সরকারের দেশব্যাপী গণগ্রেফতার ও জুলুম-নির্যাতনের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান ।
আজ ৩০ জানুয়ারী এক বিবৃতির মাধ্যমে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন অবৈধ জালেম সরকার সারা দেশে ব্যাপকভাবে গণগ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে এবং জনগণের উপর চরম জুলুম-নির্যাতন করছে। দেশের কারাগারগুলো ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের দ্বারা ভর্তি। সরকার বেঁছে বেঁছে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি আরো বলেন, আজ সারাদেশে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাংগঠনিক সেক্রেটারী অধ্যাপক জাকির হোসাইনকে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। সরকারের দেশব্যাপী গণগ্রফতার ও জুলুম-নির্যাতনের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শফিকুর রহমান বলেন, সরকারের একগুঁয়েমিতা, হঠকারিতা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণতার কারণে দেশ ক্রমাগতভাবে ভয়াবহ সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের শিল্প কল-কারখানাগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দেশের রফতানি আয়ের এবং অর্থনীতির প্রধান উৎস গার্মেন্টস শিল্পগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
আমদানী ও রপ্তানী প্রায় বন্ধ। চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দরসহ নদী বন্দরগুলোতে অচল অবস্থা বিরাজ করছে। দেশের অর্থনীতির চাকা থেমে গিয়েছে। তার পাশাপাশি চলছে সরকারী দলের সন্ত্রাসীদের দখলদারী, চাঁদাবাজী ও লুটপাট। সরকারী দলের লোকদের চাঁদাবাজী ও হুমকির কারণে নির্মাণাধীন চট্টগ্রামের পানি শোধনাগার নির্মাণের দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে দেশে যে দুরবস্থা চলছে তার জন্য সরকারের ক্ষমতালিপ্সা ও অসৎ রাজনৈতিক মনোবৃত্তিই দায়ী।
দেশ ও দেশের মানুষের সমস্যা নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যথা নেই। সরকার যে কোনভাবে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। সরকারের মধ্যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বলতে কিছু নেই। গুলি করে মানুষ হত্যা করা, দেখামাত্র গুলি, ভাত-পানি বন্ধ করে দেয়ার হুমকি প্রদান করে সরকার মূলতঃ প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনৈতিক মনোবৃত্তিই প্রকাশ করেছে। সরকারের এসব নিষ্ঠুর ও মানবতাবিরোধী আচরণের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ ও বিশ্বসম্প্রদায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কিন্তু সরকার তা অগ্রাহ্য করে জোর করে ক্ষমতায় থাকার কারণেই দেশে চরম সংকটজনক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
২০ দলীয় জোটসহ দেশের জনগণের উপর জুলুম-নির্যাতন বন্ধ করে নিয়মতান্ত্রিক গণতন্ত্রের পথ অনুসরণ করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।”
অপর এক বিবৃতির মাধ্যমে ২০ দলীয় জোটের সমাবেশে বাধাদানের প্রতিবাদ, ফ্যাসীবাদী সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবিলম্বে নির্বাচনের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ২৫ তম দিনে আয়োজিত মিছিল, পিকেটিংকারীদের উপর পুলিশ ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের হামলা ও নির্বিচারে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদ, গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি এবং সরকারের সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে অবরোধ কর্মসূচী সার্বিকভাবে সফল করায় অভিনন্দন ও চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী রবি,সোমও মঙ্গলবার অর্থাৎ ১ ফেব্রুয়ারী ভোর ছয়টা থেকে ৪ ফেব্রুয়ারী বুধবার ভোর ছয়টা পর্যন্ত ৭২ ঘন্টার সর্বাত্মক হরতাল শান্তিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফুর্তভাবে পালনের আহবান জানিয়েছেন জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন