মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় আর কিছুক্ষণের মধ্য কারাগারে পাঠানো হচ্ছে বলে আদালত সূত্রে জানা যায়।
আজ বুধবার দুপুরের দিকে ৩৬ পৃষ্ঠার এই রায়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এবং আপীল বিভাগের চার সদস্যের অপর তিন বিচারপতি আব্দুল ওহহাব মিয়া, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শাসসুদ্দিন চৌধুরী মানিক স্বাক্ষর করার পর কারাগারে পাঠানোর অপেক্ষায় রেজিস্ট্রার।
আদালত সূত্রে আরও জানা যায়, এখন রায়ের কপি পাঠানো হবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে। কপি পাওয়ার পর ফাঁসির রায় কার্যকরের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু করবেন কারা কর্তৃপক্ষ।
এর আগে রিভিউ খারিজের পর বিচারপতিদের সংক্ষিপ্ত আদেশে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছিল অপর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে।
কামারুজ্জামানের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে সোমবার (৬ এপ্রিল) রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ। ফলে বহাল থাকে দেশের শীর্ষ এই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ।
এদিকে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, তারা এখনও উচ্চ আদালতের রিভিউয়ের রায়ের কপি হাতে পাননি। এজন্য রায় কার্যকরের কোনো প্রক্রিয়া শুরু করতে পারছেন না।
তিনি জানান, রায়ের কপি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যাওয়ার পর ফাঁসির রায় কার্যকরের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু করবেন কারা কর্তৃপক্ষ। তারা কামারুজ্জামানের কাছে জানতে চাইবেন, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা করবেন কি-না।
যদি তিনি প্রাণভিক্ষা না করেন অথবা করলেও তা নামঞ্জুর হয়, তবে সরকারের পক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফাঁসির দিনক্ষণ ঠিক করে দিলে জেল কর্তৃপক্ষ তা কার্যকর করবে বলেও জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেলও।
তবে প্রাণভিক্ষা করা হলে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত না জানা অথবা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকর করা যাবে না বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
গত বছরের ৩ নভেম্বর কামারুজ্জামানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর দেওয়া ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে আপিল মামলার চূড়ান্ত রায় সংক্ষিপ্ত আকারে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর পরদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ৫ মার্চ আপিল মামলার চূড়ান্ত পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনটি দাখিল করেন কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা। আসামিপক্ষের আবেদনে দু’দফা পেছানোর পর রোববার (৫ এপ্রিল) রিভিউ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের কিলিং স্কোয়াড আলবদর বাহিনীর বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা কমান্ডার কামারুজ্জামানকে ২০১৩ সালের ৯ মে ফাঁসির আদেশ দেন চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে এবং বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি শাহীনুর ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২।
উৎসঃ ঢাকার নিউজ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন