন এমন আশঙ্কা সত্যি হতে চলেছে পুলিশের কথায়। গত বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি যুগ্ম কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সন্ত্রাসী গ্রেফতারের লক্ষ্যে পুলিশ ইতোমধ্যে মহানগরীতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। পুলিশের এ ঘোষণায় বিস্ময় প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, কে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে আর কে পারবে না তা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। আগ বাড়িয়ে পুলিশের এই বক্তব্য আতঙ্ক ছড়ানোর জন্যই দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, সন্ত্রাসীদের যে হালনাগাদ তালিকা করা হচ্ছে তাতে ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগে প্রকাশ। আর এই তালিকা নিয়ে টার্গেট করে চলছে ব্লকরেইড। সূত্রে জানা যায়, সিটি নির্বাচন সামনে রেখে সন্ত্রাসীদের যে হালনাগাদ তালিকা হচ্ছে সেই তালিকার পুরোটাই পূর্ণ হবে বিএনপি-ছাত্রদল, জামায়াত ও শিবিরসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের দিয়ে। তাদেরকে জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর, নাশকতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা মামলায় সংশ্লিষ্ট করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, এমনিতেই ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীরা পলাতক রয়েছেন। সেই সাথে এ অভিযান চললে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে আরো অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, সরকার সমর্থক প্রার্থীরা ইতোমধ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন করে চললেও এ ব্যাপারে ইসি’র নির্লিপ্ত ভূমিকায় ক্ষোভ করেছেন জোটের বাইরের প্রার্থীরা।
ঢাকার নিউজ এর সৌজন্যে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন