শুক্রবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতিকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদেশগামী একটি বিমান ছিনতাইয়ের হুমকি দেয়া হয়েছিল।
বিমানবন্দর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাত পৌনে ৯টার দিকে বিদেশগামী একটি বিমান ছিনতাইয়ের হুমকি সম্বলিত একটি ফোন আসে বিমানবন্দরের কেন্দ্রীয় এক্সচেঞ্জে একটি ফোন আসে। এতে পুরো বিমানবন্দর এলাকায় শুরু হয় তোলপাড়। ফোনে ওই হুমকির পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
বিমানবন্দর থানার ওসি মো. কামাল উদ্দিন বলেন, রাত পৌনে ৯টার দিকে এক্সচেঞ্জে ফোন দিয়ে বলা হয়, কিছুক্ষণের মধ্যেই বিদেশগামী একটি বিমান ছিনতাই করা হবে।
ওসি জানান, এ হুমকি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়। এরপর আইনশৃংখলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিষয়টি অবগত করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন বলেন, আমরা উড়ো ফোনের বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। কোনো হুমকিকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। বিমানবন্দর এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিদেশগামী বিমান ছিনতাইয়ের দুই ঘন্টা আগে থেকেই সবার নজর আটকে যায় দেশের বেসরকারি টেলিভিশনের পর্দায় ও অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর হোমপেজে।
সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইঙ্গিত দেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত জামায়াত নেতা কামারুজ্জামান তার দণ্ড মওকুফের জন্য রাষ্ট্রপতির বরাবর আবেদন জানানোর কথা বলেননি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী, পুলিশের লালবাগ বিভাগীয় উপকমিশনার মফিজউদ্দিন আহাম্মদ, রাত সোয়া আটটার দিকে সিভিল সার্জন আহসান হাবীব ও বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কারাগারে প্রবেশ করেন।
এর পরপরই কারাগারের সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফাঁসির মঞ্চের শামিয়ানা টাঙানোর কাজে ব্যবহারের জন্য একটি ভ্যানে করে কারাগারের ভেতরে ১৩টি বাঁশ নিয়ে যাওয়া হয় পাশাপাশি লাশ পরিবহনের জন্য কারাগারের সামনে দুটি অ্যাম্বুলেসও মোতায়েন করা হয়।
ফলে সর্বত্র ধারণা ছড়িয়ে পড়ে রাতেই কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ফাঁসির প্রস্তুতি চলছে বলেও গণমাধ্যমকে জানান।
কিন্তু হঠাৎ করেই ফাঁসি কার্যকর থেকে পিছিয়ে দেয়া হয়। বিমান ছিনতাইয়ের হুমকি আসার পর রাত সাড়ে ৯টায় সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী, পুলিশের লালবাগ বিভাগীয় উপকমিশনার মফিজউদ্দিন আহাম্মদ, রাত সোয়া আটটার দিকে সিভিল সার্জন আহসান হাবীব ও বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে যান।
পরে মাঝরাতের দিকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শনিবার কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে। টেকনিক্যাল কারণে সব প্রস্তুতি থাকার পরও শুক্রবার রায় কার্যকর করা সম্ভব হয়নি।’
এই টেকনিক্যাল কারণটি কি তা যেমন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেননি, তেমনি ফাঁসি স্থগিত করার সাথে বিমান ছিনতাইয়ের হুমকির সংযোগ আছে কি না তার ব্যাপারেও কোথাও কোনো কর্তৃপক্ষীয় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Enewsbd24.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন