এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজত ও ক্রসফায়ারে মারা গেছেন মোট ৬৪ জন। এর মধ্যে র্যাবের ক্রসফায়ারে ১৫ জন, পুলিশের ক্রসফায়ারে ২৪ জন এবং অন্যান্য বাহিনীর হাতে সাতজন মারা যান।
জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নিজস্ব সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে করা তিন মাসের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যাগত প্রতিবেদনে আজ মঙ্গলবার আসক এ তথ্য দিয়েছে। তবে র্যাব তাদের হেফাজতে বা ক্রসফায়ারে মৃত্যুর কথা অস্বীকার করেছে।
মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে আসক বলেছে, পরিবার ও অন্যদের অভিযোগ অনুযায়ী, গত তিন মাসে সাদা পোশাকে আসা ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে ২৫ জনকে আটক করে নিয়ে গেছে। এদের মধ্যে পরে শুধু একজনের লাশ পাওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো আটকের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আসকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশের নির্যাতনে চারজন, র্যাবের নির্যাতনে একজন, পুলিশের গুলিতে নয়জন ও গোয়েন্দা পুলিশের গুলিতে একজন মারা যান। থানাহাজতে নির্যাতনের ফলে আত্মহত্যা করেন একজন। গ্রেপ্তারের পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান একজন। পরিবারের দাবি, ট্রেনের নিচে ফেলে একজনকে মেরে ফেলা হয়েছে। তিন মাসে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ১৭ জন।
আসক জানিয়েছে, গত তিন মাসে শুধু রাজনৈতিক সহিংসতার ৫৫৬টি ঘটনা মারা গেছে ১২২ জন। তাদের মধ্যে ৬৯ জনই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছে। রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় আহত হয়েছে ৩ হাজার ৫১ জন। প্রশাসন এ সময়ে দেশের সাতটি বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ১৫ বার ১৪৪ ধারা জারি করে।
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন মাসে ১০৩ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। প্রকাশিত সংবাদের জন্য তিনজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তিন মাসে হিন্দু সমপ্রদায়ের ১৭টি বাসস্থান, একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিমা, পূজামন্ডপ ও মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ১০৫টি ঘটনায় ২১ জন আহত হয়েছেন।
তিন মাসে গণপিটুনির ঘটনা ৩১ জন মারা গেছেন। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মারা গেছেন ছয়জন, নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। আহত হয়েছেন ২২ জন। অপহরণের শিকার হন ৩৬ জন। অপহরণের পর বিজিবির মধ্যস্থতায় ফেরত এসেছেন ১৫ জন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন